Feeds:
Posts
Comments

Archive for August, 2014


ডিজিট মানে সংখ্যা। ডিজিটাইজড করা মানে হচ্ছে সকল কাজকে কম্পিউটারাইজড করা। সেখান থেকেই ডিজিটাল শব্দটির উত্‍পত্তি। বাংলাদেশে এখন ডিজিটাল শব্দটি বহুল আলোচিত ও ব্যবহৃত। অনেকেই মজা করার জন্যে বলে থাকেন ডিজিট+এল(digit+AL). অনেকেই বলেন আওয়ামী লীগের সংখ্যা তত্ব। আর এই সংখ্যাতত্বের গুরু হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য পুত্র। তিনি নাকি এনালগ বাংলাদেশকে ডিজিটাল করতে চান। সেজন্যে প্রধানমন্ত্রী এ খাতে বেশুমার টাকা পয়সা দিচ্ছেন। বেশ কয়েক বছর আগেই সরকারী অফিস গুলোতে বিশ্ব ব্যান্ক কম্পিউটার দিয়েছে বড় বড় সাহেবদের। যদিও তাঁরা কোন ধরণের কম্পিউটার চলাতে পারেন না। অনেকেই ভবিষ্যত বংশধরদের  ডিজিটাল করার জন্যে ওই যন্ত্র বাসায় নিয়ে গেছেন। সরকারী খাতায় হয়ত রেকর্ড করা হচ্ছে এত জন সচিব, যুগ্ম সচিব, উপ সচিব, সহকারী সচিব, পরিচালক ডিজিটাল জ্ঞান লাভ করেছেন। যেমন  ধরুণ, বাংলাদেশের  শিক্ষার হার। একেক সরকার একেক রকম তথ্য পরিবেশন করেন। বাংলাদেশের সংখ্যা তত্বের বিষয়টা কেউ বিশ্বাস করেনা। নিজেদের প্রয়োজনেই দেশের নাগরিকরা কম্পিউটার শিখছেন। আমাদের মন্ত্রী এমপিদের ৮০ ভাগই কম্পিউটার চালাতে জানেন না। তাঁদের সহকারী বা ব্যক্তিগত সচিবরাও এই যন্ত্রটাকে টাইপরাইটার হিসাবে ব্যবহার করে থাকেন। এ ব্যাপারে সরকারের চেয়ে বেসরকারী অফিস গুলো অনেক বেশী এগিয়ে আছে।
সরকারী ওয়েবসাইট গুলো ভিজিট করুন দেখবেন একটি সাইটও আপডেট করা নাই। এমন কি খোদ প্রধানমন্ত্রীর অফিসের ওয়েব সাইটও নিয়মিত আপডেট করা হয়না। ফিডব্যাক ব্যবস্থা থাকলেও আপনি কোন উত্তর পাবেননা। জনগণের সাথে সংশ্লিষ্ট সরকারী সেবাদানকারী অফিসগুলো এখনও ডিজিটাইজড হয়নি। যেমন সিটি কর্পোরেশন, রাজউক, ভুমি মন্ত্রণালয়, রাজস্ববোর্ড বা আয়কর বিভাগ, পাসপোর্ট অফিসের ওয়েবসাইট গুলো যে ধরণের হওয়া উচিত ছিল তা হয়নি। পাসপোর্ট এবং ন্যাশনাল আইডি ইস্যু করার বিষয়টি আরও অধিকতর সহজ হওয়া উচিত ছিল। এ দুটি অফিসে জনগণকে যে পরিমাণ সহায়তা দেয়া দরকার ছিল তা দেয়া হয়না। তবে এনআইডি অফিস পাসপোর্ট অফিসের চেয়ে অনেক বেশী সহযোগিতা দেয়। পাসপোর্ট অফিসে সেনাবাহিনীর জোয়ানরা আছেন শৃংখলা রক্ষার জন্যে। দালালের দৌরাত্ম হয়ত কিছুটা কমেছে। একেবারে কমেনি। ওয়েবসাইটে প্রয়োজনীয় পূর্ণাংগ তথ্য নেই। ফলে আবেদনকারিকে বার বার যেতে হয়। পাসপোর্ট অফিসে কোন লিফট নেই। আপনাকে একতলা থেকে চারতলা পর্যন্ত বার বার উঠানামা করতে হবে। যেখানে আবেদনপত্র জমা দিবেন সেখানে খুববেশী একশ’ আবেদনকারী দাঁড়াতে পারেন। কিন্তু দাঁড়াতে তিন চারশ’লোককে। এখানে সব কাজই খুব ধীর গতিতে সম্পন্ন হয়।

Read Full Post »


বিষয়টা নিয়ে এর আগেও আমি লিখেছি। একজন কলামিষ্ট হিসাবে দেশের মানুষের কাছে চিকিত্‍সা জগতের ব্যাস্তবতাকে তুলে ধরা নিজের কর্তব্য মনে করেই লিখেছি। আজ আবার লিখছি মনের কষ্ট প্রকাশ করার জন্যে। কয়েকদিন আগে রাজধানীর গুলশান এলাকার একটি তথাকথিত অভিজাত সাত তারা হাসপাতালের একটি খবর টিভি ,বেতার ও পত্রিকায় প্রচার ও প্রকাশিত হয়েছে। একজন মধ্যবিত্ত ব্যবসায়ী চিকিত্‍সা ও বাঁচার আশায় ওখানে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু ওই হাসপাতালের চিকিত্‍সা ব্যবস্থা তাঁকে বাঁচাতে পারেনি। আল্লাহপাক হয়ত এভাবেই তাঁর মরণ চেয়েছিলেন। সুতরাং আমরা বলবো ‘ইন্নাহ লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে’। এখানে বিষয়টা হচ্ছে লাশ নিয়ে হাসপাতালের ব্যবসা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানালেন পুরো বিল শোধ না করলে লাশ দেওয়া হবেনা। আহ্ কী চমত্‍কার ব্যবসা। শুনেছি , হাসপাতালের মালিকরা খুবই ধার্মিক। তাঁদের নাকি হজ্বের ব্যবসাও আছে। এই ব্যবসাতে নাকি তাঁরা খুবই নাম করেছেন। স্বাভাবিক ভাবেই দেশের মানুষ তাঁদের কাছে মানবিক আচরণ আশা করেছিলেন। ভারতের মাড়োয়ারী আর বিশ্বব্যাপী ইহুদীরা নাকি ব্যবসা আর মানবিকতাকে এক করে দেখেনা। তারা নাকি বলেন, দুনিয়া হচ্ছে ব্যবসা, আর আখেরাত হচ্ছে ধর্ম আর মানবতা। কিন্তু ইসলাম মানবতাতো মানুষেরই কাজ। মানুষকে দয়া দেখাতেই হবে। কারণ ,আল্লাহপাকের প্রধানতম গুণ হচ্ছে দয়া করা, দয়া দেখানো।  এমন আচরণের জন্যে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা ও মালিকদের ইমেজ বা ভাবমুর্তি দারুণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদিও বাংলাদেশে ক্ষমতাবান ব্যক্তি , প্রভাবশালী ও ধনীরা ইমেজ নিয়ে তেমন ভাবেন বলে মনে হয়না। নারায়ন গঞ্জের সাত খুনের মামলায় প্রভাবশালীদের নাটক দেশের মানুষ দেখে চলেছে। টাকা আর প্রভাব দিয়ে সবকিছু করা যায় তাহলে আইনের অবস্থা কি হবে। এখনতো সরকার বিচারকদের ভয় দেখানোর জন্যে শাস্তির বিধান নিজেদের হাতে তুলে নিচ্ছেন। আমাদের চলমান সরকার ও সংসদকে  আওয়ামী ঘরাণার লোক ছাড়া কেউ বৈধ মনে করেনা ।

সাত তারা হাসপাতালের মালিকেরা এ রকম অমানবিক ব্যবহার করছেন কেন? স্বাধীনতা ও সরকারী কল্যাণে বেশ কিছু মানুষতো ধনের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। হাসপাতালের ব্যবসায় এত অমানবিক হওয়ার দরকার কি। বেশীর ভাগ হাসপাতাল বা চিকিত্‍সা ব্যবসায়ী নিজেরা এয়ার এম্বুলেন্সে বিদেশে যান পরিবার পরিজন নিয়ে চিকিত্‍সার জন্যে। বিদেশে মরে উড়োজাহাজে করে দেশে ফিরে আসেন। বড় করে কয়েকবার জানাজা হয়। কালো পোষাকের মেলা বসিয়ে কুলখানি হয়। খবরের কাগজে বেশ কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন সংগঠনের তরফ থেকে শোকবাণী প্রকাশিত হয়। অপরদিকে সাধার নাগরিক ও রোগীদের অবস্থা কাহিল। যদিও সংবিধানে ওয়াদা করা হয়েছে নাগরিকদের ভাত কাপড়,শিক্ষা ও চিকিত্‍সার ব্যবস্থা করবে রাষ্ট্র। এ ওয়াদা সব সময় জারী আছে। এখন রাষ্ট্রের কাছে তেমন টাকা পয়সা নেই। তাও ওয়াদা বাস্তবায়ন করা যাচ্ছেনা। ওয়াদাতো বাস্তবায়িত হওয়ার কথা ৪৭ সালেই।বিদেশীদের বিদায় করে  স্বদেশীদের দ্বারা পরিচালিত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলে দেশের মানুষ সুখে শান্তিতে থাকবে। বিদেশী ইংরেজ সাহেবেরা চলে গেছে, কিন্তু সাধারন মানুষের ভাগ্যের তেমন কোন পরিবর্তন হয়নি। কারণ স্বাধীন বাংলাদেশের নেতারা এখনও অন্তর জগতে বৃটিশদের ভালবাসেন। বৃটিশদের ভাষা, পোষাক, বিদ্যা,আদব কায়দা জারী রেখেছেন। শুধুমাত্র দেশের অতি সরল সাধারন নাগরিকদের ধোকা দেয়ার জন্যে পাজামা পাঞ্জাবী পরেন। পাকিস্তান আমলে‘ মিটিংকা কাপড়া’ বলা হতো। সারাদিন স্যুট কোট পরে , রাতের বেলা বোতল খেয়ে জনসভায় যাওয়ার সময় মিটিংকা কাপড়া পরতেন। ফলে ৪৭ সাল থেকেই কিছু অসত্‍ রাজনীতিকের পাল্লায় পড়ে গেছেন। সিংগাপুরের লী কুয়াং বা মালয়েশিয়ার মহাথিরের মতো একজন নেতা আমাদের ভাগ্যে এলোনা। বৃটিশ আমলের ১৯০ বছর আর পাকিস্তান আমলের ২৩ বছর ধরে হিসাব করলে সাধারন মানুষ ২১৩ বছর শোষিত হয়েছে। এ কথা আমরা চোখ বন্ধ করে বলতে পারি। পাকিস্তান আমাদের প্রধান শত্রু। তারা ২৩ বছর শোষণ করেছে। বৃটিশরা ভদ্র জাতি। দেখতে সুন্দর, ইংরেজী জানে, নারী পুরুষে অবাধে মেলামেশা করে, ধর্মের বালাই নেই। তাই ১৯০ বছরের শোষণকে আমরা হাসি মুখে ভুলে গেছি। আমাদের নীতি হচ্ছে বড় মিয়া ‘চুদুর ভাই’ বলেছেন তাই আহ্লাদের আর সীমা নাই। আমার প্রশ্ন হলো,স্বাধীন সোনার বাংলার নেতারাতো আমাদের ভাই বেরাদর, অতি নিকট আত্মীয় স্বজন, এখন আমাদের কে শোষণ করছে? তারা কি আমাদের চোখের সামনে ঘুরে বেড়ায়? ৭০ সালের ব্যান্কের কেরানী এখন ব্যান্কের চেয়ারম্যান। পেশকার বা মুয়াজ্জিনের পোলা রাষ্ট্রপতি  হয়েছে। খুবই সুখবর। অতি সাধারন মানুষ রাষ্ট্র চালাচ্ছে। কিন্তু কই সাধারন মানুষতো এখনও ভাত কাপড় , চিকিত্‍সা, শিক্ষা ও মাথা গোঁজার ঠিকানা পায়না। রাস্ট্রের সাতশ’ কোটি টাকার বাজেট আড়াই লক্ষ কোটি টাকা হয়ে গেছে। ধনীরা রাষ্ট্রের টাকা মেরে দিয়ে রাতারাতি ধনী হচ্ছে, গরীবরা আরও গরীব হচ্ছেন। আমলা রাজনীতিকরা ধনীদের কাজ থেকে বখরা আদায় করছেন। এসব দেখে শুনে কিছু তরুণ যুবক মাস্তান হয়ে গেছে। তারাও এদিক ওদিক পিস্তল ঠেকিয়ে দু’পয়সা কামাচ্ছে।

Read Full Post »


মানুষের কথা বলার অধিকার তার জন্মগত। ভাল মন্দ বুঝা ও যাচাই করার জ্ঞান বুদ্ধিও দিয়েছেন তার প্রতিপালক ও স্রষ্টা। আল্লাহতায়ালা মানুষকে জগতে তাঁর খলিফা করেই পাঠিয়েছেন। আল্লাহপাকের বহু গুণ তিনি মানুষকে দিয়েছেন। মানুষকে ভাবতে শিখিয়েছেন। মানুষকে ভাল মন্দের জ্ঞান দিয়ে সঠিক পথ কি তা দেখিয়ে দিয়েছেন। জগতে গণমানুষের প্রথম রাষ্ট্র হচ্ছে মদীনার রাস্ট্র। এ রাষ্ট্রের প্রধান ছিলেন জগতের শেষ রাসুল(সা) ও শেষ নবী মুহম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল মোত্তালিব। সে সময়ে এ জগতে সাধারন মানুষের কোন রাস্ট্র ছিলনা। আল্লাহপাকের ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার জন্যেই নবীজী মদীনা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। মদীনা সনদ নিয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রী মাঝে মাঝেই কথা বলেন। তিনি ওয়াদা করেছেন মদীনা সনদ বাস্তবায়ন করবেন। কে বা কারা তাঁকে বুঝিয়েছেন যে,মদীনা রাষ্ট্র সেক্যুলার( ধর্মহীন) রাস্ট্র ছিল। যদিও আমাদের দেশে সেক্যুলার শব্দটির অনুবাদ করা হয়েছে ধর্ম নিরপেক্ষ। শব্দটির উত্‍পত্তি হয়েছে বৃটেনে। ধর্ম বিহীন জীবন যাপনে বিশ্বাসীরা রাজা বা রাস্ট্রকে বুঝিয়েছেন যে রাস্ট্র বা রাজার কোন ধর্ম থাকতে পারেনা। সেই শব্দটি কালক্রমে আমাদের দেশে চালু হয়ে গেছে।
পাঠক সমাজ প্রশ্ন তুলতে পারেন যে, আমি ইসলামের দৃষ্টিতে বিষয়টি দেখছি। না, জগতের সকল ধর্ম ও মত স্বীকার করে যে মানুষ শ্রেষ্ঠ জীব বা সেরা সৃষ্টি। মানুষের জন্যেই এ জগত সৃষ্টি করা হয়েছে। শব্দই হচ্ছে ব্রহ্মা। তিনি ও্ঁকার ধ্বনি দিয়েই জগত সৃষ্টি করেছেন। জগতে যত ভাষা আছে সব ভাষাই খোদার বা স্রষ্টার। সেই ভাষাতেই মানুষ নিজেকে প্রকাশ করে। জগতে যত খোদায়ী কিতাব আছে তা প্রকাশিত হয়েছে শব্দ আর ভাষার মাধ্যমে। যারা ভাষাবিদ তাঁরা মনে করেন ভাষা কালক্রমে মানুষের চেষ্টাতেই তৈরি হয়েছে। যে ভাবেই হোক না কেন, বুঝা গেল মানুষের জন্যে ভাষা অপরিহার্য। ভাষার মাধ্যমেই মানুষ মত প্রকাশ করে ,লেনদেন করে। ভাষার মাধ্যমেই মানুষ তাঁর ইচ্ছা অনিচ্ছার কথা বলে।
প্রাচীন যুগে যখন রাজা বাদশাহরা ছিলেন না তখন ও মানুষ গোত্র বা কৌম বা কওম ভুক্ত হয়ে থাকতো। নিজদের ভিতর নিজেরাই কওমের নিয়ম কানুন তৈরি করে জীবন যাপন করতো। এর পরে রাজা বা বাদশাহ ব্যবস্থা আসে। রাজা বাদশাহরা ও নিয়ম নীতি তৈরি করে দেশ ও প্রজাদের পরিচালনা করতেন। এর ভিতর অত্যাচারী বাদশাহরাও ছিলেন। যেমন ফেরাউন, নমরুদ, জার, সিজার। আধুনিক যুগেও আমেরিকার মতো অত্যাচারী সন্ত্রাসী অত্যাধুনিক রাস্ট্র আছে। আবার আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের বাদশাহরাও জনগণের অধিকারকে স্বীকার করেননা। সউদী আরবে কোন গণতন্ত্র নেই। আবার চীন বা মায়ানমারেও গণতন্ত্র নেই। এরা সবাই কিন্তু জাতিসংঘের সদস্য। আমেরিকা গণতন্ত্র কায়েমের জন্যে ভিন দেশ আক্রমণ করে ব্যাপক হারে মানুষ হত্যা করে। আমেরিকাই বিশ্ববাসীকে বুঝিয়ে দিয়েছে গণতন্ত্র, মানবতাবাদ ও কথা বলার অধিকার একটা শ্লোগান মাত্র। আসল কথা হলে শক্তি। এক সময় গণচীন বলতো ‘পাওয়ার কামস আউট অব ব্যারেল অব গান। মানে বন্দুকই ক্ষমতার উত্‍স। চীনে গণতন্ত্র নেই,তবুও আমেরিকা চীনের সাথে গভীর বন্ধুত্বে আগ্রহী। সউদী আরবে চলছে রাজতন্ত্র বা বাদশা্হী। সেদেশের বাদশাহর সাথে আমেরিকার রয়েছে গভীর বন্ধুত্ব। এর মানে গণতন্ত্র ও মানবতা বড় কথা নয়। সবকিছুই আমেরিকার স্বার্থ। তবে একথা স্বীকার করতে হবে যে আমেরিকা ও ইউরোপের দেশ গুলোতে মত প্রকাশের অধিকার আমাদের চেয়ে হাজার গুণ বেশী, যদিও সেখানে  রেডিও, টেলিভিশন, সংবাদপত্র সহ সকল প্রকার প্রচার মাধ্যমকে কর্পোরেট হাউজ গুলো নিয়ন্ত্রন করে। এসব হাউজও নাকি আমেরিকার সরকার গুলোকেও নিয়ন্ত্রন করে। বাংলাদেশ গরীব দেশ। রাজনীতিকরা ওয়াদা করেছিলেন সেনার বাংলা উপহার দিবেন। না, আমরা সেনার বাংলা পাইনি। ৭৪ সালে টিসিবি কর্তৃক মহান ভারত থেকে আমদানীকৃত সুন্দরী শাড়ি নিয়ে জাতীয় মজাদার আলোচনা হয়েছিল। সংসদে এর নাম দেয়া হয়েছিল সোনার বাংলা শাড়ি। সুন্দরী শাড়ি ছিল দশহাতি। পুরো শরীর ঢাকা যেতোনা। ওই শাড়ি পরলে ভিতরের সবকিছু দেখা যেতো। ওই সময়েই বাসন্তীর জন্ম হয়েছিল। সে শাড়ির অভাবে জাল পরেছিল। সে ছবি ছাপা হয়েছিল ইত্তেফাকে। মহান ভারত বললাম এ কারণে যে , বন্ধুদেশ নিয়ে এখন কোন মন্দ কথা বলা যাবেনা। বন্ধুদেশ নিয়ে লেখার অভিযোগে আমার বিরুদ্ধে একবার মামলা হয়েছিল। যে কোন মন্দ আইন থাকলেই পুলিশ থেকে শুরু করে সরকারের উচ্চ পর্যায় নাগরিকের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে। ভারতে সম্প্রচার নীতিমালা বা প্রেস এন্ড পাবলিকেশন আইন চালু হয়েছে বৃটিশ আমলে। বৃটিশ আইনের মূল লক্ষ্য ছিল পরাধীন নাগরিকদের কঠোর নজরদারী ও নিয়ন্ত্রণে রাখা । সে আইন এখনও ভারত ,পাকিস্তান ও বাংলাদেশে চালু আছে। কোন সরকারই ওই সব আইকে গণমুখি করেনি, বরং নিবর্তন মূলক আইন দিন দিন বেড়ে চলেছে। বংগবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নাগরিকদের শাস্তি দেয়ার জন্যে ৭৪ সালে স্পেশাল পাওয়ার এ্যাক্ট করেছেন। বৃটিশ আমলে করা নিবর্তন মূলক আইন ৫৪ ধারা এখনও জারী আছে। এই আইনের দ্বারা পুলিশ বা সরকার যে কোন নাগরিককে কোন কারণ না দেখিয়ে গ্রেফতার করতে পারেন। বিশেষ ক্ষমতা আইন বলে যে কোন নাগরিককে আটক করে বিনা বিচারে আটক রাখতে পারে। রাজনীতিতে অসত্য বা মিথ্যা একটি বড় অস্ত্র বা হাতিয়ার । এর মাধ্যমে জগতবাসী, দেশবাসী ও জনগণকে সহজেই বিভ্রান্ত করা যায়। অসত্য বা মিথ্যা কথা বলে ক্ষমতায় আসা যায়। মিথ্যা কথা বলা, মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করা আমেরিকা বা তার মিত্রদের ধর্মে পরিণত হয়েছে। লোকে বলে নিজেরাই টুইন টাওয়ার ধ্বংস করে বিশ্বব্যাপী অশান্তি বাড়িয়ে দিয়েছে। গণ বিধ্বংসী মারণাস্ত্র আছে অভিযোগ করে সাদ্দামকে হত্যা করেছে, ইরাকের লাখ লাখ মানুষকে খুন করেছে। সেই ইরাক আজও অশান্ত এবং প্রতিদিন সেখানে মানুষ মারা যাচ্ছে। সেই অশান্তি সারা আরবে  ছড়িয়ে পড়েছে। রাজনীতিতে মিথ্যা বলা নিজ দেশের মানুষ বা বিদেশীদের বিভ্রান্ত করা এখন আমেরিকার ব্যবসা।  বিশ্ব ব্যাপী যাঁরা দেশপ্রেমিকরা আজ কোনঠাসা। বংগবন্ধু সোনার বাংলা গঠণের কথা বলে দেশবাসীকে তাঁর সাথে থাকার জন্যে বা তাঁকে ভোট দেয়ার জন্যে দেশবাসীকে উদ্বুদ্ধ করেছেন। দেশের মানুষ দরাজ দিলে ১৯৭০ সালে তাঁর দলকে ভোট দিয়েছেন। তেমন কোন বড় দল সেই নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেনি। তিনি বলেছিলেন দশ টাকা মন দরে চাল দিবেন। ছাত্রদের জন্যে ছয় আনা দামে কাগজ দিবেন। না এর কিছুই তিনি করতে পারেননি। বরং ৭৩এর নির্বাচনে তাঁর লোকেরা ভোটের বাক্স লুট করেছেন। ৭৪এ দেশে দুর্ভিক্ষ নেমে আসে। লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। ৭৫এ এসে তিনি এক দলীয় রাজনীতি চালু করে তিনি শত শত সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছিলেন। সে সময়ে বংগবন্ধুর সরকার হাজার হাজার দেশপ্রেমিক যুবককে হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগের লোকেরা এসব সত্য সব সময় অস্বীকার করে এসেছে। বংগবন্ধু একদল করেছিলেন ভিন্নমতকে জোর করে দমিয়ে রাখার জন্যে। তিনি হয় মনে করতেন ভিন্নমত না থাকলে দেশের উন্নতি হবে। তিনি কখনই সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করতেন না। শুধুমাত্র কিছু দেশ ও কিছু লোককে সন্তুষ্ট করার জন্যে সমাজতন্ত্রের কথা বলতেন। সস্তা জনপ্রিয়তার জন্যে তিনি সব সময় যা বিশ্বাস করেন না তা বলতেন। আওয়ামী লীগ কখনই সমাজতান্ত্রিক দল ছিলনা। শেখ সাহেব সিপিবি, জাসদ সহ সকল বামপন্থি দলের লোকদের হত্যা করেছেন। সেদিক থেকে শেখ হাসিনা অনেক বুদ্ধিমতি। তিনি পিতার শত্রুদের দলে টেনে নিয়ে নিজের অধীনে রেখে ব্যবহার করছেন। লোকে বলে তাঁর কেবিনেটের মূল মন্ত্রীরাই হচ্ছেন বাম ঘরাণার লোক। এঁরাই তাঁকে বুদ্ধি দেয়।
বংগবন্ধু সরাসরি প্রকাশ্যে একদল করে ভুল করেছিলেন। হাসিনা সে ভুল করছেন না। তিনি ঘোষণা দিয়ে একদলীয় শাসন চালু করে বাকশালের মতো দেশ চালাচ্ছেন। তাঁর পিতা দমন করে বিরোধী দলকে ভীত সন্ত্রস্ত করে রেখেছিলেন। এখন হাসিনা বিরোধী দলের কঠোর দমননীতি চালাচ্ছেন। ২০১৩ সালে শত মানুষকে হত্যা করে বিরোধী দলের উপর দোষ চাপিয়েছেন। বিরোধী দলের রাজনীতি শুদ্ধ কি অশুদ্ধ বা ভুল কিনা সে নিয়ে আলোচনা হতে পারে। বিরোধী দলকে সন্ত্রাসী বলে গালাগাল দেয়া ঠিক হচ্ছে কিনা সে নিয়ে সকল মহলেরই ভাবা দরকার। হয়ত শেখ হাসিনাকে হয়ত কেউ বুদ্ধি দিয়েছেন যে, কঠোর দমননীতি অবলম্বন করলে বিরোধী মত ও দল আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে যাবে। এ ধরণের নীতি পাকিস্তানে আইউব খান, ইয়াহিয়া খান, ভারতে ইন্দিরা গান্ধীও গ্রহণ করেছিলেন। আজ আর সেই পাকিস্তান নেই। দমননীতি দ্বারা যে কোন দেশের স্বাধীনতা বিপন্ন হয়। স্বৈর শাসকরা এ বিষয়টা কখনই বুঝতে চায়না। ইন্দিরা গান্ধীও সিভিল ডিক্টেটর ছিলেন। তিনি গণতন্ত্রের নাম নিয়ে দেশবাসীর সাথে প্রহসন করতেন। তারই ভন্ডামীর কারণে আজ কংগ্রেসের এমন করুণ অবস্থা হয়েছে। বাংলাদেশ সউদী আরব বা মায়ানমার নয়। এ ধরণের দেশে গণতন্ত্র থাকেনা, তাই সংবাদপত্রের স্বাধীনতার প্রশ্নও আসেনা। দমন নীতিকেই শাসকরা ক্ষমতার উত্‍স বলে মনে করেই জনগণকে বাধ্য রাখে কিছুকালের জন্যে।
আপনারা প্রেস এন্ড পাবলিকেশন্স এ্যাক্ট এর ইতিহাস পড়ুন। পাকিস্তান আমলে এমন কি আইউবের আমলেও ডেপুটি কমিশনাররা পত্রিকার ডিক্লারেশন দিতে পারতেন। এখন তারা তা পারেননা। পত্রিকার ডিক্লারেশনের ব্যাপারে ডিসি অফিস শুধুমাত্র পোষ্ট অফিসের ভুমিকা পালন করেন। আমি নিজেই এ অভিজ্ঞতার অধিকারী। ওই এ্যাক্টের দাদা পরদাদা হলো বৃটিশ প্রেস এন্ড পাবলিকেশন্স এ্যাক্ট। এখন পত্রিকা প্রকাশের অনুমতি জন্যে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত ছুটতে হয়। মাঝখানে থাকে এসবি, এনএসআই, ডিজিডিএফআই সহ নানা ধরণের এজেন্সী। পত্রিকা প্রকাশের অনুমতি পাওয়া গেলেও আপনাকে সরকারী বিজ্ঞপনের তালিকাভুক্ত করা হবেনা। সে ক্ষেত্রেও নানা এজেন্সীর ক্লিয়ারেন্স লাগে।
এখনতো অনলাইন পত্রিকা, স্যোসাল মিডিয়া, রেডিও, টেলিভিশন, ফেসবুক, ইউটিউব,টুইটার ইত্যাদি প্রকাশ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। বহুকাল ধরেই পত্রিকা সহ বিভিন্ন প্রকাশ মাধ্যম স্বআরোপিত সেন্সরশীপ চালিয়ে যাচ্ছিল। সবাই মনে করে মত প্রকাশের চেয়ে পত্রিকাকে বাঁচিয়ে রাখা অনেক বেশী জরুরী। আমার দেশ, দিগন্ত টেলিভিশন ও মাহমুদুর রহমান এর জ্বলন্ত উদাহরণ।
যেমন পুলিশ আইনের তেমন কোন পরিবর্তন সংস্কার আজও হয়নি। এ ব্যাপারে দলই এক রকম । ক্ষমতায় গেলে গণ বিরোধী নিবর্তন কোন আইনেরই সংস্কার হয়না। তখন সব দলই ভাবে কিভাবে রাষ্ট্রের নিরাপত্তার কথা বলে নিজেদের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করা যায়। চলমান সরকার ওই মনোভাবের কারণেই একটার পর একটা গণবিরোধী আইন করে চলেছে। তারই বহি:প্রকাশ ঘটেছে নতুন সম্প্রচার নীতিমালায়। নীতিমালা ঘোষণা করে সরকার তার মনের ভিতর পুষে রাখা গোপন মনোভাবকে প্রকাশ করে ফেলেছে। জগতের সকল স্বেচ্ছাচারী( অটোক্রেট/ডিক্টেটর) সরকার বা শাসক হোক সিভিল অথবা সামরিক দমননীতির বা জুলুমের মাধ্যমেই জনগণকে অধিকার হীন করে রাখতে চায়। ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচনের মাধ্যমেই সরকার প্রমান করেছে জনমতের কোন প্রয়োজন নেই বা জনমতকে তোয়াক্কা করার কোন দরকার নেই। যে কোন ভাবেই হোক সংসদে দুই তৃতীয়াংশ সিট বা সদস্য সংখ্যা থাকলেই যে কোন সরকার যা ইচ্ছা তাই করতে পারে এমন একটি ধারণা জনমনে ইতোমধ্যেই তৈরি হয়েছে। মিশরের মোবারক, ফিলিপাইনের মার্কোস, ইন্দোনেশিয়ার সুহার্তো, সিরিয়ার আসাদ তথাকথিত গণতন্ত্রের নমুনা। জেনারেল আইউব ও দীর্ঘকাল ক্ষমতায় থাকার জন্যে বেসিক ডেমোক্রেসী চালু করেছিলেন। তিনিই রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্ধীদের রাজনীতি থেকে নির্বাসনে দেয়ার জন্যে এবডো বা প্রোডা আইন চালু করেছিলেন। মিশরের দিকে একবার তাকান, জেনারেল সিসি(লোকে বলে তিনি নাকি ইহুদী সন্তান) নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে নিজেই দেশের তথাকথিত নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হয়েছেন।এই ভদ্রলোক এখন ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে ইজরায়েলকে সমর্থন করছে। সউদী বাদশাহও সিসিকে সমর্থন দিচ্ছেন। বাদশাহ সউদী আরবে ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলা নিষিদ্ধ করেছেন।
বংগকন্যা মহান শেখ হাসিনা যদি তাঁর দৃষ্টিতে দেশের ভালোর জন্যে এবডো, প্রোডা আইন করেন দেশবাসীর বলার কি আছে? গণতন্ত্রের হিসাবে সংখ্যা তত্বের ভিত্তিতে মহান সংসদে তাঁর একশ’ ভাগ ক্ষমতা আছে। আমাদের দেশে এখন মহান শব্দটির ব্যবহার বেড়েই চলেছে। বলতে হবে মহান সংসদ, মহান সেনা বাহিনী, মহান আদালত, মহান রাষ্ট্রপতি, মহান বংগমাতা, মহান বংগপিতা, মহান বংগভ্রাতা ও দেশবাসী চালু করতে পারেন। মোঘল বাদশাহরা, রোমের সিজাররা, মিশরের ফেরাউনরা নানা ধরণের সম্মান সুচক খেতাব ব্যবহার করতেন। বৃটিশ আমলেও ছিল। পাকিস্তান আমলেও ছিল। বাংলাদেশেও আছে। কয়েকদিন আগে এক ভদ্র বাংগালী মহান ভারত থেকে ‘পদ্মভূষণ’খেতাব নিয়ে এসেছেন। বাংগালী বললাম এ কারণে যে , তিনি বাংলাদেশী হতে চান না।

Read Full Post »


আজানের সুর ও কিছু অসুর / এরশাদ মজুমদার

জানিনা সবাই পড়েছেন বা শুনেছেন কিনা? তবে ঈদের বিশেষ সংখ্যা প্রথম আলো’র সম্পাদক সাহেব নিশ্চয়ই পড়েছেন ও প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেই সৈয়দ সাহেবের ‘মরা ময়ুর’ নামের একটি কাব্যনাট্য বা নাট্য কাব্য প্রকাশিত হয়েছে। সৈয়দ সাহেব ভোরের কাককে আহ্বান করেছেন খুব জোরে কা কা করতে যাতে মুয়াজ্জিনের আজানটা যেন ডুবে যায় বা শোনা না যায়। সৈয়দদের ধর্মীয় কারণে আমাদের দেশের মানুষ এখনও সম্মান করে। সৈয়দ মানে নেতা বা ইমাম। রাসুলে করীম(সা) এর বংশধরদেরও সৈয়দ বলা হয়। হিন্দুদের ব্রাহ্মণদের মতো। তাঁর নামের অর্থ সত্যের সূর্য। আমরা সত্যের আলোও বলতে পারি। সৈয়দ সাহেব বাংলাদেশের একজন নামজাদা কবি ও ঔপন্যাসিক। আওয়ামী মহলে তাঁর দাম তোলায় তোলায়। বলা যেতে পারে তিনি আওয়ামী ঘরাণার ব্রাহ্মণ কবি ও বুদ্ধিজীবী।
দেশের মানুষ আরবী নামের কারণে তাঁকে একজন অতি সম্ভ্রান্ত মুসলমান মনে করতে পারেন। এ ধরণের মুসলমানকে আবার দিল্লী খুব পেয়ার করে। পদক দেয়। ক’দিন আগে ভারত থেকে আগত একজন আরবী নামধারী বুদ্ধিজীবী পদ্মভূষণ লাভ করেছেন। যদিও আমাদের মানে বাংলাদেশের সংবিধানে বিদেশী সম্মান গ্রহন নিষিদ্ধ রয়েছে বা মহামান্য রাস্ট্রপতির অনুমোদন নিতে হয়। আমাদের দেশে রাজনৈতিক কারণে মহামান্য সাহেব মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামীকে ক্ষমা করে দেন। পদ্মভুষণ গ্রহণের অনুমতি তিনিতো দিবেনই। যদিও কেন তিনি এই মূল্যবান পদক পদ্মভুষন পেয়েছেন তা দেশবাসী জানেন না। বুদ্ধিজীবী সাহেবের বাপ দাদার বাড়ি ভারতে ছিল। প্রতিবেশী দেশপ্রেমিক ও অসাম্প্রদায়িক বন্ধুদের দাংগার কারণে মাতৃভুমি ছেড়ে মুসলমানদের দেশ পাকিস্তান চলে এসেছিলেন আত্মীয় স্বজন সবাইকে নিয়ে। এখনতো আর পাকিস্তান নাই। এখন তাঁরা সবাই আবার মুসলমান পরিচয় ঝেড়ে ফেলে দিয়ে খাঁটি বাংগালী হয়ে গেছেন। সৈয়দ সাহেবেরও স্তান শব্দটা পছন্দ নয়। যদিও তিনি স্তান আমলেও একজন পেয়ারা নাগরিক ছিলেন। কাকের কা কা শব্দের জোরে তিনি আজানকে স্তব্দ করতে খায়েশ প্রকাশ করেছেন। সাথে তিনি মরা ময়ুর কাহিনীতে তাঁর কল্পনার একজন ম্যডাম নামের এক চরিত্রকে উপস্থাপন করেছেন। কল্পনার ম্যাডামকে অভিযুক্ত করেছেন নয়াস্তান বানাবার কাল্পনিক চেষ্টার জন্যে। ম্যাডাম শব্দটা নিয়ে এর আগেও সৈয়দ সাহেবের ঘরাণার লেখক বুদ্ধিজীবীরা অনেক কথা বলেছেন। এক সরকারী কবি এই বিষয়ে লিখে নাম কামিয়ে বাংগালীয়ানার সোল এজেন্ট আওয়ামী আমলে পুরস্কৃত হয়ে উচ্চ পদে আসীন হয়েছেন। ধাঙড় কন্যা বা স্ত্রীকে সৈয়দ সাহেব ম্যাডাম হিসাবে কল্পনা করে কাব্য রচনা করেছেন। তাঁর এই ম্যাডাম নাকি সংবিধানের সব কটা পৃষ্ঠা খেয়ে ফেলবেন। এবার শুনুন সৈয়দ সাহেবের ভাষায়:
‘ আমি থুতু দিই জনতার মুখে
যত আছে ভুখা নাঙা,
জানিসনে তোরা আমার স্বপ্ন
ওই নৌকার হাল ভাঙা!
মুক্তিযুদ্ধ, সোনার স্বদেশ, স্বপ্নের সব বাড়ি-
ভেঙে ফেলি আমি
লাথি মারি -লাথি মারি!
আরও কী?
ইতিহাস আমি চিবিয়ে চিবিয়ে
থেঁতো করে তবে ছাড়ি!
হঠ যাও সব, হট যাও!
তফাত তফাত হো যাও!
দেখো মেরি জান,
হামারি হাত ছে ক্যায়সে বানাউঁ
দেশ মে নয়াস্তান।
ফির নারা লাগায়া! ফির শ্লোগান!
হল্ট মেশিনগান’।
সৈয়দ সাহেব আবার খেলারামের উস্তাদ। তিনি সকল রকম কামের গুরু। তিনি কামদেব। তিনি শতযোনি সৃষ্টি করেও কন্যাকে কুমারী রাখতে পারেন। বাংলাদেশের সাহিত্যে লীলা খেলার জনক। তাই আওয়ামী ঘরাণায় তিনি পূজনীয় কবি ও সাহিত্যিক। মরা ময়ুর কাব্যনাট্যে তিনি আরও যত কামকর্মের বর্ণনা দিয়েছেন আমি তার উল্লেখ করলাম না। পাঠকগণ প্রথম আলোর বিশেষ সংখ্যাটি বেশী দামে কিনতে পারেন অথবা যাঁরা কিনেছেন তাঁদের কাছ থেকে ফটোকপি করতে পারেন। এতে প্রথম আলোর প্রচারও বাড়বে। তবে কবিতা বা বিমূর্ত শিল্পকর্মের বহুমাত্রিক ব্যাখ্যা অবশ্যই থাকতে পারে। সেদিক থেকে আমার ভাবনার সাথে সৈয়দ সাহেবের ভাবনার মিল নাও থাকতে পারে।
আরেকজন সৈয়দ সাহেব আছেন যাঁর বাপদাদারা ভারত থেকে পূর্ব পাকিস্তানে এসেছিলেন মুসলমান হিসাবে। তিনি একজন নামজাদা অভিনেতা। মঞ্চ, সিনেমা, নাটক, সংস্কৃতি ,রাজনীতি
সবখানেই তিনি পাকা অভিনেতা। বাংলাদেশে কিছু হলেই তিনি এবং তাঁরা পূর্ব পুরুষের দেশে চলে যান। কি কারণে তাঁরা তাঁদের মাতৃভুমি ভারত মাতা ছেড়ে এদেশে চলে এসেছিলেন তা এখন আর বলতে চান না। যাঁরা একবার নিজ মাতৃভুমি ত্যাগ করতে পারেন তাঁরা বার বার দেশত্যাগ করতে পারেন। ৪৭ এর আগে পরে যাঁরা মাতৃভুমি ছেড়েছেন তাঁরা আসলেই রুটলেস বা শিকড়হারা। তাঁরা এখন একেবারেই আদি অকৃত্রিম বাংগালী হওয়ার কাজে নিবেদিত আছেন। ভারতও বাংলাদেশকে ষোলয়ানা বাংগালীদের রাষ্ট্র হিসাবে দেখতে চায়। এখানকার মুসলমানেরা যেন কখনই মুসলমান না ভাবতে পারে সেজন্যে শিকড়হীন সৈয়দদের কাজে লাগাচ্ছেন। ভারতের বক্তব্য হলো যদি তোমরা মুসলমানই থাকতে চাও তাহলে পাকিস্তান ছাড়লে কেন? আমরাতো তোমাদের স্বাধীন করে দিয়েছি খাঁটি বাংগালী হওয়ার জন্যে।
প্রথম আলো সম্পাদক মতি সাহেব এর আগে আজে বাজে জিনিষ ছাপিয়ে বায়তুল মোকাররমের খতিব সাহেবের কাছে গিয়ে তওবা করেছেন। প্রথম আলো বা একই বংশীয় বা গোত্রীয় লোকজন ও প্রতিষ্ঠান একটি ধর্মমুক্ত বা ধর্মহীন সমাজে বিশ্বাস করেন। এতে কারো কোন আপত্তি বা ওজর থাকার কথা নয়। এমন কি প্রথম আলো যদি ঘোষণা দেয় যে, প্রত্রিকাটি কোন ধর্মে বিশ্বাস করেনা। তাই ধর্মহীন একটা সমাজ প্রতিষ্ঠার দর্শন বা আদর্শ নিয়ে তাঁরা কাজ করছেন। আমি মনে করি সে অধিকার তাঁদের আছে। মতি সাহেব একদা বাম চিন্তাধারার নেতা ছিলেন। এখন পুঁজিপতিদের সেবা করেন। তাঁর কাগজের( ফার্স্ট লাইট মানে যিশু)মালিক বৃটিশ আমলের খানদানের ওয়ারিশ। ওই খানদানের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন একজন পেশকার। সাহেবেরা বলেন, পিএ বা পিএস। পরে তাঁরা নবাব বাহাদুর, খান বাহাদুর,খান সাহেব হয়েছেন। মালিক সাহেবের সাথে নাকি কোন এক উলফানেতার আত্মীয়তা রয়েছে।
আজান বা আযান শব্দটি আরবী। এর মানে আহবান করা, ডাক দেওয়া, অবহিত করা বা ঘোষণা দেওয়া। আজান চালু হয়েছে পহেলা হিজরী সনে মদিনায়। প্রার্থনার সময় হলে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ বিভিন্ন ভাবে প্রার্থনার জন্যে আহবান। মুসলমানদের সালাত বা নামাজের আগেও এই আহবানের ব্যবস্থা ছিল। ভারতের হিন্দুরা ঘন্টা বাজিয়ে পূজা বা প্রার্থনার আহবান জানায়। উলু ধ্বনিও দেয়। শাঁখের আওয়াজও দেয়। ঢোল বাজায়। নাসারা বা খৃষ্টানদের গীর্জা থেকে নকুশ বা ঘন্টা বাজানো হয়। জুডায়িষ্ট বা ইহুদীরা শিংগায় ফুক দেয়। নবীজী(সা) আজানের সুমধুর ডাকের ব্যবস্থা করেন । যিনি আযান দিবেন তাঁর পদবী বা পদের নাম হলো মুয়াজ্জিন। ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন হলেন হজরত বেলাল(রা)। তাঁর সুমধুর কন্ঠের ধ্বনি আজও বিশ্বে জারী রয়েছে। প্রতিদিন বিশ্বের লাখ লাখ মসজিদে পাঁচবার আজান দেয়া হয়। আজানের মধুর সুর শোনার জন্যেই বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছিলেন, মসজিদের পাশে আমার কবর দিও। কবরে শুয়ে আমি যেন সুমধুর আজানের ধ্বনি শুনতে পাই। আল্লাহপাক নজরুলের মুনাজাত শুনতে পেয়েছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদের পাশেই শুয়ে আছেন। আল্লাহপাকের দরবারে কোটি কোটি শোকর। আমিতো মনে নজরুল ছিলেন একজন দরবেশ কবি। তাই মহান আল্লাতায়ালা তাঁর কথা শুনেছেন। সেই আজান সম্পর্কে সৈয়দ সাহেবের আকুতি কাকের কাছে। কাক যেন আজানের আওয়াজকে ডুবিয়ে দেয়। আজানের সুর নিয়ে এর আগেও বাংলাদেশের বেশ ক’জন বুদ্ধিজীবী আজে বাজে মন্তব্য করেছেন। তাঁদের অনেকেই জগতে নেই। আজান চলছে। খোদার হুকুমে আগামী দিনেও চলবে। সৈয়দ সাহেব আজানের উপর এত ক্ষ্যাপা কেন দেশবাসীর মনে প্রশ্ন জাগতে পারে। তিনিতো সৈয়দ বংশর লোক। এ নামের বরকতেই হয়ত তিনি আজ সমাজে সম্মানিত। তাঁর কাছে কাকের সুর ভাল লেগেছে। তাই আজানের সুরকে ডুবিয়ে দেয়ার জন্যে কাকের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। আসলে তিনি কি ইসলাম ত্যাগ করেছেন? ইসলাম গ্রহণে কোন জবরদস্তি নেই। কিন্তু কোন মুসলমান যদি ইসলাম ত্যাগ করতে চায় তাকে মোনাফেক সাব্যস্ত করা হবে। মোনাফেকের অবস্থা কাফের( অবিশ্বাসী, সত্য প্রত্যাখ্যানকারী) এর চেয়েও খারাপ। সৈয়দ সাহেবের এ লেখায় বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মে আঘাত লাগতে পারে। তবে তিনি সৌভাগ্যবান যে, বিনা ভোটে নির্বাচিত ক্ষমতাসীন সরকার ধর্মের ব্যাপারে তেমন আগ্রহী নয়।
আজান বাংলাদেশের ৯০ ভাগ মানুষের ধর্মীয় আচার ও বিশ্বাসের সাথে জড়িত। আজান শুনেই নামাজীরা মসজিদে যান বা ঘরে বসে নামাজ কায়েম করেন। সেই ৯০ ভাগ মানুষের ধর্মীয় অনুভুতিকে নিয়ে নিয়ে তিনি মসকরা করেছেন। আমি জানি, আমার এ লেখার বিষয় নিয়ে সৈয়দ সাহেবের ভক্তরা আমাকে গালমন্দ করবেন।
ধর্মের অধিকারের বিষয়টা জাতিসংঘের সনদে স্বীকৃত ও সংরক্ষিত। তবুও এ জগতে বহু পরধর্ম অসহিষ্ণু ও সাম্প্রদায়িক দেশ ও সরকার আছে যারা আজান ও কোরবানীকে নিয়ন্ত্রন করতে চায়। ভারতে বহু এলাকা আছে যেখানে মাইকে আজান দেয়ার অনুমতি নেই। ভারতে বহু এলাকা আছে যেখানে মসজিদ গুলোতে তালা ঝুলছে। ৪৭এর পরে সেসব এলাকা মুসলমান শূণ্য হয়ে গেছে। আমি একবার হজরত মোজাদ্দেদ আলফসানীর মাজারে গিয়েছিলাম। নামাজের ওয়াক্তে আজান দেয়া হয়না। কারণ সেখানে এখন হাতে গোণা কয়েকজন মুসলমান আছেন। বিরাট মসজিদ, কিন্তু নামাজী নাই। মোজাদ্দেদ আলফ সানী সাহেবই ইসলামের পূণর্জাগরণের জন্যে দিল্লীর বাদশা্দের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছিলেন। বাদশাহ আকবর যে দ্বীনে ইলাহী চালু করার চেষ্টা করেছিলেন তা জারী থাকলে ভারত থেকে ইসলামের নিশানা মুছে যেতো।
ধর্মীয় কারণেই দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে বিজয়ী শক্তি ইহুদীদের খুশী করার জন্যে ১৯৪৮ সালে ইজরায়েল নামক একটি ধর্মীয় রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে। সেই থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি নির্বাসিত হয়েছে। সীমাহীন দু:খ ও বেদনার বিষয় হলো গাজায় চলমান গণহত্যায় সউদী আরব ও তার মিত্ররা ইজরায়েলকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। এটা ইসলাম ও মুসলমানদের ইতিহাসে একটি কলংকিত অধ্যায় হিসাবে লিপিবদ্ধ হয়ে থাকবে। গাজায় গণহত্যায় ওআইসি কেন নিন্দা জানাতে পারেনি মহাসচিব বিবৃতি দিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি সুস্পষ্ট করেই বলেছেন সউদী বাদশাহ ইসলামী বিপ্লবের ভয়ে ফিলিস্তিনীদের সমর্থন করেন না। আমার অন্তরে ভয় জেগেছে যে, সউদী বাদশাহরা আর কতদিন নিজেদের রক্ষা করতে পারবেন।
সোভিয়েত রাশিয়া ও গণচীন সহ সমাজতান্ত্রিক ব্লকের বহু দেশে বহুকাল ধরে ইসলাম সহ বহু ধর্ম নিষিদ্ধ ছিল। সংযুক্ত রাশিয়া ভেংগে যাওয়ার পর মসজিদের দুয়ার গুলো আবার খুলে যায়। মুসলমানেরা আবার ধর্ম চর্চা শুরু করেন। চীনে এখনও মুসলমানদের উপর অত্যাচার চলছে। এ বছরের রোজা রাখার ব্যাপারে বাধা সৃষ্টি করেছে চীন সরকার। চীনের উইঘুরের মুসলমানদের উপর উপর সীমাহীন অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। রোমে গিয়ে দেখেছি সেখানে একটি ইসলামিক সেন্টার আছে যার ভিতরে একটি মসজিদ আছে। মসজিদ নাম দিয়ে সেখানে কোন নামাজ ঘর করা যাবেনা। তবে আশার কথা হলো ইউরোপ ও আমেরিকা এ ব্যাপারে লিবারেল। সেখানে মুসলমান বাড়ছে এবং সাথে সাথে মসজিদও বাড়ছে। বৃটেনে পুরাণো গীর্জা বিক্রি হচ্ছে। মুসলমানেরা গীর্জার জায়গা ক্রয় করে মসজিদ বানাচ্ছেন। মুসলমানেরা ইসা নবীকে(আ) যেভাবে সম্মান করে খৃষ্টবাদে বিশ্বাসীরা সেভাবে সম্মান করেনা। তারাই ইসা নবীর(আ) নামে আজে বাজে বই লেখে ও সিনেমা বানায়। লাষ্ট টেম্পটেশান তার জলন্ত উদাহরণ। ইসা নবী(আ) মুসলমানদের বিশ্বাসে অংগ। যে কোন মুসলমানকেই ইসা নবীকে(আ) সম্মান করতেই হবে। তবে এ কথা সত্যি যে, বাংলাদেশে গুটি কতক বুদ্ধিজীবী আছেন যাঁরা মাঝে মধ্যেই ধর্ম সম্পর্কে, বিশেষ করে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে আজে বাজে কথা বলে থাকেন। কিছু বুদ্ধিজীবীকে মারা যাওয়ার পর শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়া হয়। নীরবতা পালন করে তাঁদের প্রতি সম্মান দেখানো হয় আর রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করা হয়। এটা নাকি ধর্ম নিরপেক্ষ বা ধর্মহীনদের শেষকৃত্যের নমুনা। আমাদের শহীদ মিনার নাকি সেক্যুলারিজমের কেন্দ্র। অনেকেই নাকি অছিয়ত করে যান তাঁদের জানাজার নামাজ না পড়ানো হয়। এসব অনুষ্ঠানে আমাদের মন্ত্রী সাহেরাও অংশ গ্রহণ করেন। বংগবন্ধুর আমলেই দাউদ নামের এক কবি ধর্মের বিরুদ্ধে কলম ধরে দেশ থেকে নির্বাসিত হয়েছেন। বংগবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন দাউদকে দেশে রাখলে ঝামেলা হতে পারে। একই ভাবে তসলিমা নাসরিন ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধ বলে বিদেশে খ্যাতি লাভ করেছেন। এখনও তিনি মাঝে মধ্যে আজে বাজে কথা বলে খবরের কাগজে স্থান করে নেন। বর্তমান আওয়ামী লীগ আমলেও তসলিমা নিজ মাতৃভুমিতে ফিরে আসছেন না।এর রহস্য কি তা তসলিমা নিজেই ভাল জানেন।
আজানের প্রসংগে আবার ফিরে আসি। আজান চালু করেছেন জগতনবী হজরত মোহাম্মদ(সা)। তিনিই আমাদের কাছে আল্লাহর কিতাব আল কোরআন পেশ করেছেন। তাঁর কাছেই মানব জাতি ইসলামের কথা শুনেছে। হজরত আয়েশা(রা) বলেছেন, আল্লাহর রাসুল হচ্ছেন জীবন্ত কোরআন। আল্লাহপাক নিজেই বলেছেন, তোমরা আমার রাসুলকে(সা) ভালবাস,তাহলেই আমাকে ভালবাসা হবে। আমার রাসুলের(সা) নির্দেশিত পথে চলো। নবীজীকে আল্লাহপাক স্বয়ং জগতের রহমত বলে ঘোষণা দিয়েছেন। আলকোরআন জগতবাসীর জন্যে শেষ কিতাব আর নবীজী হচ্ছেন শেষ নবী ও রাসুল। নবীজীর নির্দেশিত পথ হচ্ছে সালাত বা নামাজের সময় হলে মসজিদের মিনারে আজান দিয়ে আহবান জানানো হবে। সেই আজান সম্পর্কে বিদ্রুপ করার অর্থ কী? আর প্রথম আলোই কী ভাবে এমন একটি লেখা প্রকাশ করলেন? হঠাত্‍ কেন তিনি আজানের শব্দকে ডুবিয়ে দিতে কাককে আহবান জানালেন? বাংলাদেশের জ্ঞানী গুণীজনদের কাছে আমার আকুল আবেদন, আপনারা ধর্ম পালন না করুন এতে কারো কিছু বলার নেই। দয়া করে ধর্মে বিশ্বাসীদের মনে আঘাত দিয়ে কিছু লিখবেন না, কিছু বলবেন না। আপনাদের যদি কোন আদর্শ বা ধর্ম থাকে তা প্রচার করুন, কেউ আপনাকে বাধা দিবেনা। কিন্তু নিজের মত, আদর্শ বা ধর্ম প্রচার করতে গিয়ে অন্যের ধর্মকে নিয়ে বিদ্রুপ করা নীতিবান লোকের কাজ নয়।
লেখক: কবি ও ঐতিহ্য গবেষক
http://www.humannewspaper.wordpress.com

Read Full Post »