রাস্ট্র মানব জীবনে একটি অপরিহার্য বাস্তবতা ও সত্য। দার্শনিক এ্যারিস্টটল বলেছেন, রাস্ট্র মানুষের একটি স্বভাবগত কার্যক্রম। মানুষ স্বাভাবিক ভাবেই সামাজিক। মানুষের প্রকৃতিই তাঁকে রাস্ট্র গঠন ও পরিচালনায় উদ্বুদ্ধ করেছে। মহামতি এ্যারিস্টটল আরও বলেছেন, যে মানুষ রাস্ট্র ব্যবস্থার প্রয়োজনবোধ করেনা, সে হয়ত মানবেতর জীব, না হয় মানব প্রজাতির উর্ধে কোন সত্তা, যার মধ্যে মানবীয় প্রকৃতির কোন অস্তিত্ব নেই। দার্শনিক প্ল্যাটোও বলেছেন, রাস্ট্র ব্যবস্থার অধীনতা ব্যতিরেকে উন্নত জীবন যাপন কোন ব্যক্তির পক্ষে সম্ভব নয়। রাজনীতি মানব প্রকৃতি ও চরিত্রের মূলে প্রোথিত। শব্দটা রাজনীতি না হয়ে জননীতি বা গণনীতি হওয়াই বাঞ্ছনীয়। এই প্রবণতার কারণেই মানুষ সমাজ গঠন করে এর নিয়ম কানুন তৈরি করে শৃংখলাব্ধ হয়ে জীবন যাপন করার জন্যে। ওইভাবেই একদিন সমাজ প্রধান, গোস্ঠি, কওম বা জাতি তৈরি হয়েছে। ওই জাতি বা গোস্ঠিকে নিজেদের তৈরি আইনের মাধ্যমে পরিচালনার জন্যে রাজা বাদশাহ ইত্যাদি পদের সৃস্টি হয়েছে। রাজা বাদশাহরা এক সময় নিস্ঠুর স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠে। ফলে জনরোষ ও গণবিদ্রোহ শুরু হয়। পৃথিবী থেকে আস্তে আস্তে রাজা মহারাজা নবাব বাদশাহরা বিদায় নিতে শুরু করেন। শুরু হয় জনগণের রাস্ট্র ব্যবস্থা। শুরু হয় রাস্ট্র পরিচালকদের নির্বাচন। শুরু হয় নাগরিক অধিকারের সীমা। রাস্ট্র ও নাগরিকদের অধিকারের সম্পর্ক ও সীমাবদ্ধতা। শুরু হয় নির্বাচনের জাল জালিয়াতি। জোর করে বা নির্বাচিত হওয়ার ধারনা। দেখা গেল নির্বাচনের মাধ্যমে সিভিল ডিক্টেটরের জন্ম। ভোটের মাধ্যমে বা বিপ্লবের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে সম্রাট হয়ে যাওয়া। আবার শুরু হলো জনগণের বিদ্রোহ বিপ্লব নির্বাচিত সিভিল স্বৈর শাসকদের বিরুদ্ধে। কোথাও সমাজতান্ত্রিক স্বৈর শাসক বা কোথাও তথাকথিত নির্বাচিত স্বৈর শাসকের বিরুদ্ধে। মধ্যপ্রাচ্য ও আরব দেশগুলোতে নির্বাচিত স্বৈর শাসকদের বিরুদ্ধে জনরোষ ও গণবিদ্রোহ দেখা দিয়েছে। সেখানে শাসকরা নির্বাচনের লেবাস পরে এক একজন ৩০/৪০ বছর ক্ষমতায় আছেন। সত্যকথা বলতে কি সেখানে শাসকগণ তথাকথিত নির্বচনের মাধ্যমে যুগের পর যুগ ধরে নির্বাচিত হচ্ছেন। তাদেরকে ক্ষমতা থেকে সরাবার জন্যে জনগণের কাছে বিদ্রোহ করা ছাড়া আর কোন পথ খোলা ছিলনা। এসব শাসককে আমেরিকা এবং তার বন্ধুরা এতদিন ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখেছিল নানা ছলে ও কৌশলে। এখন আমেরিকাই তাদের ক্ষমতা থেকে সরাবার জন্যে প্রকাশ্যে অথবা অপ্রকাশ্যে গণরোষকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। ৫০ থেকে ৮০ সাল নাগাদ আমেরিকা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সামরিক শাসনকে সমর্থন দিয়ে এসেছে। পাকিস্তানের সকল সামরিক শাসককেই আমেরিক সমর্থন দিয়ে এসেছে। আমেরিকার সাথে পাকিস্তানের বন্ধুত্ব রয়েছে প্রায় ৬০ বছর ধরে। সেই পাকিস্তান এখন আমেরিকার কারণে নানা সংকটে আছে। কথায় কথায় পাকিস্তানে আমেরিকা ড্রোন বিমান হামলা চালাচ্ছে। পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বের তোয়াক্কা না করে এবোটাবাদে ঢুকে ওসামা হত্যার নামে সামরিক অভিযান চালিয়েছে। এখন বলছে আরও সামরিক অভিযান চালাবে।
বংগবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১০ ই জানুয়ারী পাকিস্তানের কারাগাসর থেকে ফিরে এসে ৭২-৭৫ সাল নাগাদ প্রায় ৪৪ মাস সরকার চালিয়েছেন। এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, ৭০ সালের নির্বাচনে বংগবন্ধু এ দেশের একচ্ছত্র নেতা হিসাবে প্রতিস্ঠিত হয়েছিলেন। দলমত নির্বিশেষে সবাই তাঁর নেতৃত্ব মেনে নিয়েছিলেন। তাঁরই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কথা ছিল। সেটা তাঁর আইনগত অধিকার ছিল। তত্কালীন প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া তাঁকে প্রধানমন্ত্রী বলে সম্বোধনও করেছেন। পাকিস্তানের দূর্ভাগ্য তত্কালীন সামরিক জান্তা ও জুলফিকার আলীর ভূট্টোর প্ররোচনায় পড়ে পূর্ব পাকিস্তানের নিরীহ নিরস্ত্র মানুষের উপর সামরিক আক্রমণ চালায়। ঠিক এমনি সময়ে ২৬/২৭শে মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে অজানা অচেনা মেজর জিয়া জীবনের সকল ঝুঁকি নিয়ে বংগবন্ধুর নামে স্বাধীনতার ঘোষনা দেন এবং বিশ্ববাসীকে স্বাধীনতার যুদ্ধে সমর্থন দেবার আহবান জানান। তখন দেশবাসী কেউ জানেনা বংগবন্ধু কি করছেন এবং কোথায় আছেন। এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে পাকিস্তান সরকার ঘোষনা দিলো বংগবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তিনি পাকিস্তানের কারাগারে আছেন। যদিও তাঁর পরম ভক্তরা অনেকেই প্রচার করেন তিনি ২৬শে মার্চ ঘোষণা দিয়েছেন এবং তা অনেকেই শুনেছেন। ভক্তরা ও রকম প্রচার না করলেও তিনিই ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের প্রধান নেতা। এ ব্যাপারে কারো কোন দ্বিমত নেই। আওয়ামী লীগ কি কারনে জানিনা বংগবন্ধু আর জিয়া সাহেবকে স্বাধীনতার ঘোষণার প্রশ্নে মুখোমুখি এনে দাঁড় করিয়েছে। এ রকম করার কোন প্রয়োজন ছিলনা। এখন বলা হচ্ছে, ৭ই মার্চের ঘোষণাই বংগবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা। খুব ভাল কথা। তাহলেতো আমাদের স্বাধীনতা দিবসের তারিখটা বদল করে ২৬শে মার্চের পরিবর্তে ৭ই মার্চে নিয়ে আসতে হবে। সেটাতো আওয়ামী লীগ এখন করতে পারে। সে যাই হোক। এমন জনপ্রিয় গণতান্ত্রিক নেতা শেষ পর্যন্ত গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু করেন। সরকারী মালিকানা ছাড়া সকল খবরের কাগজ বন্ধ করে দেন। এমনি ভাবেই তিনি একজন সিভিল ডিক্টেটরে পরিণত হয়েছেন। সকল সরকারী কর্মচারীকে একদলের সদস্য ঘোষনা করলেন। দেশের সেনাবাহিনীওকে একদলের সদস্য করা হলো। তিনি আমরণ রাস্ট্রপতি থাকার ব্যবস্থা করলেন। কেন বাংলাদেশের এক নম্বর জনপ্রিয় নেতা এমন কাজটি করলেন তা আজও দেশবাসী জানেনা। অনেকেই মনে করেন, তিনি সিপিবির প্ররোচনায় একাজ করেছিলেন। বংগবন্ধু যদি একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম না করতেন তাহলেও তিনি হয়ত নির্বাচনের মাধ্যমে বহু বছর ক্ষমতায় থাকতেন। তবে হয়ত ২৯৩ সিট পেতেন না। কম পেলে কি হতো? ১৫১ সিট পেলেও তিনি ক্ষমতায় থাকতেন। কিন্তু মোসাহেবরা তাঁকে বুঝিয়েছে জনপ্রিয়তা কমে গেলে তাঁর উপর জন আস্থা নেই বলে প্রমানিত হবে। তিনি হয়ত সেটা সহ্য করতে পারবেন না। তিনি মোসাহেবদের কথা শুনেই ৭৩ সালে কিছুটা জোর করেই কিছু সিট বেশী নিয়েছিলেন। যদি ও রকম জোর জবরদস্তি না করতেন তাহলে হয়ত ২৭০ সিট পেতেন। কিন্তু ইতোমধ্যেই বংগবন্ধু মনোজগতে একজন ডিক্টেটরে পরিণত হয়েছিলেন।
অপরদিকে পরিবেশ ও পরিস্থিতির কারণে ক্ষমতা গ্রহণ করে জেনারেল জিয়া বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থায় ফিরে গেলেন। নিষিদ্ধ পত্রিকাগুলো চালু করার নির্দেশ দিলেন। জেনারেল জিয়াই দেশে সকল মত ও পথ প্রকাশের ব্যবস্থা করলেন। যা সাধারনত: কোন সামরিক শাসক করেন না। জেনারেল জিয়া ছিলেন ফ্রান্সের জেনারেল দ্য গলের মতো একজন জনপ্রিয় শাসক। দু’জনই দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্যে লড়াই করেছেন। জিয়া সাহেব আর দ্য গলের জনপ্রিয়তাই প্রমান করে তাঁরা কত বড় নেতা ছিলেন। কারণ দুজনই দেশের জনগণের সাথে ছিলেন। ফলে তাঁদের কেউই সামরিক ডিক্টেটর বা স্বৈর শাসক বলেনা। জিয়া সাহেবের মৃত্যুই প্রমান করে তিনি এ দেশর একজন সর্বশ্রেষ্ঠ নেতা ছিলেন। অপরদিকে দেশের এক নম্বর নেতা বংগবন্ধু জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বৈর শাসকে পরিণত হয়েছিলেন। যাঁরা বংগবন্ধুর সর্বনাশ ডেকে এনেছিল তাঁরাই এবার তাঁর কন্যার কাঁধে ভর করেছে। আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরাই বলে বেড়াচ্ছেন, আওয়ামী লীগের জুব্বা পরে দেশ চালাচ্ছে সিপিবি ও ভারতের মনোনীত লোকেরা। মন্ত্রীসভা দখল করে রেখেছে সিপিবি ও সাবেক মস্কো ন্যাপের লোকেরা।৭২-৭৫ এ দেশের রাজনীতিতে যে পরিস্থিতি ও পরিবেশ বিরাজ করছিলো এখন হুবহু সেই পরিবেশই বিরাজ করছে। জীবন যাপনের সকল উপকরনের দাম বেড়েছে। এক কেজি ভাল চালের দাম ৬৫ টাকা। মোটা চাল ৪০ টাকা। বাস সিএনজি ও রিকসা ভাড়া বেড়েছে কয়েক গুন বেশী। কোথাও কেউ সরকারী নির্দেশ মানছেনা। দেশের দশ ভাগ লোকের নেতারা ৯০ ভাগ মানুষের ধর্ম নিয়ে তামাশা শুরু করেছেন। সুরন্জিত বাবু ( যিনি কখনই আওয়ামী লীগে ছিলেন না ) ধর্ম বিরোধী আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন। যাঁরা কখনই নির্বাচিত হন না তাঁরাই আওয়ামী লীগের কাঁধে ভর করে ধর্ম বিরোধী কথা বলছেন। এক সময় বংগবন্ধুই বলেছিলেন বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলমান দেশ। তিনিই ভারতের আপত্তিকে গ্রাহ্য না করে পাকিস্তানের লাহোরে ওআইসি সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। বাংলাদেশের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা থাকলেও বংগবন্ধু তাকে গুরুত্ব দিতেন না। তিনি নিজেকে একজন মুসলমানই মনে করতেন। বংগবন্ধুর কন্যা এখন যাদের নৌকায় তুলে নিয়ে দেশ চালাচ্ছেন তারা কেউই তাঁর কল্যাণ বা মংগল কামনা করেনা। তিনি কি ভুলে গেছেন বংগবন্ধু ইন্তিকাল করার পর তাঁর লাশ সিঁড়ির উপর ফেলে রেখে পালিয়ে গিয়েছিল। বিদেশে গিয়ে বংগবনধুকে ফেরাউন বলে গালি গালাজ করেছে। যাঁরা দেশে ছিলেন তাঁদের অনেকেই খোন্দকার মোশতাকের সাথে হাত মিলিয়েছিলেন। আল্লাহ না করুন, দোয়া করছি এমন যেন না হয় বংগবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রীর ভাগ্যে। পরম করণাময় আল্লাহপাক তাঁকে হেফাজত করুন। তিনিতো জানেন, চেনা অ্চেনা ও পরিচিত অপরিচিতের মাঝে তাঁর কত শত্রু রয়েছে। বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ উদ দৌলার পতন হয়েছিল তাঁর অতি আপনজনের শত্রুতার কারণে। ইংরেজদের ষড়যন্ত্রের কারণে দৈহিক ভাবে সিরাজের বিদায় হলেও সিরাজ বাংলার মানুষের হৃদয়ে চির জাগরুক হয়ে রয়েছে ২৫০ বছর পরেও। কারণ, তিনি জীবন দিয়েছেন বাংলার মানুষের জন্যে। বাংলার মানুষ সিরাজকে কখনই ভুলবেনা। সাথে বেঈমানদেরও দেশবাসী চিনে রেখেছে।
আমি অতীব আবেগের আগুনে দগ্ধ হয়ে একথা গুলো লিখছি। আমি কোন রাজনীতিক নই। আমার কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও নেই। জীবনের দুই তৃতীয়াংশ সময় ধরে আমি সাংবাদিকতা করছি এবং এখন অবসর জীবনে খবরের কাগজে কলাম লিখছি নিজের বিবেকের তাড়নায়। ভাবি যদি দেশবাসীর কিছু উপকার হয়। যদি আল্লাহপাক আমার ভাবনাকে কবুল করে নেন। ধর্ম ও দেশের ৯০ ভাগ মানুষের বিশ্বাস নিয়ে কিছুলোক আপনার ছায়ায় থেকে ২৬৩ সিটের জোরে যা করছে তা দেশবাসী কখনই মেনে নিবেনা। আপনি জানেন, বাদশাহ আকবর সেকুলার সাজার জন্যে এবং তাঁর হিন্দু আত্মীয় স্বজনকে খুশী করার জন্যে দ্বীনে ইলাহী প্রতিস্ঠার চেস্টা করেছিলেন। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। বাদশাহ আকবর ওই মহাভুলটি করেছিলেন অতি প্রিয় কিছু হিন্দু অমাত্যের পরামর্শে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার ক্ষেত্রেও এখন সেই পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ মুসলমান প্রধান দেশ বা অঞ্চল না হলে কখনই আলাদা স্বাধীন দেশ হতোনা। ভারতের অংগরাজ্য হিসাবেই থাকতো। আপনি কি একবারও ভাবেন না পশ্চিম বাংলায় ৩০ ভাগ থাকা সত্ত্বেও সমাজ ও রাস্ট্রীয় জীবনে তাঁদের উপস্থিতি তিন ভাগের বেশী নয়। ভারতের কোথাও মাইকে আজান দিয়ে নামাজের আহবান জানানো হয়না। প্রকাশ্যে কোথাও গরু জবাই হয়না। বাংলাদেশের মানুষ অতীব অসাম্প্রদায়িক বলে এখানে দশ ভাগ মানুষের উপস্থিতি ৫০ ভাগের মতো। বরং কোন কোন ক্ষেত্রে অনেক বেশী। আরবী নামধারী কিছুলোক নিজেদের মুসলমান পরিচয় দিয়ে সমাজে ঘুরে বেড়ায় তাঁরা আসলে মোনাফেক। শেখ হাসিনার সরকার এখন কিছু মোনাফেকের পাল্লায় পড়েছে। অবিশ্বাসী বা ধর্মহীনরা মোনাফেকদের চেয়ে হাজার গুণ ভালো। সমাজ ও রাস্ট্রীয় জীবনে তাদের কোন দায়বদ্ধতা বা কমিটমেন্ট নাই। ফলে সময়ের প্রয়োজনে তাঁরা কেউ সরকারের সাথে থাকবেনা। এদের কুকর্মের সকল দায় দায়িত্ব শেখ হাসিনাকে একাই বহন করতে হবে। সংবিধানে রাস্ট্রধর্ম আছে, বিসমিল্লাহ আছে এবং পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালার উপর আস্থার কথা আছে। যাঁরা সংবিধানে এসব বিষয় সংযোজন করেছেন তাঁরা এখন আর ক্ষমতায় নেই। দেশের উন্নতির জন্যে কাজ করার পথে ওইসব বিধান কখনই বাদা হিসাবে কাজ করেনা। আওয়ামী রাজনীতি করা এবং ভোট চাওয়ার ব্যাপারেও বিধান গুলো কখনওই ক্ষতিকারক নয়। তারপরেও আওয়ামী লীগকে জনবিচ্ছিন্ন করার জন্যে কিছুলোক যাঁরা চিন্তা ও কর্মে মাইনরিটি তাঁরাই ৯০ ভাগ মানুষের বিশ্বাসকে নিয়ে তামাশা করছে।
এখনই সময়, প্রধানমন্ত্রীর উচিত হবে মোনাফেকদের চিনে রাখা এবং আওয়ামী লীগকে তাদের গোপন ও প্রকাশ্য যড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করা। আমরা জানি দেশের প্রধানমন্ত্রী একজন ধার্মিক মানুষ। তিনি নিয়মিত ধর্ম চর্চা করেন। তিনি আল্লাহ কোরাণ আখেতার ও শেষ নবীতে(সা) বিশ্বাস করেন। আল্লাহপাক কালামে পাকের সুরা বাকার ৮-৯ নম্বর আয়াতে বলেছেন, ‘মানুষের মধ্যে এমন কিছু লোক রয়েছে যারা বলে আমরা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করি। কিন্তু তারা বিশ্বাসী নয় । আল্লাহ এবং মোমিনদেরকে তারা প্রতারিত করতে চায়।’ সুরা আস শুয়ারার ২২৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহপাক বলেন, মোনাফেকরা যা করেনা তা বলে। বাংলাদেশ এখন গুটি কতক মোনাফেকের পাল্লায় পড়েছে। তারা প্রধানমন্ত্রীকে বিভ্রান্ত করার জন্যে অবিরত কাজ করে যাচ্ছে। তাদের লক্ষ্যই হলো বাংলাদেশের ৯০ ভাগ মানুষের বিশ্বাস নিয়ে তামাশা করা। আওয়ামী লীগের মতো এত বড় একটা রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে ধর্ম বা সংবিধানের ধর্ম বিষয়ক কথা বলার জন্যে যাঁকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তাঁর কথা বলার ঢং এবং বাক্য ৯০ ভাগ মানুষকে ক্ষুব্দ করে তুলেছে। মনে হয় তিনি এবং তাঁ সাঙ পাঙরা মুসলমানদের প্রতি দয়া করছেন।
কালামে পাকে সুরা নমলে আল্লাহতায়ালা স্বৈরাচার সম্পর্কে বলেছেন, স্বৈরাচারী কোন শাসক যখন কোন জনবসতির উপর কতৃত্ব লাভ করে তখন তারা সেই জনপদের মানুষদের ধ্বংস করে ফেলে। তারা সবচেয়ে বেশী অপমানিত ও লাণ্ছিত করে জনপদের সম্মানিত মানুষদের। আমরা আমাদের এই জনপদে অনেক স্বৈর শাসককে দেখেছি।আমাদের আশে পাশের দেশেও বহু অত্যাচারী স্বৈর শাসক ছিল। তারা কেউই আজ আর নেই। ইতিহাসের পারা থেকেও আমরা বহু অত্যাচারী ধ্বংসপ্রাপ্ত স্বৈর শাসকের কথা জানতে পেরেছি। ইসলাম ও মুসলমানদের ধ্বংস করার জন্যে এখনও বহুদেশের শাসকরা যুদ্ধে নেমেছে। তারা কখনই সফল হবেনা। বাংলাদেশেও কোন শাসকের এই অপচেস্টা সফল হবেনা। আল্লাহতায়ালাই এই জনপদকে ইসলাম ও মুসলমানের দেশ বানিয়েছেন। তিনিই মুসলমানদের জন্যে এই দেশ রক্ষা করবেন।
লেখক: কবি ও সাংবাদিক