Feeds:
Posts
Comments

Archive for May, 2009


1.

I am not a performing religious person in truest sense. But I am not  a God fearing person. I am a God loving person. Really I am in love with my creator. I know God has not created me out of anger. He created me out of love. He created me after everything He crteated on this planet. One day He had a look on a miracle mirror and fell in love with His own image. So finally He decided to create me out of His own image. So I am here. I shall return to Him when my time on this planet will be over. One day a messanger ( feresta) of God will come to me to take back THE RUH God has given me. RUH belogs to God. This body clay belogs to the earth. I am no where and I am no body. The RUH will be stored in the world of RUH( Alme Arwan) till the day of judgement.

২।

আমি খোদাকে ভয় করিনা। কারণ আমি খোদাকে খুবই ভালবাসি। আমি জানি    খোদা রাগ করে বা ক্ষেপে গিয়ে আমাকে সৃস্টি করেন নি। দুনিয়া খুবই বাজে জায়গা। এখানে ভুল ভ্রান্তি হতেই পারে। মানুষের ভুল হওয়া খুবই স্বাভাবিক। তার উপরে লেগে রয়েছে এক মহা শয়তান। দিনরাত তার জ্বালা। দিনরাত তার ফুসলানি। সংসার আরেক মায়াময় জিনিস। যা মানুষকে দুনিয়া পাগল করে রাখে। যদিও খোদা বলেছেন যে, আমাকে বেশী ভালবাস। কিন্তু পারি কই। খোদার নিয় কানুন খুবই সহজ তবুও সেই নিয়ম পালন করতে পারিনা। তাইতো সব সময় খোদার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি। বলি তুমি ছাড়াতো আমার কেউ নেই।তুমিতো ভাল করেই জানো আমার মন ও হৃদয়ের কথা। তুমি ক্ষমা না করলে আমাকে আর কে ক্ষমা করবে? তুমি আমাকে আগুন থেকে রক্ষা করো। যাকে তুমি ভালবেসে সৃস্টি করেছো তাকে শাস্তি দিয়ে তোমার কি লাভ? ক্ষমা করো , ক্ষমা করো।

Read Full Post »


      
               
                  ____________________________

     পে কমিশন নিয়ে বিশ্বব্যান্ক ও আইএমএফ ইতোমধ্যে অনেক কথা বলেছে। যা বলা
     তাদের উচিত কিনা এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন আছে। সম্প্রতি বিশ্বব্যান্ক দেশের
     আভ্যন্তরীন বিষয়ে নানা সময়ে নানা কথা গায়ে পড়ে বলে যাচ্ছে। এসব কথা
     অনেক সময় বিরক্তি উত্পাদন করে। অর্থমন্ত্রী অবশ্য মাঝে মাঝে এসব কথার
     প্রতিবাদও করে থাকেন। যদিও অনেকেই মনে করেন তিনি বিশ্বব্যান্কেরই লোক এবং
     তাদের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী কাজ করেন।
     সরকারী ও আধা সরকারী কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি একটি অপরিহার্য কাজ। দ্রব্যমূল্য
     ও জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ার সাথে সামন্জস্য রেখে সরকারকে এ কাজ করতে হয়।
     সরকারের সামর্থের সাথে সংগতি রেখেই এ কাজ করা জরুরী। অর্থমন্ত্রী অবশ্য বলেছেন
     রাজস্ব আয় বাড়িয়ে নতুন পে স্কেল বাস্তবায়ন সম্ভব। বিশ্বব্যান্ক পরে অবশ্য অর্থমন্রীর
     এ বক্তব্য সমর্থন করেছে। দেশের রাজস্ব আদায় ব্যবস্থায় ব্যাপক ফাঁক ফোকর ও
     ব্যাপক দূর্ণীতি রয়েছে, এ অভিযোগ বহুদিনের। রাজস্ব আদায় ব্যবস্থার সংস্কার ও
     উন্নতি হলে এখনি ৫০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় সম্ভব। রাজস্ব ব্যবস্থায়
     আমূল সংস্কার প্রয়োজন এ কথা বহুদিন ধরে বলা হচ্ছে। কিন্তু হয়নি। সংস্কার সাধিত
     হলে বিদেশী সাহায্য বা ঋণের প্রয়োজন হবেনা। বিশ্বব্যান্কের বকবকানিও শুনতে
     হবেনা। কথা ছিল সরকারের সাইজ ছোট করা হবে। তা করা হয়নি।বরং দিন দিন
     সরকারের সাইজ বড় হচ্ছে, ব্যয়ও বাড়ছে। ই_গভার্ণেস প্রতিষ্ঠা করার কথাও ছিল।
     তাও হয়নি। এ ব্যপারে সরকারের কোন আগ্রহ আছে বলে মনে হচ্ছেনা। বে সরকারী
     ব্যবস্থাপনা এক্সপার্টদের আরও বেশী গুরুত্ব দিয়ে সুফল পাওয়ার জন্যে সরকারী কাজে    
     নিয়োগ করতে হবে। বোর্ড অব ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিবেশ পরিবর্তনের ফলে
     বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে বহুলাংশে। বিওআইতে ই_গভার্ণেস চালু হয়েছে। আমলা
     বা সাবেক আমলা দিয়ে বর্তমান বিশ্ব পরিবেশে বাংলাদেশের উন্নয়নে পরিবর্তন আনা
     যাবেনা। আমলা বলতে কোন ব্যক্তির কথা বলা হচ্ছেনা। পুরো আমলাতন্রের কথা
     বলা হচ্ছে। পুরণো জং ধরা আমলাতন্রের মাধ্যমে উন্নয়নের নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জন
     করা যাবেনা। রাজনীতিকরা কিন্তু আমলাদের ঘাটাতে চান না।

     পে স্কেল বাস্তবায়নের সাথে সাথে সরকারকে অবশ্যই বাজার দরের দিকে নজর রাখতে
     হবে। ব্যবসায়ীরা অকারণে বেশী লাভ ও লোভের বশবর্তী জিনিষপত্রের দাম বাড়িয়ে
     দিতে পারে। অতীতে সব সময় তাই হয়েছে। ইতোমধ্যে সংসদে বিরোধী দলের নেত্রী সহ
     আরো অনেকেই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির আশংকা করেছেন। অবশ্য বিরোধী দলের নেত্রীর
     বক্তব্য ছিলো পুরোপুরি রাজনৈতিক। ওই বক্তব্যকে আওয়ামী লীগের বক্তব্য বললেই
     বেশী শোভন হয়।
     মুদ্রাবাজার ব্যবস্থাপনায় কেন্দ্রীয় ব্যান্কের ভূমিকাও এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। ইতোমধ্যেই
     ব্যান্কের সুদের হার বেড়েছে। অনেক বেশী আমদানী হওয়ায় বাজারে ডলারের চাহিদা
     বেড়েছে। ডলারের মূল্যও বেড়েছে। ফলে আমদানীকৃত পণ্যের দাম বেড়েছে। ডলারের
     তূলনায় টাকা দূর্বল হয়ে পড়েছে। গত আট মাসে বাণিজ্য ঘাটতি প্রায় ২৭৮ কোটি
     ডলার। অস্বাভাবিক হারে অপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানী বৃদ্ধি পেয়েছে। মুক্ত বাজার
     অর্থনীতির নামে যে কোন পণ্য আমদানীর ব্যাপারে এখনি হুঁশিয়ার হওয়া দরকার।
     ভোগ্যপণ্য প্রস্তুতের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন অনেক বেশী স্বাবলম্বী। এ ব্যাপারে সরকারের
     চোখকান খোলা রাখার সময় এসে গেছে। বিদেশী মুদ্রার বাজারে বর্তমান অস্থিরতার
     কারণ খুঁজে বের করা দরকার। ডলারের দাম ৫৮ থেকে ৬০ টাকার ভিতর রাখা
     দরকার।বিদেশী মুদ্রার রিজার্ব ভাল থাকার পরও বিদেশী মুদ্রার বাজারে এই অস্থিরতা
     কেন? অনেকে বলছেন, দেশে ইনফরমাল ট্রেড বা অনানুষ্ঠানিক ব্যবসা বেড়ে গেছে।
     শুধুমাত্র শুল্ক ফাঁকি দিয়ে টাকার মালিক হওয়ার জন্যে ব্যবসায়ীরা ইনফরমাল ট্রেডের
     আশ্রয় নিচ্ছে।
     বাংলাদেশের চলতি জীবনযাত্রার মান কিছুটা উন্নত হয়েছে। দূর্ণীতি মান বাড়ার ক্ষেত্রে
     বড় ভূমিকা পান করেছে। যার আয় মাসে তিন হাজার টাকা সে ছ’হাজার টাকার
     জীবন যাপন করে। বাড়তি তিন হাজার টাকা সে সত্ উপায়ে আয় করেনা। যে কোন
     উপায়ে ভাল জীবন যাপন করা বাংলাদেশের মানুষের রক্তে প্রবেশ করে গেছে। তবে
     অতি সাধারন মানুষ এর আওতায় আসেনা। যেমন একজন কৃষক ও দিনমুজুর বা
     একজন রিকশাশ্রমিক। দেশের ৮০ ভাগ রাজনীতিকের আয়ের প্রকাশিত সূত্র নেই। এরা
     আয়কর দেন কিনা দেশবাসী জানেনা। রাজনীতিকদের আশ্রয়ে ব্যবসায়ীরাও ঠিকমতো
     কর সহ অন্যান্য শুল্ক পরিশোধ করেন না। তাই কালো টাকা সাদা করার দাবী সব
     সময় জারী থাকে। যদিও অর্থমন্রী বলেছেন, এ সুযোগ আর জারী থাকবেনা। কর ও
     শুল্ক ফাঁকি দেওয়া ব্যবসায়ীদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশে রাতারাতি ধনী
     হওয়ার এটা একটা বিরাট পথ। একই কারণে শুল্ক ও কর কর্তারা দিন দিন বিত্তবান
     হচ্ছে। এসব ঘটছে কিন্তু সবার জানামতে। যেহেতু রাজনীতিকরা সত্ জীবন যাপন
     করেন না সেহেতু এ ব্যাপারে তাঁরা চুপচাপ থাকেন। এটা পরিস্কার যে বাংলাদেশে       
     দূর্ণীতির মূল প্রোথিত রয়েছে রাজনীতি ও রাজনীতিকদের মাঝে। এরা যতদিন দূর্ণীতির
     সাথে জড়িত থাকবে ততদিন দেশ থেকে দূর্ণীতি যাবেনা।

Read Full Post »


 

             
              
      বিশ্ব মানবতার কবি নজরুল শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অনেক কিছুই
      আমাদের অজান্তেই ভাগ্য একই সুত্রে গ্রথিত করে রেখেছে। দুজনই সৈনিক।দুজনেই
      করাচীতে বেংগল রেজিমেন্টের মাধ্যমে সৈনিক জীবনের যাত্রা শুরু করেছেন।
      একজন শুরু করেছেন ১৯১৭ সালে, আরেকজন শুরু করেছেন ১৯৫৩ সালে।
      দুজনেরই প্রথম কর্মস্থল করাচী। আর দুজনই শেষ জীবনে ঢাকায় ছিলেন।
      দুজনেরই পূর্বপূরুষ ছিলেন সম্ভ্রান্ত ও সম্মানিত।
      ১৮৯৯ সালের ২৪শে মে (১৩০৬ বাংলা সালের ১১ই জ্যৈষ্ঠ) নজরুল বর্ধমান
      জেলার আসানসোল মহকুমার জামুরিয়া থানার চুরুলিয়া গ্রামের পীরপুকুর পাড়ে
      জন্মগ্রহন করেন। কাজীবাড়ীর পূর্বপার্শ্বে ছিল নরোত্তম সিংহের গড়।পশ্চিমপার্শে
      ছিলো হাজী পাহলোয়ান শাহের পুকুর। পীরের মাজার ছিলো পশ্চিম পাড়ে।
      ১৭৬৫ সালে পাটনার পতন হলে কাজী কেফায়েত উল্লাহ,যিনি নবাবের প্রধানকাজী
      ছিলেন পীরপুকুর পাড়ে বসতি স্থাপন করেন। তখন থেকেই কাজী পরিবার মসজিদ
      ও মক্তবের খাদেম হিসাবে জীবন যাপন করতে শুরু করেন। তাঁরা কখনই
      নিজদের পূর্ব পরিচয় জনসাধারণের কাছে প্রকাশ করেননি। রাজনৈতিক কারণেই
      আত্মগোপন করেছিলেন।
      কাজী পরিবারে আধ্যাত্ববাদ ও পীরাকী ধারার শুরু হয়েছে হজরত গোলাম
      নকশবন্দ থেকে। জন্মসূত্রেই নজরুল আরবী ফার্শী উর্দু চর্চার সুযোগ লাভ করেছেন।
      কবি এই ভাষাগুলো সাবলীল ভাবে লিখতে ও পড়তে পারতেন। তাঁর নিজ হাতের
      হিন্দি লেখাও আমরা দেখেছি।
      জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের ১৯শে জানুয়ারী বগুড়ার বাগবাড়ী গ্রামে একটি
      শিক্ষিত সংস্কৃতিবান পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তাঁর বাবা মনসুর রহমান ছিলেন
      সরকারে সিনিয়র কেমিস্ট। মা জাহানারা খাতুন রাণী ছিলেন জলপাইগুড়ির
      বিখ্যাত চা বাগানের মালিক আবুল কাশেমের কন্যা। তিনি একজন সুকন্ঠী
      নজরুল সংগীত শিল্পী। করাচী বেতারে তিনি নিয়মিত গাণ পরিবেশন করতেন।
      জিয়ার দাদা ছিলেন মৌলভী কামাল উদ্দীন। তিনি একজন আধ্যাত্ববাদী পুরুষ
      ছিলেন। তিনি খুবই সাদাসিধে পীরের জীবন যাপন করতেন। দাদার এই জীবনযাত্রা
      ছিল জিয়ার ব্যাক্তিগত জীবনের আদর্শ।
      জিয়ার ডাকনাম ছিল কমল। শিশু কমলের হাতেখড়ি হয়েছিল কোলকাতার হেয়ার
      স্কুলে। বিশ্বযুদ্ধের সময় তাঁদের পরিবার বগুড়ার গ্রামের বাড়ী চলে আসে। প্রায়
      দু’বছর তাঁরা গ্রামে ছিলেন। এ সময় জিয়া গ্রামের স্কুলেই লেখাপড়া করেন।
      পাকিস্তান হওয়ার পর ১৯৪৮ সালে মনসুর রহমান করাচীতে কেন্দ্রীয় সরকারের
      অধীনে সিনিয়র কেমিস্ট হিসাবে যোগদেন। ওই বছরই জিয়া করাচী একাডেমী
      স্কুলে ভর্তি হন। এই স্কুলটি বর্তমানে তৈয়ব আলী আলভী একাডেমী নামে পরিচিত।
      এই স্কুল থেকেই ম্যাট্রিক পাশ করেন এবং করাচীর ডি জে কলেজে ভর্তি হন।
      ১৯৫৫ সালে তিনি সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন।
      কে বলে বাংগালী যোদ্ধা নয়? কে বলে বাংগালী ভীতু? প্রশ্নগুলো ছিল দেয়ালের
      লিখন। সতেরো বছরের তরুন নজরুলের রক্তে আগুন জ্বলে উঠলো দেয়ালের
      লেখা দেখে। ৪৯ নম্বর বাংগালী পল্টনে সৈনিক নিয়োগের পোস্টার ছিল ওই
      দেয়ালের লিখন। সালটি ছিল ১৯১৭।প্রথম বিশ্বযুদ্ধের তৃতীয় বছর। নজরুল
      নবগঠিত বেংগল যোগ দিয়ে চলে গেলেন নৌশেরা। তিনমাস ট্রেনিংয়ের পর
      করাচী বন্দরে এলেন গানজা লাইনের ব্যারাকে। সাত হাজার বাংগালী যুবক
      নিয়ে গঠিত হলো বেংগল রেজিমেন্ট। অল্প সময়ের মধ্যেই নজরুল সৈনিক হিসাবে
      যোগ্যতার পরিচয় দিলেন। হয়ে গেলেন কোয়ার্টার মাস্টার হাবিলদার। করাচীতেই
      নজরুলের পূর্ণাংগ কবি জীবনে প্রবেশ ঘটে। এখনেই বাংলার বিপ্লবী বিদ্রোহী
      কবির সাথে পরিচয় ঘটে জগত বিখ্যাত সুফী কবি রুমী হাফিজ সা’দীর সৃস্টির
      সাথে। মানুষের অধিকার প্রতিস্ঠা আর খোদার প্রেমের নতুন সবক নিয়ে কবি
      ফিরে আসেন বাংলার মানুষের কাছে ১৯২০ সালে। বাংলার মানুষ দেখলো সম্পূর্ণ
      এক নতুন নজরুলকে। কোলকাতায় দেখা হলো শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের
      সাথে। কবি দায়িত্ব নিলেন দৈনিক নবযুগের। পত্রিকার সম্পাদকীয় নীতি নিয়ে
      হক সাহেবের সাথে দ্বিমত হলে নজরুল পদত্যাগ করেন।
      দেশের স্বাধীনতা আর মানুষের মুক্তির জন্যে তখন কবির মনেপ্রাণেদেহে বিদ্রোহের
      আগুন জ্বলছে। কোথাও কবি স্থিতু হতে পারছিলেন না। ১৯২২ সালের ১১ই
      আগস্ট তিনি ধুমকেতু প্রকাশ করলেন। ধুমকেতুর ২২শে সেপ্টেম্বর সংখ্যায়
      প্রকাশিত ‘আনন্দময়ী’কবিতার জন্যে রাজরোষে পড়েন এবং ২৩শে নবেম্বর
      গ্রেফতার হন। বিচারে কবির এক বছর সশ্রম কারাদন্ড হয়। রাজবন্দীদের
      সাথে দূর্ব্যবহারের প্রতিবাদে কবি জেলখানায় ৩৯ দিন অনশন করেন। এ বছরই
      রবীন্দ্রনাথ তাঁর বসন্ত নাটকটি নজরুলকে উত্সর্গ করেন। ১৯২৪ সালে কবির
      ‘ভাংগার গাণ’ ও ‘বিষের বাঁশী’ প্রকাশিত হয় এবং ১১ই নবেম্বর বই দুটি
      সরকার বাজেয়াপ্ত করে।
      ১৯৩০ সালের আগস্ট মাসে ‘প্রলয়শিখা’ প্রকাশিত হলে দখলদার সরকার তা
      বাজেয়াপ্ত করে কবিকে ছ’মাসের কারাদন্ড দেয়। গান্ধী-আরউইন চুক্তির ফলে
      কবি মুক্তি পান। আবার ৬ই নবেম্বর কবি গ্রেফতার হন।
      স্বাধীনতার মহান কবি দারিদ্র ও সরকারের অত্যাচারে মানসিকভাবে ভেংগে
      পড়েন এবং ১৯৪২ সালের ১০ই জুলাই কঠিনরোগে আক্রান্ত হন। তিনি স্মৃতিশক্তি
      হারিয়ে ফেলেন। কবি আর সুস্থ হয়ে উঠেন নি। ওই অবস্থায় ১৯৬০ সালে
      ভারত সরকার কবিকে পদ্মভূষণ উপাধি প্রদান করেন। পদ্মভূষণ উপাধিতে
      সম্মানিত হলেও কবির থাকা খাওয়া ও চিকিত্সার তেমন কোন সুব্যবস্থা সেখানে
      হয়নি।
      ১৯৭৩ সালের ২৪শে মে কবিকে তাঁর স্বপ্নের স্বাধীন জন্মভুমি বাংলাদেশে নিয়ে
      আসা হয় সরকারী উদ্যোগে। ১৯৭৫ সালে কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানসূচক
      ডি লিট ডিগ্রী প্রদান করে।
      ১৯৭৬ সালে স্বাধীন বাংলার মাটিতে মিলন হয় স্বাধীনতা ও মুক্তির দুই মহান
      সৈনিকের। একজন রাস্ট্রনায়ক আর অপরজন বিপ্লবী কবি ও সৈনিক। পিজি
      হাসপাতালে চিকিত্সাধীন থাকা কালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক ও মহান
      সৈনিক জিয়াউর রহমান কবিকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ক্রেস্ট প্রদান করেন।
      ১৭৫৭ সালে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হলে এদেশের সাধারণ মানুষের
      নেমে আসে সীমাহীন শোষণ ও অত্যাচার। এ শোষণের প্রধানতম শিকার বাংলার
      মুসলমান। এ দেশে বিদেশী শাসন কখনই মেনে নেয়নি ধনীগরীব মুসলমান
      সমাজ। শুরু থাকেই তারা বিদেশী শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ করে এসেছে।
      সে বিদ্রোহ অবিরাম একশ বছর ধরে ১৮৫৮ সাল পর্যন্ত চলেছে।
      সুফীবাদ ও গজলের একচ্ছত্র সম্রাট গালিব তাঁর ডায়েরীতে বলেছেন, মহানগরী
      দিল্লীর পতনের সময় রাজধানীতে একজন সম্ভ্রান্ত মুসলমানও জীবিত ছিলেন না।
      রাতের অন্ধকারে বাড়ী বাড়ী ঘেরাও করে তাঁদের আটক করে নিয়ে ফাঁসী
      দেয়া হয়। সকালবেলা নগরবাসী গাছে গাছে নামীদামী মুসলমানদের লাশ দেখতে
      পেতো।
      এহেন দুর্দিনেই চারিদিক আলো করে,নতুনের জয়কেতন উড়িয়ে ,আকাশ কাঁপিয়ে
      নিষ্পেষিত নির্যাতিত পরাধীন জাতির মুক্তির জন্যে খোদায়ী নকীব হিসাবে
      উল্কার মতো আবির্ভুত হন বিদ্রোহী বিপ্লবী কবি কাজী নজরুল ইসলাম।
      আকাশ পাতাল কাঁপিয়ে গাইলেন,
      বল ভাই মাভৈ মাভৈ
      নবযুগ ঐ এলো ঐ
      এলো ঐ রক্ত-যুগান্তর-রে।
      কালজয়ী সাহিত্যিক আবুল মনসুর আহমদ বলেছেন, এটা অবধারিত সত্য যে,
      নজরুলের আবির্ভাব না হলে বাংলাভাষা একশ বছর পিছিয়ে থাকতো। নজরুল
      একদিন বিনা নোটিশেই ‘আল্লাহু আকবর’ তকবীরের হায়দরী হাঁক মেরে আকাশ
      কাঁপিয়ে ঝড়ের বেগে এসে বাংলা সাহিত্যের দুর্গ জয় করে নিলেন। পরাধীন
      বাংলার ভাংগা কিল্লায় বিজয় নিশান উড়িয়ে দিলেন। বাংলা ভাষার ভাব ও
      প্রকাশের হীনমন্যতাকে তাড়িয়ে দূর করলেন এক পলকে। বাংলা সাহিত্যের
      ইতিহাসে এটা ছিল এক মহাবিপ্লব।
      প্রখ্যাত ভাষা বিজ্ঞানী ড: এনামুল হক বলেছেন, নজরুলের আবির্ভাব বাংলা
      রাবিন্দ্রক যুগের অবসান ঘোষনা করিল।
      সত্যিই বাংলা সাহিত্যে নজরুল এক নতুন যুগের সুচনা করেছেন, যা এখনও
      জারী আছে। বাংলা সাহিত্য ও কাব্যে বিদ্রোহ ও আধ্যাত্ববাদের বিকাশ ঘটিয়েছেন
      বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম।
      ‘ দুর্গম গিরি কান্তার মরু দুস্তর পারাবার
        লংগিতে হবে রাত্রি নিশীতে যাত্রীরা হুঁশিয়ার’
       ১৯২৬ সালে কোলকাতার হিন্দু-মুসলিম মিলন সভায় নেতাজী সুভাস বসুর
       অনুরোধে নজরুল এ গাণটি রচনা করেন ও সুর দেন। নজরুল সম্পর্কে নেতাজী
       বলেন, কারাগারে আমরা অনেকেই যাই, কিন্তু সাহিত্যের মধ্যে সেই জেল জীবনের
       প্রভাব খুব কমই দেখতে পাই। এর কারণ অনুভুতি কম। কিন্তু নজরুলের লেখায়
       বন্দী জীবনের ছবি পাওয়া যায়। এতে বুঝা যায় তিনি একজন জ্যান্ত মানুষ।
       তাঁর লেখার প্রভাব অসাধারন। তাঁর গাণ শুনে আমার মতো বেরসিক লোকেরও
       জেলে বসে গাইবার ইচ্ছে হতো। আমাদের প্রাণ নেই, তাই প্রাণময় কবিতা
       লিখতে পারিনা।
       রক্তে স্বাধীনতা ও বিদ্রোহের বীজ ছিল বলেই ১৯৭১ সালে সৈনিক জিয়াউর
       রহমান পাকিস্তান সেনা বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে স্বাধীনতার ডাক
       দিয়েছিলেন। একাজটি তাঁর করার কথা ছিলনা, তবুও তিনি করেছেন।
       এটাই ছিল তাঁর নিয়তি ও ভাগ্য। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তাঁকে দিয়ে
       বাংগালী জাতির মুক্তি ও স্বাধীনতার পথ সুগম করেছিলেন। ঠিক সময়ে ঠিক
       কাজটি করার মাঝেই সাফল্য লুকিয়ে থাকে। সমগ্র জাতির চিন্তা ও কল্পনার
       জিয়া সে কাজটিই করেছিলেন।
       ৭১ সালেই জিয়া নামটি বাংলাদেশ ও বাংগালী ইতিহাসের সাথে ওতপ্রোতভাবে
       জড়িত হয়ে গেছে। জাতির ক্রান্তিলগ্নে সময় তাঁকে বার বার সামনে টেনে
       এনেছে। এমনি করেই একদিন তিনি জাতি ও দেশের হাল ধরেছেন এবং দেশের
       প্রাণ দিয়েছেন। বাংলার এই দুই মহান পুরুষ রাজধানী ঢাকার মাটিতেই শায়িত
       আছেন। একজন শেরে বাংলা নগরের ক্রিসেন্ট লেকে, আরেকজন ঢাকা
       বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদের পাশে। নজরুলের শেষ ইচ্ছা অনুসারেই তাঁকে মসজিদের
       পাশে সমাহিত করা হয়েছে।
       কবি তাঁর কবিতায় তিনি বলেছিলেন:
       ‘ মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই
       যেন গোরে থেকেও মোয়াজ্বিনের আজান শুনতে পাই।’
       শহীদ জিয়া সম্পর্কে দেশের মানুষ বলে:
        ‘এক জিয়া লোকান্তরে
        লক্ষ জিয়া ঘরে ঘরে।’

Read Full Post »

What Is Poetry


 
___________________________________

Poetry is uncreated.No greatest man on earth can compose or create poetry.
Poetry is just like a fountain flowing from the peak of mountain.A line of poetry or a couplet of poetry comes to the mind of a poet but when compose is complete poet himself could not explain or interpret what exactly he or she wrote.
There is no clear defination what exactly the poetry is. It is not explainable. Poetry is a kind of fever for a poet or shayer. When he or she feels it poetry flows automatically or naturally from the unseen sources.
One of the greatest of the earth Rumi says, `the meaning poetry does not travel in one direction.Its like a slingshot over which you have no control`.
He further says, `I am burning with the love of God.Does anyone need a light? You can set your rubbish ablaze from the fire within me.`
The great english poet Francios Villon says, poetry is the innermost feeling of humanbeing. Only a poet can compose it.But if a reader ask him to explain
what it is the poet will feel annoyed.
Francios writes,
Where is echo,beheld of no man
Only heard on river and mere,-
She whose4 beauty was more than human?
But where are the snows of yester-year?

Regarding the beauty and bravery Lord Byron says in his poetry `She walks in beauty`
`She walks in beauty,like the light
Of cloudless climes and starry skies…`
  

If my dearest  readers permits me I can go back to Imam Gazzali and Rumi
to quote them and to say something more about poetry.
Those never recites or read Quran but indulge in preaching quran Rumi composes a couplet for them.
Rumi says`
The Quran they call the best of texts
Yet ofttimes they do not read it with application
Around the goblet is engraved a verse
Which every where is read incessently.

Those who do not read or recite Quran they just quote one or two verses from the Quran and feel proud of their knowledge and priesthood. Rumi says they are really goat.They eat grass but think it is knowledge or wisdom.
Poetry is also like that.Composing some verses good or sweet in recitation may be poetry.Let the history of literature decide their fate.

Read Full Post »


             
             কাঁচাপাকা হলুদসবুজ সকল খাবারেই এখন ভেজাল । শিশুর খাবারে ভেজাল
           বুড়োর খাবারেও ভেজাল। হাসপাতালে রুগীরা বাসি ভেজাল খাবার খায়।
           পুলিশ হাসপাতালের খাবারেও ভেজাল। দামী দামী কোম্পানীর খাবারেও
           ভেজাল। বাসি পঁচা ভেজাল দ্রব্য বা খাবার বিক্রি করার মূল কারণ বেশী
           বেশী মুনাফা করা। সমাজে মুনাফার লোভটা খুব বেশী বেড়ে গেছে। ফলে
           কারো পৌষমাস,কারো সর্বনাশ।
           খাবার বা দ্রব্যে ভেজালের কথাটি সংবাদপত্র চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে।
           হাজারো ব্যর্থতার মাঝে সংবাদপত্র বহুদিন পরে একটি দায়িত্বশীল কাজ
           করেছে। সংবাদপত্রকে হাজারো সালাম। কতৃপক্ষকেও হাজারো ধন্যবাদ
           গভীর ঘুম থেকে জেগে উঠার জন্যে।
           এ ধরনের ভাল কাজ করাই সংবাদপত্রের কাজ। যেকোন কারণেই হোক
           তারা ভাল কাজটি করতে পারছেন না। এমনটি এক সময় ছিলনা। হয়ত
           সংবাদপত্র এখন বড় ধরণের ব্যবসা। বড় মুনাফার সোজা পথ, প্রভাব বিস্তারের
           সোজা রাস্তা। যিনি মিডিয়ার মালিক তিনিই ভোগ্যপন্য, হাসপাতাল ও অষুধ
           কোম্পানীর মালিক। এমনও হতে পারে তিনি সংসদের একজন সদস্য। এমনও
           হতে পারে যে তিনি সাংবাদিকদের নকল খবর পরিবেশনের জন্য উত্সাহিত
           করেন,পুরস্কৃত করেন।
           আমাদের প্রিয়দেশ বাংলাদেশের চিত্রটি আজকাল এ রকমই হয়ে গেছে।
           পরীক্ষায় নকল জাতীয় ব্যধিতে পরিণত হয়েছিল। শিক্ষা ব্যবস্থাকে নকল মুক্ত
           করার জন্যে বর্তমান সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশবাসী এ ব্যাপারে সফল্যের
           মুখ দেখতে শুরু করেছে। এ অভিযান সকল সরকারের আমলেই অব্যাহত থাকা
           দরকার। নকলের ব্যাপারেতো সরকারী দল আর বিরোধী দল নেই। বাসি পঁচা
           ভেজাল খাবারের ব্যাপারেও নিশ্চয়ই সরকারী দল বিরোধী দল নেই। বিরোধী দল
           অবশ্য নকল ও ভেজালের বিরুদ্ধে কোন বিবৃতি এখনও দেয়নি।
           ভেজাল নকল দুষিত পরিবেশ জাতীয় সমস্যা।
           নকল মানুষ, নকল পুলিশ, নকল সেনা অফিসার, নকল টাকা, নকল আসামী
           আমাদের জাতীয় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। পুলিশ আসল আসামীকে ছেড়ে দিয়ে
           নকল আসামীকে জেলে পাঠিয়ে দিচ্ছে। সে আসামী বছরের পর বছর জেল খাটছে।
           ভেজাল অষুধ বানিয়ে যিনি শিল্পপতি হয়েছেন তিনি আসল স্বাস্থ্যমন্রীও হয়ে যেতে
           পারেন। সেই একই ব্যক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েরও মালিক হতে পারেন।
           এমন ধরনের মানুষকে এখন সুশীল সমাজের সদস্য হিসাবেও দেখা যায়। বিভিন্ন
           সেমিনারে বক্তৃতা দিয়ে বেড়ান। বলিউডের সিনেমায় ইদানিং এ ধরনের চরিত্র দেখা
           যায়।
           নীতি আদর্শ ও মূল্যবোধের ক্ষেত্রে বিরাট বিপর্যয়ের পরেও দেশের অর্থনৈতিক
           থেমে যায়নি। জাতীয় প্রবৃদ্ধি বেড়েই চলেছে। মাথাপিছু আয়ের পরিমাণও বাড়ছে।
           রাজধানীর সাথে গ্রামের যোগাযোগ দিন দিন বাড়ছে। ভেজাল আয়ও নিয়মিত
           অপ্রতিরোধ্যভাবে বেড়ে যাচ্ছে। ফলে কালো বা ভেজাল টাকার দাপট সীমাহীন
           ভাবে বিস্তারলাভ করেছে।
           আর এরই প্রভাব সুস্পষ্ট হয়ে দেখা দিয়েছে রাজনীতি,সমাজনীতি শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে।
           কালোটাকা সংসদ, কেবিনেট, আদালত সহ সর্বত্র ঢুকে পড়েছে। সমগ্র অর্থনীতি
           সাদা আর কালোতে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। তবে সাদা আস্তে আস্তে অস্পস্ট হয়ে
           যাচ্ছে।
           দেশের ক্রেতা বা ভোক্তারা অসম্ভব ভাবে অসহায় হয়ে পড়েছে। ভোক্তার অধিকার
           রক্ষার ব্যাপারে কতৃপক্ষ আজও তেমন সজাগ নন। তেমন শক্তিশালী আইনও
           দেশে তেমন নেই। বড় বড় কথা কথা প্রায়শই শুনা যায়। ভোক্তা অধিকার রক্ষায়
           শক্তিশালী তেমন সংগঠণও নাই। বর্তমান বাজারমূল্য ব্যবস্থার সবচেয়ে বড় শিকার
           এখন অসহায় ক্রেতা। মুক্তবাজার ও ডিমান্ড এন্ড সাপ্লাইয়ের কথা বলে কতৃপক্ষ
           নৈতিক দায়িত্ব এড়িয়ে চলেছেন। যার যেমন ইচ্ছা দাম হাঁকিয়ে চলেছে। দাম সঠিক ও
           ন্যায্য কিনা তা দেখার কোন সরকারী সংগঠণ নেই।
           দশ পনের বছর আগেও পণ্যমূল্য যাচাই বাছাই করার জন্য একটি সরকারী
           সংগঠণ ছিল। বাণিজ্য মন্রণালয়ের অধিনস্ত এ সংগঠনের নাম ছিল পণ্যমূল্য
           নির্ধারণ অধিদপ্তর। এ অধিদপ্তরের কাজ ছিল যে কোন পণ্যের উত্পাদন ব্যয়
           পরীক্ষা নিরীক্ষা করে মূল্য নির্ধারণ করা। এরশাদ সরকার এ দপ্তরটি তুলে দিয়েছে।
           মনে করুন, টুথপেস্টের একটি টিউবের গায়ে দাম লেখা আছে ৫০ টাকা। দামটি
           কিভাবে নির্ধারিত হলো জানার কোন উপায় নেই। পরীক্ষা করে দেখা গেল ওই
           টিউবে পেস্ট আছে মাত্র ৫ টাকার। বাকী ৪৫ টাকা বাজারজাত করন খরচ।
           এক কেজি সবজী/শাকের দাম ঢাকার বাজারে ২০ টাকা। গ্রামের আড়ত থেকে
           ওই এক কেজি শাক কেনা হয়েছে ২ টাকায়। বাকী আঠার টাকা যাতায়াত খরচ
           ও মুনাফা।
           নাইজেরিয়ার দুই সেন্টের কলা আমেরিকায় বিক্রি হতো এক ডলারে। বাকী ৯৮ সেন্ট
           জাহাজভাড়া, প্রচার ও মুনাফা খাতে আদায় করা হয়েছে। এ নিয়ে আমেরিকার
           ভোক্তারা তোলপাড় করেছে। বিষয়টি আমেরিকার কংগ্রেসে আলোচিত হয়েছে।
           এটি ছিল ভোক্তা শোষণ ও ঠকানোর বিরুদ্ধে আমেরিকাবাসীর ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন।
           আমেরিকার ভোক্তা সংগঠনগুলো এখন পৃথিবীর সবচাইতে শক্তিশালী।
           বাংলাদেশের বাজারে এখন ভোক্তা শোষণ চরম আকার ধারণ করেছে। বড় বড়
           কোম্পানীগুলো ১২ পয়সার মুড়ি আকর্ষণীয় প্যাকেটে ১২ টাকা বিক্রি করছে। এর
           প্রচার খরচ পাঁচটাকা,মুনাফা পাঁচটাকা, আর বাকীটা মুড়ি ও যাতায়াত খরচ।
           দেশবাসী এখন ভেজাল,পঁচা,বাসি পণ্য/খাবার, ভেজাল/কালো টাকা আর ভেজাল
           মানুষের হাতে বন্দী হয়ে পড়ে আছে।
           শিল্প মন্রণলয়ের অধীনে বিএসটিআই(বাংলাদেশ মান নিয়ন্রণ ও পরীক্ষা ইন্সটিটিউট)
           উত্পাদিত শিল্পপণ্যের মান নিয়ন্রণ পরীক্ষা করে থাকে। তবে প্রচলিত আইন দূর্বল
           থাকায় এই প্রতিস্ঠান তেমন ফলপ্রসু ভূমিকা পালন করতে পারছেনা।
           শিল্পপণ্যের ভেজাল ছাড়া অন্য পণ্যের ভেজাল পরীক্ষা করার ব্যবস্থা বিএসটিআই
           পরীক্ষাগারে নেই। অথবা এই প্রতিস্ঠানের এখতিয়ারে নেই।
           ব্যাপক ভেজাল প্রবণতা রোধের জন্য আরও কঠিন আইনের প্রয়োজন।ভেজাল ,পঁচা
           বাসি খাবার পরীক্ষা করার দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনের। পত্রিকায় লেখালেখির আগে
           এ ব্যাপারে কর্পোরেশনের ঘুম ভাংগেনি।
           জাতীয় জীবনের সকল ক্ষেত্রে এই অবনতির আইনী মোকাবিলার চেয়ে চিকিত্সার
           প্রয়োজন খুব বেশী। কেন অবস্থার এত ব্যাপক অবনতি হয়েছে তাও খতিয়ে
           দেখার সময় এসে গেছে। এ ব্যাপারে সমাজ বিজ্ঞানী ও গবেষকদের এগিয়ে আসতে
           হবে। এ বিষয়ে সরকার একটি জাতীয় কমিটিও গঠণ করতে পারেন।

Read Full Post »


 

           ক্ষুদ্র ঋণ ও সন্চয় ব্যবস্থাপনার জন্য নতুন
           আইন ও সংস্থা /  এরশাদ মজুমদার
          
           ক্ষুদ্রঋণ ও সন্চয় ব্যবস্থাপনা দেখশুনা করার জন্য নতুন আইন তৈরী
           হচ্ছে। প্রস্তাবিত আইনের অধীনে নতুন একটি সংস্থাও গঠিত হবে।
           বাংলাদেশ ব্যান্কের গবর্ণর প্রস্তাবিত সংস্থার চেয়ারম্যান থাকবেন।
           গবর্ণর সাহেব নিজেই এ কথা জানিয়েছেন।
           স্বাধীনতার পঁয়ত্রিশ বছর পার হয়ে গেলেও  ক্ষুদ্র সন্চয় ও ঋণ ব্যবস্থাপনায়
           এতদিন তেমন কোন আইন ছিলোনা। বিশাল এই জগতটাকে
           দেখশুনা করার জন্য তেমন কোন সংস্থাও ছিলোনা।
       
          
           ক্ষুদ্র সন্চয় ও ঋণ ব্যবস্থাপনার জন্য একটি রেগুলেটরী সংস্থা দরকার
           অর্থমন্ত্রী দেরীতে হলেও বুঝতে পেরেছেন। অজগর এনজিও গুলো তাঁকে
           বিষয়টি বুঝিয়েছেন। গুরুত্বপুর্ন এ বিষয়টি বুঝতে তাঁর এত দেরী হলো
           কেনো বোধগম্য নয়।
           বাজেটের আগে সাইফুর রহমান সাহেবের মন ভালো নেই।আবেগ অনুযোগ
           অভিযোগের সুরে তিনি বলেছেন রাজনীতিতে তাঁর কোন প্রমোশন হয়নি।
           ১৯৭৮ সাল থেকে তিনি একই পদে আছেন। অথচ বহু সিকি আধুলী
           টাকা হয়ে গেছে। সত্যিইতো তাঁর কোন প্রমোশন হয়নি। তিনি প্রেসিডেন্ট
           জিয়ার মন্ত্রী ছিলেন,খালেদা জিয়ারও মন্ত্রী আছেন। আল্লাহ চানতো
           ভবিষ্যতে তিনি অন্য জিয়ারও মন্ত্রী হতে পারেন।
          
           ৭৮ সালে তিনি অল্প
           কিছুদিনের জন্য বাণিজ্যমন্ত্রী ছিলেন। তারপরেই হয়ে গেলেন অর্থমন্ত্রী।
           সেই থেকে তাঁর কোন প্রমোশন হয়নি। মন্ত্রণালয়েরও বদল হয়নি। তবে
           প্রটোকলে তিনি যে দ্বিতীয় তা চোখে দেখা যায়। সংসদে তিনি প্রধানমন্ত্রীর
           পাশে বসেন। অর্থাত্ তিনিই সংসদের ডেপুটি লিডারের মর্যাদা ভোগ
           করছেন। এয়ারপোর্ট প্রটোকলেও তিনি প্রথম মন্ত্রীর মর্যাদা করছেন।
          
                                                                                  
           দেশের ক্ষুদ্র সন্চয় বা ক্ষুদ্র ঋণের
           হিসাব বা অবস্থা কি তা সাইফুর রহমান সাহেবও হয়ত জানেন না। কারণ
           সেভিংস বা ক্রেডিট বললেই অর্থমন্ত্রণালয়ের কথা মনে হলেও বাস্তবে
           কিন্তু তা নয়। সারাদেশে কত সংগঠণ বা সংস্থা ক্ষুদ্র সন্চয় সংগ্রহ করে
           আর ক্ষুদ্র ঋণ দেয় তার কোন ইয়ত্তা নেই। সমবায়ের এ ব্যাপারে বিরাট
           ভুমিকা আছে। সমবায় সমিতিগুলো সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীনে। এরপরেও
           রয়েছে বিরাট ইনফরমাল মাইক্রো ক্রেডিট মার্কেট। যার কোন খবরই
           সরকারের কাছে নেই। যেহেতু বিষয়টা বাংলাদেশ ব্যান্কের অধীনে নয়
           তাই বাংলাদেশ ব্যান্কও কিছু জানেনা।
          
           সমাজ কল্যাণ অধিদপ্তরের অধীনেও কিছু সমিতি আছে যারা সন্চয় সংগ্রহ
           করে। সোসাইটি আইনের অধীনেও বহু সমিতি আছে যারা ক্ষুদ্র সন্চয়
           ও ঋণদান কর্মসুচীতে নিয়োজিত আছে। স্বর্ণ বন্ধক নিয়ে ঋণদানের জন্য
           জেলা প্রশাসক পোদ্দারের লাইসেন্স দেন।অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে সরাসরি
           রয়েছে জাতীয় সন্চয় অধিদপ্তর। এই দপ্তর প্রতি বছর কয়েক হাজার
           কোটি টাকার সন্চয় সংগ্র্ করে। এতে উচ্চহারে সুদ বা মুনাফা দেয়া হয়।
           সরকারী নির্দেশে বাংলাদেশ ব্যাংকে সম্প্রতি মাইক্রো ফাইন্যান্স রিসার্চ এ্যান্ড
           রেফারেন্স ইউনিট খোলা হয়েছে। কিন্তু এই ইউনিট সব মাইক্রো
           ফাইন্যান্সের তদারকি করতে পারেনা। তারা এখন এনজিও গুলোর ক্ষুদ্র
           সন্চয় ও ঋনের তদারকি করতে শুরু করেছে। প্রশাসনিক তদারকি করছে
           অন্য আরেকটি বিভাগ। যদিও দুই বিভাগের মধ্যে  কোন সমন্বয়
           সহযোগিতা নেই। দেশে বহু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সংগঠণ-সমিতি আছে যারা স্থানীয়
           ভাবে সন্চয় সংগ্রহ করে ও ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ করে। এসব সংগঠণ
           সরকারের কোন না কোন সংস্থার সাথে রেজিস্টার্ড বা তালিকাভুক্ত।
           এরা গ্রামের সাধারন দরিদ্র মানুষের উপকার করে শোষণও করে।
           শোষণ করে সরকারের নীতিহীনতার কারণে। বড় বড় এনজিওর
           দুর্ণীতি শোষণের কথা আমরা প্রায়ই খবরের কাগজে দেখতে পাই।
          
       
                                                                                                                                                    
           যুদ্ধবাজ পশ্চিমা দেশগুলো ইসলামের বিরুদ্ধে,ইসলামী অর্থনীতির বিরুদ্ধে।
           আমাদের দেশের অজগর মিডিয়া গুলোও প্রকাশ্যে ইসলামের বিরুদ্ধে। যখন
           মস্কো ও পিকিং ইসলাম বিরোধীতা ছেড়ে দিচ্ছে তখন এই মিডিয়া এবং
           তাদের দোসর এনজিও, আমলা ,ব্যান্কার,বুদ্ধিজীবী,সাংবাদিকরা বুশের সাথে
           হাত মিলিয়েছে। অবাক ও বিস্ময়ের বিষয় সাবেক বামপন্থী ছাত্রনেতারা
           এখন এনজিওদের এজেন্ট হিসাবে কাজ করছে।
           বাংলাদেশের একটি অজগর সাইজের
           এনজিও এখন মার্কিন কবলিত একটি দেশে কাজ করছে। কি কাজ করছে 
           তা সরকার জানেনা। বাংলাদেশ থেকে তারা বেশকিছু মাইনরিটি নাগরিককেও
           ওখানে নিয়ে গেছেন। তারা নাকি খুবই বিশ্বস্ত। ওই সংগঠনটি সম্প্রতি
           জমি বেচাকেনার মাধ্যমে প্রচুর অর্থ বিদেশে পাচার করেছে বলে গুজব আছে।
           মস্কো থেকে পাশ করা একজন অর্থনীতিবিদ সম্প্রতি মৌলবাদের অর্থনীতি
           নানাকথা লিখছেন। তাঁকে সাহায্য সহযোগিতা করে থাকে বাংলাদেশ
           ব্যাংকের এক শ্রেণীর কর্মকর্তা। বাংলাদেশ ব্যান্কের তথ্য প্রকাশ,প্রচার ও
           ব্যবস্থাপনা দুর্বল এ কথা গবর্ণর সাহেব স্বীকার করেছেন। এই দুর্বলতার
           এক শ্রেণীর কর্মকর্তা উদ্দেশ্য হাসিল ও জনমনে বিভ্রান্তি সৃস্টির তথ্য পাচার
           করে নিজেদের আস্থার মিডিয়ার কাছে।
           বেশ কিছুদিন ধরে দেশের শরীয়া ভিত্তিক ব্যাংক গুলোর বিরুদ্ধে
           অজগর মিডিয়াগুলোকে ক্ষেপিয়ে তুলেছে ওই ব্যান্কারগণ। তাদের
           লক্ষ্য শরীয়া ব্যাংকগুলো বন্ধ করে দেয়া। এখন তারা হাত বাড়িয়েছে কিছু
           দেশী এনজিওর দিকে। তাদের কাছে পশ্চিমা অর্থে লালিত এনজিওগুলো
           ধোয়া তুলসীপাতা।যাদের নেতারা ফতুয়া গায়ে দিয়ে পাজেরো গাড়ীতে
           ঘুরে বেড়ায়। এসব এনজিওর
           কোন জবাবদিহিতা নেই। কার কাছে জবাবদিহি করবে। ওরাতো পশ্চিমাদের
           বরপুত্র। বিনা ট্যাক্সে ব্যবসা-বাণিজ্য,স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়,ব্যাংক সহ
           সব ধরণের ব্যবসা করতে পারে। গ্রামের হত দরিদ্র মেয়েদের কাছ থেকে
           পাঁচ টাকায় জিনিষ কিনে নিজেদের দোকানে পাঁচশ’ টাকা বিক্রি করে।
           বিদেশে রফতানী করে আন্ডার ইনভয়েচিংয়ের করে।
           এরা বিদেশে বাংলাদেশকে দুর্ণীতিবাজ অকার্যকর রাস্ট্র বলে
           প্রচার করে। এরাই বাংলাদেশের তরুণরা সত্ কর্মঠ হয়ে
           গড়ে উঠে নিজেদের পায়ে দাড়াক তা চায়না।
        
           সম্ভাবনাময় সোনার এই বাংলাদেশকে নিয়ে চলছে নানা ষড়যন্ত্র।
           বিদেশী সাহায্য ছাড়া
           দেশী সন্চয়ে যে সব সমাজ কল্যাণমুলক দারিদ্র মোচনকারী সংস্থা গড়ে
           উঠেছে তাদের বন্ধ করে দেয়ার জন্য একটি চক্র উঠেপড়ে লেগেছে।
           বাংলাদেশকে বিদেশী এনজিও এবং সাহায্য সংস্থার কাছে নির্ভরশীল
           করে রাখাই এই চক্রের লক্ষ্য। ইতোমধ্যেই বাণিজ্যিক ব্যান্কের আমানত
           কমতে শুরু করেছে। মানি লন্ডারিং আইনের অপপ্রয়োগ শুরু হয়ে গেছে।
           মানুষ ব্যান্কে টাকা জমা দিতে যেতে চায়না। ওখানে নানা হেনস্থা।
           ফলে হুন্ডি বেড়ে গেছে। ইনফরমাল মানি মার্কেট শক্তিশালী হয়ে উঠছে।
           ডলারের দিন দিন বাড়ছে। কেন্দ্রীয় ব্যান্ক নাকি ব্যাপারটা বুঝতে পারছেনা।
           বিদেশী এনজিও গুলোকে রাজনীতিতে নাক গলানোর ব্যাপারে উসকানী
           দিচ্ছে তথাকথিত বাম সেকুলার বলে পরিচিত ব্যক্তি ও সংগঠণ গুলো।
           বিদেশী অর্থ পায় এমন একটি এনজিওরো জবাবদিহিতা বা স্বচ্ছতা নেই।
           কারন এরা সাবেক মন্ত্রী, সাবেক সচিব ও এদের সন্তান আত্বীয় স্বজনদের
           চাকুরী ও টাকা পয়সা দিয়ে সাহায্য করে। বাংলাদেশে দুর্ণীতির প্রধান
           আখড়া বিদেশী সাহায্যপ্রাপ্ত এনজিওগুলো। এরা শত শত কোটি টাকার
           ব্যবসা করে ট্যাক্স দেয়না।
           এরা এক শ্রেণীর
           সাংবাদিককে চামচা হিসাবে গড়ে তুলেছে। ইদানিং এসব এনজিও
           শেয়ালের মতো একসাথে হুক্কা হুয়া করতে শুরু করেছে। দাবী মাইক্রো
           ক্রেডিট ও স্মল সেভিংস রেগুলাটরী বডি গঠণ করতে হবে। এবং সেই বডি
           তারাই নিয়ন্ত্রণ করবে। এখন তাদের হাতে বিরাট পুঁজি। সরকার তাদের
           কিছুই করতে পারবেনা। ওদেরকে সাপোর্ট করে পশ্চিমা দেশগুলো।
           দেরীতে হলেও অজগর এনজিও গুলো বুঝতে পেরেছে তাদের আইনের
           আওতায় আসা দরকার। ‘হাজার ইঁদুর মেরে বিড়াল এবার হ্বজে চলেছে।’
           তবু ভালো দেরীতে হলেও তারা বুঝতে পেরেছে তাদের ধরা পড়ার
           সময় এসে গেছে।
           ক্ষুদ্র ঋণ ও সন্চয় উত্সাহিত করে সঠিক পথে পরিচালিত করার
           জন্য অবিলম্বে পৃথক রেগুলেটরী বডি স্থাপন করা অবশ্যই দরকার।
           ক্ষুদ্র সন্চয়
           ও ঋণের সাথে দেশের স্বার্থ ও অর্থনীতি জড়িত। দারিদ্র মোচনের কথা
           বলে অজগর এনজিওগুলো গ্রামে গন্জে ছড়িয়ে পড়েছে। এই আবরনে তারা
           ধর্ম প্রচার করে, সস্তায় পণ্য কিনে নেয়। এরা হচ্ছে ‘মার্চেন্ট অব পোভার্টি’।
           বাংলাদেশ যখন মধ্য উন্নত দেশে পরিণত হচ্ছে তখনও তারা আরামে
           দারিদ্রের রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
                           _______________

Read Full Post »

আবাসন সমস্যা


 

               
                                                                  _______________________________________

বাংলাদেশের কত মানুষ ঘরে থাকে আর কত মানুষ বস্তি, ফুটপাত ঘরের
      বারান্দায় থাকে তার হিসাব পাওয়ার কাছে যাবো। কিছুটা তথ্য হয়ত
      ছিঁটেফোটা এখানে সেখানে পাওয়া যেতে পারে। এভাবে তথ্য বা উপাত্ত
      সংগ্রহ করা গবেষকদের কাজ। সাংবাদিকরা সাধারনত গবেষণার কাজ করেন না।
      পরিসংখ্যন ব্যুরোতে গেলে বাংলাদেশে কত ঘর বাড়ী আছে তার একটা
      প্রথাসিদ্ধ কাজ বা তথ্য পাওয়া যাবে। তাতে সাংবাদিকের কাজ চলেনা।
      ধরুন, পরিসংখ্যন বিভাগ বললো সারাদেশে সাড়ে তিন কোটি বাড়ী আছে
      শহর গুলোতে আছে প্রায় এক কোটি বাড়ী। এসব বাড়ীতে ১৪ কোটি লোক
      বাস করে। আরও বলা হলো প্রতি বছর এক দশমিক আট ভাগ হারে
      লোক বাড়ছে, জমির পরিমান কমছে দুই দশমিক হারে। আর কিছুদিন পরে
      চাষের জন্যে জমি পাওয়া যাবেনা।
      আমার এখনকার আলোচনা আবাসন নিয়ে। সামনে বাজেট আসছে। এখনি এ
      বিষয়ে দুটো কথা বলা প্রয়োজন মনে করি।পূর্ত মন্ত্রণলয় রাজধানীর আবাসন
      সমস্যা নিয়ে খুব ভাবছেন বলে শুনা যায়। কিন্তু সেসব হয়ত এখনও পরিকল্পনার
      পর্যায়ে রয়ে গেছে।
      রাজধানীবাসির একটি স্বপ্ন ছিল তারা একদিন সরকারের তৈরী ছোট্ট একটি
      ফ্ল্যাট পাবে যার দাম আস্তে আস্তে বিশ বছরে শোধ করবে। এ কাজটা করা
      খুবই সহজ। শুধু সহজ নয় সরকারী আমলা ও নীতিনির্ধারকদের মন নরম করা।
      আসলে রাজনৈতিক ইচ্ছাটাই প্রধান। সকল সরকারের স্থায়ী দীর্ঘ মেয়াদী ইচ্ছা ও
      উন্নয়ন নীতিতে তার প্রতিফলন। যা আমাদের রাজনীতি ও সরকার পরিচালনায়
      মোটেই নাই। এঅবস্থার কখন পরিবর্তন হবে তা একমাত্র ভবিতব্যই জানে। সোজা
      ভাষায় বলতে গেলে সরকার জনগনের আবাসন সমস্যার সমাধানে দৃশ্যযোগ্য
      কোন কর্মসূচী এখনও গ্রহন করেনি।
      বেসরকারী খাতে বিরাট শিল্প গড়ে উঠেছে। এটা একেবারেই নিজেদের উদ্যোগে।
      এ জন্যে রিহ্যাব এবং তার সদস্যদের প্রসংশা পাওয়া উচিত।রিহ্যাব দিন দিন
      সংগঠিত ও  শক্তিশালী হচ্ছে, এটা সুখবর।
      এ পর্যন্ত রিহ্যাব সদস্যরা দাবী করেন তারা ৫০হাজারের মতো ফ্ল্যাট
      ও ৫ হাজারের মতো প্লট তৈরী
      করে ক্রেতাদের সরবরাহ করেছে। সরকারের রাজস্ব খাতে ১০০ কোটি টাকার মতো
      জমা দিয়েছে। তাদের দাবী অনুযায়ী জিডিপিতে ১২/১৪ শতাংশ অবদান রেখেছে।
      তারা প্রায় ১৩ হাজার কোটি মূল্যের ফ্ল্যাট ও জমি বিক্রি করেছে। সরকার এ
      ব্যাপারে ক্লান্তিহীন দেনদরবার ছাড়া স্ব উদ্যোগে তেমন কোন সহযোগিতা করেনি।
      আমাদের আশেপাশের সব দেশেই আবাসনকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
      আমাদের অর্থমন্রী সাইফুর রহমান এখন একজন মহাশক্তিশালী জ্ঞানী মন্রী। তিনি
      সহজে কারো কথা শুনতে চান না। তাঁর ধারণা দেশের অর্থনীতি সম্পর্কে তাঁর
      চেয়ে ভাল কেউ বুঝেনা। যাক ভালো, এটা খালেদা জিয়ার ভাগ্য।
      রাজধানী ঢাকায় মধ্যবিত্তের জন্যে সস্তায় মানে দশ বারো লাখ টাকায় ফ্ল্যাট
      পাওয়া যাবে কিনা এটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। আপাতত উত্তর না।
      এই না শব্দের পেছনে অনেক কারন লুকিয়ে ও জড়িয়ে আছে।
      রিহ্যাব সদস্যরা বলবেন, জমির দাম বেশী, জিনিষপত্রের দাম বেশী,সবার উপরে
      নানা রকম সরকারী ডিউটি ও ট্যাক্স, রেজিস্ট্রেশন খরচ। ধানমন্ডিতে ফ্ল্যাট
      কিনলে পূর্ত মন্ত্রনালয়ের নামজারী,প্রতিবর্গ ফুটে ৪০ টাকা হারে ফি জমা দিতে
      হবে। তাছাড়া ঝামেলা ঝক্কিতো আছেই।
      ধরুন, আপনি ফ্ল্যাট কিনেছেন ১৬০০ বর্গফুটের। কিন্তু পূর্ত মন্ত্রনালয় বলবে
      ২৪০০ বর্গফুট। এই হিসাবেই প্রতিবর্গ ফুটে ৪০ টাকা দিতে হবে। এরপর ফ্ল্যাট
      ক্রেতাকে ধরবে নগর কর্পোরেশন। কোন হিসাবে তারা নগর কর ধার্য করবেন।
      শুরু করুন দেন দরবার। তারপর একটা সুরাহা অবশ্যই হবে।
      এরপর মোকাবিলা করুন আয়কর বিভাগের। কি ভাবে ফ্ল্যাট কিনলেন হিসাব
      দিন। তা না হয় থোক টাকা সরকারী কোষাগারে জমা দিয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে
      নিন। এবার যান ভূমি উন্নয়ন কর বিভাগে,অর্থাত্ তহশিল অফিসে। সেখানেও
      নামজারী করতে জারী করতে হবে। সোজা ভাষায় খাজনা জমা দিতে হবে।
      আবার স্বনামধন্য অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের কথায় ফিরে আসি। তিনি সারাদিন
      কথা বলেন। মাঝে মাঝে খুব ভালো ভালো কথা বলেন। আর মাঝে মাঝে
      হাসি আর কৌতুক করেন। লোকে তার কথা শুনে হাসে। তিনি সিরিয়াস কথাও
      বলেন। আবার খুব হালকা কথাও বলেন।
      আমি অবশ্য তার একজন বড় ভক্ত। কী করবো বলুন,তার চেয়ে ভালো লোক যে
      এই মূহুর্তে দেখতে পাচ্ছিনা। তিনি মন্ত্রী হলেই বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে যায়,
      ব্যান্কে জমা বেড়ে যায়।শেয়ার বাজার চাংগা হয়। বিদেশী বিনিয়োগকারীরা
      এগিয়ে আসেন। ১৯৭৮ সালেও আমি সাইফুর রহমান সাহেবকে বাণিজ্য মন্রী
      হিসাবে দেখেছি। তখন অনেক বিনীত মনে হয়েছে। এখন তার কথায় অহংকারের
      গন্ধ পাওয়া যায়।
      রিহ্যাব সদস্যদের সম্পর্কে একেবারে কিছু না বললে লেখক হিসাবে আমার নিজের
      প্রতি অন্যায় করা হয়। ফ্ল্যাট বিক্রি করার সময় প্রয়োজনীয় সকল তথ্য গ্রহককে
      পরিষ্কার করে বুঝানো হয়না। চুক্তি নামক একটি কাগজে দস্তখত করিয়ে নেয়া হয়।
      সব কিছু না পড়ে গ্রাহকগণ ওই কাগজ বা চুক্তিপত্র দস্তখত করে দেন।ওই চুক্তিপত্রে
      অনেক গলার ফাঁস লুকানো থাকে। এখন প্রশ্ন হলো দোষ কার? আমার মত ক্রেতাকে
      ভালো বুঝানো বিক্রেতার দায়িত্ব।
      গত দশবারো বছরে রিহ্যাব সদস্যগণ ৪/৫ লাখ টকার পুঁজি খাটিয়ে ১০০ কোটি
      টাকার মালিক হয়েছেন। মুনাফার পরিমান পাঠকরাই অনুধাবন করুন। আমি কিন্তু
      ব্যক্তিগত ভাবে বেসরকারী খাতে আবাসনশিল্পের প্রবৃদ্ধির পক্ষে। তবুও কিছুকথা
      একটু কড়া বলে ফেললাম।
      বাজেটের আগে অর্থমন্রীর কাছে আমার আবেদন রাজধানী সহ বড় বড় শহর গুলুতে
      ছোট সাইজের (৪/
      ৯শ বর্গ ফুট) ফ্ল্যাটের দাম ৯ লাখ নামিয়ে নিয়ে আসার জন্যে।
      এ জন্যে রেজিস্ট্রেশন,স্ট্যাম্প ডিউটি সহ অন্যান্য খরচ কমিয়ে আনতে হবে।
      এ কাজটা সরকারের জন্যে কঠিন নয়। শুধুমাত্র প্রয়োজন রাজনৈতিক ইচ্ছা।
      এ ধরনের ভালো কাজে বড় কোনো বাজেটের প্রয়েজন হবেনা। এবার আসা যাক
      ব্যাংকের সুদের হারের বিষয় কিছু কথা বলার জন্যে।
      ভারতে রিজার্ভ ব্যাংক ইন্ডিয়া ন্যাশনাল হাউজিং ব্যান্ক নামে একটি ব্যান্ক
      প্রতিস্ঠা করেছে । ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যান্ক ন্যাশনাল হাউজিং ব্যান্ককে ৬
      পারসেন্ট সুদে ঋন দিয়ে থাকে। আমাদের দক্ষ ও প্রিয় অর্থমন্রী এমন একটি
      ভালো কাজ উদ্যোগই গ্রহণ করার মতো সুযোগ পাননি। আল্লাহপাক তাকে
      সুযোগ করে দিলে জনগন উপকৃত হবে।
      রিহ্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে ক্রেতা বা গ্রাহকদের অভিযোগ যৌথমাকলকানার
      স্বচ্ছতা নাই। ধরুন, আট কাঠার জমির উপর দশটা ফ্ল্যাট হবে। আপনি যদি প্রশ্ন
      করেন মোট প্রজেক্টের আনুমানিক মূল্য কত? রিহ্যাব সদস্য বলবেন এটা
      বিজনেস সিক্রেট। বরং বলবেন, আপনার অতশত বুঝে লাভ কি। দশটা ফ্ল্যাটের
      আপনি ৬ টা ফ্ল্যাট পাবেন।
      ক্রেতা ও সরকার রিহ্যাবকে কিভাবে কেমন ঠকিয়েছে সে তথ্য রিহ্যাব এখনও
      পরিবেশন করেন নি।
      রিহ্যাব সদস্যরা শেয়ার বাজারে যাচ্ছেন না কেন এ প্রশ্নের উত্তর তারা ঠিক মতো
      দিতে পারেন নি। এ ব্যাপারে তাদের খুব আগ্রহ আছে বলে মনে হলোনা।
      সিকিউরিটি এক্সজেন্জ কমিশনও এ ব্যাপারে খুব একটা ভাবছেন বলে মনে
      হলোনা।
      ২৭/৩/০৫

Read Full Post »


আমাদের এই উপমহাদেশে কৃষি দৈনিক কোথায় কটি আছে সঠিক জানিনা।
শুনেছি জাপানে একটি কৃষি দৈনিক আছে। খুবই শক্তিশালী বড় কাগজ।
ঢাকায় একটি মৃতপ্রায় কৃষি কাগজ আছে। নাম দৈনিক ফসল।
১৯৬৫ সালের ১৭ই মার্চ ফেণী থেকে সাপ্তাহিক ফসল আমি প্রকাশ করি কৃষকদের অধিকার গুলো জনসাধারনকে জানাবার জন্যে। তখন কাগজটি ছিল কৃষক আন্দোলনের। এর আগে আমি পাকিস্তান অবজারভার ও সংবাদে পাঁচ বছর কাজ করেছি। আমি ছিলাম মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানীর একজন ভক্ত। তাঁর সাথে তখন আমার নিয়মিত দেখা হতো। সরকার মনে করতো আমি একজন বামপন্থী। তাই গোয়েন্দারা আমার পিছনে লেগে থাকতো। কৃষক শ্রমিকদের কতা বললেই সরকার মনে করতো সরকার বিরোধী। আমি মাওলানা সাহেবের কাছে প্রথম শুনি হজরত আবু জর গিফারীর (রা) কথা। গিফারী সাহেব ধনের সম বন্টন ও সম অধিকারের কথা বলতেন। মাওলানা সাহেব ইসলামী সমাজতন্ত্রের কথা বলতেন। সমাজের সকল আলেমই তখন এবং এখনও পুঁজি বাদের পক্ষে ছিলেন। কিন্তু ইসলাম কখনই পুঁজিবাদে বিশ্বাস করেনা।সরকার ও আলেম সমাজ মাওলানা সাহেবকে কমিউনিষ্ট মনে করতেন। মাওলানা সাহেবকে পূর্র বাংলা থেকে বহিষ্কার করে আসামে নির্বাসন করেন। বাংলার জমিদার ও ক্ষমতাবান লোকেরা সব সময় কৃষক বিরোধী ছিলেন। সত্যিকার অর্থে তাঁরা ছিলেন শোষক।
কৃষকদের অবস্থা এখনকার তুলানায় অতীতে অনেক খারাপ ছিল। এখনও
কৃষকদের অবস্থা তেমন ভালো বলা যায়না। আমাদের দেশে কৃষকরা সংগঠিত
নয়। কৃষকদের নামে যারা রাজনীতি করেন তাদের সংগঠণও তেমন শক্তিশালী
নয়। তারা আসলে বিভ্রান্ত, কৃষকদের সংগঠিত করে রাস্ট্র বা সরকারের
উপর তেমন প্রভাব বা প্রেসার তৈরী করতে পারেনি। প্রেসিডেন্ট জিয়ার আমলে আজিজুল হক সাহেব যখন কৃষি উপদেস্টা ছিলেন তখন সাপ্তাহিক ফসলকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছিলেন। আমলাদের জন্যে তা সমভব হয়নি। আমলারা জানতে চেয়েছিলেন ‘ ফসল কৃষকের কাগজ না কৃষির কাগজ’। কৃষি মন্ত্রণালয় নাকি গ্রো মোর ফুড বা অধিক খাদ্য উত্‍পাদনের নীতিতে বিশ্বাস করে। ফলে সে সময়ে আমি সরকারের কোন সহযোগিতা গ্রহণ করিনি। ১৯৭০ সালে পূর্ব পাকিস্তানে খাদ্য উত্‍পাদন ছিল ৯০ লাখ টন। ২০/৩০ লাখ টন খাদ্য ঘাটতি ছিল। ঘাটতি পুরো খাদ্যটাই বিদেশ থেকে আমদানী করতে হতো। তখন উদ্বৃত্ব খাদ্যের দেশ গুলো পূর্ব বাংলা বা পাকিস্তানের রাজনীতিতে ছড়ি ঘোরাতো। এখন দেশের খাদ্য উত্‍পাদন হচ্ছে তিন কোটি বিশ লাখ টন। জনসংখ্যা হয়ে গেছে দ্বিগুণের চেয়ে বেশী। কিন্তু কৃষকদের কি উন্নতি হয়েছে পাঠকরা নিজেরা চিন্তা করুন। কৃষি সাংবাদিকতার তকমা পেয়েছেন শাইখ সিরাজ। তিনি উন্নয়ন সাংবাদিকতার জন্যে নানা রকম পুরুষ্কার পেয়েছেন। তিনি নাকি নোবেল পুরুষ্কার পাওয়ার কথা ভাবছেন। উন্নয়ন সাংবাদিকতা মানে গ্রো মোর ফুড বা অধিক উত্‍পাদন। শাইখ সিরাজ সাহেব এ কাজটি করেছেন। তিনি সম্মানিতও হয়েছেন। প্রশ্ন হলো ২০১৫ সালে কৃষকদের অবস্থা কি? কৃষি সাংবাদিকগণ বুকে হাত দিয়ে বলুন কৃষকদের বর্তমান অবস্থা কি? অনেক কৃষক সব কিছু হারিয়ে শহুরে মিন্তি হয়ে গেছেন। মগবাজারের ওখানে দেখবেন অতি ভোরে কিছু মানুষ দাঁড়িয়ে থাকেন কোদাল ও ওঁড়া নিয়ে দিন ঠিকা কাজের জন্যে। কাজ পেলে সেদিন খাওয়া চলে,না হয় পানি খেয়ে থাকতে হয়।
গ্রামে এখনও কিছু কৃষক আছেন যাঁরা কৃষকের মর্যাদা হারিয়ে কৃষি শ্রমিক হয়েছেন। ছেলে মেয়েদের পড়ালেখা করাতে পারেন না। মেয়ের বিয়ে দিলে সে বিয়ে ভেংগে যায় যৌতুকের জন্যে। অনেক মেয়ে যৌতুকের কারণে অত্যাচারিত হয়ে দুনিয়া ত্যাগ করে শান্তির দেশে চলে যায়। কৃষক আজও তাঁর উত্‍পাদিত পণ্যের দাম পায়না। এ অবস্থা পাকিস্তান আমলেও ছিল। কৃষক পাটের দাম ১০০ টাকা চাইলে মিলওয়ালারা বলতেন তিরিশ টাকা। সরকার নিজে পাট কিনলেও কৃষকরা সঠিক দাম পেতেন না। কারণ, সরকারী আমলারা ঘুষ না দিলে পাট কিনতোনা। এভাবেই আমরা আন্তর্জাতিক পাটের বাজার হারিয়েছি। ভারতে পাটশিল্প অনেক বেশী বিকশিত হয়েছে।

আমাদের কৃষি বিষয়ক সাংবাদিকতার আরও করুণ অবস্থা। কৃষি সাংবাদিকদের কোনো
সংগঠণ আছে কিনা আমার জানে নেই। আন্তর্জাতিক কৃষি সাংবাদিকদের একটি শক্তিশালী সংগঠন আছে। এর নাম ইফাজ। প্রতি বছর এর সম্মেলন হয়। বাংলাদেশ থেকে কেউ যায়না।তবে কৃষি বিষয়ক শিল্পকারখানা গড়তে
শুরু করেছে। এখন আশা করা যায় কৃষি সাংবাদিকদের একটা সংগঠণ গড়ে
উঠবে। তবে সাংবাদিকরা সুবিধা না পেলে কোন সংগঠন করতে আগ্রহী হন না। কিছু সাংবাদিক আছেন যাঁরা বিদেশী কোম্পানীর অনকম্পায় কিছু কাজ করেন। সেখানে কৃষকদের জীবন যাপন নিয়ে কোন কথা হয়না।আমাদের সাংবাদিকরা সুযোতবুও আমার আশংকা শুধু কৃষকদের কথা, কৃষক স্বার্থের কথা বলার জন্যে
সাংবাদিকরা এগিয়ে আসবেন কিনা । ইতোমধ্যে সাংবাদিকদের নানা ফোরাম
গড়ে উঠেছে। কিন্তু কৃষক/কৃষি বিষয়ক সাংবাদিকদের কোন ফোরাম গড়ে উঠেনি।
আমার আস্থা ছিলো পিআইবি প্রতি বছর কৃষি সাংবাদিকতা বিষয়ক ট্রেনিং কোর্স
অর্গেনাইজ করবে। এ ধরনের ট্রেনিংয়ের অবশ্যই প্রয়োজন আছে।
কৃষি বিষয়ে বিশেষ ভাবে কিছু সাংবাদিক যে রিপোর্টিং একেবারেই করেন না তা
ঠিক বলা যাবেনা। তবে তা কোনো কৃষি বিজ্ঞানীর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের
উপর ভিত্তি করে।
মাটি ও মানুষ  সম্পর্কে কৃষি রিপোর্টারদের তেমন কোন জ্ঞান নাই বললেই চলে।
আমাদের কাগজ গুলোতে কৃষি বিষয়ক সংবাদের পরিমান শতকরা এক ভাগেরও
কম। এ বিষয়ে পিআইবির একটা জরীপ চালানো দরকার। অথবা এ কাজটা
যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ও করতে পারে।
প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি বিষয়ক সাংবাদিকতায় তিনশ নাম্বারের একটা কোর্স
থাকা অপরিহার্য। এতে কৃষি উত্পাদন,বাজারজাতকরন,রফতানী ,প্রাইসিং,গুদামজাত
করন সার, অধিক উত্পাদন সমস্যা পড়ানো হবে।
কৃষকদের ক্রয় ক্ষমতা নাই বলেই ১৪ কোটি লোকের ভিতর দু কোটি লোকও
সাবান,টুথপেস্ট,ব্রাশ ব্যবহার করেনা। তাদের ভাল জামা কাপড় নেই লেখাপড়া ফ্রি হওয়া স্বত্তেও মা বাপ সন্তানদের
স্কুলে পাঠাতে চায়না। কারন মা বাপ মনে করেন লেখাপড়া শিখে কি হবে। আমরাতো
গরীবই থেকে যাবো।
দৈনিক কাগজ গুলোতে প্রতিদিন প্রথম পাতায় কম পক্ষে তিনটি খবর থাকা দরকার।
এছাড়া প্রত্যেক কাগজেই একটি কৃষি ডেস্ক থাকা দরকার।
সম্প্রতি দেশের উত্তরান্চ্ল থেকে খবর আসছে অনেক এলাকায় কৃষকরা ধানের
চাষ করছেনা। কারণ এখন ধান চাষ আর লাভজনক নয়। এটাই অর্থনীতি শাস্রের
নিয়ম। যেখানে লাভ সেখানে সবাই যাবে। জোর জবরদস্তির কোন অবকাশ নেই।
আমি সেদিক থেকে আমাদের কৃষকরা অনেক হুঁশিয়ার। প্রশংসার দাবীদার।
চালের দিকে এখনও সরকারের খেয়াল অনেক বেশী। বিপদ মোকাবিলা করার জন্যে
বড় বড় গুদাম বানিয়ে রেখেছে। বাজারে চালের দাম বাড়লেই সরকার খোলা
বাজারে কম দামে চাল ছাড়বে। এর ফল যে সরকার পায়না তা নয়।
কিন্তু অন্যান্য পণ্যের বাজারের দিকে কে খোয়াল রাখবে। মফস্বল বা গ্রামবাংলায়
আমাদের যে সংবাদদাতারা রয়েছেন তারা এব্যাপারে উদাসীন। যে কোন ফলনের
দাম বাড়লেই সাংবাদিক,মধ্যবিত্ত, রাজনীতিবিদ বুদ্ধিজীবিরা চিত্কার শুরু করে
দেয়। একটি টেলিভিশনের বা যে কোন ইলেকট্রনিকসের দাম বাড়লে এরা দেশটাকে
মাথায় তোলেনা। কৃষককে ঠকিয়ে খাওয়া আমাদের মধ্যবিত্তের বহুদিনের অভ্যাস।
এমন কি দেশের অর্থনীতিবিদরাও এ ব্যাপারে বেশ নীরব। কারন তারাও
মধ্যবিত্তের প্রতিনিধি। কৃষক ও কৃষকদের সমস্যা নিয়ে এরা বড় বড় শাস্রীয়
কথা বলে। কিন্তু আজ পর্যন্ত সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
আমাদের সিভিল সার্ভেন্টগণও কৃষি সম্পর্কে তেমন জ্ঞান রাখেন না। তাদের নাকি
কোনে বিষয়ে বিশেষ জ্ঞান রাখার নিয়ম বা ব্যবস্থা নাই। এ পর্যন্ত যে সব
সিভিল সার্ভেন্ট নামধাম করেছেন তারা সবাই সবজান্তা। অনেকেই বড় বড়
বই লিখেছেন, বিশেষ বিষয়ে পিএইচডি নিয়েছেন। কিন্তু অবাক করা খবর হলো
তারা কৃষি ও ধর্ম সম্পর্কে প্রায়ই অজ্ঞ। আগেই বলেছি আমলাদের সব জানতে নেই।
কৃষি সম্প্রসারন বিভাগ বেশ কিছু ভালো কাজ করছেন। বিশেষ করে উদ্বুদ্ধকরনের
ক্ষেত্রে। তারা ধন্যবাদ পেতে পারেন। অবশ্য এই বিভাগে যারা কাজ করেন তাদের
সবারই কৃষি বিষয়ক লেখাপড়া আছে।
বাংলাদেশের মাটি ও এর গুনাবলী সম্পর্কে হাল নাগাদ জরীপ হওয়া জরুরী হয়ে
পড়েছে। উত্পাদন খরচ ও বাজারমূল্যের ফারাকের কারনে শস্য উত্পাদন প্যাটার্ণ
বদলে যাচ্ছে। ধান উত্পাদন এখন তেমন লাভজনক নয়। সরকার এ ব্যাপারে
তেমন ওয়াকিবহাল আছে বলে মনে হয়না।
সেদিন হয়তো বেশী দূরে নয় আমাদের আবার নিয়মিত চাল আমদানী শুরু করতে
হবে। না পেলে ধান চাল পাট উত্‍পাদন করবে কেন? পণ্যের ভাল দাম পাওয়ার ব্যাপারে কেষকদের একমাত্র কৃষি সাংবাদিকরাই  ব্যাপারে গুরুত্ব ভূমিকা পালন করতে পারেন।
অবশ্য তাদের ও ব্যাপক প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। একাজটা প্রধানত পিআইবির। আশা করি
আগামী কিছুদিনের মধ্যেই পিআইবি কৃষি সাংবাদিকতা সম্পর্কে প্রশিক্ষনের উদ্যোগ
নিবে। প্রথমে ঢাকার কাগজের সাংবাদিকদের ট্রেনিংয়ের প্রয়োজন। তারপরে
এ ট্রেনিং সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়া যাবে। এ ব্যাপারে কৃষি মন্রনালয়ের সহযোগিতা
অবশ্যই পাওয়া যাবে।
কৃষি সাংবাদিকতা বলতে শুধু ফলনের কথা বুঝায় না। কৃষকের সমগ্র জীবন
তার সংস্কৃতি বা কালচার এর আওতায় পড়ে। একজন কৃষি সাংবাদিককে
কৃষকের পূর্নাংগ জীবন জানতে হবে। একই ভাবে ফসলের বিস্তারিত খবর জানতে
হবে। ঢাকার কাগজ গুলোতেও ফুলটাইম কৃষি বিষয়ক সাংবাদিক নাই। কৃষি
সাংবাদিকতার ডেস্কও নাই। সম্পাদকদেরও এ ব্যাপারে খুব একটা আগ্রহ আছে
বলে মনে হয়না।
কৃষি ও তত্সংক্রান্ত বিষয়ে কিছু মাসিক বা ত্রৈমাসিক ম্যাগাজিন বেরিয়েছে বলে
খবর পেয়েছি। দেখে মনে হয় এ গুলো পোলট্রি বা ডেইরীর মালিকরা বের করেছেন।
এ গুলো লোকসানী ম্যাগাজিন বলে মনে হয়না। ফসল পত্রিকাটি এখন মৃতপ্রায়। কৃষিভিত্তিক গ্রোসারী শপ গুলো সীমাহীন লাভ করছেন। কৃষিভিত্তিক শিল্পগ্রুপ প্রাণ এখন বিশ্বের বাজারে। প্রাণগ্রুপ এখন ভারতে পণ্য বিক্রি করার জন্যে কয়েক কোটি টাকা প্রচারে ব্যয় করছে। আমরা আনন্দিত ও খুশী। কিন্তু কৃষকরা কি পাচ্ছেন। তাঁরা নিজেরা কৃষক সন্তানদের জন্যে কি করেছেন।
ershadmz@gmail.com

Read Full Post »

কিছু স্মৃতি


 

          কিছু স্মৃতি  /  এরশাদ মজুমদার

          স্মৃতিকথা কতটুকু সত্য আর কতটুকু মিথ্যা বলা সত্যিই কঠিন।
          তবুও স্মৃতিকথা বলতে খুবই ভাল লাগে। এখন যা বলছি তাকে
          স্মৃতিকথা বলা যাবে কিনা আমার প্রশ্ন আছে।
          ১৯৬১ সালে আমি পাকিস্তান অবজারভারে জয়েন করি। পদবী ছিল
          নবীশ বানিজ্যিক রিপোর্টার। বানিজ্যিক পাতার জন্যে রিপোর্ট করা।
          ওই পাতার দায়িত্বে ছিলেন শিক্ষাবিদ শামসুল হুদা সাহেব। আমি তাঁকে
          স্যার বলে সম্বোধন করতাম। কারণ তিনি পেশাগত ভাবে একজন শিক্ষক
          ছিলেন।এখনও তাঁকে শিক্ষক বলেই মনে করি।
          অবজাভারের নিউজ এডিটর মুসা সাহেব তখন লন্ডনে প্রশিক্ষন লাভ
          লাভ করছিলেন। মাহবুব জামাল জাহেদী সাহেব নিউজ এডিরের দায়িত্ব
          পালন করছিলেন। অবজারের সবাই আমাকে আদর করতো। আমি
          লেখাপড়া কম জানতাম বলে সবার কথা শুনতাম।সবার কাছ থেকে
          শিখার চেস্টা করতাম। অল্প সময়ের মধ্যেই আমি সবার প্রিয় হয়ে
          গেলাম। হুদা সাহেব আমাকে আশাতীত আদর করতেন। তিনি খুব নরম
          মানুষ বলেই তাঁর কাছে কাজ শিখতে পেরেছিলাম।
          তখন চীফ রিপোর্টার ছিলেন শহীদুল হক সাহেব। যিনি পরে বাংলাদেশ
          টাইমসের সম্পাদক হয়েছিলেন। এছাড়াও অনেক ডাকসাইটে রিপোর্টার
          অবজারভারে কাজ করতেন। ওদের সাথে কাজ করতে পেরেছি বলে
          আমি নিজেকে ধন্য মনে করি।
          তখন অবজারভারের সম্পাদক ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ব্যাক্তি
          আবদুস সালাম। মোয়াজ্জেম হোসেন বুলুর জেঠা বলে আমিও তাঁকে জেঠা
          বলে ডাকতাম।অনেক রাত্রে তাঁর বাসায় ছিলামও। তখন বাসা ছিল পুরণো
          নাসির উদ্দিন রোডে। আর অবজারভার অফিস ছিলো খুব কাছেই। জনসন
          রোডে,বাংলাবাজার গার্লস হাই স্কুলের লাগোয়া।
          আমার নবীশী কাটার আগেই দুবার শাস্তি হয়ে গেলো। একবার ক্যামিস্ট্রি
          বানান ভুল লোখার জন্যে,আরেকবার চল্লিশ পয়সার জায়গায় চল্লিশ টাকা
          লিখার জন্যে। প্রথমবার একটাকা যা বেতন থেকে কাটা হয়নি। দ্বিতীয়বার
          পাঁচ টাকা। শেষ জরিমানাটা বেতন থেকে কাটা হয়েছিল। চাকরী প্রায়
          যায় যায়।
          এসময়ে অবজারভারের ম্যানেজিং এডিটর ছিলেন আবদুল গণি হাজারী
          সাহেব। তিনি খুব মিষ্টি মানুষ ছিলেন।তাঁর কারনেই আমার চাকরীটা
          যায়নি। ডাকসাইটে শ্রমিকনেতা মাহবুবুল হক প্রথমে ফেণীতে পল্লীবার্তা
          প্রকাশ করেন।পরে অবজারভার গ্রুপে জয়েন করেন কমার্শিয়াল ম্যানেজার হিসাবে।
          তিনিই আমাকে নবীশ হওয়ার সুযোগ করে
          দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন আমার আপন বড় ভাইয়ের মতো। তাঁর স্নেহ
          মমতা ভালবাসার কথা এ জীবনে ভুলতে পারবোনা। পরবর্তী পর্যায়ে তিনি
          অবজারভার গ্রুপের ম্যানেজিং এডিটর ও দৈনিক পূর্বদেশের সম্পাদক
          হয়েছিলেন। পল্লীবার্তাই পূর্বদেশে রূপান্তরিত হয়।তিনি পাকিস্তান পার্লামেন্টেরও বাঘা মেম্বার ছিলেন।
          ইতোমধ্যে নিউজ এডিটর মুসা সাহেব লন্ডন থেকে ফিরে এলেন।
          জাহেদী সাহেব এডিটোরিয়ালে ফিরে গেলেন। নবীশ সাংবাদিক এরশাদ
          মজুমদারের ত্রাহি অবস্থা। মনে হলো চাকরীটা আর থাকবেনা। বুলু
          বললো এত ভয় পাওয়ার কি আছে? আমি আছি না। অবশ্য এরপরে
          অবজারভারে বেশীদিন চাকরী করিনি।
          এখনকার পত্রিকায় রংচং বেড়েছে, পৃষ্ঠাও বেড়েছে। মান বেড়েছে কিনা
          এ ব্যাপারে আমার ভিন্নমত আছে। পত্রিকাগুলো এখন রাজনীতির মাপকাঠিতে
          পরিচালিত হয়। এখন কাজ জানাটা বড় কথা নয়। কে কোন দল করে
          সেটাই যোগ্যতার প্রধান মাপকাঠি। ৫০/৬০ সালের দিকে এ অবস্থা ছিলনা।
          কাজ জানাটাই ছিল প্রধান মাপকাঠি। বামপন্থী বলে পরিচিত জাহেদী,কে জি মোস্তফা,
          ওয়াহিদুল হক, জাহিদুল হক আরও অনেকে অবজারভারে কাজ
          করতেন। এ ব্যাপারে মালিকের কোন মাথা ব্যথা ছিলনা। সোজা কথা হলো কাজ
          জানো কিনা। এখন দলবাজী করলেই কাজ হবেনা। গ্রুপবাজীও করতে হবে।
          ১৯৬৯ সালের শেষের দিকে আবার অবজারভার গ্রুপে ফিরে আসি।এবার
          সিনিয়র রিপোর্টার হিসাবে পূর্বদেশে কাজ শুরু করি। মাহবুব ভাই তখন
          পূর্বদেশের সম্পাদক। মিয়া ভাই মানে এহতেশাম হায়দার চৌধুরী নিউজ
          এডিটর ছিলেন। বাংলা কগজের ভিতর পূর্বদেশ তখন বহুল প্রচারিত ও
          নামডাকে ভরা। এছাড়া আমি বানিজ্য পাতার দায়িত্বেও ছিলাম। পূর্বদেশে
          কাজ শুরু করার ব্যাপারে একটা কাহিনী আছে বেতন নির্ধারণ নিয়ে। আমার
          কাছে এটা একটা মজার গল্প মনে হয়।
          নিয়োগপত্র ইস্যু করার আগে আমি চুক্তিভিত্তিক কাজ শুরু করলাম। চুক্তিটাও
          ছিল মজার। চুক্তিটা আমি নিজেই ঠিক করেছিলাম। বেতন নির্ধারনের জন্যেই
          এ পথ বেছে নিয়েছিলাম। ঠিক হলো ফার্স্টলিড ৫০ টাকা,সেকেন্ড লিড বা
          তত্সম রিপোর্টের জন্যে ৩০ টাকা, থার্ড লিডের জন্যে ১০ টাকা। সিংগেল
          কলাম হেডিং স্টোরি ফ্রি। বুদ্ধিটা ছিল মিয়া ভাইয়ের।তিনি আমাকে নিতেই চান।
          এভাবে ২/৩ মাস চললো। প্রতি মাসেই আমি
          খুব আরামে ১৩/১৪শ টাকা ড্র করতে শুরু করলাম। এর উপরে ছিল বাণিজ্য
          পাতার জন্যে ২শ টাকা। এসব কান্ডকারখানা দেখে চৌধুরী সাহেবের চোখ
          ছানাবড়া। ব্যাপারটা কি? এ কোন রিপোর্টার যে বিল করে মাসে ১৩/১৪শ
          টাকা নিয়ে যায়। আবার বাণিজ্য পাতার জন্যে ২শ টাকা।
          রিপোর্টারটা কে তাকে একবার দেখা দরকার। তার আগে মাহবুব ভাইয়ের
          ইন্টারভিউ। সরাসরি প্রশ্ন- তুমি কত টাকা বেতন চাও।আগেই বলেছি তিনি
          ছিলেন আমার আপন বড় ভাইয়ের মতো। তাই মনের ভিতর তেমন ডর ভয়
          ছিলনা। বললাম দুটি ইনক্রিমেন্ট সহ সহকারী সম্পাদকের স্কেল দিতে হবে।
          এরপরে চৌধুরী সাহেবের সাথে সাক্ষাতকার। ভয়ে বুক কাঁপছিলো। মাহবুব
          বললেন ভয়ের কিছু নেই। সব ঠিকঠাক আছে।
          নির্ধারিত তারিখে চৌধুরী চেম্বারে গেলাম। সাথে মাহবুব ভাইও ছিলেন।
          কোম্পানীর চেয়ারম্যান ও ডাকসাইটে আইনজীবি হামিদুল হক চৌধুরী
          বাংলায় কথা বললে নোয়াখালীর ভাষায় কথা বলতেন। শুদ্ধ বাংলা বলতেন না
          বা বলতে পারতেন না। প্রথমে প্রশ্ন করলেন, এত বেতন দিয়া কি করবা?
          বিয়েশাদী করছো নাকি? বাড়ী কোথায়? মাহবুব মিয়া বা মুসার আত্মীয়
          হও নাকি?আমি কোন উত্তর দিইনি। চৌধুরী সাহেবও উত্তরের অপেক্ষায়
          ছিলেন না। শেষ প্রশ্ন করেছিলেন এপয়েন্টমেন্ট পেলে এত কাজ করতে
          পারবা নাকি, না সবার মতো ঢিলা দিয়া দিবা। ইন্টারভিউ শেষ, চলে
          আসবো এমন সময় প্রশ্ন করলেন- ক্রেডিট বাজেটিং বোঝ। এবিষয়ে একটা
          রিপোর্টিং কর। পরে বুঝতে পেরেছিলাম কেন তিনি ঐ রিপোর্টটি কেন
          করতে বলেছিলেন।

Read Full Post »


বাংলাদেশের কোন সরকারই রাজধানীর যাত্রী পরিবহন ও যাতায়ার ব্যবস্থায় যে অরাজকতা বিরাজ করছে তার  কোন প্রকার সুরাহা বা সমাধান খুঁজে বের করতে পারেননি। আমাদের এই ঢাকা একটি বনেদী শহর। মোগল আমলেই ঢাকা সুবেহ বাংলার রাজদানীর মর্যাদা পায়। লন্ডনের চেয়ে ও বহয় পুরাণো শহর। খুবই বেদনার বিষয় এই যে ৪০ বছরে কোন সরকারই সমস্যাটি সমাধানে তেমন কোন উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহন করেনি। কিন্তু ইতোমধ্যেই শহরটা বাস করার অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
এটা কয়েক বছর আগের লেখা। এখন মানে ২০১১ সালের শুরুতে  আর আগের সেই দৃশ্য নেই।    ১৬ ই জানুয়ারী থেকে সরকার সিএনজি চালিত থ্রি হুইলার বা অটো রিকসার মালিক আর  চালকের আয় কি হারে হবে তা সরকার নির্ধারন করে দিয়েছেন। নতুন ব্যবস্থা অনুযায়ী মিটারও লাগানো হয়েছে।কিন্তু প্রথম দিনে বেশ কিছু চালক মিটারের ভাড়া মানতে চাইলনা। মিটারে যেখানে ৭০/৮০ ভাড়া উঠবে সেখানে চালক চাইছে ১৫০ টাকা।কেন ভাই? উত্তর এলো মালিক আগের জমা ৭/৮শ’ টাকা চাইছে। মালিক মানলে আমরাও মানবো। ট্রাফিক পুলিশও রাস্তায় ছিল খুব কড়াভাবে। অনেক চালককে জরিমানা করেছে। অনেকের গাড়ি তুলে নিয়ে গেছে।যাত্রিরাও খুশী। সিএনজি চালকদের নিয়ন্ত্রন করা দরকার। এটা সব যাত্রির দাবী। চার পাঁচ বছর পর আবার এ বিষয়ে লিখতে হবে ভাবিনি।

চার পাঁচ বছর আগে রাজধানীতে ৪০ হাজার পেট্রোল চালিত অটো ছিল। তখনকার সরকার বা যোগাযোগ মন্ত্রী ভাবলেন, তেলের দাম বেশী,তাই গ্যাস চালিত অটো চালু করার দরকার। কিন্তু অটোর লাইসেন্স ইস্যু করবেন মন্ত্রী মহোদয় স্বয়ং।। কিন্তু রাজধানীতে এখন ৪০ হাজার অটোর পরিবর্তে মাত্র ১৩ হাজার অটো আছে। বলা হয়েছিল যাত্রিদের সুবিধার্থে কয়েকশ’ আধুনিক বাস চালু করা হবে। কিন্তু তা চালু করা হয়নি। এদিকে রাজধানীতে এ কয়েক বছরে যাত্রি সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। বিএনপি সরকার পেরিয়ে সিভিল পোষাকে সামরিক সরকার এসেছিল। এখন চলছে আওয়ামী লীগের সরকার। কিন্তু রাজধানীর যাতায়াত ব্যবস্থার কোন উন্নতি হয়নি। যাত্রিদের দূর্ভোগ কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। চার পাঁচ বছর আগে ধানমন্ডি থেকে প্রেসক্লাবে যেতে মিটার ছাড়া ৪০/৫০ টাকা চাইতো। মিটারে ভাড়া হতো ৩৫/৪০ টাকা। তারপরে বাড়তেই শুরু করলো। ৫০টাকার পর ৬০/৭০ টাকা। গত কয়েক মাস ধরে চাইছে ১২০টাকা থেকে দেড়শ’ টাকা। নতুন ব্যবস্থা চালু হবার পর চালকরাও নতু কথা বলতে শুরু করেছেন। কি হলো ভাই, মিটারে যেতে চাইছেন না কেন? স্যার নতুন ভাড়া ও নতুন মিটার চালু হয়েছে। বাকি সবতো পুরাণো রয়ে গেছে। পুলিশ আর মাস্তানদের তোলাতো বন্ধ হয়নি। নতুন গাড়ি নামাতে গেলে সব ঘাটেই বখরা দিতে হবে। চালক লাইসেন্স চাইতে গেলে দুই নম্বরটা পাওয়া যায়। এক নম্বর পেতে বহুদিন লেগে যায়। সালামি কয়েক হাজার টাকা। তাই আমরা দুই নম্বরি দিয়ে চালাই।

Read Full Post »

Older Posts »