কেন লিখি আর কেন লিখিনা / এরশাদ মজুমদার
কেন লিখি আর কেন লিখিনা ? এ প্রশ্নের কি তেমন কোন শক্তিশালী বা জোরালো জবাব আছে? হয় আছে, কিন্তু আমি জানিনা। আমি বরং উল্টো প্রশ্ন করবো কে লিখছেন, কেন লিখছেন আর কি লিখছেন? লেখাপড়া করতে হলে লিখতে শিখতে হবে। যে ভাষায়ই হোক,সে ভাষার হরফ বা অক্ষর জানতে হবে এবং চিনতে হবে। অ আ চিনতে হবে এবং লিখতে জানতে হবে। তাহলেইতো আম জাম লিখতে পারা যাবে। আমাদের দেশে বেশীর ভাগ মানুষ এখনও সাক্ষর নন। মানে নিজের নাম লিখতে জানেন না। আর কিছু মানুষ আছেন তাঁরা লিখতে পড়তে পারেন ও কিছু হিসাব নিকাশ করতে পারেন। কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা শেষ করেছেন এমন মানুষের সংখ্যা শতকরা ১৫ ভাগ হবে কিনা জানিনা। রাজনৈতিক কারণে সকল সরকারই দাবী করেন দেশের ৬০ ভাগ মানুষ শিক্ষিত হয়েছে। তবে শুনেছি শিক্ষিত বেকার রয়েছেন দেড় কোটিরও বেশী। নারী শিক্ষা বাড়তে শুরু করেছিল,তাও এখন স্থবির হয়ে গেছে। দেশের বেশীর ভাগ মানুষই দরিদ্র আর নিরক্ষর। দারিদ্রের কারণে লেখাপড়া করতে পারেনা। পাকিস্তানের ২৩ বছর সহ ধরলে স্বাধীন ও আধা স্বাধীন অবস্থার ৬৫ বছর পার হতে চলেছে।পাকিস্তান সৃষ্টি হয়েছিল গরীব মুসলমানদের উন্নতির জন্যে। ইংরেজ বা বৃটিশ আমলে মুসলমানরা সবচেয়ে বেশী শোষিত ও নির্যাতিত হয়েছে। তন্মধ্যে বাংগালী মুসলমানেরা সবচাইতে বেশী বেশী শোষিত হয়েছে। উইলিয়াম হান্টারের বই পড়লেই জানা যায় বাংলায় বৃটিশরা কি পরিমান শোষণ করেছে। দাদাভাই নওরোজীর বই পড়লেও জানা যায় ভারত কি পরিমাণ শোষিত হয়েছে বৃটিশ আমলে। তাই ভারতকে ভেংগে দু’টি রাস্ট্র করতে হয়েছে। যদি কেউ প্রশ্ন করেন অখন্ড ভারত রক্ষা করা যেতো কিনা? আমি ব্যক্তিগত ভাবে বলবো অখন্ড ভারত রক্ষা করা যেতে যদি কংগ্রেস ও হিন্দু নেতারা আরেকটু উদার ও সহনশীল হতেন। বৃটিশদের নেতৃত্বে ১৮৮৫ সালে কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হয়। আর মুসলীম লীগ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯০৬ সালে। তবুও সকল মুসলমান নেতা মুসলীম লীগের ছায়াতলে আসেনি। জিন্নাহ নিজেই মুসলীম লীগে এসেছেন অনেক পরে যখন দেখলেন,কংগ্রেসে থেকে মুসলমানদের দাবী আদায় করা যাবেনা। ১৯০৬ সাল থেকেই মুসলমানরা নিজেদের দাবী দাওয়া নিয়ে আলাদা প্ল্যাটফরম থেকে কথা বলতে শুরু করে।
যাক এসবতো প্রাসংগিক কথা। শুরু করেছি লেখালেখির বিষয়ে কথা বলার জন্যে। তখনি এসেছে শিক্ষা ও দারিদ্রের প্রসংগ। দারিদ্র থাকলে শিক্ষা পাওয়া যাবেনা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময় প্রশ্ন উঠেছিল পূর্ববংগের মুসলমান চাষাভুষার সন্তানদের লেখাপড়ার প্রয়োজন আছে কিনা। ওরা যদি লেখাপড়া করে তাহলে চাষবাস করবে কারা। অখন্ড বংগের মধ্যে পূর্ববংগ ছিল কৃষি প্রধান মুসলমানের এলাকা। এ অঞ্চলের নিম্নবর্ণের হিন্দুরাও ছিল হিন্দু জমিদার ও ব্রাহ্মণ দ্বারা শোষিত ও অত্যাচারিত। ফলে এক সময় তাঁরা দলে দলে ইসলাম গ্রহন করে মুসলমান হয়ে যান। এ অঞ্চলের মানুষদের প্রতি বর্ণ হিন্দুদের আক্রোশ সব সময়েই ছিল। প্রশ্ন হলো,মুসলমান হয়েও কি তাঁরা নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পেরেছিলেন কি? আমার উত্তর না। ধর্মীয় ভাবে কিছুটা সামাজিক মুক্তি লাভ করলেও আর্থিক মুক্তি লাভ করতে পারেননি। আগেই বলেছি ইংরেজ আমলে তাঁরা এক ধরণের দাসে পরিণত হয়েছিল। ফলে তাঁরা হয়ে উঠেছিলেন বিদ্রোহী। ইংরেজকে তাড়াবার যুদ্ধে নেমেছিলেন। ১৭৫৭ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল নাগাদ এই ১৯০ বছরে স্বাধীনতার জন্যে যে দেড় কোটি মানুষ জীবন দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে সোয়া কোটিই ছিলেন মুসলমান। এবং তাঁরা ছিলেন অতি সাধারন মুসলমান। একই ভাবে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্যে যাঁরা জীবন দিয়েছেন তাঁরা ছিলেন কৃষক শ্রমিক,ছাত্র যুবক, পুলিশ,আনসার,ইপিআর ,সৈনিক ও কিছু সেনা অফিসার। শহীদ রাজনীতিক বা তাঁদের সন্তানের সংখ্যা পাঁচ হাজারও নয়। প্রমানিত হলো যে,যে কোন দেশের স্বাধীনতা ও সমাজ বিপ্লবে সবচেয়ে বেশী ভুমিকা রাখে অতি সাধারন পরিবারের সন্তানেরা। সামাজিক বিপ্লব ইসলাম গ্রহণের ক্ষেত্রেও গরীব ও নির্যাতিতরা সবচেয়ে বেশী এগিয়ে এসেছে। তাঁরাই সবচেয়ে বেশী সত্যের জন্যে জীবন দিয়েছেন। চলমান সময়েও রাজনৈতিক পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশী অবদান রাখে সাধারন মানুষ।
যে কথা বলে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সে কথা কি আজও বাস্তবায়িত হয়ছে? এখনতো পাকিস্তান নেই, বৃটিশরা নেই,এমন কি জমিদারেরাও নেই। তাহলে কে আমাদের শোষণ করছে? ৪২ বছরে কারা বাংলাদেশকে ব্যবহার করে বা লুট করে নিজেদের সম্পদের রাজা বাদশাহ বানিয়েছে। কেন এমন হয়েছে? অনেক বিশ্লেষন,অনেক শাস্ত্রকথা আসতে পারে। বংগবন্ধুর আমলে জ্ঞানী শাস্ত্রজ্ঞরাই পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য বা মন্ত্রী ছিলেন। বংগবন্ধুরতো ইচ্ছা ছিল স্বাধীন বাংলাদেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করা। কিন্তু করতে পারেন নি। তিনি ছিলেন ভাবাবেগে আপ্লুত এক স্বাপ্নিক মানুষ। দেশ পরিচালনা আবেগ দিয়ে হয়না তা তিনি জানতেন না। ফলে অতি নিকটজনই তাঁর সারল্যকে নিজেদের ব্যক্তি ও গোষ্ঠি স্বার্থে ব্যবহার করেছে। সমাজতন্ত্র কায়েমের জন্যে তাঁর দলও ছিলনা, কর্মীও ছিলনা। তাছাড়া তিনি জীবনেও কখনও সমাজতন্ত্রী ছিলেন না। সোনার বাংলা গঠণে প্রথম হোঁচটই খেয়েছে বাংলাদেশ তাঁরই আমলে। ৪৪ বছরে বাংলাদেশের অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো। কিন্তু দেশের বিরাট জনগোষ্ঠি এখনও শিক্ষা চিকিত্সা সহ অন্যান্য মৌলিক অধিকার বঞ্চিত। যে হারে এদেশে কিছু মানুষ নোংরা ধনীতে পরিণত হয়েছে সে হারে দারিদ্র কমেনি। আমরা চাইনা দেশে অতি ধনী অতি গরীব থাকুক। এরকম একটি বাংলাদেশ আজও প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়নি। আলাদীনের চেরাগের মতো আমাদের সংবিধানে অনেক কথা আছে। ওসব কথার কথা। বাস্তবায়নের জন্যে নয়। ওসব কিতাবে আছে,কেউ মানেনা। আলকোরআনেও বহু মূল্যবান কথা আছে। মুসলমানেরা সব মানেনা। মানলেতো সবাই ভাল মানুষ হতো। কোরআনে আছে ওজনে কম দিওনা। বাংলাদেশের মুসলমানেরা এসব কথা শোনেনা। কোরআনে বলেছে মদ আর সুদ খেওনা। এখানে সরকার সুদ খায় আর মদের ব্যবসা করে। ভাল কথা বইতে থাকলে বা জানলেই হবেনা। ভাল কথা বাস্তবায়নের জন্যে ভাল মানুষ লাগবে। মালয়েশিয়ায় মহাথির, সিংগাপুরে লী কুয়াং ছিল বলে তাঁরা পেরেছেন। আমাদের তেমন কেউ নেই। আমরা অপেক্ষায় আছি এবং থাকবো শুধুমাত্র একজন ভাল মানুষের সন্ধানে।
শুরুতেই বলেছি কেন লিখি আর কেন লিখিনা। আমিতো লিখছি স্কুল জীবন থেকেই। প্রথম লেখা ছাপা হয়েছে ১৯৫১ সালে স্থানীয় কাগজে। তারপর থেকেই লিখে যাচ্ছি। পেশাদার লিখক বা সাংবাদিক হিসাবে যাত্রা শুরু করেছি ১৯৬১ সালে ইংরেজী কাগজ পাকিস্তান অবজারভারের মাধ্যমে। তারপর থেকেই লিখে যাচ্ছি। এখন আর রিপোর্ট বা সম্পাদকীয় লিখিনা। লিখি কবিতা আর উপন্যাস। খবরের কাগজে কলাম লিখি। কলাম লেখার ব্যাপারেও সীমাবদ্ধতা আছে। পত্রিকার পলিসি এবং সরকারের সহ্য ক্ষমতার ব্যপার রয়েছে। আমিতো আইউব খানের আমল থেকে দেখে আসছি। সরকারের সহ্য ক্ষমতা থাকলেও পত্রিকার মালিকের ক্ষমতা থাকেনা। তাই ইচ্ছা করলেও সবকথা বলা যায়না বা লেখা যায়না। কবিতা, গল্প উপন্যাসে কিছুটা স্বাধনতা বেশী থাকে। কবিতা হচ্ছে সভ্য সমাজের আয়না। যে জাতি যত উন্নত তার কবিতা ততই উন্নত মানের। নবী মোহাম্মদ(সা) বলেছেন,কবিরা হচ্ছে আল্লাহর ছাত্র। কবিরাও সমাজকে জাগরিত করার জন্যে কাজ করেন। তবে এখানে ও সমাজ ও সরকারের ভয় থাকে। ভৌগলিক কারণেও স্বাধীনতার হেরফের হয়। এইতো দেখুন, হঠাত্ করে অচেনা এক সেলফোন থেকে কল পেলাম। বহুদিন যোগাযোগ নেই বলে নাম্বারটা সেভ করা নেই। সেলফোনে কন্ঠ ভেসে আসলো-আমি অমুক বলছি। কেন যেন চট করে চিনে ফেললাম। বয়সের কারণে অনেক নাম মনে থাকেনা। অন্য মনস্কতার কারণেও অনেকের অতিচেনা গলা শুনে নাম মনে পড়েনা। অমুক বললো,সে নতুন কাগজ দৈনিক বর্তমানে যোগ দিয়েছে। নতুন কাগজের উদ্বোধনী সংখ্যার জন্যে একটা লেখা দিতে হবে হবে। সময় মাত্র দুদিন। আমি সাধারণত; না বলিনা। তাই বলে দিলাম নতুন লেখা পাঠাবো। সাথে বললাম,যেখানে সেখানে ছাপলে লেখা পাঠাবোনা। লেখা ছাপিয়ে বেইজ্বতি করোনা। তুমিতো জানো আমি পয়সার জন্যে লিখিনা। যা বিশ্বাস করি তাই লিখি। আরও বললাম লেখা ইমেইলে পাঠাতে পারবোতো ? আমার কাছে তোমাদের ইমেইল এড্রেস নেই। জানতে চাইলাম,আমার লেখা চাওয়ার ব্যাপারে উপরের অনুমতি আছে কিনা? অমুক বললো,অনুমতি আছে। সম্পাদক সাহেব আমার বন্ধু মানুষ। ব্যস্ত থাকার কারণে হয়ত আমাকে ফোন করতে পারেননি।। কিছু ক্ষণ পরেও অমুক ইমেইল ঠিকানাটা মেইল করে দিলো। এটা এই লেখার জন্মকথা।
সংবাদপত্রের লেখালেখিকে বলা হয় ‘লিটারেচার ইন এ্যা হারি’। মানে দ্রুততম সময়ের মধ্যে লেখা। তাই সংবাদপত্রের লেখা শুদ্ধ হয়ে উঠতে পারেনা। কিন্তু কি লিখবেন আর কি লিখবেন না তার একটি সীমাবদ্ধতা আছে। সেটা তৈরি হয় পত্রিকার প্রকাশনা নীতি সরকারের আইনের কারণে। জগতের সকল দেশেই নীতি নৈতিকতার ব্যাপার আছে। ইদানিং পশ্চিমা দেশ গুলোতে থার্ড মিডিয়া নামে শক্তিশালী মিডিয়ার জন্ম হয়েছে। থার্ড মিডিয়া কর্পোরেট হাউজ ও ব্যান্ক গুলোর আওতার বাইরে। এ গুলো চলে জনগণের চাঁদা বা দানের উপর নির্ভর করে। আমাদের দেশেও অনলাইন পত্রিকা বা ম্যাগাজিন প্রকাশের সেষ্টা চলছে। সাথে সাথে এ গুলোকে নিয়ন্ত্রনের জন্যে সরকারী নজরদারীও বাড়ছে। এটা হচ্ছে গণতান্ত্রিক সহনশীলতার অভাবে।মাঝে মাঝে শোনা যায় সরকার ইউটিউব বা ফেসবুক বন্ধ করে দিচ্ছেন। আমাদের দেশের সংবাদপত্র , টিভি চ্যানেল ও অনলাইন পত্রিকা গুলোর ১০০ ভাগই ব্যক্তি মালিকানায়। তাঁদের নানা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা আছে। শোনা যায় অনেকেই আত্মরক্ষার জন্যে মিডিয়া জগতে প্রবেশ করেছেন। এখন বাংলাদেশের বড় বড় শিল্প গ্রুপ গুলোর কাগজ ও টিভি চ্যানেল আছে। ঠিক এমনি এক সময়ে মিজান সাহেব মিডিয়া জগতে প্রবেশ করছেন। তিনি আমার কয়েকজন প্রিয় মানুষের বন্ধু বলে শুনেছি। নির্মাণ জগতে স্কাইস্ক্রেপার তৈরি করে নাম করেছেন। ইতোমধ্যে ব্যান্কের প্রতিষ্ঠাতাও হয়েছেন। তাঁর অর্থ সরবরাহের ঘাটতি হবেনা। এটা খুবই আশার কথা। কিন্তু পত্রিকা শুধু টাকা দিয়ে হয়না। যে কোন বিনিয়োগের জন্যে শুধু পুঁজিই শেষ কথা নয়। সত্যিকার মেধা ও যোগ্যতার সংমিশ্রণ করতে হয়। বিশেষ করে মিডিয়াতে যোগ্যতা ও মেধা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রুপার্ট মার্ডক মেধা আর যোগ্যতার সাথে সঠিক পুঁজির মিশাল দিয়েই মিডিয়া মোঘল হয়েছেন। বিল গেটস,স্টিভ জবস,ওয়ারেন বাফেট, ভারতের লক্ষ্মী মিত্তাল , রিলায়েন্স ও আদিত্য বিরলা মেধার সাথে পুঁজির সঠিক প্রয়োগ করেছেন। এরমধ্যে বিল গেটস ও স্টিভ জবস শুধু মেধা দিয়েই জগতকে আলোকিত করেছেন। বাংলাদেশে লতিফুর রহমান শামীমের ডেইলী ষ্টার ও প্রথম আলো সংবাদপত্র জগতে নতুন দিগন্তের উন্মোচন করেছে। এক সময় যা হামিদুল হল চৌধুরী সাহেব করেছিলেন।
বেশ কয়েক বছর আগে আমার শিল্পপতি বন্ধু একটি বাংলা দৈনিকের বিষয় নিয়ে আমার সাথে আলাপ করেছিলেন। কয়েকদিন কথা বলার পর বুঝতে পারলাম তিনি পত্রিকার ব্যাপারে সিরিয়াস না। টাকা আছে তাই পত্রিকা বের করা। শুরু থেকেই তাঁর ম্যানেজমেন্ট সমস্যা ছিল। তাই সেখানে আমার যোগদান আর হয়নি। কাগজটাও বিকশিত হয়নি। আমি সারা জীবন নিজের মন ও মননের বিরুদ্ধে পত্রিকায় কাজ করিনি। ১৯৭৩ সালে সালে যখন জনপদ প্রকাশিত হয় আমি ছিলাম চীফ রিপোর্টার। গাফফার ভাই ছিলেন সম্পাদক। তখন মালিকদের প্রতিনিধি ম্যানেজিং ডিরেক্টর সাহেবের কাছে জানতে চেয়েছিলাম কার কার কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন জানলে ভাল হয়। কেননা, ভুলে আমাদের দাতাদের বিরুদ্ধেও রিপোর্ট হয়ে যেতে পারে। ভদ্রলোক মুচকি হাসলেন, বললেন সময়মতো তোমাকে জানাবো।
শেষের দিকে এসে আমি সংবাদপত্র জগতের তিনজন প্রবাদ পুরুষকে স্মরণ করছি। এঁরা হলেন সালাম সাহেব, মানিক মিয়া সাহেব ও জহুর হোসেন চৌধুরী সাহেব। এঁরা তিনজনই ছিলেন বাঘা সাংবাদিক। সারা পাকিস্তানে তাঁদের নাম ডাক ছিল। এর মধ্যে শুধু মানিক মিয়া সাহেব ছিলেন মালিক। বাকি দুজন ছিলেন চাকুরীজীবী। গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকারের জন্যে এঁদের লড়াইয়ের কথা এদেশ কোনদিনও ভুলবেনা বলে আমি মনে করি। এখন লেখাটি প্রকাশের জন্যে ফেণীর সময়ে পাঠালাম। সম্পাদক শাহাদাত আমার ছোট ভাইয়ের মতো। সে আমার ফেণীর অভিভাবক। শাহাদাত অনুরোধ করেছে তার কাগজের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর জন্যে লেখা পাঠাবার জন্যে। এখন চট করে কিছু লিখতে পারিনা। তবুও লেখার চাপ আছে। মনের বিরুদ্ধেই লিখি। শরীর কুলোয়না,তবুও।
সর্বশেষে আলকোরআন থেকে কিছু উল্লেখ করে লেখাটি শেষ করলাম। কালামে পাকে আল্লাহপাক বলেছেন, ‘তোমরা অনুমান ভিত্তিক কোন সংবাদ পরিবেশন করোনা। অনুমান হচ্ছে মিথ্যার কাছাকাছি’।
লেখক: কবি ও ঐতিহ্য গবেষক
http://www.humannewspaper.com