একটি খোলা চিঠি / এরশাদ মজুমদার
হে খোদা, তুমি আমার জীবন ও মরণের মালিক। আমাদের জীবন যাত্রা ও কর্মের ও মালিক। আমকে তুমি পাঠিয়েছো এই গ্রহের এমন একটি ভুখন্ডে যেখানে শাসকেরা মিথ্যা কথা বলে। ধনীরা লুটেরা হয়ে গেছে আর মুর্খরা মঞ্চে বসে থাকে। জ্ঞানীরা প্রাণের ভয়ে পালিয়ে থাকে। শাসকেরা নিজেরা আইন তৈরি করে নাগরিক নামক মানুষদের অত্যাচার করার জন্যে। এরা ফেরাউনের মতো নিজ দেশের মানুষকে অত্যাচার করে। কি তােমার ইচ্ছা ছিল জানিনা প্রভু। প্রাণের ভয়ে আমি আমার হতভাগ্য দেশের নাম বলতে পারছিনা। আমি প্রকাশ্যে কিছু বলতে ও করতে পারিনা। এখন আমার মনো কষ্টের সীমা নেই। কেন তুমি আমাকে পাঠালে এমন এক ভুখন্ডে যেখানে আমার আত্মার কোন স্বাধীনতা নেই। এখানে স্বাধীন চিন্তার কোন অধিকার নেই। কেন তুমি আমাকে এ রকম ভাবনা ভাবাও জানিনা। এমন ভাবনাতো আমার শোভা পায়না। আমিতো কোন মহা পবিত্র স্বাধীন আত্মার মানুষ নই। অতি সাধারণ নগণ্য আত্মার এক আদম সন্তান। যে শাসকের পেয়াদা দেখলেই ভয় পায়। এমন এক সময়ের ভিতর দিয়ে আমি যাচ্ছি তা আমি আর সইতে পারছিনা। শুধু আমি নই স্বাধীন এ ভুখন্ডের কোটি কোটি মানুষের জন্যে সময়টা অসহ্য হয়ে গেছে।
হে আমার প্রাণের মালিক, আমিতো তোমায় বার বার বলেছি আমি আর এ প্রাণ বইতে পারছিনা। তুমিতো জানো আমি কখনও পদ পদবী ক্ষমতা চাইনি। তাই আমার মনতো পদলোভী ক্ষমতাবাজদের মতো নয়। আমিতো নীরবে নিভৃতে জীবনের সময়টুকে পার করতে চাই তোমারই স্মরণে। যে ভুখন্ডে তুমি আমাকে পাঠিয়েছো এখানে আমার পূর্ব পুরুষদেরও বাসস্থান ছিল। জোর করে ইচ্ছা থাকলেও আমি হিজরত করতে পারিনা।
স্বাধীন হওয়ার পর এই ভুখন্ডের একটি নতুন নাম হয়। এর আগে এর নানা রকম নাম ছিল। মহাভারতের গল্প অনুযায়ী বলি রাজার পাঁচ সন্তানের একজনের নাম বংগ। তিনিই এই দেশটি শাসন করতেন। বলি রাজা সন্তান উত্পাদনে অক্ষম ছিলেন। তাই তিনি অন্ধ ঋষি দীর্ঘতমাকে আহবান করেছিলেন রাজপ্রসাদে রাণীদের উপর গমণ করে সন্তান উত্পাদন করার জন্যে। দীর্ঘতমার ঔরসেই বংগের জন্ম হয়। তবে আমি এ গল্প বিশ্বাস করিনা। কারণ, এ গল্প বিশ্বাস করলে আমাদের প্রকৃতি পুজারী পুর্ব পুরুষদের জারজ বলে বিশ্বাস করতে হবে। তবে সেই প্রাচীন যুগে ব্রাহ্মণ দ্বারা সন্তান উত্পাদনের রেওয়াজ ছিল। তবে আমার পূর্ব পরুষেরা ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন নিজেদের মুক্তির জন্যে। এর আগে ধর্ম নামে যা প্রচলিত ছিল তা প্রকৃতি পূজা। সমাজ ছিল বর্ণবাদী। সকল মানুষের সমান মর্যাদা ছিলনা। আমি মনে করি ইসলাম জগতের সবচেয়ে বেশী প্রগতিশীল ধর্ম।
এসব হলো পেছনের কথা। হাল আমল ও সময়ের কাছে ফিরে আসছি। বৃটিশ আমলের পরেই রাজা বাদশাহদের জামানা শেষ হয়ে গেছে। বৃটিশরা আমাদের এক ধরণের গণতন্ত্রের শিক্ষা দিয়ে গেছে। আর দিয়ে গেছে আইন ও শাসন ব্যবস্থা। বাদশাহদের যুগেও এক ধরণের আইন দ্বারা দেশ চলতো। বাদশাহ নিজেই আইন বানাতেন নিজের স্বার্থে। রাজা বা বাদশাহ হতেন বংশ পরম্পরায়। ফলে নেতা নির্বাচনের ঝামেলা ছিলনা। এখনতো ভোট দিয়ে নেতা নেত্রী নির্বাচন করতে হয়। দার্শন শাস্ত্র, লোকনীতি বা রাজনীতির গুরুরা বলেছেন, গণতন্ত্রে সংখ্যার গুরুত্ব বেশী। এখানে মেধা বা জ্ঞানের কোন দাম নেই। নেতা অশিক্ষিত বর্বর হলেও চলবে যদি তিনি বেশী মানুষের ভোট পান। ভোট না পেলেও চলবে যদি তিনি নির্বাচনের ভান করতে পারেন। এখন বাদশাহী যুগের বাদশাহদের মতো নেতা বা মন্ত্রী হতে হলে শক্তি আর অর্থ থাকলেই চলে।
আমিতো লোকনীতি বা রাজনীতি কিছুই বুঝিনা। আমি কবি মাওলানা রুমী আর মনসুর হাল্লাজের মতো জীবন সাধনা করতে চাই। কিন্তু মানুষর কষ্ট দেখলে আর সহ্য করতে পারিনা। এখানে দুর্বলেরা সবল দ্বারা কঠোর ভাবে অপমানিত, নির্যাতিত ও শোষিত। দেশটা স্বাধীন হয়েছে প্রায় অর্ধশত বছর আগে । কিন্তু দেশের মানুষ এখনও স্বাধীন বা দারিদ্র মুক্ত নয়। শিক্ষিত অশিক্ষিত কারোই কোন কাজ নেই। গরীবদের জন্যে শিক্ষা ও চিকিত্সা নেই। এসব অশিক্ষিত গরীব কোথাও সম্মানিত নয়। আধুনিক রাষ্ট্র এসব মানুষকে নাগরিক বলা হয়। এদের নামেই সংবিধান হয়, এদের নামেই সংসদ হয়, সরকার গঠণ হয়। নামের খসম রাষ্ট্র নিজে স্বাধীন হয়ে গেছে নাগরিকদের কাঁধে চড়ে। কোতোয়াল আর বাহিনীরা বলে রাজা বাদশাহ কিছুইনা,আমরাইতো দেশ চালাই। এর মানে হচ্ছে সিপাহীরা দেশ চালায়। নেতারা ক্ষমতায় থাকলেই খুশী। দেশে ভোট বা বিনা ভোটের নির্বাচন সংসদ সবই আছে। নাগরিক বা গরীব মানুষদের নামেইতো আইন পাশ হয়। সিপাহী বা বাহিনীদের নাগরিকের পশ্চাতদেশে লাথি ও ডান্ডা মারার ক্ষমতা বা অধিকারতো জনগণের দ্বারা নির্বাচিত বা অনির্বাচিত বাদশাহরা দিয়েছেন। এখন রাস্তা ঘাটে কোতোয়াল আর সিপাহীরা বলে ‘ ব্যাটা আমরাই এখন দেশ চালাই, বেশী কথা বললে জেহাদী বই হাতে ধরিয়ে দিয়ে চালান করে দেবো।
হে খোদা, তুমি কি তোমার জগতের কোথাও এমন গণতন্ত্র দেখেছো? জানিনা, তোমার উত্তর কি হবে? তুমি কি আমার কষ্টের কথা বুঝতে পারো। আর গণতন্ত্রের এ নাটক বা ভন্ডামীর আমাদের নেতাদের শান্তির নোবেল পুরুষ্কার দাও। ফিলিস্তিন আর ইজরায়েলে শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টার জন্যে তুমি আমেরিকা সহ তিন দেশের নেতাদের নোবেল দিয়েছো। শুধুমাত্র গণতন্ত্র রক্ষা আর সন্ত্রাস দমন ও শান্তির জন্যে আমাদের গণতান্ত্রিক সরকার বাদশাহী কয়েকশ’ নাগরিক নামের মানুষের জীবন নিয়েছে। তুমিতো ইচ্ছা করলে বিনা নির্বাচনেই তিনশ’নেতা বা মাস্তানকে( মস্তি বা আধ্যাত্বিক অর্থে) নির্বাচিত করে তাদের সম্মানিত করতে পারো। তাদের মন্ত্রী বানাতে পারো। তুমিতো সকল ক্ষমতার উত্স। এদেশে তেমন কথা বিশ্বাস করেনা। এখানে মানুষকে সার্বভৌম বলে তাদের উপরেই ফেরাউনী শাসন চালানো হয়। এখানে শাসকরা ফেরাউন, নমরুদ ও সাদ্দাদের কথা জানেনা। এখানে চিরসত্যকে স্বীকার করেনা গ্রীকের শাসক গোষ্ঠিদের মতো।
হে আমার প্রাণের মালিক, আমি জানি, তুমি বলবে ফেরাউন নমরুদকে তুমি লম্বা সময় দিয়েছিলে। তারপর একদিন পাকড়াও করেছিলে। তুমি আমাদের ও বলেছো ধৈর্য ধারণ করার জন্যে। আমরাতো অতি অতি সামান্য মানুষ, তেমন ধৈর্য ধরতে পারিনা। আমিতো বলছিনা এ ভুখন্ডকে তুমি সদোম নগরীর মতো উপড়ে ফেলে দাও। সকল মানুষকে ধ্বংস করে দাও। আমিতো চাই অত্যাচারের অবসান হোক। এবং তা অতি দ্রুতই হোক। তুমি আমাদের ঈমানকে আরও দৃঢ ও মজবুত করে দাও।তুমিতো খুব ভালোই জানো আউলিয়া দরবেশের এই দেশে ইসলাম আজ খুবই দূর্বল হয়ে পড়েছে। এখানে দরবারী কবিরা তোমার আজানকে ব্যংগ করে কবিতা লেখে। তারা আবার বাদশাহর সম্মান পায়। এদেশের বুদ্দীজীবীরা মুর্তিপূজক ও প্যাগানদের গুণগাণ করে দয়া দাক্ষিণ্যের জন্যে করজোড়ে দাঁড়িয়ে থাকে। যেমন করে ওরা আমাদের বাপ দাদাদের দাস বানিয়ে রেখেছিল। ওরা কেমন করে ভুলে গেল ওইসব দিনের কথা। মুর্তিপূজকদের কাছ থেকে পদ্মভূষণ পাওয়ার জন্যে এইসব বুদ্ধিজীবী পদচুম্বন করে। ভূ ভারতের মুর্তি পূজকরা বৃটিশদের ডেকে এনে তাদের হাতে আমাদের স্বাধীনতা তুলে দিয়েছিল। ১৯০ বছর পুরো ভু ভারতকে মুর্তিপুজকদের সহযোগিতায় ইংরেজরা শাসণ ও শোষণ করেছে। কোটি কোটি মানুষের প্রাণের বিনিময়ে এদেশের মানুষ স্বাধীনতা ফিরিয়ে এনেছে। এাব কথা বলছি কেন? কারণ আমার দেশের স্বাধীনতাকে আবার মুর্তিপুজকদের হাতে তুলে দেয়ার পায়তারা করছে একশ্রেণীর আরবী নামধারী মোনাফেকরা। এরা মুখে বলে আমরা মুসলমান, কিন্তু কাজে মুর্তিপুজক। আমার দেশের শাসকরা এখন মুর্তিপুজকদের বন্ধু। তারা নিজেদের সেক্যুলার বা ধর্মহীন মনে করে। ইংরেজী শিক্ষিত বেশীর ভাগ ভদ্রলোক নিজেদের সেক্যুলার বলে পরিচয় দেয়। মিডিয়ার ৯০ ভাগ বন্ধু আজ সেক্যুলারদের দলে। এ ভাবে চলতে থাকলে এদেশে আর ইসলাম থাকবেনা। যেমন কামাল আতাতুর্ক মোল্লাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ইসলামকে নির্বাসনে পাঠিয়েছিলেন। সেক্যুলার শব্দ নিয়ে আমি হাজার বার লিখেছি। সেক্যুলার মানে যিনি বা যারা পরকালে বিশ্বাস করেন না। তাঁদের জগতই শেষ। যে কোন ধর্মেই পরকালকে বিশ্বাস করতে হয়। ইসলামে পরকাল বিশ্বাস করা ঈমানের অংগ। যারা বিশ্বাস করেন না তারা মুসলমান নয়। আমার দেশটি এখন সেক্যুলারদের পাল্লায় পড়ে গেছে। এমন কি ইসলামে বিশ্বাস করেন তাদের ভিতর একদল লোক আছেন যারা সেক্যুলার বলে দাবী করেন। এরা হচ্ছে ভন্ড।
হে খোদা, তুমি আমার প্রিয় জন্মভুমিকে রক্ষা করো। মোনাফেকদের ধ্বংস করো। এদেশের মসজিদ মন্দির ও গীর্জা ভন্ডদের দখলে চলে গেছে। ইসলাম ও মুসলমানদের রক্ষা করার জন্যে আমাদের বাপদাদারা পাকিস্তান বানিয়েছিলেন। সে পাকিস্তানও টিকলোনা। কারণ দেশের ক্ষমতায় ছিল মোনাফেকরা। তারা ধর্মের নামে তামাসা করতো। তারা ইসলামের নামে দেশবাসীকে ধোকা দিতো। ফলে পাকিস্তান টিকলোনা। জন্ম নিলো নতুন এক দেশের পুরাণো এক ভুখন্ডে বাংগালী মুসলমানেরা তখন অসহায় হয়ে মুর্তিপুজকদের বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করেছিল। সে বন্ধুত্ব আজও জারী আছে। এখনকার বন্ধুত্ব হচ্ছে অনুগত বন্ধুত্ব। ১৯৪৭ সালে আমাদের পূর্বপুরুষেরা অখন্ড বাংলার স্বাধীনতা চেয়েছিল। কিন্তু মুর্তিপুজকরা অখন্ড বাংলা চায়নি। কারণ, তাতে মুসলমানদের প্রভাব বেশী থাকবে। তাই বাংলাকে খন্ডিত করা হয়েছে মুর্তিপুজকদের দাবীতে। ফলে বাংলার লাখো মানুষ প্রাণ হারিয়েছে ও গৃহ হারিয়েছে। আর এজন্যে দায়ী ছিলেন গান্ধীজী, নেহেরুজী ও প্যাটেল। মোনাফেকরা আজ আমার দেশের বিরুদ্ধে লেগেছে।
হে আমার বন্ধু আয়েশা, তুমি কেমন আছো? অনেকদিন তোমার সাথে আমার দেখা হয়না। আমিও তেমন সুস্থ নই। বয়সতো হয়েছে। যে দেশের স্বপ্ন তুমি দেখেছিলে তা আর দেখে যেতে পারলাম কই? মুক্তিযুদ্ধের সময় চাঁদের রাতে ক্যাম্পে বসে তোমার স্বপ্নের দেশের কথা বলতে। তখন হয়তো মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার বাহিনীরা মুক্তিযোদ্ধেদের মোকাবিলা করছে। দূরে বহুদূরে কোথাও গুলির আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল। নতুন স্বাধীনতার ৪৪ বছর পার হতে চলেছে। কি মনে হয় তুমি কি তোমার দেশটি দেখে যেতে পারবে? আমার মনে হয়না। তাইতো খোদার কাছে দরখাস্ত করছি। এই ভুখন্ডতাকে ফেরাউন নমরুদের কাছ থেকে রক্ষা করার জন্যে। এদেশে এখন হাজার হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা পাওয়া যাচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া সার্টিফিকেটকে আকাশে উঠার সিঁড়ি হিসাবে পেয়েছে। আসল মুক্তিযোদ্ধাদের কেউ খবর রাখেনা। যেখানে বা যে দেশে জালিয়াত মুক্তিযোদ্ধা পাওয়া যায় সেখানেতো সবকিছুই ভুয়া। এখন এ এখানে ন্যায়নীতি, বিচার আচার , সত্য বলে কিছুই নেই। আজ আমার মনটা খুবই খারাপ। তাই হঠাত্ তোমার কথা মনে পড়েছে। মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে তোমাকে একটি বই লিখতে বলেছিলাম। তোমার হাতেতো বেশ সময় আছে। লিখছোনা কেন? তুমিতো ফোন করতে পারো। আমি কেন করিনা তা তুমি ভালই জানো। আজকালের মধ্যেই তোমার ওখানে আসবো। দেশকে নিয়ে অনেক কথা জমে আছে মনে।
হে পরম দয়ালু, জগতের রক্ষক, তুমি আমাদের দেশটাকে ফেরাউনের হাত রক্ষা করো। আমাদের আত্মাকে বলিষ্ঠ করো। দেশের সকল মানুষ যেন অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ(জেহাদ) করার ক্ষমতা দেয়। মুসা(আ) নবীর মতো একজন নবীর মতো একজন নেতা পাঠাও। বহুকাল আশা করেছিলাম আমাদের দেশে মহাথির আর লী কুয়াংয়ের মতো নেতা আমাদের দেশে পাঠাবে। সে রকম নেতা আমরা পাইনি। তুমি হয়ত বলবে এতো দুর্ণীতিবাজ , লুটেরা ও মিথ্যাবাদীর দেশ কেমন করে মহাথির বা লী জন্মাবে। তুমি হয়ত আমাদের নেতাদের রক্ত নষ্ট হয়ে গেছে। শতবার স্বীকার করি তোমার অভিযোগ। তাই বলেতো তুমি এ ভুখন্ডের গণ মানুষকে কষ্টে ফেলে দিতে পারোনা। ওরাতো অতি সাধারন হত দরিদ্র। নিমিত তোমার ধর্ম পালন করে। ফেরাউনের ভয়ে অথবা তার কোতোয়ালের ভয়ে মুখ খুলতে পারেনা। এখন এদেশের কয়েক হাজার মানুষ বিনা বিচারে পড়ে আছে। লোকে বলে এদেশে এখন রায় বেচাকেনা হয়। যদিও আমি বিশ্বাস করিনা। তবে জানি বিচারকরাওতো এদেশের গরীব মা বাপের সন্তান। মা বাবা অনেক কষ্ট করে জমি জিরাত বিক্রি করে সন্তানদের পড়ালেখা করিয়ে বিচারক বানিয়েছে। সবাইতো সরকারী পদ পদবীর উপকারিতা বুঝতে পেরেছে। তাহলে বিচার ব্যবস্থাকে দায়ী করে কি লাভ। কোতোয়ালের সিপাহী বলে আমরা খুব গরীব ঘরের ছেলে। পড়ালেখা তেমন করতে পারিনি। তাই এমন একটি চাকুরী করি। চাকুরীটা পেতেও কয়েক কানি জমি বেচতে হয়েছে। এখন দায়িত্ব পুরো সংসার। বেতনের বাইরে যদি মাসে হাজার পঞ্চাশেক টাকা না পাই তাহলে বোনের বিয়ে দিবো কেমন করে। বাপজান বলেছে ছোট ভাইকে পড়ালেখা করিয়ে বড় দারোগা বানাতে হবে। আমাদেরতো বড় চাকুরী নয়, তাই তেমন কামাই করতে পারিনা। আজ তরুণ সাংবাদিকরাও বলেন আমরাতো এ সমাজের একটি অংশ, আমাদেরও সংসার আছে, ভাইবোন আছে। আমরাতো ইচ্ছা করলেই সমাজের বাইরে থাকতে পারিনা। তাহলেতো বাঁচতেই পারবোনা। কিছুলোক বুদ্ধিহীন বেকুব বলেই ব্যান্ক লুট বা ডাকাতি করতে গিয়ে কিছু নিরী্ মানুষকে হত্যা করেছে। অপরদিকে কিছুলোক বাদশাহ বা মন্ত্রীর সাথে খাতির করে ব্যান্ক লুট করে কাগজে কলমে। হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়মের ভিতর থেকে হাতিয়ে নেয়। এরাতো সরকারী দাওয়াত খায়। বিয়ে শাদীতে হাজার হাজার মানুষকে দাওয়াত করে খাোয়ায়। এতে খাজনা বিভাগের, দুদকের আর কোতোয়ালের লোকেরা হাজির হয়। মন্ত্রীরাতো থাকেনই। আমি জানি , তুমি বলবে, যে জাতি নিজেদের সাহাহ্য করেনা সে জাতিকে তুমি সাহায্য করোনা। আর আমি বলবো হে আমার জাতি,তোমরা জেগে উঠো, নিজেদের রক্ষা করো। হে আমাদের তরুণরা, তোমাদের কেউ কি মহাথির বা লী কুয়াং হতে পারোনা। অসত্ জাতি হিসাবে আমাদের বদনাম ঘুচিয়ে দাও। আমার আল্লাহ তোমাদের সবার সহায় হোক। হে খোদা আমাদের মুক্তি দাও।
লেখক: কবি ও ঐতিহ্য গবেষক
ershadmz@gmail.com