• Home
  • Who Am I ?

Writing From The Street ( রাস্তা থেকে বলছি )

Just another WordPress.com weblog

Feeds:
Posts
Comments
« বাংলাদেশের ধর্মমুক্ত জীবন ও কিশোরী ঐশী
বাংলাদেশে রাস্ট্র ও ধর্মের অবস্থান »

চিন্তার স্বাধীনতা ও আমাদের বুদ্ধিজীবী সমাজ

September 5, 2013 by writerershad


চিন্তার স্বাধীনতা ও আমাদের বুদ্ধিজীবী সমাজ / এরশাদ মজুমদার

আমি আমার বন্ধু বান্ধবদের প্রায়ই বলি, কোন দিকে থাকবেন তা আগে ভাগেই ঠিক করে নিন। সময় সুযোগ বুঝে দল বদল বা মত বদল চলবেনা। যেমন আমাদের বুদ্ধিজীবীরা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না,রামের পক্ষে থাকবেন না রাবণের পক্ষে থাকবেন। রাবণ ভুমিপুত্র ও স্বদেশের রাজা। রাম ভিনদেশী আক্রমণকারী ও বিজয়ী। রাবণ পরাজিত তাই অসুরে পরিণত হয়েছে। বাংলা সাহিত্যে একমাত্র মধুসুদনই রাবণের গুণগাণ করেছেন। সেই সুদুর প্রাচীন কাল থেকেই কবি সাহিত্যিক,ইতিহাসবিদেরা বিজয়ী রামের গুণগাণ করে কাব্য ও ইতিহাস তৈরি করেছেন। এমন কি শেষ পর্যন্ত রামকে দেবতা বানিয়ে ফেলেছেন। সে যুগে শ্লোগাণ ছিল বীরভোগ্যা বসুন্ধরা। আরও পরে ইংরেজীতে বলা হলো মাইট ইজ রাইট। সোজা কথা হলো শক্তির পূজা করো। সেই রাম রাবণের যুগ পেরিয়ে মানব সভ্যতা অনেক দূর এগোলেও শক্তির ব্যবহার বা বল প্রয়োগ করে নিজের মত প্রতিষ্ঠিা করা বা নিজের স্বার্থ হাসিল করার যুগ শেষ হয়ে যায়নি। এখনও আমাদের মতো দেশে তথাকথিত গণতন্ত্রের নামে বা সংখ্যার কারণে কেউ যদি ৫১ পায় তাহলে ৪৯ কে দাস বানিয়ে ফেলে। ফলে এ দেশে গণতন্ত্রকে পোলিও রোগে পংগু করে ফেলেছে।
শক্তির নব নব রূপ আমরা দেখতে পাচ্ছি। এখন মানুষ হত্যা করার জন্যে নতুন নতুন মারণাস্ত্র আবিষ্কার ও তৈরি হচ্ছে। শুধু মানুষ নয় সভ্যতাকে ধ্বংস করার জন্যেও শক্তিশালী দেশগুলো উঠে পড়ে লেগেছে। বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে শাক্তিশালী দেশ আমেরিকা। এদেশে জ্ঞানী গুণীর অভাব নেই। জোরালো ভাষায় কথার বলার জন্যে সাহসী কবি লেখকেরও অভাব নেই। কর্পোরেট বিশ্বের আওতার বাইরে থেকে কথা বলার জন্যে তৃতীয় মতামতের মঞ্চও তৈরি হয়েছে। কিন্তু আমেরিকান রাজনীতির চলমান আদর্শ হলো পরদেশ লুণ্ঠণ করো আর নিজের দেশকে সমৃদ্ধিশালী করো। ইরাকের যাদুঘর থেকে ছয় সাত হাজার বছরের জাতীয় ঐতিহ্যের মূল্যবান সম্পদ আমেরিকান সৈন্যরা নিয়ে গেছে। ধন সম্পদের কথা বাদ দিলাম। শুনা যায়, ১৬ই ডিসেম্বরের পর ভারতীয় সৈন্যরা যে ক’দিন আমাদের দেশে ছিল সে ক’দিনে নাকি অনেক কিছু লুট করে নিয়ে গেছে। সৈন্যরা নাকি কোনদেশ দখল করলে ওরকম করে থাকে। ইরাক যুদ্ধের সময়েই আমরা প্রথম ‘এম্বেডেড’সাংবাদিকের কথা শুনেছি। এসব সাংবাদিককে নাকি আক্রমণের ছ’মাস আগে থেকেই ট্রেনিং দেয়া হয়েছে সরকারী নিরাপত্তার ছাতার নীচে থেকে কিভাবে সাহসী সাংবাদিকতা করতে হয়। একেবারে ট্যান্কের ভিতর বসে যুদ্ধের খবর সংগ্রহ করা। এটাও আমেরিকার সরকারী সাংবাদিকতার দেশপ্রেমের নমুনা। এই আমেরিকাই দেশপ্রেম,গণতন্ত্র ও মানবতার কথা বলে থাকে। এই আমেরিকাই মিশরের সামরিক অভ্যুত্থানকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। মিশরের নির্বাচিত সরকার উত্‍খাত করেছে। বিশ্লেষকরা বলেন, মিশর দেশটি সে দেশের জনগণের হলেও সেনাবাহিনীকে রক্ষা ও পরিচালনা করে আমেরিকা ও ইজরায়েল। সন্প্রতি এই দলে যোগ দিয়েছে সউদী বাদশাহ। সামরিক অভ্যুত্থানের পর পরই বাদশাহ নামদার সেনাবা্হিনীকে ১২ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে দেশ চালাবার জন্যে।
বাংলাদেশের মানুষতো বাদশাহ নামদারের নাম শুনলে ভক্তিতে গদগদ হয়ে যায়। কারণ তিনিতো দুই মহাপবিত্র স্থানের খাদেম। বিশ্বের মুসলমান নেতারা সেখানে গেলেই বাদশাহ হুজুরের মেহমান হন এবং অনেক তোহফা ও ইনাম পান। তাই আমাদের মতো তথাকথিত গণতান্ত্রিক দেশেও বাদশাহ হুজুরের সমালোচনা কঠোরভাবে মানা। আজ থেকে ৭০/৮০ বছর আগে বৃটিশরা তুর্কি খলিফার বিরুদ্ধে তাদের তাবেদার এই মরু বাদশাহীর প্রতিষ্ঠা করে। সেই থেকে এই বাদশাহী বৃটেন ও আমেরিকার তাবেদারী করে যাচ্ছে। এই বাদশাহীর লক্ষ্য ইসলাম বা মুসলমান নয়। স্রেফ নিজেদের বাদশাহী রক্ষা করা। এই বাদশাহী প্রতিষ্ঠার জন্যে মুহম্মদ বিন আবদুল ওহাব নামক( বৃটিশ গোয়েন্দা বলে অভিযোগ রয়েছে) এক ব্যক্তিকে ব্যবহার করেছে বৃটিশরা। মুহম্মদ বিন আবদুল ওহাব ছিলেন বাদশাহ সউদের শ্বশুর। তুর্কি খলিফার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার জন্যে উসকানী দিয়েছে। মুহম্মদ বিন আবদুল ওহাব সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলো ‘কনফেশন অব এ্যা বৃটিশ স্পাই’ পড়তে হবে। মুহম্মদই ওহাবী মতবাদের প্রতিষ্ঠাতা। শুনেছি, বাংলাদেশেও বহু জ্ঞানী গুণী ওহাবী মতবাদে বিশ্বাস করেন।
মুক্তচিন্তার বুদ্ধিজীবী বলে পরিচিত বাংলাদেশের অনেক জ্ঞানী আছেন যাঁরা ধর্ম নিয়ে নিয়মিত নানা বক্তব্য পেশ করে থাকেন, এসব সম্মানিতজনকে অনেক সময় সুশীল সমাজ বলে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। মনে হয় ইংরেজী সিভিল সোসাইটি শব্দ দুটোকে বাংলায় অনুবাদ করে সুশীল সমাজ করা হয়েছে। যেমন মিলিটারী রুল ও সিভিল রুলের বাংলা করা হয়েছে সামরিক শাসন আর বেসামরিক শাসন। সেক্যুলার শব্দের অনুবাদ করা হয়েছে ধর্ম নিরপেক্ষ। এই অনুবাদের দ্বারা বুঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে যিনি ধর্মের ব্যাপারে নিরপেক্ষ। মানে একজন মানুষ যিনি কোন ধর্মের পক্ষে নন। ইংরেজী অভিধানে সেক্যুলারের ব্যাখ্যা করা হয়েছে যিনি ইহলৌকিক,পরলোকে বিশ্বাস করেন না। যিনি ধর্মীয় শিক্ষার বিরোধিতা করেন। শব্দটির উত্‍পত্তি হয়েছে ইংল্যান্ডে রাজা ও চার্চের ক্ষমতা ও অধিকার বিরোধের সময়। একই ভাবে ওই সময়েই ফান্ডামেন্টালিজম ও ফান্ডামেন্টালিষ্ট শব্দেরও জন্ম হয়েছে। সেই থেকে খৃষ্টধর্মে দুটি প্রধান শাখার সৃষ্টি হয়েছে। একটি চার্চ অব ইংল্যান্ড ও অপরটি ভেটিকান সিটির ক্যাথলিক গীর্জা। যা ইটালীর রোম শহরে অবস্থিত। ভেটিকান সিটি একটি রাস্ট্র। এর প্রধান হলেন পোপ। ক্যাথলিক জগতের ধর্মীয় প্রধান। আর চার্চ অব ইংল্যান্ডের প্রধান হচ্ছেন বৃটেনের রাজা বা তাঁর প্রতিনিধি এবং তাঁদের ধর্মীয় শাখা হচ্ছে প্রটেস্ট্যান্ট। ক্যথলিকদের ফান্ডামেন্টালিষ্ট বা মৌলবাদী বলা হয়।
প্রাচীন কালে জগতের রাজা বাদশাহ বা সম্রাট সম্রাজ্ঞীরা দেশ পরিচালনা করতেন মিলিটারী ল’ বা সামরিক আইনে। তখনও সিভিল বা জনআইন তৈরি হয়নি। সেসব যুগের বহু আইন বা প্রথা এখনও রয়ে গেছে। যেমন সর্বোচ্চ সামরিক ক্ষমতার অধিকারী সাংবিধানিক ভাবে এখনও রাজা বা রাস্ট্র প্রধানরা। শুধু রাজা মহারাজা, বাদশাহ সম্রাটের জায়গায় রাস্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী শব্দটি পড়তে হয়। কারণ তিনি আধুনিক রাস্ট্র নামক সাম্রাজ্যের পতি বা স্বামী। মোগল সম্রাটদের বলা হতো জিল্লে ইলাহী, মানে আল্লাহর ছায়া। প্রাচীন গ্রীকের শাসকরাও তাই বলতেন। ফেরাউনরা নিজেরাই নিজেদের খোদা বলে দাবী করে জনগণের সেজদা আদায় করতেন। হজরত মুসা কালামুল্লাহর সাথে ফেরাউনের প্রধান বিরোধ ছিল খোদায়ী দাবী নিয়ে। মুসা(আ) বলতেন জগতের একমাত্র মালিক ও খোদা একমাত্র আল্লাহ। তিনিই সেজদার মালিক । মানুষ একমাত্র আল্লাহর দাস।
আমাদের আধুনিক বলে কথিত সমাজেও এই বিরোধ অব্যাহত আছে। মুক্তচিন্তার তথাকথিত জ্ঞানীরা প্রচার করেন রাস্ট্রের মালিক জনগণ এবং এর সার্বভোমত্বও জনগণের হাতে। আগে বলা হতো সার্ভৌমত্বের মালিক ফেরাউন,নমরুদ, সাদ্দাদ, বাদশাহ ও সম্রাট। ফেরাউন, নমরুদ ও সাদ্দাদের খোদায়ী দাবীর পর বলা হয়েছে বাদশাহরা সার্বভৌম এবং তাঁরা আল্লাহর পক্ষে থেকে দেশ পরিচালনা করেন। এখন বলা হচ্ছে জনগণই সব ক্ষমতার মালিক। আল্লাহপাক নিজেই ঘোষণা দিয়েছেন ‘মানুষ আমার দাস ও খলিফা। আমারই দেয়া বিধান মোতাবেক তারা দেশ ও সমাজ পরিচালনা করবে। পবিত্র আলকোরআনে রাস্ট্র পরিচালনার সকল নিয়ম নীতি সুষ্পস্ট ভাবে ঘোষণা করা হয়েছে। জগতের প্রথম জনগণের রাস্ট্র হচ্ছে মদীনার রাস্ট্র। যে রাস্ট্র প্রধান ছিলেন স্বয়ং আল্লার রাসুল(সা)। তিনি আলকোরআনের বিধান মোতাবেক রাস্ট্র পরিচালনা করতেন। পরবর্তী কালে খলিফারা আল্লাহর আইন ও রাসুলের(সা) হাদিস মোতাবেক দেশ পরিচালনা করেছেন। আমাদের মনে রাখতে হবে রাসুলের(সা) হাদিসও আমাদের জন্যে আইন। রাসুল(সা) আলকোরআনের সুরা আন নিসার ৫৯ নম্বর আয়াতে আল্লাহপাক নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন,‘ হে ইমানদারগণ! আল্লাহকে মেনে চল, রাসুলকে(সা) মেনে চল এবং তোমাদের মধ্যে যাঁরা ক্ষমতার অধিকারী তাঁদের মেনে চল। কোন বিষয়ে মতভেদ হলে আল্লাহ ও রাসুলের(সা) সিদ্ধান্ত মেনে নাও যদি তোমরা আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাস করো;সেটাই ভাল, পরিণামে উত্তম।’ এখানে ক্ষমতার অধিকারী বলতে ইসলামী রাস্ট্রের ক্ষমতা প্রাপ্ত ব্যক্তিগণের কথা বুঝানো হয়েছে।আরবীতে বলা হয়েছে ‘উলিল আমরি মিনকুম’। যেখানে ইসলামী রাস্ট্র নেই সেখানে উলিল আমরি’বলতে ইসলামিক স্কলার ও ফকী্দের কথা বলা হয়েছে, সরকারী আলেম উলামা নয়।
বাংলাদেশ একটি মুসলিম মেজরিটি বা সংখ্যা গরিষ্টের দেশ। এদেশের ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান। কিন্তু বেশীর ভাগ মানুষই নিরক্ষর বা শিক্ষা বঞ্চিত। যদিও ইসলাম বিদ্যার্জনকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ইসলাম মনে করে শিক্ষা লাভ করা প্রত্যেক মানুষের মৌলিক অধিকার। ইসলাম দারিদ্রকে অভিশাপ বলেছে। বলা হয়েছে আগে খাও পরে সালাত আদায় করো। প্রতিবেশীকে অভুক্ত বা ক্ষুধার্ত রেখে খেওনা। বলা হয়েছে দেশপ্রেম ঈমানের অংগ। রাত জেগে দেশের সীমান্ত পাহারা দেওয়া সালাত বা নামাজের চেয়ে উত্তম। আবেদের এবাদতের চেয়ে জ্ঞানীর ঘুম উত্তম। বাংলাদেশের তথাকথিত শিক্ষিত মুসলমানের ৮০ জনই কোরআন জানেন না। কারণ আমাদের এ রাস্ট্রে কোরআন না জানা কোন অপরাধ নয়। বরং অনেক ক্ষেত্রে কোরআন না জানা মানুষের কদর বেশী। তাঁরা সম্মানিত। বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজের সদস্য হিসাবে সমাজের শিখরে বসে থাকেন। জাতিকে উদেশ খয়রাত করেন। এরাই নাকি মুক্ত মনের মানুষ। এদের মন খোলা,যে কোন বিষয়ে কথা বলতে পারেন ও মতামত দিতে পারেন। এমন বিষয়েও কথা বলে যে বিষয়ে তাঁদের কোন জ্ঞানই নেই। ইদানিং দেখবেন এসব মুক্তমনা বুদ্ধিজীবীরা ইসলাম সম্পর্কেও কথা বলছেন বা ফতোয়া দিচ্ছেন। বেশ কিছুদিন আগে রাব্বানী সাহেব নামের এক বিচারপতি ফতোয়ার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছিলেন। অথচ ফতোয়ার বিষয়ে তাঁর কোন জ্ঞান বা ধারণা ছিলনা। পরে দেশবাসীর প্রতিবাদের মুখে ওই রায় বাতিল হয়েছিল। আরেক বিচারপতি তালাক প্রাপ্তা নারীর আজীবন খোরপোষের রায় দিয়েছিলেন। আজীবন খোরপোষের পক্ষে মামলা লড়েছিলেন বড় বড় মুক্তমনা,ধর্মমুক্ত আইনজীবীরা। আওয়ামী লীগের মাথায় বিসমিল্লাহ, আল্লাহু আকবর না বলার ভুত ঢুকিয়েছিলেন বিচারপতি হাবিবুর রহমান সাহেব। কেয়ারটেকার সরকারের প্রধান হয়ে তিনি তাঁর নিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠা করার জন্যে বিসমিল্লাহ ও আল্লাহয় আকবরকে অনুবাদ করে বলার রেওয়াজ চালু করেন। আওয়ামী লীগ এখন বিসমিল্লাহ বা আল্লাহু আকবরকে অনুবাদ করে বলে। তাছাড়া জিয়া সাহেব নাকি বিসমিল্লাহ ও আল্লাহূ আকবর বলতেন। এ ধরনের গোমরাহী আওয়ামী লীগকে পেয়ে বসেছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রীও একজন সেক্যুলার মানুষ। তাই তিনি সংবিধান থেকে আল্লাহ শব্দটি তুলে দিয়েছেন যাতে তিনি সেক্যুলার প্রমানিত হন ও হিন্দুদের আস্থা অব্যাহত রাখতে পারেন।
আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে ধর্মকে মিশাতে চায়না বা ধর্মবিহীন রাজনীতি করতে চায় এটা সুষ্পস্ট করে খোলাসা ভাবে দেশের মানুষকে জানালে অসুবিধা কোথায়? ধর্মহীন রাজনীতি বা রাজনৈতিক দল থাকতে পারে। হয়ত পৃথিবীর অন্যদেশেও আছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ এ ব্যাপারে দ্বিমুখী বা মোনাফেকীর পথ বেছে নিয়েছে। পথটা হচ্ছে দুধও খাবো শরাবও খাব, নামাজও পড়বো আবার ধর্মহীনদের সাথে গোপন বা প্রকাশ্য সম্পর্ক রাখবো। সংবিধানে আল্লাহর নাম থাকবেনা,কিন্তু রাস্ট্র ধর্ম ইসলাম থাকবে। আওয়ামী লীগে বহু দার্মিক মানুষ আছেন। সত্যিকার ভাবেই তাঁরা ধর্মে বিশ্বাস করেন এবং ধর্মচর্চা করেন। তাঁর দলের কেন্দ্রীয় নীতি ও নেতৃত্বের সাথে জড়িত নন। দলের সভাপতিও নিয়মিত ধর্ম পালন করেন এ বিশ্বাস আমার আছে। তিনি মনে করেন,ধর্মকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখলে যদি কিছু ভোট পাওয়া যায় অসুবিধা কোথায়। এটাকে নাকি রাজনীতি বলা হয়।
আল্লাহপাক পবিত্র কালাম আলকোরআনের সুরা বাকারার ৮ থেকে ১৮ আয়াতে বলেছেন,‘ কোন কোন মানুষ বলে ,আমরা আল্লাহ ও আখেরাতে ইমান এনেছি;আসলে তারা ইমানদার নয়। তারা আল্লাহ ও মুমিনদের ধোকা দিতে চায়।কিন্তু তারা বুঝেনা। তাদের অন্তরে রোগ আছে ; আল্লাহ তাদের রোগ আরও বৃদ্ধি করেন,কার তারা মিথ্যাচারী। যখন তাদের বলা হয় ,তোমরা দুনিয়ায় অশান্তি সৃষ্টি করোনা,তারা বলে ,আমরাই শান্তি স্থাপন করেছি। শুনে রাখ,তারাই সন্ত্রাসী;কিন্তু তারা বুঝে না। তারা মুমিনদের কাছে এলে বলে আমরা ইমানদার আর শয়তানদের কাছে গেলে বলে আমরাতো তোমাদের সাথেই ,তাদেরকে ঠাট্টা করেছি মাত্র। তারা বধির , বোবা ও অন্ধ; তারা ফিরে আসবেনা। আলকোরআনের ১৬টি সুরায় এ ধরনের মানুষকে মোনাফেক বলা হয়েছে।
আমাদের চলমান রাজনীতিতে দ্বিচারিতা বা মোনাফেকি নাকি প্রধান হাতিয়ার। এসব রাজনীতিক নিজেরাই বলেন ,এটা কৌশল,মোনাফেকি নয়।
শুধু আওয়ামী লীগ কেন,আমাদের রাজনীতিতে সবদলই এ ব্যাপারে দ্বিচারিতার পথ অবলম্বন করে থাকেন। এইতো দেখুন না, মিশরের নির্বাচিত মুরসি সরকারের পতনের জন্যে সউদী বাদশাহ ইজরায়েলের সাথে হাত মিলিয়েছেন। তিনিতো মুসলমান ও ইসলামের দুই মহা পবিত্র স্হানের খাদেম। সারা বিশ্বের মুসলমানেরা তাঁকে সম্মান করে। ধর্মহীনতা বা ধর্ম নিয়ে দ্বিচারিতা এখন বাংলাদেশের শিক্ষিত সমাজকে গ্রাস করে ফেলেছে। আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগীরা প্রকাশ্যে ধর্মহীন রাজনীতির কথা বলছে। তারা বলছে ধর্ম ধর্ম যার ,রাস্ট্র সবার। কথাটা শুনতে খুব ভাল লাগে। রাস্ট্র নীতি যদি ধর্মমুক্ত হয় তাহলে এদেশে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হবে নাগরিদের ৯০ ভাগ মুসলমান। সেক্যুলারিজম, ধর্মহীনতা ও তথাকথিত মুক্তচিন্তা হচ্ছে এক শ্রেণীর আরবী নামধারী মোনাফেক মুসলমানের কাজ। এদের সমাজে অনেক কদর ও দাম। এরাই দেশ চালায় । এরা কথায় কথায় ইসলামিক স্কলাদের গালাগাল দেয়। বিশেষ করে ক্ষমতাবানরা তাদের নিজেদের কাজে ব্যবহার করতে না পারলে তখন অপমান করে। ভারতের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম একশ’ বছর প্রাণ দিয়েছে এদেশের আলেম সমাজ। ন্যায়নীতির উপর কঠোর অবস্থানের জন্যে বিগত এক হাজার বছরে বহু ইসলামিক স্কলার প্রাণ দিয়েছেন। যেমন, ইমামে আজম হজরত আবু হানিফা। খলিফার সাথে দ্বিমত হওয়ায় তাঁর মৃত্যুদন্ড হয়। সুফী কবি মনসুর হাল্লাজকেও খলিফা নিষ্ঠুর ভাবে হত্যা করেছেন। কারণ ,সে জামানার আলেম সমাজ কবি মনসুর হাল্লাজকে বুঝতে পারেননি। পরবর্তী পর্যায়ে আলেম সমাজ তাঁদের ভুল বুঝতে পেরেছিলেন। আলেম সমাজ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকেও কাফের ফতোয়া দিয়েছিলেন। আমাদের মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার দামী মানুষরা বিভ্রান্ত নির্বোধ অথবা জ্ঞানপাপী। আল্লাহ তাদের হেদায়েত করুন।
লেখক: কবি ও ঐতিহ্য গবেষক
http://www.humannewspaper.wordpress.com

Advertisements

Like this:

Like Loading...

Related

Posted in Uncategorized |

    Advertisements
  • Archives

    • February 2016 (1)
    • January 2016 (2)
    • December 2015 (2)
    • November 2015 (1)
    • October 2015 (1)
    • September 2015 (1)
    • August 2015 (4)
    • July 2015 (1)
    • June 2015 (4)
    • May 2015 (3)
    • April 2015 (4)
    • March 2015 (5)
    • February 2015 (2)
    • January 2015 (1)
    • December 2014 (10)
    • November 2014 (4)
    • October 2014 (6)
    • September 2014 (6)
    • August 2014 (4)
    • July 2014 (3)
    • June 2014 (5)
    • May 2014 (5)
    • April 2014 (11)
    • March 2014 (21)
    • February 2014 (27)
    • January 2014 (11)
    • December 2013 (1)
    • November 2013 (5)
    • October 2013 (12)
    • September 2013 (10)
    • August 2013 (3)
    • July 2013 (8)
    • June 2013 (5)
    • May 2013 (4)
    • April 2013 (6)
    • March 2013 (7)
    • February 2013 (5)
    • January 2013 (5)
    • December 2012 (4)
    • November 2012 (3)
    • October 2012 (2)
    • September 2012 (4)
    • August 2012 (3)
    • July 2012 (4)
    • June 2012 (5)
    • May 2012 (7)
    • April 2012 (5)
    • March 2012 (5)
    • February 2012 (4)
    • January 2012 (7)
    • December 2011 (8)
    • November 2011 (1)
    • October 2011 (7)
    • September 2011 (4)
    • August 2011 (2)
    • July 2011 (4)
    • June 2011 (8)
    • May 2011 (9)
    • April 2011 (8)
    • March 2011 (5)
    • February 2011 (4)
    • January 2011 (4)
    • December 2010 (7)
    • November 2010 (2)
    • October 2010 (8)
    • September 2010 (5)
    • June 2010 (1)
    • May 2010 (1)
    • February 2010 (2)
    • June 2009 (5)
    • May 2009 (32)
  • Categories

    • Articles (119)
    • উপন্যাস (1)
    • English Articles (1)
    • Political Column (45)
      • Free Thoughts (19)
    • Uncategorized (231)
  • Pages

    • Who Am I ?

Blog at WordPress.com.

WPThemes.


%d bloggers like this: