অচেনা এক রাস্ট্রের ভিতর জীবন যাপন / এরশাদ মজুমদার
ছাত্র বয়স থেকেই রাস্ট্রের অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে করতে এখন বৃদ্ধকালে এসেছি। জানিনা দুনিয়া থেকে চলে যাবার আগে রাস্ট্র ব্যবস্থার উপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলবো। সারা জীবন মানবতার জন্যে লড়াই করেছি। ক্ষুধা,দারিদ্র,অশিক্ষা,চিকত্সাহীনতা থেকে মুক্ত একটা সমাজ ও দেশ চেয়েছিলাম। পাকিস্তান সৃষ্টি হয়েছিল বিশেষ ভাবে বাংলার নির্যাতিত মুসলমানের মুক্তি জন্যে। জিন্নাহ সাহেব নিজেই বলেছিলেন, শুধু পূর্ব বাংলার মুসলমানদের মুক্তির জন্যে হলেও পাকিস্তান অপরিহার্য। ৭১ সালে পূর্ব বাংলার মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে পাকিস্তান নিজেই ভেংগে গেছে। পাকিস্তান কর্তৃক শোষিত ও নির্যাতিত সেই পূর্ব বাংলা বা পূর্ব পাকিস্তান আজ স্বাধীন বাংলাদেশ। বাংলার ১৬ কোটি মানুষ আজ স্বাধীন। কোন বিদেশী শাসক বা শোষক নেই।
পৃথিবীর যে কোন রাস্ট্রের অস্তিত্ব নির্ভর করে সে রাস্ট্রের পরিচালন ব্যবস্থার উপর। পরিচালন ব্যবস্থা গড়ে উঠে সংবিধানকে কেন্দ্র করে। স্বাধিনতার ৪২ বছর আজ আমরা কি দেখছি? দেখছি, আমাদের রাস্ট্রটি এক অত্যাচারী রাস্ট্রে পরিণত হয়েছে। রাস্ট্রের ম্যানেজার বা নায়েব যাকে আধুনিক ভাষায় সরকার বলে অভিহিত করি। সেই সরকার এখন দেশের নাগরিক বা মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছে। সরকারকে রক্ষা করার জন্যে রাস্ট্রের আছে সেনাবাহিনী, বিজিবি, রেব, পুলিশ ও আনসার। রাস্ট্রকে রক্ষা করার জন্যেই সেনা বাহিনী তৈয়ার করা হয়। সেই সেনাবাহিনীর বিপথগামী বলে পরিচিত কিছু লোক ইতোমধ্যই দুজন রাস্ট্রপতিকে হত্যা করেছে। একজন সেনাপতি জোর করে ক্ষমতা দখল করে নিজের তার গ্রুপের ইচ্ছা মত নয় বছর শক্তি দিয়ে দেশ চালিয়েছে। আরেক জন সেনাপতি অভ্যুত্থান করতে গিয়ে চাকুরী হারিয়েছেন। রাটজনৈতিক দলের মারামারি হানাহানির সুযোগ নিয়ে ২০০৭ সালে সেনাপতি মইন ইউ আহমদ ক্ষমতা দখল করে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছেন। তখন আওয়ামী লীগের নেত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন,১/১১র দেশদ্রোহী মইন ইউ আহমদের সরকার তাদের দাংগা হাংগামার ফসল। নির্বাচিত হলে সেই অবৈধ সরকারের ক্ষমতা গ্রহণকে তিনি বৈধ করে দিবেন। শেষ পর্যন্ত ২০০৮ সালের তথাকথিত নির্বাচনী তামাশার মাধ্যমে সেনাপতি মইন ইউ আহমদ শেখ হাসিনাকে পুর্ব নির্ধারিত লক্ষ্য হাসিলের জন্যে ক্ষমতায় বসিয়ে দেশত্যাগ করে চলে যান। তিনি এখনও নির্বাসিত জীবন যাপন করছে। আমার বিশ্বাস,দেশবাসী বা পাঠক সমাজ ১/১১র সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে আওয়ামী লীগ ও তার রাজনৈতিক গোষ্ঠি কি করেছিল তা ভুলে যাননি। ২৮শে অক্টোবরের লগিবৈঠার হত্যা কান্ড টিভির মাধ্যমে সারা বিশ্ব দেখেছে। এর আগেও ৯৬ সালে কেয়ারটেকার সরকারের দাবীতে আওয়ামী লীগ সারা দেশে তান্ডব চালায়। ফেব্রুয়ারীর এক তরফা নির্বাচনের দিন রাজনীতির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিরোধী দল কারফিউ ঘোষণা করে। নির্বাচনে বিজয়ী বিএনপি সরকার একদিন বা দুইদিন স্থায়ী সংসদে কেয়ারটেকার সরকারের আইন পাশ করে। সেই আইন আদালতের কাঁধে বন্দুক রেখে শেখ হাসিনার সরকার বাতিল করে দেয় গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে। আর বিএনপি ও ১৮ দলীয় জোট এখন আন্দোলন করছে কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা পূণ:প্রতিষ্ঠা করার জন্যে।
বাংলাদেশের চলমান বেদনাদায়ক ও দু:খজনক অবস্থার সৃষ্টি করেছে শেখ হাসিনার সরকার ও তার সহযোগীরা। দেশবাসী সবাই জানেন যে, কেয়ারটেকার ব্যবস্থার দাবী মেনে নিলে চলমান অবস্থার সৃষ্টি হতোনা। এখন পাঠক সমাজ ও দেশবাসীকে ভাবতে হবে কেন শেখ হাসিনা কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছেন। শেখ হাসিনা নিজেই বলেন তাঁরা ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করতে চান। ইতোমধ্যেই তিনি সরকারী খরচে জনসভা করে ভোট চাইতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যেই তাঁর সরকার যদ্ধাপরাধীদের বিচারের নামে বাংলাদেশকে মুসলীম বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। অস্বচ্ছ,আন্তর্জাতিক ভাবে বৈধ নয় এমন বিচার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিশ্ব জনমত নিন্দা জানিয়ে বিচার বন্ধ করার দাবী তুলেছে। শেখ হাসিনার বর্তমান অবস্থানের প্রতি একমাত্র ভারতের প্রকাশ্য সমর্থন রয়েছে। ভারতের মিডিয়া গুলো ইতোমধ্যেই প্রকাশ করেছে যে শা্হবাগের তথাকথিত গণজাগরণ মঞ্চের প্রতি ভারত সরকারের সমর্থন রয়েছে। ভারত এবং সে দেশের রাজনৈতিক দল ও মিডিয়া গুলো ভারতের স্বার্থেই কাজ করে। তাই তারা দলবেঁধে ঐক্যবদ্ধ ভাবে বাংলাদেশের প্রশ্নে এক। বুঝে হোক না বুঝে হোক বাংলাদেশের ৯০ ভাগ রাজনৈতিক দল ও মিডিয়া ভারতের স্বার্থে কাজ করে। কিছুদিন আগেই ভারতের মিডিয়া গুলো বলেছে এবার হাসিনার কিছু হলে ভারত চুপ করে থাকবেনা।
অনেকের কাছেই প্রশ্ন, শেখ হাসিনা এক সাথে বড় দুটো ঝুঁকি নিলেন কেন? তিনি কি জানতেন না বিরোধী দল তাঁর সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিবেনা? যুদ্ধাপরাধীর বিচারে মাওলানা সাঈদীর বিচারের রায় বের হলে দেশে বিদেশে কি প্রতিক্রিয়া হবে? সরকারের গোয়েন্দা বিভাগ নিশ্চয়ই এ ব্যাপারে ব্রিফ করেছেন। তাহলে কেন তিনি শক্তি প্রয়োগ করে বিরোধী দলের আন্দোলনকে দমন বা ধ্বংস করতে চাইছেন। কেনইবা তিনি বার বার বলছেন তিনি ২০২১ সাল পর্ক্ষন্ত ক্ষমতায় থাকতে চাইছেন। এটা কি শুধুই ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা না অন্যকিছু? পরিস্থিতি দেখে অনেকেই মনে করছেন তাঁর অন্য কোন এজেন্ডা আছে,যা প্রকাশ্য নয়। ইতোমধ্যেই দেশবাসীর মনে একটি ধারণা তৈরি হয়েছে যে,আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে একটা ধর্মহীন বা সেক্যুলার রাস্ট্রে পরিণত করতে চায়। যার জন্যে সরকার সংবিধান থেকে আল্লাহর নাম তুলে দিয়েছেন বা তুলে দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানে বলা হয়েছে সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক দেশের জনগণ। যে কোরণে হোক, বিএনপিও এ বিষয়টার প্রতি তেমন কোন গুরুত্ব দেয়নি। সে সুযোগটা এখন আওয়ামী লীগ নিচ্ছে। কাগজে কলমে রাস্ট্রধর্ম ইসলাম থাকবে কিন্তু আল্লাহর সার্বভৌমত্ব মানার দরকার নেই। দেশের ৯০ ভাগ মানুষের ধর্মীয় চেতনাকে অপমান করার জন্যে সরকার নানা রকম কৌশল অবলম্বন করেছে। পাঠ্য পুস্তকে ইসলাম ও আল্লার বিরুদ্ধে পাঠদান করা হচ্ছে। ব্লগে আল্লাহ, রাসুল(সা) ও কোরআনের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলা হচ্ছে। সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করার পরও সরকার কোন পদক্ষেপ নেয়নি। বরং একজন ব্লগার নিহত হওয়ার পর সেই ব্লগারকে শহীদ ঘোষণা করা হয়েছে। সংসদে সেই ব্লগারের নামে গুণ গাণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ব্লাগারের বাড়িতে গিয়ে তাকে মহিমান্বিত করেছেন। আল্লাহদ্রোহী অন্যান্য ব্লগাররা গণ জাগরণ নামে শাহবাগের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। নানা বিষয়ে শাহবাগীরা সরকারকে পরামর্শ দিয়ে চলেছে। সরকারের কর্মকান্ড দেখে মনে হচ্ছে শাহবাগীরাই আসল সরকার ।তাদের শ্লোগান হলো জয় বাংলা। যদিও বাংলা বলে জগতে কোন স্বাধীন সার্বভৌম দেশ নাই। তাহলে কোন বাংলার নামে তারা জয়গাণ গাইছে? পশ্চিম বাংলাতো ভারতের একটি রাজ্য বা প্রদেশ। যেখানে গেলে আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে তারা মুখ্যমন্ত্রী বলে। তারা শ্লোগান দেয় আমি কে তুমি কে? বাংগালী বাংগালী। তাই দেশবাসীর মনে প্রশ্ন জেগেছে শাহবাগীদের দৃশ্যমান গুরু সরকার হলেও অদৃশ্য গুরু কে বা কারা। ৪২ বছর পর বাংলাদেশের সব অর্জনকে কারা নস্যাত করতে চাইছে। কারা আমাদের জাতিসত্তার মূলে আঘাত করে চলেছে। তারা ৭১ সালে আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনকে সমর্থন করে পাকিস্তানকে ভেংগেছে। এখন বাংলাদেশকে নিয়ে করতে চায়? দীর্ঘ ৪২ বছর ধরে তারা এদেশে একশ্রেণীর মানূষ তৈরি করেছে যারা শুধু মাত্র খাঁটি বাংগালী হওয়ার জন্যে নিজেদের আসল পরিচয় মুসলমানিত্ব,ঐতিহ্য, ভাষা, কৃষ্টি, ধর্ম ,সাহিত্য সবকিছু ত্যাগ করতে চায়।
কোলকাতার পাক্ষিক দেশ ম্যাগাজিন শাহবাগের উপর একটি গল্প প্রকাশ করেছে। ওই লেখাটিকে রিপোর্ট বলা যায়না। কল্পনা মিশ্রিত আবেগের বহি:প্রকাশ। লেখক সুমন সেনগুপ্ত শাহবাগে এসেছিলেন কিনা জানিনা। হয়ত কারো কাছ থেকে এর বর্ণনা শুনেছেন। যেমন,‘’লাখে লাখে সৈন্য মরে কাতারে কাতার, শুমার করিয়া দেখ কয়েক হাজার’। এক জায়গায় লিখেছেন,কিন্তু ব্রহ্মের শক্তি ধরে আছে এই জনতা।লেখক বিরোধী দলকে মৌলবাদী বলেছেন। খালেদা জিয়াকেও এক হাত নিয়েছেন। অথচ, দেশ ম্যগাজিনটি একটি মৌলবাদী আনন্দবাজার গ্রুপের কাগজ। যে গ্রুপ ভারতের নিপীড়িত মানুষের কথা বলেনা। এক সময় রাজস্থানে আনন্দবাজারের অশোক সরকারের সাথে আমার দেখা হয়েছিল। তখন গফুর সাহেব ছিলেন রাজ্য সরকারের গভর্নর বা রাজ্যপাল। একটা অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন। তখন কথা বলে বুঝতে পেরেছিলাম তিনি কত উচ্চ মার্গের সাম্প্রদায়িক ছিলেন। সময়টা ছিল ৭৩ সাল। তিনি জানতে চাইলেন মাওলানা ভাসানী কেন ভারতের বিরোধীতা করছেন। মাত্র ক’দিন আগেইতো তোমাদের ভারত স্বাধীন করে দিয়েছে। এত অল্প সময়ে সব ভুলে গেলে? রাজস্থান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বাংগালী শিক্ষকও একই প্রশ্ন করেছিলেন। এখনও ভারতীয় বাংগালী অবাংগালী সবাই মনে করে ভারত বাংলাদেশকে স্বাধীন করে দিয়েছে,আর সেই দেশের মানুষ কেমন করে ভারতের বিরোধিতা করে? ভারতীয়দের এ চিন্তাকে আমি ব্যক্তিগত ভাবে ভুল মনে করিনা। কেউ উপকার করলে তার প্রতি সকলেরই কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। ক’দিন আগে ভারতের ডিফেন্স রিভিউ ওয়েব সাইতে দেখলাম,অরজিত সিং নামে এক ভদ্রলোক বাংলাদেশকে নিয়ে একটি নিবন্ধ লিখেছেন। তিনি বলেছেন, ভারত সমর্থন ও সাহায্য না করলে এক লক্ষ বছর যুদ্ধ করেও বাংলাদেশ স্বাধীন হতে পারতেনা। এর অবস্থা কাশ্মীরের মতো হতো।
আমার প্রশ্ন হলো, ভারত সরকার ও ভারতবাসী বাংলাদেশ সরকার ও এদেশের জনগণের কাছে কি চায়?ভরত নিশ্চয়ই জানতো পাকিস্তান ভাংলে বা বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে গেলে দেশটাতো আর সিকিমের মতো হয়ে যাবেনা। ভা এখানকার মানুষ ইসলাম বা মুসলমানিত্ব ছেড়ে দিয়ে ধর্মহীন হয়ে যাবেনা। যে কারণে এদেশের অতি সাধারন নির্যাতিত অপমানিত লাঞ্ছিত মানুষ বর্ণবাদী হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহন করেছিল সে কারণ গুলোতে এখনও বিরাজমান। ভারতে এখনও ৩০ কোটি অচ্যুত বা হরিজন রয়েছে যাদের সেদেশের ধর্ম ও সংবিধান মানুষ মনে করেনা। এর সাথে রয়েছে আরও ৩০ কোটি মুসলমান যারা অধিকার বঞ্চিত দ্বিতীয় শ্রেনীর নাগরিক। ৪২ বছর ধরেইতো ভারত বাংলাদেশকে তার অনুগত বন্ধু দেশ হিসাবে দেখতে চাইছে। একবার ইন্দিরা গান্ধী বলেছিলেন তিনি বাংলাদেশে সব সময় একটি বন্ধু সরকার দেখতে চান। মানে শুধু বন্ধু রাস্ট্র হলে চলবেনা। পাকিস্তান রাস্ট্রের সাথে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক আছে, কিন্তু বন্ধুত্ব নাই। বাংলাদেশকেও ভারত খুবই ঘনিষ্ট বন্ধুদেশ হিসাবে দেখতে চায়। থা্লে এর মানে কি দাঁড়ালো?
মানে হচ্ছে ভারত চায় যেভাবেই হোক বাংলাদেশে ভারতপন্থীরা ক্ষমতায় থাকবে। দেশের মানুষ ষোলয়ানা বাংগালী হবে। ইতিহাস ,ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সাহিত্য, ভাষা সবকিছুই বদলে নিতে হবে। বাংলাদেশের ভারতপন্থী একটি কাগজের শ্লোগান হলো বদলে দিতে হবে ,বদলে যেতে হবে। এ কাগজের সম্পাদক নবীজীকে(সা) ব্যাংগ করে কার্টুন ছাপে। কাগজের যুগ্ম সম্পাদক কোরআনের আয়াতকে ব্যাংগ বই প্রকাশ করেন। শেখ হাসিনা ভারতের স্বপ্নকে বাস্তবায়নের জন্যে ২০২১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে চান। তাহলেই ভারতের মিশন বাস্তবায়িত হবে। শুধু একবার ইসলামকে গৃহধর্ম বা ব্যক্তিগত ধর্মে পরিণত করতে পারলেই হলো। ভারতের এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগ, আওয়ামী বুদ্ধিজীবী, আওয়ামী পুঁজিপতি, আওয়ামী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে। আর এ কারণেই তাঁরা মরণ কামড় দিয়েছে বাংলাদেশের উপর। দেশের মানুষকে দমনের জন্যে শত শত লোককে হত্যা করছে। মাত্র দুয়েকটি মিডিয়া ছাড়া বাকি সব মিডিয়া ভারতের লক্ষ্য অর্জনে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। শাহবাগের গণজাগরণের জন্ম হয়েছে ভারতের বাংলাদেশ বিষয়ক চিন্তা ভাবনা , কৌশল ও পরিকল্পনা থেকে। শাহবাগের তরুণরা হয়ত বিষয়টা একেবারেই জানেনা। তারা ভাবছে তাদের চিন্তা চেতনা সঠিক। তাই তারা মাঠে নেমেছে। তারা মনে করছে তারা স্বাধীনতা রক্ষার জন্যে কাজ করছে। এমনটি ১৭৫৭ সালে হয়েছিল। তার খেসারত এদেশের হিন্দু মুসলমান সবাই দিয়েছে। সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলার মুসলমান।
বাংলাদেশের মানুষের জাতিসত্তার পরিচয় যদি সুস্পষ্ট না হয় তাহলে আপনদের মুসলমান পরিচয় অবিলম্বেই মুছে যাবে। তাই বাংলাদেশের মানুষের , বিশেষ করে শিক্ষিত সমাজকে গা ঝাড়া দিয়ে জেগে উঠতে হবে।
লেখক: কবি ও ঐতিহ্য গবেষক।
http://www.humannewspaper.wordpress.com