• Home
  • Who Am I ?

Writing From The Street ( রাস্তা থেকে বলছি )

Just another WordPress.com weblog

Feeds:
Posts
Comments
« ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর আহবান
বুদ্ধি হওয়ার পর থেকেই লিখছি »

অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা ও অর্থনীতি প্রতিদিন

August 26, 2012 by writerershad


 

অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা  ও অর্থনীতি প্রতিদিন   /     এরশাদ মজুমদার

বাহাত্তুর সালে বাংলাদেশের বাজেট ছিল হয়ত পাঁচশ’ কোটি টাকা। এখন এক লাখ ৯১ হাজার কোটি টাকা। ৭২ সালের শুরুতে  বাংলাদেশী টাকায় এক ডলারের দাম ছিল পাঁচ টাকার মতো । তাজউদ্দিন সাহেব চট করে মূল্যামান নির্ধারন করলেন এগার টাকা। সম্ভবত ভারতীয় মুদ্রার সাথে মিল রাখার জন্যে। পাকিস্তান আমলে কোলকাতায় একশ’ টাকার নোট দিলে খোলা বাজারে একশ’ টাকার বেশী পাওয়া যেতো। বাংলাদেশ হওয়ার পরেও প্রথম দুয়েক মাস বোধ হয় ওই রকমই ছিল। এখন পরিস্থিতি একেবারেই বদলে গেছে। বাংলাদেশী একশ’ টাকা দিলে খোলা বাজারে ভারতীয় পঞ্চাশ টাকা পাওয়া যেতে পারে। ব্যান্কের মাধ্যমে হয়ত আরও একটু কম পাওয়া যাবে। বাংলাদেশ এখন ভারতের এক ধরণের বাজার। আইনি ও বেআইনি ভাবে ভারত বাংলাদেশে বছরে ১০ হাজার কোটি টাকার মাল বিক্রি করে। সমস্যা দেখা দেয় বাংলাদেশ কিছু বেচতে গেলেই। দিল্লী বলে আমরাতো বাংলাদেশের জন্যে আমাদের দুয়ার খেলা রেখেছি। সীমান্তে ভারতীয় চৌকিদার বলে, দুয়ার খোলা আছে সত্যি, কিন্তু আপনি কে? আপনি কি বাংলাদেশী? না অন্য কোন দেশী। মালগুলো কোন দেশের? ভিন দেশী মাল  বাংলাদেশী বলে চালিয়ে দিচ্ছেননাতো? যেমন ধরুন, বংগবন্ধু সরল বিশ্বাসে সংগে সংগে বেরুবাড়ি দিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু ভারত তার ওয়াদা রযা করতে পারেনি। গণতান্ত্রিক দেশ, সংসদের অনুমতি লাগে, আদালতের অনুমতি লাগে। এসব পেতেতো সময় লাগে। তাই আজও বাংলাদেশ তার হক আদায় করতে পারেনি। এিতো ক’দিন আগে মনমোহনজী কতগুলো ওয়াদা করে গেছেন, যা তিনি বাস্তবায়ন করতে পারেননি। যাক, এসবতো গেলো ভারত বাংলাদেশের সম্পর্ক ও ব্যবসা বাণিজ্যের কথা।

আমি ১৯৬১ সালে নবীশ অর্থনৈতিক রিপোর্টার হিসাবে পাকিস্তান অবজারভারে সাংবাদিকতা শুরু করি। তখন সেখানে অনেক জ্ঞানী গুণী কাজ করতেন। তাঁদের তূলনায় আমি ছিলাম অজ্ঞ। তাই আমি সব সময় ভয়ে ভয়ে থাকতাম। তবে আমি সবার কাছ থেকে অফুরন্ত সহযোগিতা পেয়েছি। আমার বার্তা সম্পাদক ছিলেন এবিএম মুসা। তিনি ছিলেন একজন পাকা শিক্ষক। যাঁরা তাঁর সাথে কাজ করেছেন তাঁরাই জানেন তিনি কত বড় একজন শিক্ষক। তাঁর সাথে পরে আমি জনপদ ও নিউনেশনে কাজ করেছি। তখন অবজারভার ও মর্ণিং নিউজেই অর্থনৈতিক রিপোর্টিংয়ের গুরুত্ব ছিল। বাংলা কাগজে এর তেমন গুরুত্ব ছিলনা। সে সময়ে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্য অর্থনৈতিক বৈষম্যের বিষয়টি ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ব্যাপারে অবজারভারের ভুমিকা ছিল অবিস্মরণীয়। মাওলানা ভাসানী ও বংগবন্ধুর রাজনীতির মূল উপাদান ছিল অবজারভারে প্রকাশিত সংবাদ। এ ব্যাপারে চৌধুরী সমর্থন ছিল একশ’ভাগ। উভয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক বৈষম্য সম্পর্কে তিনি খুবই ওয়াকিবহাল ছিলেন। ১৯৬৯ সালে পূর্বদেশ দৈনিক হলে অবজারভার গ্রুপ আরও শক্তিশালী হলো বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের জন্যে। তখন আমি পূর্বদেশে ছিলাম। পূর্বদেশের মূল চরিত্র গড়ে উঠলো অর্থনৈতিক বৈষম্য নিয়ে প্রতিদিন রিপোর্ট প্রকাশ করা।

অবজারভারে আমি যখন নবীশ হিসাবে কাজ করছি তকনকার একটি হাসির গল্প না বলে পারছিনা। অবজারভারের বাণিজ্য পাতায় তকন নিয়মিত প্রায় প্রতিদিনই বাজার দর ছাপা হতো। একবার ডিমের হালি(মানে চারটি) চল্লিশ পয়সার জায়গায় চল্লিশ টাকা ছাপা হয়ে গিয়েছিল। আমি নিজেই এ ভুল করেছিলাম। দশমিক ফোটা ৪০ এর আগে না দিয়ে পরে দিয়েছিলাম। তখন মাত্র দশমিক বা ডেসিমেলের ব্যবহার শুরু হয়েছে। আগে দিলে হয় ৪০ পয়সা, আর পরে দিলে হয় ৪০ টাকা। সকাল বেলাতেই চৌধুরী সাহেব কাগজ পড়ে সম্ভবত কাগজের সম্পাদক সালাম সাহেবকে ফোন করেছিলেন। অবজারভারে তখন এ ধরনের ভুল সহ্য করা হতোনা। আর যায় কোথায়? সম্পাদক সাহেব অফিসে এসেই জানতে চাইলেন এ ভুল কে করেছে। অফিসে হেচৈ পড়ে গেছে। আমি অফিসে জানতে পারলাম সম্পাদক সাহেব আমাকে খুঁজছেন। আমি তাঁর কাছে না যেয়ে আমার বন্ধু বুলুর জন্যে অপেক্ষা করতে লাগলাম। সেও তখন নবীশ ফটোগ্রাফার। বুলু অফিসে আসার আগেই আমার এক টাকা জরিমানার নোটিশ বোর্ডে টাঙানো হয়ে গেছে। বুলু বললো, আরে কিছু হবেনা। এখন ঠান্ডা মাথায় চা খা। লাতু ভাইসাবের কাছ থেকে খবর নিয়ে ভিতরে যাবো। যদি মুড ভালো থাকে এখনি যাবো। না হয় পরে যাবো। লাতু ভাই সাব বললেন, মুড ভালো আছে। আমরা দুজনই এক সাথে সালাম সাহেবের কামরায় ঢুকলাম। বুলুকে তিনি খুব স্নেহ করতেন। পরিবারের একমাত্র বড় ছেলে। বুলুর সাথে ঢুকে আমি সালাম দিলাম। সালাম সাহেব সাধারনত বাংলা বললে নোয়াখালীর ভাষায় কথা বলতেন। তিনি আমাকে জিগ্যেস করলেন, তুঁই কন? মানে তুমি কে? বুলুই উত্তর দিলো, এসু। অবজারভারের বিজনেস পাতায় কাজ করে। একথা শোনার সাথে সাথে ক্ষ্যাপে গেলেন। আমার চাকুরী নট। তিনি ক্ষ্যাপে গেলে ব্যাক বেঞ্চার বলে গালি দিতেন। বুলু বললো , জেইয়া হেতেতো হেই কথা কইবেললে আইছে। একথা বলেই বুলু আমাকে বললো, তুই জেইয়ারে লেখি দেখা কেমনে ৪০ পয়সা লেখতে হয়। সুযোগ পেয়েই আমি নিউজপ্রিন্টের একটা শীট হাতে নিয়ে দশবার ৪০ পয়সা লিখলাম। তিনি দেখে খুব খুশী। একটু হাসলেন। বললেন, তুঁইতো হার দেখছি। ঠিক আছে, ভবিষ্যতে এইচ্ছা ভুল আর করিওনা। অন য। বুলু বললো, আমনেতো হেতেরে জরিমানা করি দিছেন। কিছু হইতো ন, আঁই জীবন বাবুরে কই দিমু। আমনে না কইলে জীবন বাবু হেতের বেতন তুন জরিমানা কাঢি নিবো। আচ্ছা ঠিক আছে। সালাম সাহেবকে আমি বলতাম দার্শনিক সম্পাদক। এ ধরনের সম্পাদক এখন আর দেখা যায়না। সম্পাদকরা একন মালিকের তাবেদারী করে নিজের স্বার্থের জন্যে। সালাম সাহেব, মানিক মিয়া সাহেব বা জহুর সাহেব ছিলেন তখন পূর্ব পাকিস্তানের সবচাইতে সম্মানিত , শক্তিশালী ও সাহসী  সম্পাদক। এরা সবাই জ্ঞানীও ছিলেন। আইউব বিরোধি গণ আন্দোলনে এই তিনজনের অবদান জাতি কখনও ভুলতে পারবেনা।

আমি যখন অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা শুরু করি তখন সবাই আমাকে ডাল চাল , তেল নুনের সাংবাদিক বলে ঠাট্টা করতো। একন পরিস্থিতি একেবারেই বদলে গেছে। এখন শুধু অর্থনীতির জন্যেই ইমরেজী ও বাংলায় দৈনিক কাগজ রয়েছে। শুধু অর্থনৈতিক সাংবাদিকের সংখ্যাও দুদি তিনশ’র কম নয়। অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের নিজস্ব সংগঠন বা ফোরাম রয়েছে।  এই ফোরাম নিয়মিত সেমিনার সিম্পোজিয়াম  অর্গেনাইজ করে থাকে। এতে দেশের নামী দামী লোকেরা ভাষন দেন। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই সরকারী লোকেরা এসে ভাষণ দিয়ে  সরকারের সাফল্যের সাফাই গান। একবার প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ বিষয়ক উপদেস্টা হিসাবে পরিচিত এক ভদ্রলোক কানেক্টিভিটি নিয়ে কথা বললেন। তিনি বললেন, ভারতকে  ট্রানজিট, করিডোর, সীমান্ত সুযোগ দিলে বাংলাদেশের উন্নতি হবে এবং জিডিপি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকবে। এসব উপদেস্টা দেশের বাকি মানুষকে বোকা ও বুদ্ধু ভাবেন। তাই শরমের বালাই না করেই ভারতের পক্ষে উলংগ হয়েই ওকালতি করেন। পরে অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম ওই উপদেস্টা সাহেবের পরিচয়। কেউ বলতে পারলেন না। পরে আমি নিজেই খোঁজ খবর নিয়ে জানলাম ভদ্রলোক বাংলাদেশে জন্ম গ্রহণ করেছেন। কিন্তু বিদেশী নাগরিক। বিদেশীদের হয়ে যেখানে যখন প্রয়োজন সেখানে কাজ করেন। তিনি নাকি একজন ভারত বিশেষজ্ঞ। তাই প্রধানমন্ত্রী অদৃশ্য  কারো অনুরোধে তাঁকে ডেকে এনে বিদেশ বিষয়ক উপদেষ্টা নিয়োগ করেছেন। তাঁর কাজ শেষ হয়ে গেলে তিনি আবার বিদেশ চলে যাবেন। তখন হয়ত আরেক দেশের হয়ে আফগানিস্তান, সোমালিয়া বা সুদানে কাজ করবেন। আরও কয়েকজন সাবেক উপদেস্টা আছেন যারা জেনারেল মইনের সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন এবং সরকারকে মূল্যবান উপদেশ দিয়েছেন। ১/১১র সেই সরকার দেশের অর্থনীতির সবচেয়ে বেশী ক্ষতি করেছে। বিগত ৪০ বছরেও এমন ক্ষতি হয়নি। সেই সব উপদেষ্টারা এখন আবার জনগণকে উপদেশ দিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাদের বাদ দিয়ে কোন সেমিনার হয়না। আমাদের মিডিয়ারও তাদের বাদ দিয়ে চলেনা। ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার ডান্ডা সাংবাদিকরাতো সুযোগ পেলেই ওই উপদেষ্টাদের কাছে ছুটে গিয়ে ডান্ডাটা তাদের মুখের উপর ধরে। আর লোক গুলো বেহায়া বেশরমের মতো কথা বলতে থাকে। তারা ছেড়া দেশে যেন আর তেমন জ্ঞানী গুণী নেই। জেনারেল মইন আর ফখরুদ্দিন নির্বাসনে জীবন যাপন করছেন। তাদের বিরুদ্ধে জাতির নাকি অনেক অভিযোগ। আর উপদেষ্টারা ধোয়া তুলসী পাতা। এমন আজব কারবার আর কোথাও দেখিনি। এ ব্যাপারে কেউ কখনও কথা বলতেও শুনিনি।

ইআরএফের (ইকনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম) সদস্য সংখ্যা এখন হয়ত দুশো। বেশীর ভাগই অর্থনীতি বা বাণিজ্যের ছাত্র নয়। দেখতে দেখতে বা লিখতে লিখতে শিখেছেন। এখন পাকা অর্থনৈতিক রিপোর্টার। একই রিপোর্টার জ্বালানী, আইন , রাজনীতি ও কুটনীতি বিষয়ে এক্সপার্ট। ইারএফে এ ধরণের সদস্য সংখ্যা বেশী। এতা অবশ্য রিপোর্টারের দোষ নয়। পত্রিকার মালিক বা সম্পাদক সাহেবই তাদের সেভাবে কাজ করতে আদেশ করেন। আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি।  আমার ধারনা বা চিন্তা ভুলও হতে পারে। আমার মনে হয় বেশীর ভাগ রিপোর্টারেরই অর্থনৈতিক সাংবাদিকতায় মৌলিক কোন শিক্ষা বা ট্রেনিং নেই। আমাদের সময়ে রাজনীতির খবরই ছিল সবচেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম পাতায় অর্থনীতির খবর স্থান পেতো। কিন্তু অবজারভার আর পুর্বদেশ ছিল ব্যতিক্রম। এি দুটো কাগজেই পুর্ব পাকিস্তানের অর্থনীতি ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রিপোর্টাদেরও সেভাবেই গড়ে তোলা হতো। তখন অর্থনৈতিক সংবাদের হেড কোয়ার্টার ছিল বন্দর নগরী চট্টগ্রাম। সেখানেই আমদানী রফতানীর অফিস, কাস্টমস অফিস, পোর্ট অথরিটি, বেশীর ভাগ আমদানী রফতানীকরাকের অফিস ছিল চট্টগ্রামে। বড় বড় বিদেশী কোম্পানীর অফিসও ছিল চট্টগ্রামে। বেশীর ভাগ ক্লিয়ারিং ফরওয়ার্ডিং আর ইন্ডেন্টিং অফিসও ছিল এই বন্দর নগরীতে। চা অকশানের অফিস তখনও এখানে ছিল, এখনও আছে। টি বোর্ডের অফিসও এখানে। পাটের সদর দপ্তর ছিল নারায়নগঞ্জে। এখন পাট চা চামড়ার তেমন গুরুত্ব নেই বলে খবরের গুরুত্বই নেই।

১৯৬৩ থেকে ৬৪ সালের শেষ অবধি আমি চট্টগ্রামে ছিলাম সংবাদের প্রতিনিধি হিসাবে। সে সময় সেখানে কাজ করতেন পাকিস্তান টাইমসের প্রতিনিধি হয়ে আতিকুল আলম,যিনি এখন অর্থনীতি প্রতিদিন এর প্রধান সম্পাদক। আরও যারা ছিলেন তাঁরা হলেন  অবজারভারের ফজলুর রহমান, ইত্তেফাকের মঈনুল আলম, মর্ণিং নিউজের আবদুর রহমান ও এপিপির নুরুল ইসলাম । এ সময়ে ফজলুর রহমান ছিলেন সারা পাকিস্তানের ডাক সাইটে অর্থনৈতিক সংবাদদাতা। সর্বত্রই তিনি ছিলেন সম্মানিত। তিনি ছিলেন চিরকুমার। তাঁর সততা ছিল সর্বজনবিদিত। আমি ছিলাম ফজলুর রহমানের সাগরেদ। চট্টগ্রামের সাথে আমার সে সম্পর্ক আজও আছে। চট্টগ্রামে না গেলে আমার অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা অসম্পূর্ণ থেকে যেতে। তখন সারা পাকিস্তানে দুদতি চেম্বারই বিখ্যাত ছিল। একটি করাচী চেম্বার, অপরটি চট্টগ্রাম চেম্বার। চট্টগ্রামের প্রথম চেম্বারটি ইউরোপিয়ান চেম্বার হিসাবে পরিচিত ছিল। বেশীর ভাগ বিদেশী ও স্থানীয় কিছু এলিট ব্যবসায়ী এর মেম্বারশীপ পেয়েছিল। পরে ইউরোপিয়ান চেম্বার  উঠে  যায় এবং বর্তমান চেম্বার প্রতিষ্ঠিত হয়। এ ব্যাপারে ফজলুর রহমানের অবদান ছিল সবচেয়ে বেশী। আমি আজও মনে করি প্রত্যেক অর্থনৈতিক সাংবাদিকের কিছুদিন চট্টগ্রামে কাজ করা উচিত। শিপিং একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং ব্যবসা। এর হাজার বছরের ঐতিহ্য রয়েছে। এখনও শিপিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের অর্থনৈতিক সাংবাদিকরা এ বিষয়ে তেমন কিছু জানেনা। তাদের শিখাবার জন্যে পত্রিকা গুলোর কোন উদ্যোগ নেই। আমাদের শেয়ার মার্কেট নিয়ে নানা কেলেংকারী। এ কেলেংকারী সারা পৃথিবীতেই চলছে। এতা বিশ্বব্যাপী খুবই জটিল এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ ব্যাপারেও আমাদের রিপোর্টারদের তেমন কোন জ্ঞান নেই। আমি আজ পর্যন্ত একটি ভাল ব্যালেন্স শীট রিভিউ দেখিনি। যদি কোন অর্থনৈতিক রিপোর্টারের কাছে জানতে চাই অমুক কোম্পানীর ডিরেক্টর কারা, বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই উত্তর পেয়েছি জানিনা। ওই কোম্পানীর প্রডাক্ট কি, উত্তর হলো জানিনা। এসব জানার নাকি দরকার হয়না। শুধু শেয়ারের দাম উঠানামা করছে কিনা জানলেই হলো।

প্রকাশিতব্য নতুন দৈনিক অর্থনীতি প্রতিদিন আমরা এখনও দেখিনি। শুধু চিনি আমার খুবই প্রিয় মানুষ ফজলুল বারীকে। তার মাধ্যমেই কাগজের নাম শুনেছি। ইতোমধ্যে আমাদের প্রিয় অনেক মানুষ এ কাগজে যোগ দিয়েছেন। অনেকেরই অর্থনৈতিক সাংবাদিকতার ব্যাকগ্রাউন্ড নেই। কাজ করতে করতে কিছুটা অভিজ্ঞতা হয়েছে। মালিকদেরও আমরা তেমন চিনিনা। শুনেছি তাঁরা সবাই ব্যবসায়ী এবং স্টক মার্কেটের নামজাদা প্লেয়ার। শুনেছি তাঁরা অনেক আগেই ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে এসেছেন। বাংলাদেশে এখন ব্যবসায়ীরা মিডিয়া নিয়ন্ত্রন করেন এবং এর মাধ্যমে সরকারের সাথে সমঝোতা তৈরি করেন। সুযোগ পেলে সরকারকে কামড়ান, সরকারও সুযোগ পেলে কামড়াতে ছাড়েন না। বড় বড় গ্রুপের যে কাগজ গুলো আছে তারা এক গ্রুপ অন্য গ্রুপের বিরুদ্ধে দিনরাত ঘেউ ঘেউ করে চলেছে। সাংবাদিকরা বলেন, আমরা পেশাজীবী। কাজ করি মুজুরী নিই। মালিকের পলিসি নিয়ে মাথা ঘামাইনা। মালিক চোর বাটপার হলে আমাদের কি আসে যায়। এ ব্যাপারটা সরকার দেখবে। পুলিশ দেখবে, দুদক দেখবে আর রাজস্ব বোর্ড দেখবে। মালিক কোত্থেকে টাকা এনে আমাদের দিচ্ছে তা আমরা দেখবো কেন? আমরা নিয়মিত ভাল মোটা অংকের টাকা পেলেই খুশী। বন্ধুদের মুখেই শুনি, এখন কিছু সাংবাদিক ব্রান্ড হয়ে গেছেন। তাঁদের দাম এখন মিলিয়নে। যে কোম্পানী বেশী বিজ্ঞাপন দিবে সে যদি হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেয় পত্রিকার কিছু আসে যায়না। পাকিস্তান আমলে আইউব বিরোধী আন্দোলন করেছে যে সব পত্রিকার মালিক কেউই ব্যবসায়ী ছিলেন না।

আমার এ কথা গুলো শুধু বাংলাদেশের ক্ষেত্রেই নয় সারা বিশ্বের মিডিয়ার অবস্থা এখন এ রকম। কর্পোরেট সাংবাদিকতার বিকাশ খুব দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এম্বেডেড সাংবাদিকতারও বিকাশ ঘটছে। সারা বিশ্বের কর্পোরেট হাউজ গুলো বিশ্ববাসীকে কি ভাবে শোষণ করছে এবং মিডিয়া গুলো তাদের কিভাবে সমর্থন করছে তা সুযোগ পেলে আগামীতে কখনও লিখার চেস্টা করবো।

লেখক: একজন প্রবীণ অর্থনৈতিক সাংবাদিক

ershadmz40@yahoo.com

Share this:

  • Twitter
  • Facebook

Like this:

Like Loading...

Related

Posted in Uncategorized |

  • Archives

    • May 2018 (1)
    • February 2016 (1)
    • January 2016 (2)
    • December 2015 (2)
    • November 2015 (1)
    • October 2015 (1)
    • September 2015 (1)
    • August 2015 (4)
    • July 2015 (1)
    • June 2015 (4)
    • May 2015 (3)
    • April 2015 (4)
    • March 2015 (5)
    • February 2015 (2)
    • January 2015 (1)
    • December 2014 (10)
    • November 2014 (4)
    • October 2014 (6)
    • September 2014 (6)
    • August 2014 (4)
    • July 2014 (3)
    • June 2014 (5)
    • May 2014 (5)
    • April 2014 (11)
    • March 2014 (21)
    • February 2014 (27)
    • January 2014 (11)
    • December 2013 (1)
    • November 2013 (5)
    • October 2013 (12)
    • September 2013 (10)
    • August 2013 (3)
    • July 2013 (8)
    • June 2013 (5)
    • May 2013 (4)
    • April 2013 (6)
    • March 2013 (7)
    • February 2013 (5)
    • January 2013 (5)
    • December 2012 (4)
    • November 2012 (3)
    • October 2012 (2)
    • September 2012 (4)
    • August 2012 (3)
    • July 2012 (4)
    • June 2012 (5)
    • May 2012 (7)
    • April 2012 (5)
    • March 2012 (5)
    • February 2012 (4)
    • January 2012 (7)
    • December 2011 (8)
    • November 2011 (1)
    • October 2011 (7)
    • September 2011 (4)
    • August 2011 (2)
    • July 2011 (4)
    • June 2011 (8)
    • May 2011 (9)
    • April 2011 (8)
    • March 2011 (5)
    • February 2011 (4)
    • January 2011 (4)
    • December 2010 (7)
    • November 2010 (2)
    • October 2010 (8)
    • September 2010 (5)
    • June 2010 (1)
    • May 2010 (1)
    • February 2010 (2)
    • June 2009 (5)
    • May 2009 (32)
  • Categories

    • Articles (119)
    • উপন্যাস (1)
    • English Articles (1)
    • Political Column (45)
      • Free Thoughts (19)
    • Uncategorized (232)
  • Pages

    • Who Am I ?

Blog at WordPress.com.

WPThemes.


Privacy & Cookies: This site uses cookies. By continuing to use this website, you agree to their use.
To find out more, including how to control cookies, see here: Cookie Policy
  • Follow Following
    • Writing From The Street ( রাস্তা থেকে বলছি )
    • Join 30 other followers
    • Already have a WordPress.com account? Log in now.
    • Writing From The Street ( রাস্তা থেকে বলছি )
    • Customize
    • Follow Following
    • Sign up
    • Log in
    • Copy shortlink
    • Report this content
    • View post in Reader
    • Manage subscriptions
    • Collapse this bar
%d bloggers like this: