Feeds:
Posts
Comments

Archive for January, 2013


সেক্যুলারিজম ও ফান্ডামেন্টালিজম শব্দ দুটি জন্ম হয়েছে বৃটেনে। সে দেশ থেকে শব্দ দুটোকে চালান দেয়া হয়েছে পশ্চিমের বিভিন্ন দেশে। খৃশ্চিয়ানিটির প্রধান দুটি শাখার জন্ম হয়েছে বৃটেনে। বৃটেনের রাজার নেতৃত্বেই জন্ম নিয়েছে প্রটেস্ট্যান্ট শাখার। এই শাখার হেড কোয়ার্টার এখনও বৃটেনেই। বৃটেনের রাজ পরিবারই এই শাখার প্রধান যাজক। এর মানে রাজা বা রাজার প্রতিনিধি গীর্জা বা ধর্ম প্রধান থাকবেন। ক্যাথলিক শাখাকে ফান্ডামেন্টালিস্ট বলে গালাগাল দিয়ে বৃটেন থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ইতালীর ভ্যাটিকানে গিয়ে আশ্রয় পেয়েছে ক্যাথলিক শাখা। ইউরোপ আমেরিকার সীমানা ছাড়িয়ে শব্দ দুটো এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। শব্দ দুটো এখন আমাদের দেশে নিত্যদিনের শব্দ। মিডিয়ায় শব্দ দুটো খুব সম্মানের সাথে স্থান পেয়েছে। বাংলাদেশে তথাকথিত শিক্ষিত মার্জিত এক শ্রেণীর বুদ্ধিজীবী নিজেদের সেক্যুলার বলে আনন্দ পান। স্কুল কলেজের ছাত্ররা নিজের প্রগতিশীল সেক্যুলার বলে জাহির করে খুশী হয় এবং মনে করে তারা সবাই মহাজ্ঞানী। এসব ছাত্রের বেশ কিছু শিক্ষক আছেন যাঁরা নিজেদের সেক্যুলার, প্রগতিশীল, মানবতাবাদী বলে দাবী করেন। আমাদের দেশের সাধারন মানুষ সেক্যুলারিজম বা বাংলা অনুবাদের ধর্মনিরপেক্ষতা কি তা জানেনা। এ নিয়ে সাধার মানুষ একেবারেই মাথা ঘামায়না। সেক্যুলারিস্ট বা ধর্মনিরপেক্ষতা্বাদীরা এক ধরনের পরগাছা। নিজেরা একা বাঁচতে পারেনা। অন্যের কাঁধে ভর করে তাঁদের চলতে হয়। তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীরা এবং তাদের সাগরেদরা জানেনা তাঁরা কি চান। পৃথিবীতে ধর্মনিরপেক্ষতা বলে কিছুই নাই। এইতো কদিন আগে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা শপথ নিলেন বাইবেল স্পর্শ করে। বারাক ওবামাই প্রথম কালো মানুষ যিনি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। তিনি মুসলমান কিনা তা নিয়ে অনেক হৈচৈ হয়েছে। আমেরিকাতে বিভিন্ন জাতি ও ধর্মের মানুষ বাস করেন। সবাই মিলে আমেরিকাকে গড়ে তুলেছেন। ধর্মগত ভাবে খৃস্ট ধর্মে বিশ্বাসীরাই মেজরিটি বা সংখ্যা গরিষ্ঠ। তবে আমেরিকার উচ্চ সমাজে ইহূদীদের প্রভাব বেশী। ফলে আমেরিকার রাজনীতি, সমাজনীতি,অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে খৃষ্ট ও ইহুদী ধর্মের আধিপত্যও বেশী। আমেরিকায় একজন মুসলমান,হিন্দু বা বৌদ্ধের ক্ষমতায় আরোহন করা খুবই কঠিন।

পশ্চিমা দেশ গুলোতে বা তাদের প্রভাব বলয়ে বেঁচে থাকা দেশ গুলোতে তথাকথিত ধর্ম নিরপেক্ষতা প্রচারের জন্যে এক ধরনের এজেন্সী কাজ করে। এই এজেন্সীগুলো নানা আবরনে বিভিন্ন দেশের বুদ্ধিজীবীদের উপর ভর করে তাঁদের স্বার্থ আদায়ের জন্যে। স্বার্থগত কারণেই তাঁরা অনেক সময় ধর্ম বিরোধী কাজও করে। পশ্চিমের বুদ্ধিজীবীরা নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থের প্রয়োজনে ইসানবীর(আ)বিরুদ্ধে কলম ধারন করে ও সিনেমা বানায়। এসব দেখে আমাদের দেশেও এক শ্রেণীর বুদ্ধিজীবী উত্‍সাহিত হয়ে পড়েন। ভারত একটি মহা হিন্দুবাদী জংগী দেশ ও রাস্ট্র। কিন্তু বাইরের খোলস হলো ধর্ম নিরপেক্ষতা। ভারতে সারা বছর সাম্প্রদায়িক দাংগা হয়। মুসলমানদেরতো তারা হত্যা করেই। নিজ ধর্মের হরিজনদেরও তারা পুড়িয়ে মারে। ভারতে ব্রাহ্মণ ও তাদের সহযোগী ছাড়া অন্যদের রাজনীতি করা খুবই কঠিন। ধর্মীয় ভাবেই ভারত একটি বর্ণবাদী রাস্ট্র ও সমাজ। ভারতের ৬০ কোটি মানুষ অবহেলিত ও নির্যাতিত। এরা হলো মুসলমান ও হরিজন। এদের অধিকার নেই চলে। তবে মুসলমানরা ভারতে রাস্ট্রের অন্যায় আচরনের শিকার। হরিজনরা ধর্মের শিকার।
বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভারতের চেয়ে হাজার গুন ভালো। আমাদের ভাগ্য ভালো এদেশে হরিজন নেই, বর্ণবাদও নেই। কারণ বাংলাদেশের সমাজ বর্ণবাদী নয়। ধর্মই এদেশের মানুষকে অসাম্প্রদায়িক হতে সাহায্য করেছে। ইসলামে বর্ণবাদ নেই সাম্প্রদায়িকতা নেই। কালামেপাকে সুস্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করা হয়েছে মানুষ মানুষে কোন ভেদাভেদ নেই। সব মানুষ আল্লাহর দৃষ্টিতে সমান। দৃশ্যমান যে ভেদাভেদ আমরা দেখি তা হলো সমাজের সৃষ্টি। ধনী গরীব, আসরাফ-আতরাফ, আরব-আজম এসব সমাজের সৃষ্টি। সংক্রামক রোগের মতো মুসলমানেরা অমুসলমান সমাজ থেকে চলমান ভেদাভেদ আমদানী করেছে। আল্লাপাকের দৃষ্টিতে যার তাওয়াক্কুল বেশী সেই সবচেয়ে বেশী সম্মানিত ও ইজ্জতদার।
আমাদের দেশে সেক্যুলারিজম এক ধরণের ফ্যাশন। আরেকদল শিক্ষিত মানুষ আছেন যাঁরা নিজেদের মানবতাবাদী বলে দাবী করেন ও পরিচয় দেন। আমরা তাঁদের ভাল মানুষ হিসাবে চিনি। কিন্তু এ ধরনের ভাল মানুষেরা সবাই নিজেদের ধর্ম নিরপেক্ষ বলে দাবী করেন। এদের অনেকেই আবার মোনাফেক। ধর্মে বিশ্বাস করেন না বা ধর্মহীনদের সাথে জোট বেঁধে চলেন। যেমন ধরুন, আমাদের রাস্ট্রধর্ম ইসলাম। জেনারেল এরশাদ দেশের সাধারন মানুষের কাছে নিজের জনপ্রিয়তা বাড়াবার জন্যে ইসলামকে রাস্ট্র ধর্ম ঘোষণা করেছেন। তিনি তখন স্বপ্ন দেখে মসজিদে মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে যেতেন। এটা হচ্ছে ধর্মকে রাজনীতিতে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা। এরপরে বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে জনতার ভয়ে বাধা হয়ে ইসলামকে রাস্ট্র ধর্ম মেনে নিতে হয়েছে। বিএনপি ঘোষণা দিয়ে বলেছে যে ,তারা বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাস করে। তাই তারা ইসলামী দলগুলোর সাথে জোট বেঁধে চলে। আওয়ামী লীগ যদিও জোর গলায় নিজেদের ধর্ম নিরপেক্ষ বা সেক্যুলার বলে বেড়ায় তারাও রাস্ট্রধর্ম ইসলামকে মেনে নিয়েছে। এটা আওয়ামী লীগের মুখোশ পরা রাজনীতি। মানে বিশ্বাস করিনা ,কিন্তু ভোটের জন্যে মেনে নিলাম। আওয়ামী লীগের মন্ত্রীসভায় অনেক বামপন্থী, সেক্যুলার, ধর্মনিরপেক্ষ বা ধর্মহিন রাজনীতিক আছেন। ইতোমধ্যে জনগণের মাঝে দৃঢ় ধারণা জন্মেছে যে, আওয়ামী লীগ ইসলাম বিরোধী একটি রাজনৈতিক দল। চলতি আমলে এটা প্রমানিত হয়েছে যে, আওয়ামী লীগ দেশের মেজরিটি মানুষের বিরুদ্ধ অবস্থান নিয়েছে। আমেরিকা যেহেতু মুসলমানদের সন্ত্রাসবাদী মনে করে সেহেতু আওয়ামী লীগও মুসলমানদের সন্ত্রাসবাদী মনে করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধর্মপ্রাণ মুসলমান বানাবার জন্যে তাঁর সহযোগীরা প্রায়ই বলে থাকেন, আমাদের নেত্রী নিয়মিত কোরআন ও নামাজ পড়েন, রোজা রাখেন ও হ্বজ ও ওমরা পালন করেন। তাঁরা একথা বার বার বলে চলেছেন কেন? কারণ, তাঁরা নিজেরাও মনে করেন জন সাধারনের ধারণা আওয়ামী নেত্রী ধার্মিক নন। তিনি ধর্ম নিরপেক্ষ বা সেক্যুলার( মানে যাঁরা শুধু দুনিয়া নিয়ে থাকে, আখেরাতে বা শেষ বিচারে বিশ্বাস করেন না,পবিত্রতায় বিশ্বাসী নন,ধর্মীয় শিক্ষার বিরোধী,ধর্মীয় সত্যে আস্থা্হীন)। এবার আপনারাই বলুন আমাদের দেশে ধর্ম নিরপেক্ষ জ্ঞানী গুণীজন ধর্মনিরপেক্ষতা বলতে কি বুঝাতে চান। এই সেক্যুলার বা ধর্মনিরপেক্ষবাদীরা রাস্ট্র, আইন আদালত, শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধর্মহীনতার দিকে নিয়ে যেতে চান। বর্তমান মন্ত্রীসভার বেশীর ভাগ মন্ত্রীরাই ধর্ম নিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করেন। তাঁরা রাস্ট্রকে ধর্মহীন বা ধর্ম নিরপেক্ষ রাখতে চান। যে দেশের ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান বা ইসলামে বিশ্বাসী তাঁদের রাস্ট্র বা দেশ কিভাবে ধর্ম নিরপেক্ষ থাকবে। এর মানে দেশটা পরিচালিত হবে ধর্মহীন লোকদের দ্বারা। অপরদিকে ধর্মহীন লোকেরাই সংবিধানে রাস্ট্র ইসলাম বহাল রেখেছেন শুধু মাত্র দেশের ৯০ ভাগ সাধারন মানুষকে ধোকা দেয়ার জন্যে। এই তথাকথিত সেক্যুলার লোকেরাই বিসমিল্লাহ , আল্লাহু আকবর বলতে নারাজ। তাঁরা বাংলায় অনুবাদ করে বিসমিল্লাহর স্থলে বলেন, পরম করুণাময়ের নামে শুরু করছি, আল্লাহু আকবরের স্থলে বলেন,আল্লাহ সর্ব শক্তিমান। সেক্যুলার আর বাংলা ব্যবহারকারীদের নিয়ে বংগবন্ধুর আমলেই মশকরা বা কৌতুক হয়েছিল। স্পীকার আবদুল মালেক উকিল সাহেবের নাম করা হয়েছিল ভগবান দাস উকিল। এই সেক্যুলার বা প্রগতিশীলরা সব সময় সময় সমাজ , রাস্ট্র ও দেশকে বিভ্রান্ত করেছেন তাঁদের আচরনে। তাঁরা এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদ্রাসা থেকে পাশ করা মেধাবী ছাত্রদের ভর্তি করতে চান না। কি কারণ তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ ব্যাখ্যা করেননি। আদালতের রায়ের পরেও কতৃপক্ষ মাদ্রসা ছাত্রদের ভর্তি করা হচ্ছেনা। পাঠক সমাজ নিশ্চয়ই জানেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কি পরিস্থিতিতে কারা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যাঁরা বিরোধিতা করেছিলেন তাঁদের আদর্শের সাথে হাত মিলিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ। পাঠক সমাজকে অবশ্যই বুঝতে হবে বর্তমানে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী কারা এবং তাঁদের আদর্শ ও উদ্দেশ্য কি? আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতা হচ্ছে মেজরিটি মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া। আমি মনে করি আওয়ামী লীগ বা এর নেত্রী কখনই ধর্মহীন নন। দলটির কাঁধে ভর করেছে ধর্মহীন এক শ্রেণীর লোক যাঁদের কোন ভোট বা সমর্থন নেই। এরা ভোটে দাঁড়ালে ৫০০ ভোটও পায়না। এবার নৌকায় ভর করে তাঁরা মন্ত্রী এমপি হয়েছে। এখন তাঁরাই খুব বড় গলায় নানা বিষয়ে গলাবাজী করে যাচ্ছে। এসব সেক্যুলারিস্টদের ঠিকানা পশ্চিমা এনজিও আর দিল্লী। এমন কি এদের মাঝে মাঝে শেল্টার দেয় পশ্চিমা দেশ গুলো। ভারতে লক্ষ্য এখানে ইসলামী বা মুসলমানদের চিন্তাধারা যেন বিকশিত না হয়। সোজা কথাঞ ধর্ম মসজিদ আর বাসগৃহে থাকবে। রাস্ট্র চলবে ধর্মহীনদের দ্বারা। ধর্মহীনদের কোন দল নেই, থাকলেও তাঁদের কোন দল বা ভোট নেই। এরা আসলে মোনাফেক। এদের বিভিন্ন সময়ে আপনারা মুনাজাতরত অবস্থায় দেখবেন। কখনও কখনও মসজিদেও দেখবেন। সবকিছুই হচ্ছে লোক দেখানো। এরাই ছবির সামনে দাঁড়িয়ে মুনাজাত করে আবার মন্দিরে গিয়ে মুর্তির সামনে প্রার্থনা করে। এরাই ধর্মহীন বিবাহ ব্যবস্থা সমর্থন করে। হিন্দুদের জন্যে এ ব্যবস্থা খুবই ভাল। কারণ তাঁদের ধর্মের বর্ণবাদ ব্যবস্থায় সহজে বিয়ে হতে চায়না। এ ধরণের বিয়েতে ধর্মের কথা উল্লেখ করতে হয়না। একেবারে খাঁটি বিয়ের ব্যবস্থা। হিন্দু ধর্মে কনভার্সন বা ধর্মান্তর বাংলাদেশে কোর্ট ম্যারেজে একই ধর্মাবলম্বী হতে হয়। ধর্মহীন বিয়ের ব্যবস্থা তথাকথিত সেক্যুলারদের একট বড় খবর। রাস্ট্রই কারো উসকানীতে এ ব্যবস্থা চালু করেছে। শুনেছি, ইতোমধ্যেই নাকি চার পাঁচটা ধর্মহীন বিয়ে সম্পাদিত হয়েছে। এই বিয়ে ব্যবস্থার কাজী বা রেজিস্ট্রার হচ্ছেন শ্রীযুক্ত প্রাণেশ সমাদ্দার।
এবার সেক্যুলার অর্থনীতি নিয়ে দুচারটা কথা বলতে চাই। বাংলাদেশে ইসলামী বা মৌলবাদী অর্থনীতির গুরু হচ্ছেন শ্রীযুক্ত আবুল বারাকাত। তিনি রাশিয়া থেকে অর্থনীতিতে পান্ডিত্য অর্জন করে এসেছেন। তাঁর জ্ঞানের বহর হচ্ছে সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি। যা এখন বিশ্বে কোথাও নেই। তিনি এখন ধনবাদী ও সুদবাদী একটি সরকারী ব্যান্কের চেয়ারম্যান। এ পদে তাঁর নিয়োগ পাওয়ার প্রধানতম উপাদান হলো সেক্যুলার এবং ইসলামী অর্থনীতির বিরুদ্ধে। এ নিয়ে তিনি কয়েক হাজার পাতার গবেষণা করেছেন। দেশে এখন বেশ কয়েকটি ইসলামী ব্যান্ক রয়েছে। এসব ব্যান্কের ডিপোজিট তথকথিত সেক্যুলার সরকারী ব্যান্কের চেয়েও বেশী। পন্ডিত আবুল বারাকাত সকল প্রকার ইসলামী ব্যবস্থাকেই জামাতী ব্যবস্থা মনে করেন। আর তাঁকে সমর্থন করেন বিদেশী ব্যান্ক ও এনজিও গুলো। ইসলাম বিরোধী প্রচারণা চালাবার জন্যে এনজিও গুলো বিদেশ থেকে বহু টাকা পয়সা নিয়ে আসে। এসব টাকা ইহুদীবাদের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থা থেকে বাংলাদেশে আসে। সেসব টাকা লগ্নী করে ব্র্যাক জাতীয় তথাকথিত গরীব দরদী স্যার উপাধি লোকজন। বাংলাদেশে ইহুদী পুঁজির সাথে জড়িত কিছু বিদেশী ব্যান্কও ইসলামী ব্যান্কিং ব্যবস্থা চালু করেছে শুধুমাত্র নিরীহ সরল মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্যে। বর্তমানে বাংলাদেশে সেক্যুলারিজমের রমরমা অবস্থা। ভাল ধর্মহীন বা সেক্যুলার হতে পারলে চাকুরী,মন্ত্রীত্ব, এমপিগিরি, আমলাগিরি ও উপদেষ্টাগিরি সহজেই পাওয়া যায়। প্রধানমন্ত্রীর উপদেস্টারা সবাই খাঁটি সেক্যুলার। এরা পশ্চিমাদের বরপুত্র। রিজভী নামক এক অজানা অচেনা বিদেশী ভদ্রলোকতো সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হয়ে গেছেন। তিনি দিল্লীতে আট বছর কাজ করেছেন ফোর্ড ফাউন্ডেশনের কর্তা হিসাবে। বাংলাদেশে ফোর্ড ফাউন্ডেশনের সব সম্পদ দেখাশুনা করার দায়িত্ব পেয়েছে ফ্রিডম ফাউন্ডেশন নামক একটি এনজিও প্রতিষ্ঠান,যার কর্ণধার হলেন একজন সম্পাদকের স্ত্রী। বেশ কয়েক বছর আগে ফ্রিডম ফাউন্ডেশন থেকে বাংগালি টাইতেল নিয়ে নিয়ে একটি ম্যাগাজিন বেরিয়েছিল। এতে বলা হয়েছিল দূর্গাপূজা বাংগালিদের একটি কালচারেল এক্টিভিটি। একই ভাবে বৃটিশ হাই কমিশনের উদ্যোগে ও অর্থায়নে বাংলাদেশের মাদ্রসা গুলোর জরীপ চালিয়েছিলেন একজন শিক্ষাবিদ।
এই জরীপের ফলাফল ছিল মাদ্রাসা গুলোতে জংগীবাদী তৈরি করা হয়। বাংলাদেশের মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিকায়নের জন্যে আমেরিকা নানা ধরনের উপদেশ, সুপারিশ খয়রাত করেছিল। এমন কি বিপুল অর্থ সরবরাহের ওয়াদা দিয়েছিল। সোজা কথায় মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে সেক্যুলার করতে হবে। এই কারণেই ঢা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদ্রাসার ছাত্রদের ভর্তি হতে দেয়া হচ্ছেনা। সেনা বাহিনীতে কত মাদ্রাসার ছাত্র চাকুরী পেয়েছে তার উপরেও জরীপ চালানো হয়েছে। এর মানে সেনা বাহিনীকেও সেক্যুলার করতে হবে।
লেখক: কবি ও কলামিস্ট
ershadmz40@yahoo.com

Read Full Post »


নারীদের উপর সারা পৃথিবীতেই অত্যাচার হচ্ছে। এটা একেবারেই নৈতিকতার বিষয়। পশ্চিমে নৈতিকতার সীমাহীন পতন হয়েছে। সেখানে নৈতিকতাহীন ভোগবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নারীদের কোন মর্যাদাই সেসব দেশে নেই। নারীরা একেবারেই যৌন পণ্যে পরিণত হয়েছে। পশ্চিমে কিশোরীরা মা হচ্ছে। পিতা কতৃক কন্যা ধর্ষিত হচ্ছে। সেই পশ্চিমই এখন বিশ্বনেতার স্থান দখল করেছে। জোর করে ভিন দেশ দখল করছে। অন্যায় যুদ্ধ চাপিয়ে দিচ্ছে। আর আমরা যারা গরীব(রাজনীতিকদের ব্যর্থতার কারণে) বাধ্য হয়ে পশ্চিমাদের সাহায্যের জন্যে হাত পাতি,তাদের কথা মত চলি তাদের অবস্থা কি হতে পারে একবার ভাল করে ভেবে দেখুন। পবিত্র কিতাব আল কোরআনে বর্ণিত সদোম ও গোমোরাহ শহরের কথা বিশ্বাসী অবিশ্বাসী খৃষ্টান ইহুদী সবাই জানেন। যৌন কেলেংকারীর কারণে আল্লাহপাক এই শহর দুটিকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। আল্লাহপাকের ইচ্ছার বিরুদ্ধে পরিচালিত প্রাচীন শাসকরা সবাই ধ্বংস হয়ে গেছে। শুধুমাত্র মিশরের ফেরাউন মানব জাতির জন্যে নিদর্শন হয়ে এখনও আছে মিশরের জাদুঘরে। কালামে পাকে আল্লাহতায়ালা নিজেই ঘোষণা বলেছেন,অত্যাচারী ফেরাউনকে নিদর্শন করে রাখা হবে। জগতের সকল সকল অত্যাচারীই নিদর্শন হয়ে আছে। মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে কারো পক্ষেই টিকে থাকা সম্ভব নয়। আমরা গণতান্ত্রিক ডিক্টেটর মার্কোস, পার্ক চুং হি ,বংগবন্ধুকে দেখেছি। এরা সবাই সারাজীবন গণতন্ত্রের জন্যে লড়াই করেছেন, কিন্তু ক্ষমতায় এসে স্বেচ্ছাচারী শাসকে পরিণত হয়েছিলেন। আবার দেশপ্রেমিক সফল গণতান্ত্রিক নেতা লী কুয়াং ও মহাথিরকে দেখেছি। আমরা কেউই ভাবিনি বা আশা করিনি বংগবন্ধু একদিন স্বেচ্ছাচারী শাসকে পরিণত হবেন। হয়ত তিনি নিজেও ভাবতে পারেন নি। তখন তাঁর কাধে রাশিয়া ও ভারতের তাবেদাররা ভর করেছিল। তিনি দেশবাসীর কল্যাণে তাঁদের বিশ্বাস করেছিলেন। একই অবস্থা এখন বিরাজ করছে। ৭৩ এর নির্বাচনে বংগবন্ধু দুই তৃতীয়াংশেরও বেশী সিট পেয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠণ করেছিলেন। সেই নির্বাচনের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ ছিল। ভোটের বাক্স ছিনতাই না করলেও বংগবন্ধু সরকার গঠন করতেন। দুই তৃতীয়াংশ সীট বংগবন্ধুর থাকতো। বিরোধী দল বা প্রার্থীরা হয়ত কয়েকটা সীট বেশী পেতো। শুনেছি আমলারা পরামর্শ দিয়েছিলেন সব সীট না পেলে জন সাধারন ভাবতে পারে বংগবন্ধুর পপুলারিটি বা জনপ্রিয়তা কমে গেছে। তাই ডিসিরা কয়েকটা সীট জোর করে নিয়েছিলেন বংবন্ধুকে খুশী করার জন্যে। ১/১১র সরকার আওয়ামী লীগকে দুই তৃতীয়াংশ সীট দিয়েছে ভারত ও সেক্যুলার পশ্চিমা শক্তিকে খুশী করার জন্যে।
দুই তৃতীয়াংশ সীট পেয়ে বংগবন্ধু একদলীয় শাসন কায়েম করেছিলেন, খবরের কাগজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন, দেশের সকল মানুষকে একদলে যোগ দিতে বাধ্য করেছিলেন। তিনি নিজে আজীবনের জন্যে রাস্ট্রপতি হয়েছিলেন। এখন শেখ হাসিনা একই ধরনের ব্যবহার করছেন দুই তৃতীয়াংশের জোরে। এবার তাঁর কাঁধে ভর করেছে পুরাণো ভুত ভারত রাশিয়ার স্থানীয় সমর্থকরা। বংগবন্ধুর কন্যা একটি সেক্যুলার রাস্ট্র কায়েম করতে চান। কিন্তু দেশের মানুষ তা চায় কিনা সে ব্যাপারে তাঁর কোন মাথাব্যথা নেই। বংগবন্ধু একদলীয় শাসন ব্যবস্থার নামে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিলেন। শেখ হাসিনা ধর্মহীন রাস্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চান। ধর্মহীন রাস্ট্রচিন্তাই সমাজে সকল ধরনের অনাচার, ব্যভিচার ও অশ্লীলতার জন্ম দেয়। শুনেছি এক শ্রেণীর বুদ্ধিজীবী আছেন যাঁরা সমকামিতা সহ সকল প্রকার অবাধ যৌনতায় বিশ্বাস করেন। আধুনিকতা ও প্রগতিশীলতার নামে সমাজের সকল স্তরে হায়া মায়া ও শরম উঠে যাচ্ছে। ধনীদের বাড়িতে বহু কামরা বা রুম থাকে। ছেলে বা মেয়ে কোম কামরায় কি করছে সে খবর মা বাপ রাখেনা। এমন কি মা বাপেরও হায়া শরম উঠে গেছে। মেয়েরা জিন্সের প্যান্ট আর টিশার্ট পরে বুক উ্ঁচিয়ে চলাফেরা করে। মদ খেয়ে মাঝরাতে বাড়ি ফিরে। ৩১ ডিসেম্বর বা পহেলা জানুয়ারী সারা রাত বেলেল্লাপনা করে বেড়ায়।
সৌন্দর্য বা সুন্দরী প্রতিযোগিতার নামে টিভি চ্যানেল ও প্রসাধনী কোম্পানী গুলো প্রকাশ্যে বেহায়াপনা করে চলেছে। মোবাইল কোম্পানী গুলো বিজ্ঞাপনের নামে যা ইচ্ছা তাই করে বেড়াচ্ছে। বিজ্ঞাপনের ভাষা ও পোষাক এমন অশালীন যে তা দেখাটা রীতিমত কষ্টকর। কিন্তু আমাদের সেক্যুলার সরকারের এ ব্যাপারে মাথা ব্যথা নেই। সরকারতো ব্যস্ত থাকেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বিরোধী দলের বিচার, আগামী নির্বাচন নিয়ে। নারীর মর্যাদা ক্ষুন্ন হলে সরকারেরতো ভোট কমবেনা। সরকারতো প্রতিবেশী আদর্শ ও উদ্দেশ্য অনুসরণ করেই বেঁচে আছেন। বরং সরকার বেশী বেশী করে ভারতীয় কৃষ্টি ও সংস্কৃতি আমদানী করতে চায়। তথকথিত সেক্যুলার বুদ্ধিজীবীরা ভারতীয় বাংলা আমদানী করার জন্যে দিনরাত কাজ করে চলেছেন। সত্যি কথা বলতে কি সরকারের চিন্তা ভাবনার উপরেই নির্ভর করে দেশের সাহিত্য সংস্কৃতি, রাজনীতি, ধর্মকর্ম। বর্তমান সরকার বাংলাদেশের সাহিত্য সংস্কৃতি,ইতিহাস ঐতিহ্যকে কোনভাবেই প্রতিনিধিত্ব করেনা।
আওয়ামী লীগ এর আগে ইয়াসমিন নামক এক তরুণীর ধর্ষণ ও হত্যা নিয়ে তোলপাড় করেছে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্যে। কিন্তু এখন আওয়ামী ক্ষমতায় আর প্রায় প্রতিদিনই দেশে নারীরা ধর্ষিত ও নির্যাতিত হচ্ছে। হাবভাব দেখে মনে হয় সরকার এ ব্যাপারে কোনভাবেই বিচলিত নন। এই ঢাকাতেই কোর্ট হাজতেই পুলিশ হেফাজতে কিশোরী ধর্ষিত হয়েছে। পুলিশের কাছে নালিশ বা ডায়েরী করতে গেলেই থানায় মেয়রা ধর্ষিত হয়। হঠাত্‍ করেই কি ধর্যণের উত্‍সব শুরু হয়েছে? না, সমাজটা রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ভাবে বহু আগেই ক্ষয় হতে শুরু করেছে। মেয়েদের হলগুলো থেকে দলীয় নেতাদের সন্তুষ্ট করার জন্যে নিরীহ মেয়েদের জোর করে পাঠানো হচ্ছে। এ ব্যাপারেও বিভিন্ন সংবাদপত্রে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

Read Full Post »


লুট বা কেড়ে খাওয়ার অর্থনীতি / এরশাদ মজুমদার

কেড়ে বা লুট করে খাওয়া সৃষ্টি জগতের অতি প্রাচীন একটি নিয়ম। নিয়ম নীতি বা ন্যায় অন্যায় ভাবনা এসেছে অনেক পরে। কৃষি ব্যবস্থা বা পরিবার ব্যবস্থা চালু হওয়ার আগে থেকে মানুষ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতো। শক্তিশালী মানুষ যেমন দূর্বল মানুষ বা গোত্র-গোষ্ঠিকে পরাজিত করে সবকিছু ছিনিয়ে নিতো তেমনি সবল শক্তিশালী পশু দূর্বল পশুকে পরাজিত করে তাকে ভক্ষন করতো এবং এখনও করে। পশুরা আগের মতোই রয়ে গেছে। কিন্তু মানুষ আগের অবস্থানে নেই। খুব বেশী পেছনের দিকে না গিয়ে বলছি, মানুষ বিগত পাঁচ হাজার বছরে অনেক উন্নতি লাভ করেছে জ্ঞান বিজ্ঞানের পথে। তার আচার আচরন অনেক পরিবর্তন হয়েছে। গণতন্ত্র নামে নতুন ব্যবস্থাপনা চালু করেছে রাজা বাদশাহর শাসন ব্যবস্থাকে পেছনে ফেলে। সব কিছুই মানুষ করেছিল নিয়ম নীতি ন্যায় অন্যায় বুঝার জন্যে। মানুষ নিজেদের জন্যেই নিজেরা আইন তৈরি করেছে। নিজেদের নিজেরা শাসন করার জন্যে পদ্ধতি তৈরি করেছে। বলা হয় রাজার যুগ থেকে এখন প্রজা বা জনগণের যুগ এসেছে। রাজারা এখন নেই, এখন প্রজারাই রাজা বা শাসক। এসব ধারনা থেকেই রাস্ট্র ব্যবস্থা এসেছে, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জনগণতন্ত্র ও ইসলামী রাস্ট্র ব্যবস্থা এসেছে। কিন্তু কেড়ে খাওয়ার অর্থনীতিটা নানা রূপে নানা ঢংয়ে এখনও চালু বা জারী রয়ে গেছে। কারণ, মানব সভ্যতা কেড়ে খাওয়াকে বাদ দিতে পারেনি। যে কেড়ে খেতে পারেনা সে দূর্বল, সম্মানিত বা অভিজাত নয়। বিশ্ব ব্যাপী অভিজাতদের দিকে তাকিয়ে দেখুন। এক সময় তাঁরা ডাকাত বা লুন্ঠণকারী ছিলেন। বৃটেনের রাজাদের ইতিহাস দেখুন। সম্পদ লুট করে তাঁরা এখন অভিজাত ও সম্মানিত। আমেরিকার দিকে তাকান। এইতো সেদিনের কথা। তিনশ’বছরের বেশী নয়। শুরুতে বৃটেন সেখানে চোর ডাকাতদের নির্বাসিত করেছে। সেদেশের আদিবাসীদের হত্যা করেছে। আফ্রিকা থেকে কালো মানুষদের শিকল বেঁধে এনে বিভিন্ন দেশে বিক্রি করেছে। এভাবেই পশ্চিমাদের কেড়ে খাওয়ার অর্থনীতি বিকশিত হয়েছে। এখন শুনি তারাই নাকি পৃথিবীকে সভ্যতা, মানবতা, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন শিক্ষা দিবে। পাকিস্তানের সাবেক পররাস্ট্র মন্ত্রী ও অবজার পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা হামিদুল হক চৌধুরী সাহেব তাঁর আত্ম জীবনী বা স্মৃতি কথায় লিখেছেন,তাঁর বাপদাদারা সাধারন মানুষ ছিলেন। সূদের ব্যবসা করে অর্থবিত্ত করেছেন তাঁরা। এক সময়ে ইংরেজদের সুর্যাস্ত আইনে জমিদারী বা তালুকদারী কিনে সমাজে সম্মানিত হয়েছেন। বাংলাদেশে এ রকম আরও পরিবার আছে যারা যেনতেন ভাবে অর্থবিত্ত করে অভিজাত হয়েছেন। লুট বা কেড়ে খাওয়ার অর্থনীতি এখন আরও প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে। এখনতো দশ বছর মাস্তান থেকে নমিনেশন নিয়ে এমপি মন্ত্রী হয়ে সম্মানিত হয়ে যান। সারা জীবন সাবেক মন্ত্রী পদবী ব্যবহার করেন। হাজী মোহাম্মদ মহসীনের মতো একজন ব্যবসায়ীও আমরা বর্তমান জামানায় দেখতে পাইনা। হাজী মহসীন চার কোটি টাকার সম্পদ দান করে গিয়েছিলেন জন কল্যাণ ও শিক্ষা ব্যবস্থার জন্যে। যা আজও চালু আছে। আমাদের ব্যবসায়ীরা বিশ বছরে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন রাস্ট্র অথবা সাধারন মানুষকে লুট করে।
আমরা পশ্চিমাদের অর্থনীতি , গণতন্ত্র ও মানবতা চর্চার চেস্টা করছি। এ ব্যাপারে এশিয়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ নেতা মহাথির মোহাম্মদ বার বার বলেছেন,পশ্চিমের গণতন্ত্র আর সংস্কৃতির সাথে এসিয়ার কোন মিল নেই। সুতরাং তাদের অনুসরণ করে এশীয়দের কোন লাভ হবেনা। মহাথিরের নেতৃত্বেই মালয়েশিয়ার রাজনীতি, গণতন্ত্র ও অর্থনীতি সংহত হয়েছে। আজ মালয়েশিয়া একটি উন্নত দেশ। পশ্চিমাদের মুখের উপর কথা বলতে পারে। পশ্চিমাদের চোখ রাঙানীকে তোয়াক্কা করেনা। এশিয়ার প্রায় সবদেশি ছিল গরীব। সেই গরিবী থেকে বেরিয়ে এসেছে চীন, জাপান, সিংগাপুর, কোরিয়া, ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়া। উত্তর কোরিয়া আজ একটি শক্তিধর দেশ। মধ্যপ্রাচ্য ও মধ্য এশিয়ার দেশ গুলোর ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে তেলের কারণে। তেলের অর্থনীতিকে তারা সংহত করতে পেরেছে। ১৯৫০ সালেও চীন একটি মহা গরীব দেশ ছিল। সেই অবস্থা থেকে মাত্র ৬০ বছরে চীন একটি শক্তিধর দেশে পরিণত হয়েছে। আমেরিকা মরণ কামড় দিয়ে চেস্টা করেছে চীনকে দমিয়ে রাখার জন্যে। জাপান আমেরিকার তাবেদারী করে একটি মাড়োয়ারী দেশে পরিণত হয়েছে। জাপানের টাকা আছে, অন্যদেশকে দাদন দেয়। কিন্তু জাপানের কোন রাজনৈতিক সম্মান নেই। জাপানের চেয়ে মালয়েশিয়ার সম্মান জগতে অনেক বেশী।
৪৭ সালে আমরা স্বাধীন হয়েছিলাম মুসলমান বলে। নিজেদের অধিকার নিয়ে মুসলমানেরা অখন্ড ভারতে থাকতে চেয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেস ও হিন্দু নেতারা রাজী হননি। তাঁরা চেয়েছিলেন মুসলমানেরা অখন্ড ভারতে হিন্দুদের অধীনেই থাকুক। মুসলমান নেতারা এতে রাজী হননি। ফলে ৪৭ সালে ভারত ভাগ হয়ে যায়। পূর্ব বাংলা বা পূর্ব পাকিস্তান পাকিস্তানের অংশে পরিণত হয়। বাংগালী হিন্দু মুসলমান নেতারা চেয়েছিলেন অখন্ড বংগদেশ বা বাংলাদেশ। গান্ধীজী এতে রাজী হননি। যে কোলকাতা পূর্ববাংলার সম্পদ লুটে বা কেড়ে নিয়ে নিজেকে হৃষ্টপুষ্ট হয়েছে সে কোলকাতাকে গান্ধীজী জোর করে ভারতে রেখে দিয়েছেন। আজকের যে বাংলাদেশ তা ইংরেজ আমলের ১৯০ বছর যৌথভাবে হিন্দু জমিদার ও ইংরেজদের হাতে শোষিত হয়েছে। এরপরে শোষিত হয়েছে ২৩ বছর পাকিস্তানের হাতে। কেড়ে খাওয়া আর শোষণের অর্থনীতি একই সূতায় গ্রোথিত। কেউ কেড়ে খায় আইন করে আর কেউ কেড়ে খায় জোর করে। রাস্ট্র শোষণ করে আইন করে জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে। যে রাস্ট্রে দূর্ণীতি বেশী থাকে সেখানে লুণ্ঠন বা কেড়ে খাওয়া সবচেয়ে বেশী থাকে। বিগত ৪০ বছরে বাংলাদেশে অশ্লীল ধনী তৈরি হয়েছে কয়েকশ। দুই চার কোটি নগদ টাকার মালিক হয়েছেন কয়েক হাজার লোক। সবাই ধনী হয়েছেন রাস্ট্রকে লুট করে। এই লুটেরা অর্থনীতির সহযোগী থাকেন রাস্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত রাজনীতিকরা। আর সহযোগী হিসাবে কাজ করে যায় সকল শ্রেণীর আমলা।এর সাথে যোগ দেয় নানা জাতের বুদ্ধিজীবী। এখন বুদ্ধিজীবীরা নানা দলে ও গ্রুপে বিভক্ত। দেশপ্রেমের সঙাও এক গ্রুপের কাছে একেক রকম। কেড়ে খাওয়ার জন্যে মুক্তিযুদ্ধ এখন খুবই বড় ধরণের বাণিজ্য। সেদিন এক অনুষ্ঠানে এক প্রতিমন্ত্রীর সাথে দেখা হয়েছিল। তিনি খুবই বিনীত মানুষ। বক্তৃতার এক পর্যায়ে তিনি বললেন,তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। যুদ্ধের সময় তাঁর বয়স তেমন ছিলনা। তবুও তিনি যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধ এখন রাজনীতির প্রধান উপকরন। মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে মেলা হয়, ব্যবসা হয়। যে কখনও মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি বা মুক্তিযুদ্ধ করেনি সে এখন মুক্তিযুদ্ধের বড় সওদাগর। উদ্দেশ্য বা আদর্শ একটি অপরের সম্পদ বা ইজ্জতকে লুট করে নেয়া।
উইলিয়াম হান্টারের বই পড়লেই জানা যাবে ইংরেজরা কিভাবে সুজলা সুফলা বাংলাদেশকে লুণ্ঠণ করেছিল। ১৯০ বছরে ইংরেজরা এদেশের লক্ষ লক্ষ স্বাধীনতাকামী মানুষকে হত্যা করেছে। বাংলার সম্পদকে ধ্বংস করেছে। পাকিস্তান যা লুট করেছিল তার হাজার গুন বেশী লুট করেছে ইংরেজরা। ইংরেজদের সহযোগী রাজনীতিক ও বুদ্ধিজীবীরাই নবাব সিরাজ উদ্ দৌলার চরিত্রে কলংক লেপন করেছিল। ইংরেজদের বিরুদ্ধে প্রথম ১০০ বছর প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করেছিল মুসলমানেরা। সে ইতিহাস আমাদের জানা নেই বা জানার আগ্রহ নেই রাজনৈতিক কারণে। কবিগুরু ইমরেজদের খয়ের খাঁ ছিলেন তাই তিনি সম্মানিত ও অভিজাত। মজলুম কবি নজরুলের পূর্ব পুরুষ ইংরেজদের হাতে নির্যাতিত হয়েছেন তাই তাঁরা সম্মানিত নন। ক্ষুধিরাম বড়লাটকে মারার চেস্টা করেছিলেন,কিন্তু মারতে পারেননি,তাই তিনি মহা সম্মানিত। শের আলী খান বড়লাটকে হত্যা করেও অজানা রয়ে গেছেন। ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশ বাংলাদেশে ইসলাম ও মুসলমান অসম্মানিত। কারণ যাঁরা ক্ষমতায় থাকেন তাঁরা নিজেদের স্বার্থেই ইতিহাসকে ভুলে থাকেন। সাধারন মানুষকে লুট করে খাওয়ার এটাও এক ধরনের প্রক্রিয়া। সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন এদেশের কৃষক শ্রমিক ও ছাত্র সমাজ। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশ নামক রাস্ট্রটি পরিচালিত হয়েছে এবং হচ্ছে সাবেক শোষকদের প্রতিনিধিদের দ্বারা।
পাকিস্তানের শোষণ থেকে আমরা মুক্তি লাভ করেছি জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্যে। তখন মানে ৭০/৭১ সালে আমাদের লোক সংখ্যা ছিল সাড়ে সাত কোটি। এখন ১৫/১৬ কোটি বলে অনুমান করা হচ্ছে। শতকরা পাঁচ বা ছয় ভাগ হারে জাতীয় উত্‍পাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যাঁদের আয় ছিল দৈনিক দুই টাকা তাঁরা এখন দুই শত টাকা পাচ্ছে। অপরদিকে রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও আমলাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হাজার গুন বেশী। এখন দেশে দেশে যত গুলো ব্যবসা গ্রুপ আছে ৭০/৭১ সালে এরা কেউ ছিলনা। এখন এসব গ্রুপ রাস্ট্র ও সরকার নিয়ন্ত্রণ করে। ভুয়া ঋণপত্র বা এলসির মাধ্যমে বিদেশে পাচার হয়ে গেছে হাজার হাজার কোটি টাকা। ৪০ বছর ধরেই এই জাল ব্যবসা চলে আসছে এবং এখনও চলছে। উদাহরন হলো হলমার্ক, ডেস্টিনি, যুবক ও এই ধরণের আরও অনেক সংগঠন। ডেস্টনির চেয়ারম্যান ছিলেন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সেনা প্রধান। দেশে হাজার এনজিও আছে। এরা বিদেশ থেকে টাকা আনে গরীবের কথা বলে। গরীবের ভাগ্যের কতটুকু পরিবর্তন হয়েছে তা আমরা ভাল করে জানি। কিন্তু এনজিও নেতা ও তাঁদের পরিবার এখন রাজ পরিবারে পরিণত হয়েছে। এরা বিদেশ থেকে স্যার উপাধি নিয়ে আসেন। যেমন, ইংরেজরা এদেশে শত শত নবাব মহারাজা বানিয়েছে। এসব হচ্ছে লুটে বা কেড়ে খাওয়া অর্থনীতির কালচার। রাজনীতিক নেতারা এখন এদের সহযোগী ভাই বেরাদরে পরিণত হয়েছে। নেতাদের ছেলে মেয়েরা এসব এনজিওতে চাকরী করে। বিশেষ করে বাম নেতাদের ছেলে মেয়েরাতো এনজিওদের বিরাট সম্পদ। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর মতো এনজিও গুলো বাংলাদেশকে দখল করে নিয়েছে। মানব সেবার নামে বিগত ২০ বছরে নানা ধরণের ব্যবসায় জড়িত হয়ে গেছে।
২০১২ সালে বিশ্বের একশ জন ধনীর আয়ের পরিমান ছিল ২৪ হাজার কোটি ডলার।যা দিয়ে বিশ্বের চরম দারিদ্রের ইতিহাস চারবার অতিক্রম করা যায় বলে অভিমত দিয়েছেন গবেষকরা। বিগত ২০ বছরে বিশ্বের এক শতাংশ লোকের আয় বেড়েছে ৬০ শতাংশ। আকাশ ছোঁয়া আয় বা লাভের সীমা নির্ধারন না করলে আমাদের এই পৃথিবী কখনই দারিদ্র মুক্ত হবেনা। অতিরিক্ত বা সীমাহীন সম্পদ আয়ের ইচ্ছা বা নেশাই বিশ্বকে দুর্ণীতির ভারে জর্জরিত করেছে। পদ্মাসেতুর দুর্ণীতির কথা একবার ভাবুন। ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের অধিক সম্পদের লোভই আলোচ্য দুর্ণীতি জন্ম দিয়েছে। সারা বিশ্বে বাংলাদেশকে একটি দুর্ণীতিবাজ হিসাবে কলংকিত করেছে। এক শ্রেণীর ক্ষমতাবান লুট করে খাওয়ার নেশাই দেশকে দুর্ণীতির চাদরে ঢেকে দিয়েছে। জানিনা, প্রাসংগিক কিনা তবুও বলছি, ইসলামী রাস্ট্রের প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর(রা:) দুনিয়া থেকে বিদায় নেয়ার আগেই নিজ সম্পদের হিসাব দিয়েছিলেন। দায়িত্ব নেয়ার দিন থেকে বিদায়ের দিন পর্যন্ত সম্পদের হিসাব দিয়ে বাড়তি সম্পদ বায়তুল মাল বা সরকারী কোষাগারে জমা দিয়েছিলেন। একই পথ অনুসরন করেছিলেন দ্বিতীয় খলিফা হজরত উমর (রা:)। এটাই হওয়া উচিত আমাদের রাজনীতিকদের চরিত্র। ইসলামী রাস্ট্রে ব্যক্তিগত সম্পদের একটা সীমা আছে। যার যেমন ইচ্ছা তেমন সম্পদ আয়ের কোন সুযোগ নেই। ইসলামী অর্থনীতি একটি কল্যাণমুখী অর্থনীতি। মানুষের কল্যাণই এখানে প্রধানতম লক্ষ্য। চলমান বিশ্বে এখন কোন ইসলামী রাস্ট্র নেই। ইরাণ একটি পুর্ণাংগ রাস্ট্র হওয়ার চেস্টা করে এখন নানা বিপদে। বিশ্বে এখন ১৫০ কোটি মুসলমাম আছে। ৫৫টির মতো মুসলমান দেশ আছে। সব মুসলমান এবং মুসলমান দেশের সম্পদ এক করলে মুসলমানদের দারিদ্র থাকেনা। খোদ সউদী আরবই ইসলামী রাস্ট্র নয়। সউদী আরবকে চালায় আমেরিকা। আমেরিকাই সউদী সরকারের সবচেয়ে বড় বন্ধু। আমাদের বাংলাদেশ একটি মুসলীম প্রধান দেশ। ৯০ ভাগ নাগরিক মুসলমান। কিন্তু রাস্ট্র ব্যবস্থা মুসলমানের নয় বা ইসলামিক নয়। এখানে কোন কিছুই ইসলামিক নয়। রাস্ট্র নিজেই সুদ ও মদের ব্যবসা করে। রাস্ট্রের বিচার ব্যবস্থা ইসলাম বিরোধী। প্রাসংগিক কারণেই আমি এসব কথা বলছি।
আমেরিকা এখন চলমান বিশ্বের নেতা। আপনি বা আপনার দেশ তাঁকে নেতা মানতে বাধ্য। না মানলে, আমেরিকান সরকার আপনি এবং আপনার দেশের বিরুদ্ধে অবরোধ গড়ে তুলবে। আপনাদের শিশু সন্তানদের না খাইয়ে মারবে। আমেরিকা এবং তার দোসররা কি তা জানতে হলে আপনি পড়ুন,জন পার্কিন্সের বই এক অর্থনৈতিক ঘাতকের স্বীকারোক্তি। পার্কিন্স লিখেছেন,‘অর্থনৈতিক ঘাতকেরা মোটা অংকের বেতনপ্রাপ্ত পেশাদার। এদের কাজ হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে ধাপ্পা দিয়ে লক্ষ কোটি ডলার চুরি করা। এ কাজে এই ঘাতকদের মূল অস্ত্র হচ্ছে ভুল তথ্যে ভরা অর্থনৈতিক প্রতিবেদন, পাতানো নির্বাচন,ঘুষ, চাপ প্রয়োগ,যৌনতা ও শেষ নাগাদ হত্যা। উল্লিখিত বইয়ের লেখক নিজেই একজন নামজাদা ঘাতক ছিলেন। তাঁর কাজ ছিলো দরিদ্র দেশ গুলোকে বিপুল অংকের ঋণ গ্রহণে প্রলোভিত করা। একবার ঋণের জালে আতকে ফেলে বন্দী দেশের কাছ থেকে আমেরিকার স্বার্থ আদায় করে নেয়া। আমেরিকার স্বার্থ মানেই হচ্ছে,প্রকৃতিক সম্পদ নিয়ন্ত্রণ করা, সামরিক সম্পর্ক গড়ে তোলায় বাধ্য করা এবং শেষ অবধি আমেরিকার দাসে পরিণত করা। কোন দেশের নেতা আমেরিকার কথা শুনলে তাকে হত্যা করাই হলো আমেরিকার আদর্শ। অথবা ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে অবাধ্য নেতাকে সরিয়ে দেয়া। সম্প্রতি একজন বিখ্যাত অভিনেতা বলেছেন, আমেরিকা বিশ্বের সবচেয়ে বড় দূর্ণীতিবাজ দেশ। আরেকজন নেতা বলেছেন,বিশ্বের বড় বড় খুন গুম গুলো আমেরিকাই করে থাকে। আমেরিকা সারা ধন সম্পদ লুট করে খায় বলেই সবচেয়ে বেশী শক্তিশালী ও সম্মানিত। আমাদের সোনার বাংলার নেতা, ব্যবসায়ী, আমলা এবং এদের সহযোগীরাই এ দেশে সম্মানিত। কারণ, এরা সবাই জোট বেঁধে দেশকে খায় আর দেশের মানুষকে লুটে পুটে খায়। লেখাটি শেষ করার সময় মনে পড়ছে জনাব এস মুজিবুল্লাহর কথা। তিনিই ৭৪ সালে লিখেছিলেন,‘দে মা তবিলদারী লুটে পুটে খাই’।মনে পড়ছে প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ও শিক্ষক ড.মজাহারুল হক সাহেবের কথা। তিনিই ৭৪ সালে অর্থনৈতিক সমিতির সভায় বলেছিলেন,লুটপাট করা রাস্ট্রের আদর্শে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমিতি এখন একটি সরকারী সমিতিতে পরিণত হয়েছে। আর অর্থনীতিবিদগণ এনজিও কর্মচারীতে পরিণত হয়েছেন।
লেখক: কবি ও কলামিস্ট
ershadmz40@yahoo.com

Read Full Post »

Bangladesh Economy


IndexMundi Home
Flag of Bangladesh
Bangladesh Economy Profile 2012

Home > Bangladesh
Economy – overview

The economy has grown 5-6% per year since 1996 despite political instability, poor infrastructure, corruption, insufficient power supplies, and slow implementation of economic reforms. Bangladesh remains a poor, overpopulated, and inefficiently-governed nation. Although more than half of GDP is generated through the service sector, 45% of Bangladeshis are employed in the agriculture sector with rice as the single-most-important product. Bangladesh’s growth was resilient during the 2008-09 global financial crisis and recession. Garment exports, totaling $12.3 billion in FY09 and remittances from overseas Bangladeshis, totaling $11 billion in FY10, accounted for almost 12% of GDP.
GDP (purchasing power parity)

$282.5 billion (2011 est.)
$265.7 billion (2010 est.)
$249.8 billion (2009 est.)
note: data are in 2011 US dollars
GDP (official exchange rate)

$115 billion (2011 est.)
GDP – real growth rate

6.3% (2011 est.)
6.4% (2010 est.)
5.9% (2009 est.)
GDP – per capita (PPP)

$1,700 (2011 est.)
$1,600 (2010 est.)
$1,500 (2009 est.)
note: data are in 2011 US dollars
GDP – composition by sector

agriculture: 18.4%
industry: 28.6%
services: 53% (2011 est.)
Population below poverty line

31.5% (2010 est.)
Labor force

75.42 million
note: extensive export of labor to Saudi Arabia, Kuwait, UAE, Oman, Qatar, and Malaysia; workers’ remittances were $10.9 billion in FY09/10 (2011 est.)
Labor force – by occupation

agriculture: 45%
industry: 30%
services: 25% (2008)
Unemployment rate

5% (2011 est.)
5.1% (2010 est.)
note: about 40% of the population is underemployed; many participants in the labor force work only a few hours a week, at low wages
Unemployment, youth ages 15-24

total: 9.3%
male: 8%
female: 13.6% (2006)
Household income or consumption by percentage share

lowest 10%: NA
highest 10%: 26.6% (2008 est.)
Distribution of family income – Gini index

33.2 (2005)
33.6 (1996)
Investment (gross fixed)

24.7% of GDP (2011 est.)
Budget

revenues: $12.67 billion
expenditures: $17.15 billion (2011 est.)
Taxes and other revenues

11% of GDP (2011 est.)
Budget surplus (+) or deficit (-)

-3.9% of GDP (2011 est.)
Public debt

36.7% of GDP (2011 est.)
35.4% of GDP (2010 est.)
Inflation rate (consumer prices)

10.7% (2011 est.)
8.1% (2010 est.)
Central bank discount rate

5% (31 December 2010 est.)
5% (31 December 2009 est.)
Commercial bank prime lending rate

13.4% (31 December 2011 est.)
13% (31 December 2010 est.)
Stock of money

$10.35 billion (30 September 2009)
$8.444 billion (31 December 2007)
Stock of narrow money

$16.27 billion (31 December 2011 est.)
$14.12 billion (31 December 2010 est.)
Stock of broad money

$59.86 billion (30 October 2011 est.)
$56.44 billion (31 December 2010 est.)
Stock of quasi money

$45.23 billion (30 September 2009)
$37.98 billion (31 December 2008)
Stock of domestic credit

$73.69 billion (31 December 2011 est.)
$64.71 billion (31 December 2010 est.)
Market value of publicly traded shares

$47 billion (31 December 2010)
$7.068 billion (31 December 2009)
$6.671 billion (31 December 2008)
Agriculture – products

rice, jute, tea, wheat, sugarcane, potatoes, tobacco, pulses, oilseeds, spices, fruit; beef, milk, poultry
Industries

jute, cotton, garments, paper, leather, fertilizer, iron and steel, cement, petroleum products, tobacco, drugs and pharmaceuticals, ceramic, tea, salt, sugar, edible oil, soap and detergent, fabricated metal products, electricity and natural gas
Industrial production growth rate

7.4% (2011 est.)
Electricity – production

25.62 billion kWh (2009 est.)
Electricity – production by source

fossil fuel: 93.7%
hydro: 6.3%
nuclear: 0%
other: 0% (2001)
Electricity – consumption

23.94 billion kWh (2009 est.)
Electricity – exports

0 kWh (2009 est.)
Electricity – imports

0 kWh (2009 est.)
Oil – production

5,724 bbl/day (2010 est.)
Oil – consumption

98,000 bbl/day (2010 est.)
Oil – exports

2,770 bbl/day (2009 est.)
Oil – imports

77,340 bbl/day (2010 est.)
Oil – proved reserves

28 million bbl (1 January 2011 est.)
Natural gas – production

19.75 billion cu m (2009 est.)
Natural gas – consumption

20.1 billion cu m (2010 est.)
Natural gas – exports

0 cu m (2009 est.)
Natural gas – imports

0 cu m (2009 est.)
Natural gas – proved reserves

195.4 billion cu m (1 January 2011 est.)
Current Account Balance

-$372 million (2011 est.)
$2.502 billion (2010 est.)
Exports

$23.86 billion (2011 est.)
$19.24 billion (2010 est.)
Exports – commodities

garments, knitwear, agricultural products, frozen food (fish and seafood), jute and jute goods, leather
Exports – partners

US 22.1%, Germany 14.1%, UK 8.5%, France 6.8%, Netherlands 6.1% (2009)
Imports

$31.75 billion (2011 est.)
$24.72 billion (2010 est.)
Imports – commodities

machinery and equipment, chemicals, iron and steel, textiles, foodstuffs, petroleum products, cement
Imports – partners

China 18.9%, India 12.7%, Singapore 6%, Malaysia 4.7%, Japan 4% (2009)
Reserves of foreign exchange and gold

$10.98 billion (31 December 2011 est.)
$11.18 billion (31 December 2010 est.)
Debt – external

$24.93 billion (31 December 2011 est.)
$24.6 billion (31 December 2010 est.)
Stock of direct foreign investment – at home

$7.216 billion (31 December 2011 est.)
$6.107 billion (31 December 2010 est.)
Stock of direct foreign investment – abroad

$94.2 million (31 December 2011 est.)
$91.2 million (31 December 2010 est.)
Exchange rates

taka (BDT) per US dollar –
73.7 (2011 est.)
69.65 (2010 est.)
69.04 (2009)
68.554 (2008)
69.893 (2007)
Fiscal year

1 July – 30 June

ShareThis
IndexMundi on LinkedIn inShare

Source: CIA World Factbook
Unless otherwise noted, information in this page is accurate as of July 19, 2012

Home | About | Search | Site Map | Blog

Read Full Post »


অর্থনীতিতে সাদা কালো / এরশাদ মজুমদার

আমাদের অর্থনীতিতে সাদা আর কালো টাকা বা সম্পদ নিয়ে প্রচুর কথা হয়। ৭৩-৭৪ সালের দিকে আমি দৈনিক জনপদে ‘সাদা কালো’ শিরোনামে একটি কলাম লিখেছিলাম। আমি জন্ম নেয়া কালো টাকার পক্ষে। যে শিশুর পিতার পরিচয় নেই তাকে সমাজ সহজে গ্রহণ করতে চায়না। এই বিষয়ে একটি বহুল প্রচারিত বাণী আ্ছে। তাহলো, এমন একদিন যখন দাসীর গর্ভে মালিকের জন্ম হবে। এর মানে হলো দাসীর সাথে মালিক বা প্রভুর অবৈধ মিলনের ফলে যে সন্তানের জন্ম একদিন ওয়ারিশানা সূত্রে মালিক হবে। কিন্তু দাসী মালিকের জন্মদাত্রী মাতা হয়েও স্বীকৃতি পায়না। আমাদের অর্থনীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থার ফলে প্রতিদিনই কালো টাকা বা সম্পদের সৃষ্ট হচ্ছে। ব্যবস্থা বা সিস্টেমের বিরুদ্ধে রাজনীতিক, অর্থনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী কেউ কোন কথা বলেন না। কমবেশী সবখানেই কালো টাকার জন্ম হচ্ছে। যেমন ধরুন, আমি নিয়মিত খবরের কাগজে লিখে মুজুরী/পারিশ্রমিক বা সম্মানী পাই। এই আয় যদি আমি আয়করের আওতায় না আনি বা না দেখাই তাহলে কালো টাকা হয়ে যায়। তাহলে কলাম লেখকদের কথা একবার ভাবুন। ধর্ম প্রচারক বা বড় বড় আলেম যাঁরা ওয়াজ বা ভাষণ দিয়ে যে অর্থ উপার্জন করেন তাঁরা কি সে আয়ের আয়কর দেন? একই ভাবে গায়ক-গায়িকা, অভিনেতা, নাট্যকার, নাট্যশিল্পীরা কি নিয়মিত আয়কর দেন। এর পরে রয়েছেন, বড় বড় আক্তার ,উকিল, পরামর্শক, উপদেস্টা। ১/১১র সরকারের সময় নামী দামী সাংবাদিকরাও ভীত সন্ত্রস্ত ছিলেন। গুজব ছিল আয়কর মামলায় নামী দামী সাংবাদিকদের আটক করা হবে। ভাগ্য ভাল শেষ পর্যন্ত সেই অবৈধ সরকার ওই কাজটি করেননি। সবাই বলেন, ১/১১র সরকার অবৈধ ছিল। সে কারণে ফখরুদ্দিন আর মইনুদ্দিন এখন নিজ দেশে ফিরতে পারছেন না। কিন্তু তাঁদের উপদেস্টারা সবাই বহাল তবিয়তে দেশবাসীকে উপদেশ দিয়ে যাচ্ছেন। যাঁরা অমন একটা অবৈধ সরকারের উপদেস্টা ছিলেন তাঁরা কেমন করে জাতিকে এখনও পরামর্শ দিতে পারেন। সেদিন এক বন্ধু বললেন, ওই সরকারে থাকলেও তাঁরা ভাল মানুষ। রাজনীতিতেও এমন মানুষ আছেন। তাঁরা সব সময় সরকারের সাথে বা সরকারের কাছে থাকতে চান। ৩৫ বছর সরকারী আমলা থেকে হুট করে রাজনৈতিক দলের টিকিট নিয়ে নির্বাচন করে মন্ত্রী হয়ে যান। সেনা বাহিনীতেও এমন প্রবনতা খুবই প্রবল। এটা এক ধরণের কালো মানসিকতার পরিচয়। সমাজে কালো মনের মানুষ আছেন, কালো আইন আছে, কালো টাকা আছে, কালো বাজারও আছে। তাহলে কালো টাকা নিয়ে এত হেচৈ কেন।
এবার দেখুন, রাস্ট্র বা সরকার কিভাবে কালো টাকা তৈরির ব্যাপারে সাহায্য করে। আপনি রাজউক থেকে একটি জমির বরাদ্দ পেলেন সরকারী দামে। কিন্তু ওই জমির বাজার দাম সরকারী দামের চেয়ে হয়ত একশ’ গুন বেশী। তাহলে কি হলো? সরকার লোকটাকে বা সম্মানিত জনকে রাতা রাতি ধনী বানিয়ে দিলেন। জমিটি নিবন্ধনও করা হলো সরকারী দামে। ফলে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হলো। দেখা গেল জমির বাজার দাম দুইশ’ কোটি টাকা আর সরকারী দাম মাত্র কয়েক কোটি টাকা। তেজগাঁ মতিঝিল টংগী এলাকায় যাঁরা সরকারী জমি কিনেছেন তা ছিল অবাংগালীদের ফেলে যাওয়া কল কারখানা ও বাণিজ্যিক সম্পদ। এসব সম্পদ সরকার বিক্রি করেছেন নিজেদের সমর্থক ও ভক্তদের কাছে অতি অল্প দামে। আমাদের দেশে নতুন ধনী তৈরি হয়েছে এই পদ্ধতিতে।
এক সময় পূর্ব পাকিস্তানে পূঁজির বিকাশের নামে বাংগালীদের শিল্প ও বাণিজ্যিক লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। যা তারা বাজারে কাগজ হিসবে বিক্রি করে পুঁজি সংগ্রহ করেছে। ওই সময়ে বাংগালীরা দুটি ব্যান্ক স্থাপন করেছিল। একটি ইস্টার্ণ ব্যান্কিং কর্পোরেশন( যা এখন উত্তরা ব্যান্ক), এটা স্থাপন করেছিলেন জহিরুল ইসলাম সাহেব। অপরটি ইস্টার্ণ মার্কেন্টাইল ব্যান্ক(যা এখন পুবালী ব্যান্ক)। এটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন একে খান সাহেবের জামাই এমআর সিদ্দিকী সাহেব। এ সময় ব্যান্ক প্রতিষ্ঠা করতে পুঁজি লেগেছে ১০/২০ লাখ টাকা। তার বহু বছর পর ১৯৮৩ সালে বাংগালীরা ব্যান্ক প্রতিষ্ঠা করেছে মাত্র তিন কোটি টাকা দিয়ে। টাকা সাদা কি কালো তা প্রশ্ন করা হয়নি। কারণ, সাদা টাকার কথা বললে ব্যান্ক হতোনা। এখন ব্যান্ক প্রতিষ্ঠা করতে লাগে সাদা কালো মিলিয়ে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা। চারশ’ কোটি টাকা লাগবে সাদা। কালো লাগবে আরও কয়েকশ’ কোটি টাকা। অনুমতি পেতে কালোটা ব্যয় করতে হবে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, রাজনৈতিক কারণেই ব্যান্কের অনুমতি দেয়া হচ্ছে। যিনি অনুমতি নিবেন বা পাবেন তিনি একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। প্রভাবই তাঁর মূলধান। ১৯৮৩ সালে যে উদ্যোক্তা দশ লাখ টাকা সাদা দেখাতে পারেননি,তিনি এখন এক হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে নামে বেনামে ব্যান্ক প্রতিষ্ঠা করছেন। এর পরে রয়েছে বীমা কোম্পানী বা মার্চেন্ট ব্যান্ক প্রতিষ্ঠা করা।
আমি সারা জীবনই কালো টাকার সমর্থক। টাকাতো টাকাই। তার আবার সাদা কালো কি? টাকার প্রচন্ড ডিমান্ড। তাই দেখা যায় কল মানি মার্কেটে মাঝে মাঝে সুদের হার একশ’ পারসেন্ট হয়ে যায়। সোজা কথায় ঠেকার সময় টাকা পাওয়া গেলেই হলো। একই সময়ে খোলা বাজারে টাকার সুদ মাসে চার/পাঁচ টাকা। এর মানে যদি খোলা বাজারে এক লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন তাহলে মাসে আয় পাবেন চার/পাঁচ হাজার টাকা। ব্যান্ক গুলো দেয় সর্বোচ্চ মাসে নয়শ’ থেকে এক হাজার টাকা। সাথে রয়েছে আয়কর আদায়। দেশে এখন সবচেয়ে বেশী লাভজনক ব্যবসা হলো ব্যান্কিং ব্যবসা। এ বছর মানে ২০১২ সাল শেষে ব্যান্ক গুলো নীট মুনাফা করেছে দুইশ’ কোটা টাকা থেকে এক হাজার কোটি টাকা। এছাড়াও ব্যান্কের উদ্যোক্তা বা পরিচালকগণ ব্যান্কের কারণেই সমাজে প্রভাবশালী ব্যক্তিতে পরিণত হন। তাঁরা নামে বেনামে ব্যান্কের সহযোগিতায় ব্যবসা করতে পারেন। তাঁদের আত্মীয় স্বজনকে চাকুরী দিতে পারেন। রাস্ট্র বা সরকারের সাথে ব্যাক্তির বন্ধুত্ব থাকলে কালো টাকা জোয়ারের বানের মতো আসতে থাকে। আমদানীর ক্ষেত্রে পণ্যের অতিরিক্ত দাম দেখিয়ে বিদেশে টাকা পাচার করুন। যাকে বলা হয় ওভার ইনভয়েচিং। রফতানীর ক্ষেত্রে যে পণ্য রফতানী করছেন তার দাম কম দেখান এবং বিদেশে টাকা রাখুন। সীমান্তে চোরা চালান করুন। এসব অবৈধ কর্মের সাথে সরকার, আমলা ব্যান্কার জড়িত থাকেন। আর অবৈধ কর্মের ফলে যে অবৈধ বা কালো টাকার জন্ম হচ্ছে তা দিয়ে রাজনীতি চলে, বড় বড় সাংস্কৃতি কর্মকান্ড চলে। যে ধনী ব্যক্তি তাঁর কালো টাকা যখন বুদ্ধিজীবীদের জন্যে খরচ করেন
তখন বুদ্ধিজীবীরা তাঁর ভক্ত হয়ে যান। কালো টাকা মিডিয়াতে বিনিয়োগ করেও ধনী ব্যাক্তি শক্তিশালী হতে পারেন। এইতে দেখুন না সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটিত হচ্ছেনা। কারণ তাঁরা কালো টাকা ও মিডিয়ার মালিক।
রাজস্ব বাজেট এখন পৌনে দুই লাখ কোটি টাকার মতো। এর মধ্যে আয়করের পরিমাণ খুবই কম। শুল্ক থেকে আসে বেশী রাজস্ব। ১০/১৫ লাখ লোক আয়করের আওতায় আছেন। বলা হচ্ছে দেশে এখন ১৬ কোটি লোক আছে। এক কোটি ধনী আছে। এর কারণ হচ্ছে আমাদের আয়কর ব্যবস্থা ও রাজস্ব প্রশাসন। পুলিশ বিভাগের মতো রাজস্ব বিভাগেও শতকরা ৯০ ভাগ লোক ঘুষ নির্ভর। আমাদের করদাতারা নিজেরা আয়কর রিটার্ণ দিতে পারেন না। ফলে আয়কর কর্মচারী বা আয়কর উকিলের উপর নির্ভর করতে হয়। ফলে, দেখা গেলো আয়কর হয়েছে চার/পাঁচ হাজার টাকা। কিন্তু ঘুষ দিতে হলো দশ হাজার টাকা। কর্পোরেট হাউজ বা ব্যবসায়ীরা উকিলের মারফত এ কাজ সমাধা করেন। অবসর প্রাপ্ত বা বৃদ্ধ মানুষদের কস্টের সীমা নেই। যা একেরবারেই অসহনীয়। আমি ছোট খাট অনেক ব্যবসায়ী বা দোকানদারের সাথে কথা বলেছি। তাঁরা বলেন, শিয়ালকে মুরগীর খাঁচা দেখিয়ে ঘরে বিপদ আনবো কেন? করের খাতায় নাম উঠলেই বিপদ। কথায় আছে বাঘে ধরলে আঠার ঘা,পুলিশে ধরলে ছত্রিশ ঘা। সুরণ্জিত বাবু বলেন, বাঘে ধরলে ছাড়ে,কিন্তু হাসিনা ধরলে ছাড়েনা।
এবার ব্যক্তি বা কর্পোরেট খাতে বেশী আয়কর প্রদানের জন্যে রাজধানীর নামজাদা কোন ব্যক্তি বা গ্রুপ কোন পুরষ্কার পাননি। অথচ আমরা সারা বচর যাদের কথা শুনি তারা নিজে বা গ্রুপের তরফ থেকে তেমন প্রশংসনীয় আয়কর দেননি। আমাদের নামজাদা উকিল ডাক্তার পরামর্শক অভিনেতা কারো নাম পুরষ্কৃতদের তালিকায় দেখতে পাইনি। আমাদের সিনেমা প্রযোজকদের নামও শুনতে পাইনি। অনেকেই বলেন, কালো টাকার বড় শোধনাগার সিনেমা শিল্প। নাটক নবেল লিখে যারা দেশবরেন্য হয়েছেন তাঁরা কত আয়কর দেন তাও জাতি কোনদিন জানতে পরেনি। নাটকের লোকেরাও আমাদের দেশে বুদ্ধিজীবী। আমি এক ভদ্রলোককে চিনি যিনি স্কুল পাশ এবং একটি ব্যান্কের করণিক ছিলেন। মুসলমান হিসাবে ৪৭ সালে ভারত থেকে পালিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন তাঁর অবিভাবকরা। তিনি এখন জাতীয় বুদ্ধিজীবী। বাংলাদেশে তাঁরা চট করে সীমান্ত পার হয়ে ওপারে অবস্থান করেন। সত্যি কথা বলতে কি আমাদের দেশটা ভন্ড আর হিপোক্রেটদের পাল্লায় পড়ে গেছে। পাকিস্তানী শোষক শাসকদের সাথে লড়াই করে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি সমাজের অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করার জন্যে। চল্লিশ বছর পেরিয়ে এখন দেখতে পাচ্ছি বাইশ ধনী পরিবারের জায়গায় এখন বাইশ হাজার ধনী পরিবার তৈরি হয়েছে। কিছু মানুষ সীমাহীন ধনী হয়েছে আর বিনিময়ে বাংলাদেশ গরীব হয়েছে। দেশের সাধারন মানুষের ভাগ্যের তেমন পরিবর্তন হয়নি। বহু মানুষ আছে যাদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয়নি পাকিস্তানের ২৩ বছর আর বাংলাদেশের ৪০ বছরে। কিছু রাজনীতিক, ব্যবসা বাণিজ্যের লুটেরা,আমলা, বুদ্ধিজীবী জোট বেঁধে দেশটাকে খাবলে খাচ্ছে। আর শোষিত হচ্ছেন দেশের কোটি কোটি সাধারন মানুষ। আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে সবচেয়ে বেশী অংশ গ্রহন করেছেন এদেশের কৃষক শ্রমিক ও ছাত্র-যুব সমাজ। তাইতো মাঝে মাঝেই দেখি অমুক মুক্তিযোদ্ধা রিকশা চালাচ্ছে বা ভিক্ষা করছে। মুক্তিযুদ্ধ আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিক্রি করে একশ্রেণীর করিত্‍কর্মা লোক বেশ করে খাচ্ছে।
লেখাটি শুরু করেছি আমাদের অর্থনীতিতে কালো টাকার প্রভাব নিয়ে কিছু কথা বলার জন্যে। অর্থনৈতিক ও রাস্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা ও সিস্টেমের কারণে কালো টাকা প্রতিদিনই জন্ম নিচ্ছে। অবৈধ সন্তান জন্ম নিলে তাকে হত্যা করা যায়। কিন্তু কালো টাকা এমন এক জিনিষ যাকে হত্যা করা যায়না। বরং কালো টাকা দিন দিন শক্তিশালী হতে থাকে। পৃথিবীর সব দেশেই কালো টাকা আছে কম অথবা বেশী। পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশী কালো টাকা হলো ভারতে। বাংলাদেশে কালো টাকা সৃষ্টির পেছনে সরকারের নীতি ও আদর্শ দায়ী। কালো টাকার জন্ম নিরোধ করার জন্যে সরকারের আদর্শগত কোন নীতি নেই। জন্ম নেয়ার পর চারিদিকে চিত্‍কার শুরু হয়। তখন বলা হয় ১০/২০ পারসেন্ট জরিমানা নিয়ে কালো টাকাকে সাদা করা হোক। সরকার চায় কালো টাকা বৈধ ভাবে চলাফেরা করুক। বুদ্ধিজীবীরা তা মানতে রাজী নয়। আবার যারা নিয়মিত আয়কর দেন তাঁরা বলেন, এটা অনৈতিক ও বৈষম্য। এসব কথা আমরা বেশ কয়েক যুগ ধরে শুনে আসছি।
আমাদের অর্থনীতিতে কালো টাকা পরিমান কত তা নিশ্চিত ভাবে কেউ কিছু বলতে পারেন না। সরকার এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট হতে চান না। কারণ, রাজনীতিক আর ক্ষমতাবান প্রভাবশালী লোকদের কাছেই কালো টাকা বেশী থাকে। আমাদের জিডিপি বা জাতীয় গড় উত্‍পাদনের পরিমাণ প্রায় ১৩০ বিলিয়ন ডলার। এক কোটি ডলার মানে টাকার অংকে ৮০ কোটি টাকা। আর এক বিলিয়ন ডলার মানে একশ’কোটি ডলার। এখন প্রশ্ন হলো জিডিপিতে কালো টাকার পরিমাণ কত? চারিদিকে তাকালেই দেখা যায় কালো টাকা কেমন সচল ও প্রাণোচ্ছল। শুরুতেই বলেছি ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক কালো টাকা প্রতি নিয়তই জন্ম নিচ্ছে। ধনীরা বা ব্যবসায়ী শিল্পপতিরা কালো টাকা ছাড়া বাঁচতে পারেননা। পাঠক, আপনারা লক্ষ্য করে থাকবেন, রিহ্যাব দাবী করেছে প্রথম ফ্ল্যাটতি কেনার সময় যেন টাকার হিসাব চাওয়া না হয়। একথা মহাসত্যি যে রিয়েল এস্টেট সেক্টরে কালো টাকা বেশী বিনিয়োগ হয়। ভাবুন আমাদের অর্থনীতিতে ঘুষের ব্যবহার কি রকম। তাহলে ঘুষের টাকা কোথায় যাচ্ছে?
শেষ করছি একটি নতুন বিষয় উত্থাপন করে। ভারতে যৌনকর্মীদের ব্যন্ক একাউন্ট খোলা নিয়ে আন্দোলন হয়েছে। যৌনকর্মীদের দাবী ছিল হিসাব খোলার ফর্মে তাদের পেশার কথা উল্লেখ থাকতে হবে। সরকার রাজী হচ্ছিলনা। তাই আন্দোলন। আমি তাদের সেই আন্দোলনকে সমর্থন করেছিলাম। যৌনকর্মীদের লাইসেন্স নিয়ে কর্ম করতে হয়। সুতরাং সরকার কাছে বৈধ। তাহলে হিসাব খোলার জন্যে পেশার কথা উল্লেখ বাধা কোথায়। যৌনকর্ম পেশা হিসাবে পৃথিবীর প্রাচীন পেশা। পশ্চিমে এখন এর জোয়ার চলছে। আমাদের দেশেও গোপনে বা আধা গোপনে চলছে।
কিন্তু কালো টাকার মর্যাদা সমাজে রাজা মহারাজার মর্যাদা। কালো টাকাই অর্থনীতিকে চাঙা করে রেখেছে। জিডিপির ৩০ ভাগ যদি কালো হয় তাহলে এর বিরুদ্ধে কিভাবে যুদ্ধ করবেন?
লেখক: কবি ও কলামিস্ট
ershadmz40@yahoo.com( do not delete e.mail address)

Read Full Post »