সেক্যুলারিজম ও ফান্ডামেন্টালিজম শব্দ দুটি জন্ম হয়েছে বৃটেনে। সে দেশ থেকে শব্দ দুটোকে চালান দেয়া হয়েছে পশ্চিমের বিভিন্ন দেশে। খৃশ্চিয়ানিটির প্রধান দুটি শাখার জন্ম হয়েছে বৃটেনে। বৃটেনের রাজার নেতৃত্বেই জন্ম নিয়েছে প্রটেস্ট্যান্ট শাখার। এই শাখার হেড কোয়ার্টার এখনও বৃটেনেই। বৃটেনের রাজ পরিবারই এই শাখার প্রধান যাজক। এর মানে রাজা বা রাজার প্রতিনিধি গীর্জা বা ধর্ম প্রধান থাকবেন। ক্যাথলিক শাখাকে ফান্ডামেন্টালিস্ট বলে গালাগাল দিয়ে বৃটেন থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ইতালীর ভ্যাটিকানে গিয়ে আশ্রয় পেয়েছে ক্যাথলিক শাখা। ইউরোপ আমেরিকার সীমানা ছাড়িয়ে শব্দ দুটো এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। শব্দ দুটো এখন আমাদের দেশে নিত্যদিনের শব্দ। মিডিয়ায় শব্দ দুটো খুব সম্মানের সাথে স্থান পেয়েছে। বাংলাদেশে তথাকথিত শিক্ষিত মার্জিত এক শ্রেণীর বুদ্ধিজীবী নিজেদের সেক্যুলার বলে আনন্দ পান। স্কুল কলেজের ছাত্ররা নিজের প্রগতিশীল সেক্যুলার বলে জাহির করে খুশী হয় এবং মনে করে তারা সবাই মহাজ্ঞানী। এসব ছাত্রের বেশ কিছু শিক্ষক আছেন যাঁরা নিজেদের সেক্যুলার, প্রগতিশীল, মানবতাবাদী বলে দাবী করেন। আমাদের দেশের সাধারন মানুষ সেক্যুলারিজম বা বাংলা অনুবাদের ধর্মনিরপেক্ষতা কি তা জানেনা। এ নিয়ে সাধার মানুষ একেবারেই মাথা ঘামায়না। সেক্যুলারিস্ট বা ধর্মনিরপেক্ষতা্বাদীরা এক ধরনের পরগাছা। নিজেরা একা বাঁচতে পারেনা। অন্যের কাঁধে ভর করে তাঁদের চলতে হয়। তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীরা এবং তাদের সাগরেদরা জানেনা তাঁরা কি চান। পৃথিবীতে ধর্মনিরপেক্ষতা বলে কিছুই নাই। এইতো কদিন আগে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা শপথ নিলেন বাইবেল স্পর্শ করে। বারাক ওবামাই প্রথম কালো মানুষ যিনি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। তিনি মুসলমান কিনা তা নিয়ে অনেক হৈচৈ হয়েছে। আমেরিকাতে বিভিন্ন জাতি ও ধর্মের মানুষ বাস করেন। সবাই মিলে আমেরিকাকে গড়ে তুলেছেন। ধর্মগত ভাবে খৃস্ট ধর্মে বিশ্বাসীরাই মেজরিটি বা সংখ্যা গরিষ্ঠ। তবে আমেরিকার উচ্চ সমাজে ইহূদীদের প্রভাব বেশী। ফলে আমেরিকার রাজনীতি, সমাজনীতি,অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে খৃষ্ট ও ইহুদী ধর্মের আধিপত্যও বেশী। আমেরিকায় একজন মুসলমান,হিন্দু বা বৌদ্ধের ক্ষমতায় আরোহন করা খুবই কঠিন।
পশ্চিমা দেশ গুলোতে বা তাদের প্রভাব বলয়ে বেঁচে থাকা দেশ গুলোতে তথাকথিত ধর্ম নিরপেক্ষতা প্রচারের জন্যে এক ধরনের এজেন্সী কাজ করে। এই এজেন্সীগুলো নানা আবরনে বিভিন্ন দেশের বুদ্ধিজীবীদের উপর ভর করে তাঁদের স্বার্থ আদায়ের জন্যে। স্বার্থগত কারণেই তাঁরা অনেক সময় ধর্ম বিরোধী কাজও করে। পশ্চিমের বুদ্ধিজীবীরা নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থের প্রয়োজনে ইসানবীর(আ)বিরুদ্ধে কলম ধারন করে ও সিনেমা বানায়। এসব দেখে আমাদের দেশেও এক শ্রেণীর বুদ্ধিজীবী উত্সাহিত হয়ে পড়েন। ভারত একটি মহা হিন্দুবাদী জংগী দেশ ও রাস্ট্র। কিন্তু বাইরের খোলস হলো ধর্ম নিরপেক্ষতা। ভারতে সারা বছর সাম্প্রদায়িক দাংগা হয়। মুসলমানদেরতো তারা হত্যা করেই। নিজ ধর্মের হরিজনদেরও তারা পুড়িয়ে মারে। ভারতে ব্রাহ্মণ ও তাদের সহযোগী ছাড়া অন্যদের রাজনীতি করা খুবই কঠিন। ধর্মীয় ভাবেই ভারত একটি বর্ণবাদী রাস্ট্র ও সমাজ। ভারতের ৬০ কোটি মানুষ অবহেলিত ও নির্যাতিত। এরা হলো মুসলমান ও হরিজন। এদের অধিকার নেই চলে। তবে মুসলমানরা ভারতে রাস্ট্রের অন্যায় আচরনের শিকার। হরিজনরা ধর্মের শিকার।
বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভারতের চেয়ে হাজার গুন ভালো। আমাদের ভাগ্য ভালো এদেশে হরিজন নেই, বর্ণবাদও নেই। কারণ বাংলাদেশের সমাজ বর্ণবাদী নয়। ধর্মই এদেশের মানুষকে অসাম্প্রদায়িক হতে সাহায্য করেছে। ইসলামে বর্ণবাদ নেই সাম্প্রদায়িকতা নেই। কালামেপাকে সুস্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করা হয়েছে মানুষ মানুষে কোন ভেদাভেদ নেই। সব মানুষ আল্লাহর দৃষ্টিতে সমান। দৃশ্যমান যে ভেদাভেদ আমরা দেখি তা হলো সমাজের সৃষ্টি। ধনী গরীব, আসরাফ-আতরাফ, আরব-আজম এসব সমাজের সৃষ্টি। সংক্রামক রোগের মতো মুসলমানেরা অমুসলমান সমাজ থেকে চলমান ভেদাভেদ আমদানী করেছে। আল্লাপাকের দৃষ্টিতে যার তাওয়াক্কুল বেশী সেই সবচেয়ে বেশী সম্মানিত ও ইজ্জতদার।
আমাদের দেশে সেক্যুলারিজম এক ধরণের ফ্যাশন। আরেকদল শিক্ষিত মানুষ আছেন যাঁরা নিজেদের মানবতাবাদী বলে দাবী করেন ও পরিচয় দেন। আমরা তাঁদের ভাল মানুষ হিসাবে চিনি। কিন্তু এ ধরনের ভাল মানুষেরা সবাই নিজেদের ধর্ম নিরপেক্ষ বলে দাবী করেন। এদের অনেকেই আবার মোনাফেক। ধর্মে বিশ্বাস করেন না বা ধর্মহীনদের সাথে জোট বেঁধে চলেন। যেমন ধরুন, আমাদের রাস্ট্রধর্ম ইসলাম। জেনারেল এরশাদ দেশের সাধারন মানুষের কাছে নিজের জনপ্রিয়তা বাড়াবার জন্যে ইসলামকে রাস্ট্র ধর্ম ঘোষণা করেছেন। তিনি তখন স্বপ্ন দেখে মসজিদে মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে যেতেন। এটা হচ্ছে ধর্মকে রাজনীতিতে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা। এরপরে বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে জনতার ভয়ে বাধা হয়ে ইসলামকে রাস্ট্র ধর্ম মেনে নিতে হয়েছে। বিএনপি ঘোষণা দিয়ে বলেছে যে ,তারা বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাস করে। তাই তারা ইসলামী দলগুলোর সাথে জোট বেঁধে চলে। আওয়ামী লীগ যদিও জোর গলায় নিজেদের ধর্ম নিরপেক্ষ বা সেক্যুলার বলে বেড়ায় তারাও রাস্ট্রধর্ম ইসলামকে মেনে নিয়েছে। এটা আওয়ামী লীগের মুখোশ পরা রাজনীতি। মানে বিশ্বাস করিনা ,কিন্তু ভোটের জন্যে মেনে নিলাম। আওয়ামী লীগের মন্ত্রীসভায় অনেক বামপন্থী, সেক্যুলার, ধর্মনিরপেক্ষ বা ধর্মহিন রাজনীতিক আছেন। ইতোমধ্যে জনগণের মাঝে দৃঢ় ধারণা জন্মেছে যে, আওয়ামী লীগ ইসলাম বিরোধী একটি রাজনৈতিক দল। চলতি আমলে এটা প্রমানিত হয়েছে যে, আওয়ামী লীগ দেশের মেজরিটি মানুষের বিরুদ্ধ অবস্থান নিয়েছে। আমেরিকা যেহেতু মুসলমানদের সন্ত্রাসবাদী মনে করে সেহেতু আওয়ামী লীগও মুসলমানদের সন্ত্রাসবাদী মনে করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধর্মপ্রাণ মুসলমান বানাবার জন্যে তাঁর সহযোগীরা প্রায়ই বলে থাকেন, আমাদের নেত্রী নিয়মিত কোরআন ও নামাজ পড়েন, রোজা রাখেন ও হ্বজ ও ওমরা পালন করেন। তাঁরা একথা বার বার বলে চলেছেন কেন? কারণ, তাঁরা নিজেরাও মনে করেন জন সাধারনের ধারণা আওয়ামী নেত্রী ধার্মিক নন। তিনি ধর্ম নিরপেক্ষ বা সেক্যুলার( মানে যাঁরা শুধু দুনিয়া নিয়ে থাকে, আখেরাতে বা শেষ বিচারে বিশ্বাস করেন না,পবিত্রতায় বিশ্বাসী নন,ধর্মীয় শিক্ষার বিরোধী,ধর্মীয় সত্যে আস্থা্হীন)। এবার আপনারাই বলুন আমাদের দেশে ধর্ম নিরপেক্ষ জ্ঞানী গুণীজন ধর্মনিরপেক্ষতা বলতে কি বুঝাতে চান। এই সেক্যুলার বা ধর্মনিরপেক্ষবাদীরা রাস্ট্র, আইন আদালত, শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধর্মহীনতার দিকে নিয়ে যেতে চান। বর্তমান মন্ত্রীসভার বেশীর ভাগ মন্ত্রীরাই ধর্ম নিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করেন। তাঁরা রাস্ট্রকে ধর্মহীন বা ধর্ম নিরপেক্ষ রাখতে চান। যে দেশের ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান বা ইসলামে বিশ্বাসী তাঁদের রাস্ট্র বা দেশ কিভাবে ধর্ম নিরপেক্ষ থাকবে। এর মানে দেশটা পরিচালিত হবে ধর্মহীন লোকদের দ্বারা। অপরদিকে ধর্মহীন লোকেরাই সংবিধানে রাস্ট্র ইসলাম বহাল রেখেছেন শুধু মাত্র দেশের ৯০ ভাগ সাধারন মানুষকে ধোকা দেয়ার জন্যে। এই তথাকথিত সেক্যুলার লোকেরাই বিসমিল্লাহ , আল্লাহু আকবর বলতে নারাজ। তাঁরা বাংলায় অনুবাদ করে বিসমিল্লাহর স্থলে বলেন, পরম করুণাময়ের নামে শুরু করছি, আল্লাহু আকবরের স্থলে বলেন,আল্লাহ সর্ব শক্তিমান। সেক্যুলার আর বাংলা ব্যবহারকারীদের নিয়ে বংগবন্ধুর আমলেই মশকরা বা কৌতুক হয়েছিল। স্পীকার আবদুল মালেক উকিল সাহেবের নাম করা হয়েছিল ভগবান দাস উকিল। এই সেক্যুলার বা প্রগতিশীলরা সব সময় সময় সমাজ , রাস্ট্র ও দেশকে বিভ্রান্ত করেছেন তাঁদের আচরনে। তাঁরা এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদ্রাসা থেকে পাশ করা মেধাবী ছাত্রদের ভর্তি করতে চান না। কি কারণ তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ ব্যাখ্যা করেননি। আদালতের রায়ের পরেও কতৃপক্ষ মাদ্রসা ছাত্রদের ভর্তি করা হচ্ছেনা। পাঠক সমাজ নিশ্চয়ই জানেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কি পরিস্থিতিতে কারা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যাঁরা বিরোধিতা করেছিলেন তাঁদের আদর্শের সাথে হাত মিলিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ। পাঠক সমাজকে অবশ্যই বুঝতে হবে বর্তমানে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী কারা এবং তাঁদের আদর্শ ও উদ্দেশ্য কি? আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতা হচ্ছে মেজরিটি মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া। আমি মনে করি আওয়ামী লীগ বা এর নেত্রী কখনই ধর্মহীন নন। দলটির কাঁধে ভর করেছে ধর্মহীন এক শ্রেণীর লোক যাঁদের কোন ভোট বা সমর্থন নেই। এরা ভোটে দাঁড়ালে ৫০০ ভোটও পায়না। এবার নৌকায় ভর করে তাঁরা মন্ত্রী এমপি হয়েছে। এখন তাঁরাই খুব বড় গলায় নানা বিষয়ে গলাবাজী করে যাচ্ছে। এসব সেক্যুলারিস্টদের ঠিকানা পশ্চিমা এনজিও আর দিল্লী। এমন কি এদের মাঝে মাঝে শেল্টার দেয় পশ্চিমা দেশ গুলো। ভারতে লক্ষ্য এখানে ইসলামী বা মুসলমানদের চিন্তাধারা যেন বিকশিত না হয়। সোজা কথাঞ ধর্ম মসজিদ আর বাসগৃহে থাকবে। রাস্ট্র চলবে ধর্মহীনদের দ্বারা। ধর্মহীনদের কোন দল নেই, থাকলেও তাঁদের কোন দল বা ভোট নেই। এরা আসলে মোনাফেক। এদের বিভিন্ন সময়ে আপনারা মুনাজাতরত অবস্থায় দেখবেন। কখনও কখনও মসজিদেও দেখবেন। সবকিছুই হচ্ছে লোক দেখানো। এরাই ছবির সামনে দাঁড়িয়ে মুনাজাত করে আবার মন্দিরে গিয়ে মুর্তির সামনে প্রার্থনা করে। এরাই ধর্মহীন বিবাহ ব্যবস্থা সমর্থন করে। হিন্দুদের জন্যে এ ব্যবস্থা খুবই ভাল। কারণ তাঁদের ধর্মের বর্ণবাদ ব্যবস্থায় সহজে বিয়ে হতে চায়না। এ ধরণের বিয়েতে ধর্মের কথা উল্লেখ করতে হয়না। একেবারে খাঁটি বিয়ের ব্যবস্থা। হিন্দু ধর্মে কনভার্সন বা ধর্মান্তর বাংলাদেশে কোর্ট ম্যারেজে একই ধর্মাবলম্বী হতে হয়। ধর্মহীন বিয়ের ব্যবস্থা তথাকথিত সেক্যুলারদের একট বড় খবর। রাস্ট্রই কারো উসকানীতে এ ব্যবস্থা চালু করেছে। শুনেছি, ইতোমধ্যেই নাকি চার পাঁচটা ধর্মহীন বিয়ে সম্পাদিত হয়েছে। এই বিয়ে ব্যবস্থার কাজী বা রেজিস্ট্রার হচ্ছেন শ্রীযুক্ত প্রাণেশ সমাদ্দার।
এবার সেক্যুলার অর্থনীতি নিয়ে দুচারটা কথা বলতে চাই। বাংলাদেশে ইসলামী বা মৌলবাদী অর্থনীতির গুরু হচ্ছেন শ্রীযুক্ত আবুল বারাকাত। তিনি রাশিয়া থেকে অর্থনীতিতে পান্ডিত্য অর্জন করে এসেছেন। তাঁর জ্ঞানের বহর হচ্ছে সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি। যা এখন বিশ্বে কোথাও নেই। তিনি এখন ধনবাদী ও সুদবাদী একটি সরকারী ব্যান্কের চেয়ারম্যান। এ পদে তাঁর নিয়োগ পাওয়ার প্রধানতম উপাদান হলো সেক্যুলার এবং ইসলামী অর্থনীতির বিরুদ্ধে। এ নিয়ে তিনি কয়েক হাজার পাতার গবেষণা করেছেন। দেশে এখন বেশ কয়েকটি ইসলামী ব্যান্ক রয়েছে। এসব ব্যান্কের ডিপোজিট তথকথিত সেক্যুলার সরকারী ব্যান্কের চেয়েও বেশী। পন্ডিত আবুল বারাকাত সকল প্রকার ইসলামী ব্যবস্থাকেই জামাতী ব্যবস্থা মনে করেন। আর তাঁকে সমর্থন করেন বিদেশী ব্যান্ক ও এনজিও গুলো। ইসলাম বিরোধী প্রচারণা চালাবার জন্যে এনজিও গুলো বিদেশ থেকে বহু টাকা পয়সা নিয়ে আসে। এসব টাকা ইহুদীবাদের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থা থেকে বাংলাদেশে আসে। সেসব টাকা লগ্নী করে ব্র্যাক জাতীয় তথাকথিত গরীব দরদী স্যার উপাধি লোকজন। বাংলাদেশে ইহুদী পুঁজির সাথে জড়িত কিছু বিদেশী ব্যান্কও ইসলামী ব্যান্কিং ব্যবস্থা চালু করেছে শুধুমাত্র নিরীহ সরল মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্যে। বর্তমানে বাংলাদেশে সেক্যুলারিজমের রমরমা অবস্থা। ভাল ধর্মহীন বা সেক্যুলার হতে পারলে চাকুরী,মন্ত্রীত্ব, এমপিগিরি, আমলাগিরি ও উপদেষ্টাগিরি সহজেই পাওয়া যায়। প্রধানমন্ত্রীর উপদেস্টারা সবাই খাঁটি সেক্যুলার। এরা পশ্চিমাদের বরপুত্র। রিজভী নামক এক অজানা অচেনা বিদেশী ভদ্রলোকতো সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হয়ে গেছেন। তিনি দিল্লীতে আট বছর কাজ করেছেন ফোর্ড ফাউন্ডেশনের কর্তা হিসাবে। বাংলাদেশে ফোর্ড ফাউন্ডেশনের সব সম্পদ দেখাশুনা করার দায়িত্ব পেয়েছে ফ্রিডম ফাউন্ডেশন নামক একটি এনজিও প্রতিষ্ঠান,যার কর্ণধার হলেন একজন সম্পাদকের স্ত্রী। বেশ কয়েক বছর আগে ফ্রিডম ফাউন্ডেশন থেকে বাংগালি টাইতেল নিয়ে নিয়ে একটি ম্যাগাজিন বেরিয়েছিল। এতে বলা হয়েছিল দূর্গাপূজা বাংগালিদের একটি কালচারেল এক্টিভিটি। একই ভাবে বৃটিশ হাই কমিশনের উদ্যোগে ও অর্থায়নে বাংলাদেশের মাদ্রসা গুলোর জরীপ চালিয়েছিলেন একজন শিক্ষাবিদ।
এই জরীপের ফলাফল ছিল মাদ্রাসা গুলোতে জংগীবাদী তৈরি করা হয়। বাংলাদেশের মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিকায়নের জন্যে আমেরিকা নানা ধরনের উপদেশ, সুপারিশ খয়রাত করেছিল। এমন কি বিপুল অর্থ সরবরাহের ওয়াদা দিয়েছিল। সোজা কথায় মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে সেক্যুলার করতে হবে। এই কারণেই ঢা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদ্রাসার ছাত্রদের ভর্তি হতে দেয়া হচ্ছেনা। সেনা বাহিনীতে কত মাদ্রাসার ছাত্র চাকুরী পেয়েছে তার উপরেও জরীপ চালানো হয়েছে। এর মানে সেনা বাহিনীকেও সেক্যুলার করতে হবে।
লেখক: কবি ও কলামিস্ট
ershadmz40@yahoo.com