বাংলাদেশে ধর্ম বিশ্বাস ও রাজনীতি / এরশাদ মজুমদার
চলমান সরকারের দল, নেতা ও কর্মীদের ধর্মনীতি হলো ‘ ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার’। এই নীতি ও শ্লোগানটি খুবই আকর্ষণীয়। শুনতে ভাল লাগে। এই সরকারের আরেকটি খুবই মূল্যবান নীতি হলো‘জনগণই সার্বভৌম’। সংবিধান নাগরিকের সকল অধিকার নিয়ন্ত্রণ করবে বা পরিচালনা করবে। বাংলাদেশের ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান। বাকি ১০ ভাগ অন্যান্য ধর্ম বা রীতিতে বিশ্বাস করেন। যাঁরা সত্যিকারেই ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করেন এবং মুসলমান হিসাবে পরিচিত তাঁরা সকলেই আল্লাহপাকের সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করেন। আমাদের সংবিধান যেহেতু আল্লাহ/ ভগবান/ঈশ্বরের সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করেনা সেহেতু আইনের দৃষ্টিতে একজন মুসলমান বা একেশ্বরবাদী অপরাধী সাব্যস্ত হতে পারে। বৃটেনের রাষ্ট্রীয় ধর্ম প্রটেস্ট্যান্ট খৃষ্টবাদ। বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী বা প্রধান বিচারপতি হতে হলে একজন নাগরিককে বৃটেনের সরকারী ধর্মে বিশ্বাসী হতে হবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ব্লেয়ার সাহেব ছিলেন ক্যাথলিক। কিন্তু রাজনীতি করার জন্যে প্রটেস্ট্যান্ট হয়ে গিয়েছিলেন। কারণে বৃটেনে রাজনীতি করতে হলে সরকারী বা রাজার ধর্ম মানতে হবে। যদিও এরা কেউই মূল খৃষ্ট বাদে বিশ্বাস করেন না। খৃষ্টবাদ ও বাইবেল ও তৌরাত যদি বিকৃত না হতো তাহলে জগতে আল্লাহপাক সর্বশেষ কিতাব আলকোরআন নাজিল করতেননা।আধুনিক মহাগণতান্ত্রিক ভারত ১৯৭৬ সালে তথাকথিত সেক্যুলাজিম(ধর্মহীনতার ) নামাবলী পরেছে। আর এখন ক্ষমতায় আছে ধর্মবাদী দল বিজেপি। এরাই কল্পিত রাম মন্দিরের কথা বলে সরকারের সহযগিতায় বাবর মসজিদকে চুরমার করেছে। বিশ্বের কোন ইসলামিক দল ভিন ধর্মের মন্দির, গীর্জা, অগ্নিমন্দির বা সিনাগগ ভেংগেছে এমন কোন প্রমান কারো কাছে নেই। ভারতে দাংগার ইতিহাস পড়ুন। বিগত ৪৪ বছরে ভারতে কয়েক হাজার দাংগা হয়েছে ধর্মীয় কারণে। এতে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মুসলমানেরা। মোদির বিরুদ্ধে দাংগায় সরাসরি দাংগার অভিযোগ থাকা সত্বেও ভারতবাসী বিজেপিকে নির্বাচিত করেছে। আর মোদিজী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। সেক্যুলার কংগ্রেসের ভন্ডামী থেকে মুক্তি লাভের জন্যেই ভারতবাসী বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন বলে গবেষকরা বলছেন।
বাংলাদেশও রাজনৈতিক ধোকাবাজীর জন্যে সেক্যুলারিজমের জোব্বা পরিধান করেছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতেও সনাতন ধর্মীদের বাড়িতে আগুন দেয়া হয় ও মন্দির ভাংগা হয়। অভিযুক্ত করা হয় ধর্মীয় দল ও আওয়ামী বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে। যেমন ১৯৪৬ সালের মহাদাংগায় অভিযোগের আংগুল তোলা হয়েছিল বংগবন্ধু ও সোহরাওয়ার্দাীর সাহেবের বিরুদ্ধে। ৪৬এর দাংগায়ও মুসলমানেরা সবচেয়ে বেশী নিহত হয়েছে।
আমেরিকার রাষ্ট্রীয় ধর্ম ক্যাথলিক খৃষ্টবাদ। ওবামার বাপদাদারা মুসলমান ছিলেন, এই নিয়ে আমেরিকানরা কম হৈচৈ করেনি। ওবামা বেচারা শেষ পর্যন্ত নিজের নামের সাথে হুসেন শব্দ ব্যবহার করা ত্যাগ করেছেন।বৃটেন আমেরিকা সহ বহু পশ্চিমা দেশে বাইবেল হাতে নিয়ে শপথ গ্রহণ করেন। আমেরিকার ডলারে বা বৃটেনের পাউন্ডে রানী বা প্রেসিডেন্টের ছবি থাকে। লেখা থাকে ‘ইন গড উই ট্রাষ্ট’। বাংলাদেশে রাজার ক্ষমতা সম্পন্ন নেতারা সংবিধান মোতাবেক আল্লাহর অস্তিত্ব মানতে বাধ্য নন।
ভারতের বিকৃত ও পরিবর্তিত ও ভুলে যাওয়া সনাতন ধর্মে এক শ্রেণীর মানুষকে অর্ধমানব হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। ভারতীয় রাজনীতিতে ও সংবিধানে সব মানুষকে সম মর্যাদা দেয়া হয়েছে। কিন্তু বিকৃত প্রচলিত ধর্মরীতিতে তাঁদের অর্ধমানব, অচ্যুত বা হরিজন বলা হয়। গান্ধীজী আদর করে ওদের নাম দিয়েছেন হরিজন মানে ইশ্বরের লোক বা জন। বাংলাদেশে ৯০ ভাগ মানুষ ইসলামে বিশ্বাসী বলে হরিজন/অচ্যুত প্রথা মুসলমানদের ভিতর নেই। তবুও কিছু হরিজন আছেন যাঁরা বিকৃত সনাতন ধর্মে বিশ্বাস করেন। আপনাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে ভারতে আর্য আগমনের পূর্বে এখানকার সব মানুষ সম মর্যাদার ছিলেন। সবাই নিরাকার একেশ্বর বাদে বিশ্বাস করতেন। মুর্তি পূজা বা বহু ইশ্বরের কোন অস্তিত্ব ছিলনা। কোথাও কোন মুর্তি ছিলনা। আর্যরা বহিরাগত বিজয়ী, তাই তাঁদের ধর্ম, ভাষা,রীতিনীতি ,আচার ব্যবহার চালু করেছে পরাজিতদের ভিতর।
বাংলাদেশে আমরা মানে মুসলমানেরা মসজিদে, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে, নামাজে সারাদিনে বহুবার ‘আল্লাহু আকবর’( আল্লাহই সর্বশক্তিমান বা আল্লাহই সর্বশ্রেষ্ঠ) উচ্চারণ করে থাকি। এটা মুসলমানদের জন্যে বাধ্যতামূলক। কিন্তু নাগরিক জীবনে সংবিধান মোতাবেক বলতে হবে ‘জনগণ হু আকবর’ বা জনগণই সার্বভোম। নাগরিক জীবনে আপনার জন্যে বা মুসলমানদের জন্যে সংবিধানের অবস্থান আল্লাহর কিতাব পবিত্র আলকোরআনের উপরে(নাউজুবিল্লাহ)। আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করুন। আমাদের সংবিধান মোতাবেক দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী আমি ‘জনগণ সার্বভৌম’, ‘সংবিধান সার্বভৌম’বলতে বাধ্য।
বাংলাদেশে ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান হলেও ইসলামী নিয়ম কানুন, আচার বিচার, কালচার মানতে বাধ্য নই। এটা নাকি ব্যক্তিগত ব্যাপার। এদেশে ধর্ম মানাটা ঐচ্ছিক। নামাজ, রোজা বা ধর্মীয় আইন কানুন জারী রাখার ব্যাপারে রাষ্ট্র বা সংবিধান সেক্যুলার( ধর্মহীন)। বাংলাদেশে আরবী নামধারী মুসলমান নেতা বা মন্ত্রীরা পূজামন্ডপে গিয়ে দেবীর দর্শন করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন ‘ দেবী এবার নৌকায় এসেছেন,তাই ফসল ভাল হবে। এর মানে তিনি এটা বিশ্বাস করেন। অথবা রাজনৈতিক কারণে নেতারা এমন কথা বলে থাকেন। আমাদের দেশের তথাকথিত সেক্যুলার আরবী নামধারী নেতারা ছবির সামনে দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করেন এবং ছবির গলায় বা ছবির বেদীতে ফুল দিয়া সম্মান প্রদর্শন করেন। ওই ছবির সামনে দাঁড়িয়ে মুনাজাতের মতো করে হাত তুলে ঠোট নাড়েন। রাজনীতিতে সত্য বা মিথ্যা হচ্ছে কৌশল। এখানে আদর্শ, নীতি বা ধর্মীয় বিষয়টা কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। মইন-ফখরুদ্দিন সরকারের সময় একজন ধর্মমন্ত্রী ছিলেন যিনি ব্যক্তিগত জীবনে ধর্ম মানতেন না। ধর্মবিরোধী ছিলেন। এ পর্যন্ত বাংলাদেশে ধর্ম বিষয়ে জ্ঞানী কোন মানুষকে ধর্মমন্ত্রী করা হয়নি। বরং অযোগ্য লোককেই ধর্মমন্ত্রী করা হয়েছে।
মানুষের ধর্ম বিশ্বাস ও অধিকারকে জাতিসংঘ সনদ স্বীকৃতি দিয়েছে। বিশ্বের সকল দেশেই নাগরিকদের ধর্ম মানার অধিকার আছে। পরধর্মকে নিন্দা বা আঘাত করার অধিকার কারোই নেই। মুসলমান হিসাবে আপনার প্রতিবেশী অন্যধর্মের মানুষও আপনার ভাই। তাঁকে ভুখা বা অভুক্ত রেখে আপনি যদি খান তাহলে আপনি মুসলমান নন। প্রতিবেশীকে রক্ষা করাও একজন মুসলমানের দায়িত্ব। কিন্তু যদি ইসলামের এই নীতি পালন না করেন তাহলে তাঁর মতো মুসলমানের ইসলামে প্রয়োজন নেই। জগতে কোটি কোটি মন্দ মুসলমান আছে। এজন্যে ইসলামকে দায়ী করা অন্যায় হবে। কিন্তু চলমান বিশ্ব ব্যবস্থা দেখে মনে হচ্ছে মুসলমানেরাই একমাত্র মন্দ জাতি। এমনি একটি অবস্থা ও পরিবেশে বাংলাদেশের আবদুল লতিফ(অনুগ্রহকারীর দাস) নামের একজন মন্ত্রী সদর্পে পবিত্র হজ্জ্ব, রাসুল(সা) ও তাবলীগ ব্যবস্থা কটুক্তি করেছেন। এই ভদ্রলোকের নামের ‘সিদ্দিকী’ শব্দটি ব্যবহার করলামনা। কারণ তিনি একজন সিদ্দিকী একথা ভাবতে আমার কষ্ট হচ্ছে। তাঁর আব্বাজানকে এলাকার মানুষ ছিদ্দিক মোক্তার সাহেব হিসাবেই চিনে। তািনি একজন ডাক সাইটে আইনজীবী ছিলেন। তাঁর সন্তানেরা কিভাবে সিদ্দিকী হলেন তা এলাকার মানুষ জানেন না। কোরায়েশ বংশের মান্যগণ্য অনেক নেতাই কাফের ও মোনাফিক ছিলেন। তাঁরাই রাসুলকে(সা) সবচেয়ে বেশী কষ্ট দিয়েছেন। এমন কি হুজুরের(সা) আপন চাচা আবু তালেব সাহেবও ইসলাম ধর্ম গ্রণ করেননি। কিন্তু তিনি সারাজীবন রাসুলকে(সা) সাহায্য ও নিরাপত্তা দান করেন। হুজুর(সা) বিয়ের আগ পর্যন্ত আবু তালিকের ঘরেই ছিলেন। ইসলামী আন্দোলনের প্রথম সিদ্দিকী হলেন হজরত আবু বকর(রা)। আল্লাহর রাসুলই (সা) তাঁকে সিদ্দিকী উপাধি দিয়েছেন। হজরত আবু বকর সিদ্দিকী বয়স্ক পুরুষদের ভিতর প্রথম ইসলাম গ্রহণকারী। তিনিই হুজুরের(সা) মেরাজের প্রথম স্বীকৃতিদানকারী ও সত্যায়নকারী। তিনি তাঁর সকল সম্পদই ইসলামের জন্যে দান করেছিলেন। আল্লাহর রাসুল(সা) জানতে চেয়েছিলেন, ঘরে কিছু রেখে এসেছেন কিনা? উত্তরে হজরত আবু বকর(রা) বলেছেন, আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুল(সা)কে ঘরে রেখে এসেছি। তিনি ইসলামের প্রথম খলিফা । রাসুল(সা) এর পরে তিনিই আল্লাহপাকের সাহায্যে ইসলামকে রক্ষা করেছেন।
বিতাড়িত মন্ত্রী আবদুল লতিফ কেমন করে সিদ্দিকী হলেন? যেহেতু তিনি একজন রাজনীতিক সেহেতু দেশবাসীর জানার অধিকার আছে তিনি কেমন করে সিদ্দিকী হলেন। কেনই বা হলেন? তাঁর বাবাও কেমন করে সিদ্দিকী হলেন? নাম সিদ্দিক হলেই কি কেউ সিদ্দিকী শব্দটি লিখতে পারেন? এই ব্যক্তি ইতোমধ্যেই ধর্মত্যাগী হয়ে গেছেন। রাসুল(সা ) নামের সাথে দরুদ পাঠ করা সকল মুসলমানের জন্যে বাধাতমূলক। আল্লাহপাক বলেন,‘ ইন্নাল্লাহা ও মালায়েকাতাহু ইয়ুসাল্লুনা আলান্নাবীয়ি। ইয়া আইয়ুহাল্লাযিনা আমানু সাল্লু আলাইহে ওয়া সাল্লেমু তাসলিমা।’(সুরা আহযাব, আয়াত ৫৬)। বাংলা তরজমা ‘নি:সন্দেহে আল্লাহ তা’আলা এবং তাঁর ফেরেশতাগণ রহমত বর্যণ করেন সেই পয়গম্বরের প্রতি । হে মুমিনগণ! তোমরাও তাঁর প্রতি প্রচুর দরুদ শরীফ পাঠ কর এবং প্রচুর সালাম পেশ করো’। প্রিয় পাঠকগণ, আপনারা হৃদয় দিয়ে অনুধাবন করুন,রাসুল(সা) এর মর্যাদা আল্লাহপাকের কাছে কোন স্তরের। আমাদের প্রিয় রাসুলকে(সা) আল্লাহপাক নিজেই বলেছেন, রাসুল(সা) হচ্ছেন জগতের জন্যে রহমত স্বরূপ। তিনি সকল নবী রাসুলের ইমাম। আপনি যদি কালেমা ‘ লা ইলাহা ইল্লা আল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ(সা) বলে ঈমান এনে থাকেন তাহলে কোরআন ও রাসুল(সা)কে মান্য করা আপনার জন্যে বাধ্যতামূলক। আল্লাহ বলেছেন, তোমরা আমার রাসুলকে(সা) অনুসরণ করো,তাহলেই আমাকে মানা হবে। আমার রাসুলকে(সা) ভালবাস, তাহলে আমাকে ভালবাসা হবে। বিবি আয়েশা বলেছেন, তোমরা নবীজীকে অনুসরণ করো, তাহলেই কোরআনকে অনুসরণ করা হবে।
এছাড়াও জগতের মণিষীরা বলেছেন যে, মুহাম্মদ(সা) জগতের সর্বশ্রষ্ঠ মানব। টমাস কারলাইল ১৮৪০ সালে ১২ ঘন্টা ব্যাপী নবীজীর(সা) উপর যে ভাষণ দিয়েছেন তা পড়ুন। ‘ হজরত মোহাম্মদ তাঁর প্রতিপালকের নিকট থেকে জ্ঞানগর্ভ শরীয়ত লাভ করেন। আমি নিজে সূর্যের মতো আলোকিত হচ্ছি তার দ্বারা ।’( সামবেদ,পুরকার্যক-২,দুরশতি ৬, মন্ত্র ৮ )। মহাঋষি ব্যাসজীর লিখিত ভবিষ্য পুরাণ উল্লেখ করেছেন যে, একজন ম্লেচ্ছ এক অজানা দেশ থেকে আসবেন এবং তার ভাষাও কারো জানা থাকবেনা। তিনি হবেন আত্মা পবিত্রকরণে দক্ষ। তিনি তাঁর সাথীদের সমভিব্যবহারে আসবেন, তাঁর নাম হবে মুহাম্মদ। রাজা ভুজ সেই মহাদেবতা ফেরেশতাদের মত উত্তম চরিত্রের আদর্শ ব্যক্তিকে গংগার মোহনার পানি দিয়ে গোসল করিয়ে অর্থাত্ সকল পাপ থেকে পাক পবিত্র করেছেন। তিনি তাঁর অন্তরের সমস্ত ভক্তি শ্রদ্ধা এবং উপঢৌকনাদি দিয়ে তাকে সম্মানিত করেছেন এবং বলেছেন এবং বলেছেন আমি আপনার সামনে মাথা নত করে দিলাম। ‘ হে বিশ্ব বরেণ্য নেতা , মান জাতির গৌরব, আরবের অধিবাসী শয়তান ও শয়তানী শক্তিকে ধ্বংস করার জন্যে শক্তি সংগ্রহকারী, ম্লেচ্ছ দুশমন থেকে রক্ষাপ্রাপ্ত, হে পবিত্র সত্তা, সকল দিক থেকে পাক পবিত্র সত্তা, পুর্ণাংগ নেতার বাস্তব প্রতিমূর্তি! আমি আপনার অধম এক সেবক। আমাকে আশ্রয় দিন এবং আপনার পদরলে লুটিয়ে পড়া এক ব্যক্তি হিসাবে জেনে নিন।’(বিষ্ণুপুরাণ, প্রকাশক: ভেকটিশোর প্রেস, বোম্বে,প্রতিমগবর, ৩য়খন্ড, শ্লোক ৫-২৭)। এছাড়া যবুর, তৌরাত ও ইঞ্জিল কিতাবেও রাসুলু্ল্লাহর(সা) আগমণ বাণী ঘোষিত হয়েছে। আল্লাপাক অতীতের সকল বিকৃত কিতাবকে শুদ্ধ করে শেষ নবী ও রাসুলের(সা) মাধ্যমে জগতবাসীর জন্যে শেষ কিতাব হিসাবে প্রেরণ করেছেন। বিতাড়িত ধর্মত্যাগী মন্ত্রী জগতের আলো নবীজীকে কোন প্রকার সম্মান না দেখিয়ে বলেছেন, আরবের আবদুল্লাহ পুত্র মুহাম্মদ। একই সাথে এই বিতাড়িত মন্ত্রী পবিত্র হজ্ব নিয়ে কটুক্ত করেছেন। নবীজীকে আল্লাহপাকের নির্দেশ মোতাবেক সম্মান না করলে সেই লোকের মুসলমান থাকার কোন অধিকার আছে কিনা?
বাইশ নম্বর সুরা আল হাজ্বের ২৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহপাক বলেন,‘ হে নবী, স্মরণ করো,যখন আমি ইব্রাহীমকে এ ঘর(কাবা) নির্মানের জন্যে স্থান ঠিক করে দিয়েছিলাম(তখন তাকে নির্দেশ দিয়েছিলাম), আমার সাথে অন্য কিছুকে শরীক করোনা, আমার এ ঘর তাদের জন্যে পবিত্র রেখো যারা এর তাওয়াফ করবে,যারা এখানে নামাজের জন্যে দাঁড়াবে রুকু করবে ও সাজদা করবে। আয়াত ২৭শে আল্লাহপাক বলেন, তাকে মানে (হজরত ইবরাহীমকে ) আদেশ দিয়েছিলাম তুমি মানুষদের মাঝে হজ্বের ঘোষণা করে দাও। কালামে পাকে পবিত্র কাবা ঘর ও হাজ্ব সম্পর্কে আরও অনেক আয়াতে বর্ণনা রয়েছে। এখন আপনারাই বিবেচনা করুন কাবা, হাজ্ব, কোরবাণী, তাওয়াফ না বিশ্বাস করলে কারো পক্ষে মুসলমান থাকা যায় কিনা?
নিন্দিত ও বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন ইসলাম ও মুসলমানদের সম্পর্কে কটুক্তি করে শেষ পর্যন্ত সনাতন মুর্তপুজক ভারতে আশ্রিতা হিসাবে বসবাস করছেন। ইসলামের বিরুদ্ধ কথা বলে তিনি ভারত সহ পশ্চিমা দেশ গুলোতে আদর যত্ন পেয়েছেন। এখন সবাই তাঁকে পরিহার করতে শুরু করেছেন। এই তাসলিমা বিতাড়িত মন্ত্রীকে সমর্থন করেছেন। তথাকথিত উদার গণতন্ত্রী ভারত কয়েক মাস আগে সনাতন ধর্ম সম্পর্কে লিখিত একটি গবেষণা পুস্তক নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। কিন্তু তসলিমার বই লাখ লাখ কপি ছাপিয়ে বিলি করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বিতাড়িত মন্ত্রীকে পরামর্শ দিয়েছেন এখন দেশে ফিরে না আসার জন্যে। আসলে নাকি ইসলামিষ্টরা নাকি নিরাপত্তা সৃষ্টি করতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর ভাষায় মনে হচ্ছে বিতাড়িত মন্ত্রীর কটুক্তিতে শুধুমাত্র ইসলামিষ্টরাই ক্ষুব্দ হয়েছে। সারা দেশবাসী মানে মুসলমানেরা এতে ক্ষুব্দ হয়নি। তিনি হয়ত আওয়ামী রাজনীতির দৃষ্টিতে বিষয়টি দেখছেন। শুরুতেই বলেছি বাংলাদেশের রাজনীতি এখন সুবিধাবাদ। ভোটার যদি চায় তাহলে হিজাব পরে চলতে হবে। ভোটার যদি চায় তাহলে দূর্গাকে প্রণাম করা যাবে। ধর্মহীনরা যদি বলে সংবিধান থেকে আল্লাহর নাম বাদ দিন, ভোটারের সন্তুষ্টির জন্যে তাও করা যাবে। সব কথার আসল কথা হলো ভোটার হলো দেবতা। যে ফুলে দেবতা তুষ্ট হয় সেই ফুল দিয়ে বন্দনা করতে হবে। যারা ভোটারদের তুষ্ট করতে জানেনা বা বহুরূপী হতে পারেনা তাদের বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার থাকবেনা। এমন একটি হৃদয় বিদারক ঘটনার পরও ওই ধর্মত্যাগীকে কোন রকম শাস্তি দেওয়া হয়নি। দল বা সরকার জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়া হয়নি। এমন হৃদয় বিদারক ঘটনা না করেও একজন মন্ত্রী কেবিনেট থেকে বাদ পড়তে পারেন। মন্ত্রীত্ব থেকে বরখাস্ত হওয়া কোন ধরণের শাস্তি হতে পারেনা।
লেখক: কবি ও ঐতিহ্য গবেষক
http://www.humannewspaper.wordpress.com