• Home
  • Who Am I ?

Writing From The Street ( রাস্তা থেকে বলছি )

Just another WordPress.com weblog

Feeds:
Posts
Comments
« ব্যবসার রাজনীতি ও রাজনীতির ব্যবসা
কবিতা আন্দোলন »

একজন সংখ্যালঘুর আত্মকথন

November 13, 2015 by writerershad


একজন সংখ্যালঘুর আত্মকথন / এরশাদ মজুমদার

ডাক্তার কালিদাস বৈদ্যের কথা এদেশের রাজনৈতিক সচেতন বেশীর ভাগ নাগরিকেরাই জানার কথা। পূর্ব পাকিস্তান ও বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে তিনি একটি বই লিখেছেন । যার টাইটেল হলো ‘বাংগালীর মুক্তি যুদ্ধের অন্তরালে শেখ মুজিব’। বইটি সম্পর্কে সাংবাদিক পবিত্র ঘোষ একটি ভুমিকা লিখেছেন,তাতে তিনি বলেছেন ৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় কালিদাস বৈদ্য কোলকাতায় ছাত্র ছিলেন। ১৯৫০ সালে তিনি পূর্ব  পাকিস্তান ফিরে যান পাকিস্তান ভাংগার শপথ নিয়ে। বৈদ্যবাবুর আশা ছিল পাকিস্তান মুক্ত পূর্ব বাংলা বা বাংলাদেশ ইসলাম মুক্ত হয়ে শুধু বাংগালীর দেশ হবে। বাংগালী বলতে বৈদ্যবাবু ইসলাম  বা ধর্ম মুক্ত বাংগালীদের মনে করেন। আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি পাকিস্তানের  সামরিক জান্তা ও ভুট্টোর কারণে পাকিস্তান ভেংগে গেছে। বংবন্ধু শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ আলোচনা চালিয়ে গেছেন একটি সমঝোতা  চেয়েছিলেন। পাকিস্তানী জেনারেলরা বংগবন্ধুর সরলতার সাথে বেঈমানী করে পূর্ব পাকিস্তান আক্রমণ করে বাংগালীদের হত্যার অভিযান চালায়।
বৈদ্যবাবু তাঁর বইতে উল্লেখ করেছেন যে,গ্রামে প্রচার আছে ‘শেখ সাহেবের পূর্ব পুরুষ নম: সামাজচ্যুত হয়ে মুসলমান হয়ে যায়।
ওই বইতে বলা হয়েছে,কোলকাতার মহানিধন দাংগায় শেখ মুজিব নিজ হাতে ছোরা নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন এবং দাংগায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। দাংগায় হিন্দু খুন করার শিক্ষা শেখ মুজিব তাঁর গ্রাম থেকেই পেয়েছিলেন। বৈদ্যবাবু লিখেছেন, আমি যুবলীগ ও ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য হয়েই কাজ শুরু করি।কিন্তু শেখ মুজিব সব রকম ভাবেই যুব লীগ ও ছাত্র ইউনিয়নের বিরোধিতা করেন। কারণ তিনি ছিলেন ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে শিক্ষিত ও উদ্বুদ্ধ। বইটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, হিন্দু সমাজের বৃহত্তর স্বার্থেই হিন্দুরা মুজিবকে সমর্থনদিলেও  মুজিবের প্রতি বিশ্বাস কোনদিনই ছিলনা। কারণ মুজিব ছিল নামাজ রোজাকারী একজন মুসলমান।তিনি উল্লেখ করেছেন যে, ১৭৫৭ সালে ইংরেজদের ডেকে এনে লম্পট  মুসলমান নবাবকে সরিয়ে  হিন্দুরা নিজে নবাব হতে সাহস করেনি। কারণ, হিন্দুরা পরের চরণে নিজেদের অর্পণ না করতে পারলে তাদের ঘুম হয়না। ১৮৫৮ সালেও তারা একজন মুসলমান সম্রাটকে নেতা স্বীকার করে বিদ্রোহের ডাক দিয়েছিল। কিন্তু নিজেরা নেতৃত্ব নিজেদের হাতে নেয়ার সাহস দেখাতে পারেনি।

১৯৭০ সালের নির্বাচনে সংখ্যানুপাতে ৩৬ জন হিন্দুর নমিনেশন পাওয়ার কথা থাকলেও শেখ মুজিব মাত্র একজন হিন্দুকে নমিনেশন দিয়েছিলেন। এক সময় তথাকথিত প্রগতিশীল হিন্দু নেতারা  যুক্ত নির্বাচন চেয়েছিলেন। এখন মনে হয় তাঁরা পৃথক নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের হিন্দুরা আওয়ামী লীগকেই তাঁদের নিজেদের দল মনে করেন। ন্যায় অন্যায় সকল কাজেই তাঁরা আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে যাচ্ছেন। আমার ধারনা ছিল বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এদেশের হিন্দুরা নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করে নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করবেন। কিন্তু তাঁরা তা করেননি। তাঁদের হয়ত ধারনা ছিল আওয়ামী লীগকে সমর্থন করলে তাঁদের নিজেদের ও দিল্লীর স্বার্থ রক্ষা হবে। আসলে এখানে দিল্লীর স্বার্থ রক্ষা করাই হলো প্রধান।

শুনেছি , ভারতের পশ্চিম বংগে ( যদিও পুর্ববংগ নামে কোন রাজ্য বা প্রদেশ আর এখন নেই) ৮০ জনেরও  বেশী মুসলমান সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন বিভিন্ন দল থেকে। তবে বেশীর ভাগ সংসদ সদস্য তৃণমূল থেকে নির্বাচিত হয়েছেন।  ছয়জন মুসলমান নাকি মন্ত্রীও হয়েছেন। পশ্চিম বংগে ৪০ ভাগ মুসলমান নাগরিক রয়েছেন বলে মনে করা হয়। যদিও সরকারী হিসাবে তা স্বীকার করা হয়না। বাংলাদেশে হিন্দু জনসংখ্যা ১০ ভাগ বলে হিন্দুরা দাবী করেন। ডাক্তার বৈদ্যের মতে ৭০ সালেই ৩৬ জন হিন্দুর নমিনেশন পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বংগবন্ধু তা দেননি। দিল্লীও হয়ত চায় বাংলাদেশের হিন্দুরা আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়ে যাক কেয়ামত পর্যন্ত। পৃথক নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের বর্তমান অবস্থা নড়বড়ে হয়ে যাবে। দিল্লী বাংলাদেশের হিন্দুদের নিয়ে রাজনীতি করতে ভালবাসে। বাংলাদেশে কিছু হলেই ভারতীয় হাই কমিশনের কর্তাদের দৌড় ঝাপ শুরু হয়ে যায়। দেখে শুনে মনে হয়, বাংলাদেশের হিন্দুদের স্বার্থ রক্ষা করাই দিল্লীর কাজ। সেদিক থেকে ঢাকা অনেক ভাল কথায় কথায়  ভারতের মুসলমান রক্ষা করার জন্যে দৌড়ে দিল্লী যায়না বা যেতে সাহস করেনা। ভারতের সাধারন মুসলমানরা ঢাকার সহানুভুতি আশাও করেনা। কারণ ঢাকার সরকার মুসলমানদের স্বার্থের কথা ভাবেনা। কারণ এখানকার সরকার ধর্মমুক্ত।

এর আগেও আমি লিখেছি, বাংলাদেশের হিন্দুরা এখন মেজরিটির অধিকার ভোগ করে থাকেন। সর্বত্রই তাঁদের অবস্থান তিরিশ থেকে চল্লিশ ভাগের মতো। সেদিন শুনলাম শিক্ষা বিভাগে বিভিন্ন উচ্চ বা সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী পদে অবস্থান করছেন  হিন্দুরা। ধর্মমুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করার জন্যে শুরু থেকেই নুরুল ইসলাম নাহিদ সাহেবকে মন্ত্রী করা হয়েছে। কারণ, তিনি একজন মৌলবাদী ধর্মমুক্ত মানুষ। তিনি নিজের বিশ্বস্ত লোকজনকেই সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার দিয়েছেন। আসলে এটাই ছিল বৈদ্যবাবু ও তাঁর বন্ধুদের স্বপ্ন, যা এখন বাস্তবায়িত হতে চলেছে। ধর্মমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হলে হিন্দু বা ভারতের আদর্শ বা লক্ষ্য বাস্তবায়িত হবে একথা বৈদ্যবাবু ও তাঁর সমর্থকেরা ভাল করেই জানেন। আমি কিন্তু বৈদ্যবাবু  ,তাঁর বন্ধু ও দিল্লীর এই নীতিকে সমর্থন করি। কারণ, কেউ যদি নিজ এবং তাঁর গোত্রের,গোষ্ঠির স্বার্থ রক্ষা করেন তাতে দোষের কিছু নেই। কারণ নিজ স্বার্থ রক্ষা মানুষের অধিকার। সংবিধানও তা সমর্থন করে। প্রশ্ন হলো দেশের ৯০ ভাগ মানুষ তাঁদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারছেন কিনা? না পারলে তা কার ব্যর্থতা? পলাশীতে নবাবের সৈন্য,রসদ, শক্তি  ইংরেজের চেয়ে বহু গুণ বেশী ছিল। কিন্তু জয় হয়েছিল ইংরেজের। সুতরাং জয়লাভের জন্যে মেজরিটি আর মাইনরিটির বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ নয়। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বুদ্ধি ও কৌশল। ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচন ছিল বুদ্ধি ও কৌশলের খেলা। যে খেলায় দিল্লী ও মীরজাফরের সমর্থন ছিল। ফলে দিল্লীর জয় হয়েছিল। হেরে গিয়েছে বাংলাদেশের ৯০ ভাগ মানুষ।

তথাকথিত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সংখ্যা তত্বটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সংখ্যা দ্বারাই নির্ধারিত হয় মানুষের মর্যাদা। সংখ্যাই নির্ধারণ করবে সরকার কে চালাবে । এর আগেও লিখেছি  ভোটের গণতন্ত্রে একজন মাজুর ভিক্ষুক আর রাস্ট্রপতির মর্যাদা এক। কারণ, মাজুরের এক ভোট আর রাস্ট্রপতিরও এক ভোট। ভোটের সময় আপনি নিশ্চয়ই দেখেন একজন ক্ষমতাবান  ভোট প্রার্থী মাজুরের হাত ধরে বলছেন আমার জন্যে দোয়া করবেন। আমি এবার ভোটে দাঁড়িয়েছি। নির্বাচনের সময় এটা হলো দৃশ্যমান চিত্র। অদৃশ্যমান চিত্র হলো,প্রার্থীর উক্তি হলো ‘আরে ব্যাটা আমি তোর ভোটের ধার ধারি নাকি? আমিতো জিতবোই। আমাদের দেশের গণতন্ত্র জগতের শ্রেষ্ঠ গণতন্ত্র। আমাদের নেত্রী সাগরকন্যা, জগতকন্যা,গণতন্ত্রকন্যা। ভোট হলেও আমরা জিতি , না হলেও জিতি। আমরাইতো গণতন্ত্রেকে বাঁচিয়ে রাখি, গণতন্ত্র খাই,গণতন্ত্রে ঘুমাই। জগতে কোন দেশের মানুষই গণতন্ত্রকে এত ভালবাসেনা। ডেইলী স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম সাহেব ও প্রথম আলো আশা করছেন বাংলাদেশেও মায়ানমারের মতো একটি সরকারের প্রভাবমুক্ত স্বচ্ছ নির্বাচন হবে। প্রথম আলোর সোহরাব হোসেন একটি সুষ্ট নির্বাচনের জন্যে প্রার্থণা করেছেন। মায়ানমারে ৫০ বছর ধরে সেনা শাসন চলছে। ২৫ বছর পর একটি সেনা  প্রভাব ও পক্ষপাত মুক্ত স্বচ্ছ নির্বাচন হয়েছে যার মাধ্যমে জনগণের ইচ্ছার প্রতি ফলন ঘটেছে। কিন্তু বাংলাদেশের পরিস্থিত মায়ানমারের চেয়ে অনেক খারাপ। কেন খারাপ তা আর বিস্তারিত আর বললামনা। সংখ্যাতত্বের গণতন্ত্রের চেয়ে উন্নত কোন প্রক্রিয়া বিশ্ব আবিষ্কার করতে পারেনি। গণতন্ত্রেরও নাকি বিভিন্ন রূপ আছে। বাংলাদেশের গণতন্ত্রের সাথে রাষ্ট্র শক্তি জড়িত। যিনি বা যাঁরা ক্ষমতায় থাকেন তাঁরা শক্তির মাধ্যমে নির্বাচনকে প্রভাবিত করে ক্ষমতায় টিকে থাকেন। বাংলাদেশে এখন জনশক্তি এত বেশী দমিত হয়েছে যে এই শক্তি নিষ্প্রাণ হয়ে পড়েছে। মিয়ানমারে সেনাশক্তি যুগ যুগ ধরে ক্ষমতা প্রয়োগ করে দেশ ও রাষ্ট্রকে নিজেদের দখলে রেখেছে।  বাংলাদেশে শক্তির মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকার যাত্রা শুরু হয়েছে মাত্র। বৈদ্যবাবুর বইটি বাংলাদেশ সরকার নিষিদ্ধ করেছেন কিনা জানিনা।

বৈদ্যবাবু লিখেছেন, বেশীর ভাগ মুসলমান বুদ্ধিতে তীক্ষ্ণ,ব্যবহারে উগ্রও হিংস্ত্রতায় অগ্রগামী। তুলনায় হিন্দুরা নরমপন্থী, রক্ষণশীল,ও বিবর্তনবাদী। তাদের সাহসও কম। সেজন্যেই তারা বার বার মুসলমানদের কাছে পরাজয় স্বীকার করেছে। তার ফলে মুসলমানেরা বাইরে থেকে এসে ভারত জয় করে ৮শ’ বছর রাজত্ব করেছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার সময়ও তারা মানে বাংগালী মুসলমানেরা তীক্ষ্ণ বুদ্ধির পরিচয় দিয়েছে। তারা ভারত সরকার ও হিন্দুদের ধোকা দিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করে নিল। তাদের কোন ঝুঁকি নিতে হয়নি। ঝুঁকি নিয়েছে ভারত সরকার আর হিন্দুরা। খুব কম রক্তই সেদিন মুসলমানদের দিতে হয়েছে। ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ হলো আর পুর্ববংগ পেলো তথাকথিত স্বাধীনতা। ভারত বিশ্বযুদ্ধের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে  ১৭ হাজার সৈন্যের জীবনের বিনিময়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছে। এত সাহায্য করার পরও মুজিব ভারতের কাছে কৃতজ্ঞ থাকেনি।

বৈদ্যবাবুর মতে, মুজিব( আমরা সম্মান করে বংগবন্ধু বলি) ছিলেন ইসলামিক জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী।বাংগালী জাতীয়তাবাদকে হত্যা করার জন্যে ইসলামিক জাতীয়তাবাদকে তিনি শুরু থেকেই নজর দিতে থাকেন। বৈদ্যবাবু স্বীকার করেছেন যে, গোয়েন্দা মারফত শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী জানতে পেরেছেন মুজিবকে হত্যা করার পরিকল্পনা হয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে নাকি বংগবন্ধুকে হুঁশিয়ারও করেছিলেন। বৈদ্যবাবু স্বীকার করেছেন,গণ আন্দোলনের মাধ্যমে মুজিবকে উত্‍খাত করার জন্যে এমএনএ হোস্টেলে তাঁরা আলোচনা শুরু করেছিলেন। বৈদ্যবাবু মনে করেন, যে সেনাবাহিনী ৩০ লাখ বাংগালীকে হত্যা করেছে এবং বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে সেই ইসলাম প্রেমিক সেনাবাহিনীকে সব জেনেও তিনি তাদের বিচার করেননি। অথচ সেই সেনারা গণ বিপ্লবের আগেই মুজিবকে হত্যা করে। বংগবন্ধু নাকি কোন এক সময় তাঁর সহকর্মীদের বলেছিলেন বিপদে পড়লে তোরা কখনই ভারতের কাছে সাহায্য চাইবিনা। ভারতকে কখনই বিশ্বাস করবিনা। সুযোগ পেলেই ভারত বাংলাদেশকে গ্রাস করে নেবে। আমি অনেক কষ্টে ভারতীয় সৈন্যদের ফেরত পাঠিয়েছি। তারা আবার আসার সুযোগ পেলে আর ফিরে যাবেনা। তাদের সাথে উপরে ভালো ব্যবহার করবি। ধোকা দিয়ে কাজ আদায় করার সুযোগ ছাড়বিনা।

শুনেছি, ৪৭ সালে কংগ্রেস নেতারা বলেছিলেন,পাকিস্তান বেশী টিকবেনা। তাঁদের কথা বা বাণী সত্য প্রমানিত হয়েছে। ৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন হয়ে বাংলাদেশ হয়ে গেছে। বৈদ্যবাবুরা ৪৭ সাল থেকেই পাকিস্তান ভাংগার জন্যে জন্যে কাজ করে আসছেন। মুসলমানদের একটি স্বাধীন দেশ থাকবে এটা ভারতীয় মোল্লা হিন্দুরা কখনই চাননি। পাকিস্তান ভাংগার পর বৈদ্যবাবু আশা করেছিলেন,বাংলাদেশ আর শুধু মুসলমানের দেশ থাকবেনা। এটা ধর্মমুক্ত বাংগালীদের দেশ হবে যারা ইসলামকে গৃহধর্মে পরিণত করবে। মানে কোথাও কোন মাদ্রাসা মক্তব ও মসজিদ থাকবেনা। রাষ্ট্র ধর্মমুক্ত থাকবে। বংগবন্ধুর দেশ পরিচালনায় ইসলামকে বাদ না দেওয়ায় বৈদ্যবাবু আবার কোলকাতায় ফিরে যান। মুক্তিযুদ্ধের সময় বৈদ্যবাবুরা কি ভুমিকা পালন করেছেন তার কিছু ইশারা একে খোন্দকার সাহেবের বইতে পাওয়া যায়। ভারতের দার্শনিক ও ইতিহাস গবেষকগণ অখন্ড ভারতের স্বপ্ন দেখেন। তাঁরা অখন্ড ভারত প্রতিষ্ঠার জন্যে কাজ করে যাচ্ছেন। তার সাথে আমাদের দেশের বেশ কিছু নামী দামী মানুষ অখন্ড ভারতের আশায় গবেষণা করে যাচ্ছেন। একজন রাজনীতিক একদিন হাসতে বললেন, অখন্ড ভারত হলে অসুবিধা কোথায়? আমার এলাকা থেকে আমি দিল্লীর সংসদ সদস্য হবো। ৭১ সালে বৈদ্যবাবুরা প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারকে সমর্থন করেননি। তাঁরা সরাসরি দিল্লীর সাথে যোগাযোগ রাখতেন। এ ব্যাপারে দিল্লীর দ্বিমুখী নীতি ছিল। প্রকাশ্যে লোক দেখানোর জন্যে বাংলাদেশের প্রবাসী সরকারকে সমর্থন দিতো। গোপনে বা সত্যিকার ভাবে সমর্থন করতো বৈদ্যবাবুদের কোটারীকে আর তাঁদের অনুগত মুসলমানের পোলারা। আক্ষেপ করে বৈদ্যবাবু লিখেছেন, ভারতে জন্ম নিয়ে প্রথমে ছিলাম ভারতবাসী, পরে পাকিস্তানী হই। তথাকথিত বাংলাদেশ স্বাধীন করেও বাংগালী হতে পারিনি, হয়েছি বাংলাদেশী। ৩০ লাখ মানুষ জীবন দিয়েও তারা আর দেশে ফিরতে পারেনি। একদিন তারা অবশ্যই নিজ দেশে ফিরে আসবে। বৈদ্যবাবু জীবিত আছেন কিনা, তবে তাঁর অনুসারীরা আছেন এখানে অথবা ভারতে। যাঁরা বাংলাদেশকে তাঁদের দেশ হিসাবে দেখতে চান।

১৯৭২ সালের ৩রা জুন বৈদ্যবাবু তথাকথিত শরণার্থী কল্যাণ পরিষদের পক্ষ থেকে একটি চিঠি দিলেন যাতে তিনি হিন্দুদের সুযোগ সুবিধার জন্যে বেশ কিছু দাবী উত্থাপন করেছিলেন। তাঁর প্রথম দাবী ছিল যতদিন পর্যন্ত হিন্দুদের স্বার্থ রক্ষিত না হবে ততদিন যেন ভারতীয় সৈন্য বাংলাদেশে অবস্থান করে। তিনি দাবী করেছিলেন বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যেন মুক্ত বাণিজ্য, অবাধ চলাফেরা, উদার সাংস্কৃতিক লেনদেনের জন্যে একটি চুক্তির প্রয়োজন। জাতীয় পর্যায়ে হিন্দুদের জন্যে বিশেষ ব্যবস্থা রাখার জন্যেও তিনি দাবী করেছিলেন দিল্লীর কাছে। তাঁর আরও দাবী ছিল ১৯৭০ সালের আগে নানা ধরণের অত্যাচারের কারণে ভারতে চলে গিয়েছিলেন তাঁরা যেন সকল ধরণের অধিকার সহ বাংলাদেশে ফিরে আসতে পারেন।

লেখক: কবি ও ঐতিহ্য গবেষক

ershadmz@gmail.com

 

Like this:

Like Loading...

Related

Posted in Uncategorized |

  • Archives

    • May 2018 (1)
    • February 2016 (1)
    • January 2016 (2)
    • December 2015 (2)
    • November 2015 (1)
    • October 2015 (1)
    • September 2015 (1)
    • August 2015 (4)
    • July 2015 (1)
    • June 2015 (4)
    • May 2015 (3)
    • April 2015 (4)
    • March 2015 (5)
    • February 2015 (2)
    • January 2015 (1)
    • December 2014 (10)
    • November 2014 (4)
    • October 2014 (6)
    • September 2014 (6)
    • August 2014 (4)
    • July 2014 (3)
    • June 2014 (5)
    • May 2014 (5)
    • April 2014 (11)
    • March 2014 (21)
    • February 2014 (27)
    • January 2014 (11)
    • December 2013 (1)
    • November 2013 (5)
    • October 2013 (12)
    • September 2013 (10)
    • August 2013 (3)
    • July 2013 (8)
    • June 2013 (5)
    • May 2013 (4)
    • April 2013 (6)
    • March 2013 (7)
    • February 2013 (5)
    • January 2013 (5)
    • December 2012 (4)
    • November 2012 (3)
    • October 2012 (2)
    • September 2012 (4)
    • August 2012 (3)
    • July 2012 (4)
    • June 2012 (5)
    • May 2012 (7)
    • April 2012 (5)
    • March 2012 (5)
    • February 2012 (4)
    • January 2012 (7)
    • December 2011 (8)
    • November 2011 (1)
    • October 2011 (7)
    • September 2011 (4)
    • August 2011 (2)
    • July 2011 (4)
    • June 2011 (8)
    • May 2011 (9)
    • April 2011 (8)
    • March 2011 (5)
    • February 2011 (4)
    • January 2011 (4)
    • December 2010 (7)
    • November 2010 (2)
    • October 2010 (8)
    • September 2010 (5)
    • June 2010 (1)
    • May 2010 (1)
    • February 2010 (2)
    • June 2009 (5)
    • May 2009 (32)
  • Categories

    • Articles (119)
    • উপন্যাস (1)
    • English Articles (1)
    • Political Column (45)
      • Free Thoughts (19)
    • Uncategorized (232)
  • Pages

    • Who Am I ?

Create a free website or blog at WordPress.com.

WPThemes.


Privacy & Cookies: This site uses cookies. By continuing to use this website, you agree to their use.
To find out more, including how to control cookies, see here: Cookie Policy
  • Follow Following
    • Writing From The Street ( রাস্তা থেকে বলছি )
    • Join 30 other followers
    • Already have a WordPress.com account? Log in now.
    • Writing From The Street ( রাস্তা থেকে বলছি )
    • Customize
    • Follow Following
    • Sign up
    • Log in
    • Copy shortlink
    • Report this content
    • View post in Reader
    • Manage subscriptions
    • Collapse this bar
%d bloggers like this: