• Home
  • Who Am I ?

Writing From The Street ( রাস্তা থেকে বলছি )

Just another WordPress.com weblog

Feeds:
Posts
Comments
« বংগবন্ধু ও তাঁর স্মৃতিকথা
জাতীয় শোক দিবস বংগবন্ধু ও তাঁর আত্মজীবনী »

পদ্মাসেতুর অর্থনীতি ও চলমান রাজনীতি

July 29, 2012 by writerershad


চলমান রাজনীতি বা ঘটনা নিয়ে অনেকদিন লিখিনি আমি। চলমান ঘটনা আমাদের মতো দেশের রাজনীতি, সমাজ, সংস্কৃতি ও শিক্ষ ব্যবস্থায় ঘটতেই থাকবে। কতগুলো মৌলিক বিষয়ে আমি অনেকদিন থেকেই লিখে যাচ্ছি। আমি মনে করি সে বিষয় গুলোর কুল কিনারা বা সুরাহা হয়ে গেলে রাস্ট্রটা মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত হতে পারতো। আমার মনে বহুদিন থেকে একটা প্রশ্ন ঘুর পাক খাচ্ছে। বিষয়টা হলো রাস্ট্র বড় না মানুষ বড়? রাস্ট্র স্বাধীন না মানুষ স্বাধীন।কোন কোন রাজনীতিক প্রায়ই শ্লোগান দেন, ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়। আমি এ শ্লোগানে বিশ্বাস করিনা। এটা একটা ভাওতাবাজী। শুনতে খুবই ভাল লাগে। আসলে এটা একটা ভুয়া শ্লোগান। আমি মনে করি মানুষের চেয়ে জগতে কোন কিছুই বড় নয়। মানুষের জন্যেই জগত সৃস্টি হয়েছে। মানুষই হচ্ছে সৃস্টির সেরা সৃস্টি। জগতের সকল সৃস্টিই নিবেদিত রয়েছে মানুষের সেবার জন্যে। আইন আদালত, সংসদ, সংবিধান ও ধর্ম কোন কিছুই মানুষের চেয়ে বড় নয়। আমাদের দেশে মহান শব্দটি অকাতরে ব্যবহার করা হয়। যেমন মহান সংসদ, মহান সেনা বাহিনী। মহামান্য শব্দটিও কম ব্যবহৃত হয়না। যেমন মহামান্য রাস্ট্রপতি, মহামান্য আদালত। মানুষ শব্দটির আগে কখনই মহামান্য, মহান বা মাননীয় শব্দ ব্যবহার করা হয়না। আমাদের ভাষাতেও বহু শব্দ আছে মানুষের জন্যে অবমাননাকর। আমাদের দেশের কৃষক, শ্রমিক ও সাধারন মানুষের জন্যে তুমি বা তুই শব্দটি বহুল ব্যবহৃত। যেমন বলা হয় চাষাভুষা, কুলি কামিন, মুচি মেথর সহ এমন আরও বহু শব্দ আছে। রাজধানীর রিকশাওয়ালাকে আমরা কখনই আপনি বলিনা। কে যেন বলেছিলেন, রাজনীতি হচ্ছে গুন্ডা বদমায়েশদের শেষ আশ্রয় স্থল। রাজনীতিতে নাকি সব কিছুই জায়েজ। রাজনীতি সব কিছু করতে পারে, শুধু পারেনা নরকে নারী করতে আর নারীকে নর করতে। বাংলাদেশের চলমান রাজনীতি দেখে মনে হচ্ছে কথা গুলো সত্য। পাঁচশ’ ভোট পায়না এমন লোকও বর্তমান ক্যাবিনেটের সদস্য আছেন। দলে পাঁচশ’ লোক নাই এমন লোকও রাজনীতি করে বেশ সুখে আছেন। মিলিটারী সরকার এলেই এসব লোকের দাম বাড়ে। যে ভাবেই হোক না কেন, একবার মন্ত্রী বা উপদেস্টা হতে পারলেই ভিজিটিং কার্ডে সাবেক মন্ত্রী বা উপদেস্টা লিখতে পারেন। বাড়ির সামনে নেমপ্লেটেও লিখতে পারেন সাবেক মন্ত্রী। মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দিন এখন বেশ নিন্দিত। দেশে আসতে পরেন না। কিন্তু তাঁদের উপদেস্টারা বেশ উপদেশ দিয়ে বেড়াচ্ছেন। মনে হয় ১/১১ সরকারের আমলে তাঁরা কিছুই করেননি। এইসব সাবেক উপদেস্টাদের কথামৃত না শুনলে সাংবাদিকদের ভাত হজম হয়না।

আবুল শব্দটি এখন বাংলাদেশে বেশ কৌতুকে পরিণত হয়েছে। রাস্তায় খাদা খন্দক দেখলেই বাস কন্ডাক্টরগণ বলেন, ডাইনে বা বাঁয়ে আবুল আছে। এই আবুল আগেও প্রধানমন্ত্রীর ক্যাবিনেটে প্রতিমন্ত্রী ছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করে বিদায় নিয়েছিলেন। এবার পুরো মন্ত্রী হয়েই ক্যাবিনেটে স্থান পেয়েছিলেন। কিন্তু এবারও শেষ পর্যন্ত থাকতে পারলেন না। অনেকেই বলছেন, বেচারা আবুল বলির খাঁসি। কর্তার ইচ্ছায় কীর্তন করেন। মুখ ফুটে সবকথা বলতে পারেন না। তাই একা একাই সবকিছু সহ্য করে যাচ্ছেন। হয়ত রাজনীতিতে এমন সহ্য শক্তি থাকলে আখেরে ভাল ফল পাওয়া যায়। সত্যিই আবুল তা পেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁকে দেশপ্রেমিক বলে সার্টিফিকেট দিয়েছেন। আবুল বড় কপাল নিয়ে রাজনীতিতে এসেছেন।চলমান রাজনীতিতে তিনি একজন বড় গাজী। কানাডাতে যে কোম্পানীর স্টাফরা ঘুষ দিয়েছেন তাঁরা এখন জেলে আছেন। বাংলাদেশে যাঁরা ঘুষ খেয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে তাঁরা বহাল তবিয়তে আছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী উল্টো বিশ্ব ব্যান্ককে গালমন্দ করছেন। লন্ডনে বিবিসিকে বলেছেন, বিশ্ব ব্যান্কের অভিযোগ ডাহা মিথ্যা। কিন্তু বিশ্বব্যান্কের জাদুকরী খেলাতে আমাদের দুর্ণীতি দমন কমিশন বেশ ভাল অভিনয় করে চলেছেন। কমিশনের চেয়ারম্যান আজ এক কথা বলতেনতো আগামীকাল আরেক কথা বলেন। বেচারার কোন দোষ নেই। তিনি হচ্ছেন যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ। কয়েকজনকে আতক করার পরও বিশ্বব্যান্ক শান্ত হয়নি। তারা অপেক্ষা করছেন কখন দুই আবুল আতক হবেন।

পদ্মাবতীর কাহিনীর মতো পদ্মাসেতুর কাহিনীও মহাকাব্যে পরিণত হতে চলেছে। চিতোরের রাণী পদ্মাবতীর কাহিনীও ট্রেজেডীর মহাকাব্য। বাংগালী কবি আলাওল ষোড়শ শতাব্দীতে বাংলায় পদ্মাবতীর কাহিনী লিখে অমর হয়ে আছেন। মূল কাব্যটি রচনা করেছেন মালিক মোহাম্মদ জয়সী। তিনি হিন্দী ভাষায় এটি রচনা করেছিলেন। পদ্মাবতী কাহিনীর সাথে রাজা উজির আমির উমরারা জড়িত ছিলেন। সেখানেও রাজনীতি ছিল। আমাদের সলমান মহাকাব্য হচ্ছে পদ্মাসেতু। এই মহাকাব্যের প্রধান চরিত্র হচ্ছেন আবুল। বাকি হচ্ছেন রাজনীতিক, মন্ত্রী মন্ডলী। এই কাব্যের রচয়িতা হচ্ছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। ইতোমধ্যে পদ্মাসেতুকে ড্রামা বা নাটক বলে অভিহিত করেছেন খবরের কাগজের কলামিস্টরা। পদ্মাবতী আর পদ্মাসেতুর কাহিনী স্থান কাল পাত্র সবই আলাদা। একটি প্রেম নিয়ে, আরেকটি টাকা নিয়ে। প্রেম নিয়ে হাজার বছর ধরে পৃথিবীর সকল দেশে সকল সময়ে মহাকাব্য তৈরি হয়েছে। অনেক রাজা প্রেমিকার জন্যে রাজ্য ত্যাগ করেছেন। প্রেমের সমাধি তাজমহল তৈরি হয়েছে। সেই তাজমহল দেখার জন্যে শত শত বছর ধরে লাখ লাখ মানুষ তাজমহলের কাছে যাচ্ছে। টাকা নিয়েও পৃথিবীতে কম কেলেংকারী হচ্ছেনা। এইতো দেখুন না, টাকার জন্যে হলমার্ক কোম্পানী কি না করেছে। টাকার জন্যে আমাদের সাবেক প্রধান সেনাপতি এখন কেমন বদনামের ভাগিদার হয়েছেন। অথচ তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। ক’দিন আগেও তাঁর মুখে আমরা অনেক মূল্যবান কথা শুনেছি।প্রধান সেনাপতি মইনউদ্দিন সাহেবও দেশের উপকারের কথা বলে ক্ষমতা দখল করে রেখেছিলেন। নির্বাচনী গণতন্ত্রের ভেলকি দেখিয়ে নিজের পছন্দের দলকে ক্ষমতা বসিয়ে এখন নির্বাসিত জীবন যাপন করছেন। সেই দল তাঁকে আর দেশে ফিরিয়ে আনেননি। অথচ দলটির প্রধান বলেছিলেন ক্ষমতায় গেলে ১/১১ সরকারের সকল কাজের বৈধতা দিবেন। এই সেনাপতি ভদ্রলোক আত্মীয়তার সুযোগ নিয়ে আগের প্রধানমন্ত্রীর আমলে আট জনকে ডিঙিয়ে প্রধান সেনাপতি হয়েছিলেন। আরেক সেনাপতি ১/১১ সরকারের আমলে দুদকের চেয়ার ম্যান হয়ে হেলিকপ্টার নিয়ে জেলায় জেলায় ঘুরে বেড়াতেন আর রাজনীতিবিদদের শিক্ষা দিয়েছেন। ১/১১র আমলের সরকার দেশকে দূর্ণিতিমুক্ত করতে চেয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত দেশের বারোট বাজিয়ে বিদায় নিয়েছেন। মাঝখানে স্বপ্নেপ্রাপ্ত ঘটনাবলী নিয়ে এক পুস্তক লিখেছিলেন। একজন ঔপন্যাসিক সেই বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেছিলেন। ওই ঔপন্যাসিক ভদ্রলোক এখন এক বাংলা কাগজের সম্পাদক। পাকিস্তান আমলেও প্রধান সেনাপতিরা নানা ধরনের ভেলকিবাজী দেখিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ভারতের সহযোগিতায় পাকিস্তানকে ভেংগে দিয়ে ক্ষমতা থেকে বিদায়। অথচ এই সেনাপতিরাই নাকি পাকিস্তানে সবচেয়ে বেশী দেশপ্রেমিক ছিলেন। শহীদ জিয়ার পরে নির্বাচিত সরকারকে উত্‍খাত করে এক প্রধান সেনাপতি ক্ষমতা দখল করে নয় বছর ক্ষমতায় ছিলেন। ক্ষমতা দখল করে সাংবাদিকদের বলেছিলেন তিনি দিল্লীর সাথে আলাপ করেই ক্ষমতা নিয়েছেন। তাঁর ক্ষমতা দখলের পরে কোলকাতার এক কাগজে লিখেছিল ‘বন্দুকের নলে প্রজাপতি’। বাংলাদেশের একটি দৈনিকে সম্পাদকীয়তে বলেছিল, এক ফোটা রক্তও ঝরেনি। আরেক জন সেনাপতি বিদ্রোহ করে চাকুরী হারিয়েছেন। সেই সেনাপতিকে সহযোগিতা করে এক ক্যাপ্টেন এখন প্রতিমন্ত্রী। বংগবন্ধুর সেনাপতি জেনারেল সফিউল্লাহ দায়িত্বে অবহেলা করার জন্যে যার শাস্ত হওয়ার কথা ছিল তিনি এখন আওয়ামী লীগের এমপি। জেনারেল হারুণের কথা বলতে গিয়ে এতসব জেনারেলের কথা বললাম। আজকের কলামের এটা মূল বিষয় নয়। মূল বিষয় হচ্ছে পদ্মাসেতু। এই সেতু এখন মহাকাব্য, একটি মহা নাটক।প্রতিদিন পদ্মাকে নিয়ে নানা কথা। কখনও প্রধানমন্ত্রী বলছেন, কখনও অর্থমন্ত্রী বলছেন। কখনও যোগাযোগ মন্ত্রী বলছেন, এইতো আমরা মালয়েশিয়ার সাথে চুক্তি করে ফেলবো এই সপ্তাহে বা এই মাসে। বিশ্ব ব্যান্ক বলছে পরামর্শক নিয়োগের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী ও সচিবরা উত্‍কোচ গ্রহণ করেছেন। তারা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে। কিন্তু সরকার পাল্টা অভিযোগ এনে বলেছে যে, বিশ্বব্যান্কের লোকেরা ঘুষখোর। তাদের দুর্ণীতির তদন্ত হওয়া দরকার। বিশ্বব্যান্ক ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সরকারকে লিখিত অনেক গুলো চিঠি জনসাধারনের জ্ঞাতার্থে প্রকাশ করেছে। এক পর্যায়ে বিশ্বব্যান্ক ঋণচুক্তি বাতিল ঘোষণা করেছে। সাথে সাথে অন্যান্য দাতারাও ঋণচুক্তি স্থগিত করেছে। তারপরেই প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর মন্ত্রী ও দলের লোকেরা বিশ্বব্যান্ককে গালাগাল শুরু করে দিলেন। অর্থমন্ত্রী বলছেন, বিশ্বব্যান্কের সিদ্ধান্ত পূণর্বিবেচনা করার জন্যে আবেদন জানানো হবে। ইতোমধ্যে মন্ত্রী আবুল হোসেন পদত্যাগ করেছেন। এর আগে আবুল পত্রিকার প্রথম পাতায় কয়েক লাখ টাকা খরচ করে তিনি যে নির্দোষ তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তবুও বলেছেন, দেশের স্বার্থে তিনি পদত্যাগ করতে রাজী আছেন। তারপর মিডিয়া বললো তিনি পদত্যাগ করেছেন। এ ব্যাপারে সরকার কোন ঘোষণা দেয়নি।

এবার নতুন নাটক শুরু হয়ে গেল। প্রধানমন্ত্রী বললেন, আবুল দেশপ্রেমিক তাই তিনি পদত্যাগ করেছেন। সাথে সাথে হুক্কা হুয়া শুরু হয়ে গেল। আর মিডিয়াতে নানা ধরনের কার্টুন প্রকাশিত হতে লাগলো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও দলীয় নেতাদের কোন হুঁশ নেই তারা বলেই চলেছেন আবুল একজন দেশপ্রেমিক। এমন কি দুদকও এ ব্যাপারে সাফাই গাইতে শুরু করলো। দুদকের চেয়ারম্যান সচিব থাকা কালে লোকে তাঁর প্রশংসা করতো। কিন্তু দুদকের চেয়ারম্যান হয়ে তিনি রাজনৈতিক নেতাদের মতো কথা বলতে শুরু করেছেন। আমরা জানি তিনি আওয়ামী ঘরানার জামাই। কিন্তু এতদিন লোকে তাঁর ঘরানা নিয়ে কোন কথা বলেনি। ফলে চেয়ারম্যান সাহেবের নিরপেক্ষতা নিয়েও কথা উঠেছে। এতো গেল দুদক নাটক। অর্থমন্ত্রী বলছেন, বিশ্বব্যান্ক যা চেয়েছে তা বাংলাদেশ সরকার করেছে। এখন আর ঋণচুক্তি বহাল করতে কোন অসুবিধা নেই। পদত্যাগ নিয়েও অনেক নাটক চলছে। সত্তুর বস্তা কাঁঠাল বা সত্তুর লাখ টাকার বস্তা নিয়ে সুরন্জিত বাবু পদত্যাগ করলেন। কিছুদিন চুপচাপ থাকলেন। তারপর শুনা গেল তিনি তিনি মন্ত্রী আছেন, দফতার নাই। পাকিস্তান বা ভারতে এ ধরনের মন্ত্রীদের বলা হয় উজিরে খামাখা। মিনিস্টার উইথ আউট পোর্টফোলিও। এর মানে তিনি সরকারের জন্যে কোন কাজ করবেন না। কিন্তু বেতন ভাতা সবই পাবেন। বুক ফুলিয়ে কথা বলতে পারবেন। এবং সুরন্জিত বাবু বেশ নিয়মিত কথা বলে যাচ্ছেন। আবুল সাহেবও হয়ত তেমন উজিরে খামাখা থাকবেন। নিয়মিত বেতন ভাতা পাবেন। প্রশ্ন হলো রেলের সেই ড্রাইভার কোথায় গেল। আবুল সাহেবের টাকা নেয়ার অভিযোগেরই বা কি হলো। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিশ্বব্যান্কতো টাকাই দেয়নি দূর্ণীতি কোথ্থেকে হলো? তাহলে কানাডায় লাভালিনের কর্মচারীদের বিচার হচ্ছে কি জন্যে? বিরোধী দল প্রশ্ন তুলেছে, প্রধানমন্ত্রী আবুলকে এতো প্রটেকশন দিচ্ছেন কেন? এখানে অন্যকোন রহস্য আছে নাকি?পদ্মাসেতুকে কেন্দ্র করে বাজারে বহু গল্প চালু হয়ে গেছে । সে সব গল্পের কথা প্রধানমন্ত্রীর কানে যায় কিনা জানিনা। একই রকম গল্প গুজব ৭২-৭৫ সালেও চালু ছিল। এমন কি খবেরের কাগজেও নানা ধরনের কার্টুন ছাপা হতো। সরকার ও রাজনীতিতে সব সময় নানা ধরনের গল্প চালু হয় ও থাকে। লোকে যদি এসব বিশ্বাস করে তাহলেতো সরকারের জন্যে একটা লাল সংকেত।

পদ্মা নিয়ে আরেকটি বড় নাটক হচ্ছে দেশী টাকায় দেশের মানুষের টাকায় সেতু বানানো হবে। আর যায় কোথায় সাথে টাকা উঠতে লাগলো। কোন এক বিশ্ববিদ্যালয়ে সেতুর জন্যে চাঁদা তুলতে গিয়ে ছাত্রলীগের একনেতা ভাগ বাটোয়ারার যুদ্ধে নিহত হয়েছেন। কোন এক ছাত্র তার টিফনের টাকা পদ্মা সেতুর জন্যে দান করেছে।অফিসে আদালতে একদিনের বেতন উঠতে শুরু করলো। প্রধানমন্ত্রী বিদেশে গিয়ে প্রবাসীদের বলেছেন, বেশী বেশী করে অর্থ পাঠাবার জন্যে। তিনি বলেছেন, যে জাতি মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করতে পারে সেই জাতি নিজেদের অর্থে পদ্মাসেতুও বানাতে পারবে। আর যায় কোথায় পদ্মাসেতুর জন্যে মুক্তি যুদ্ধের চেতনা যুক্ত আরেকটি যুদ্ধ  শুরু হয়ে গেল। এই যুদ্ধে ৭১ এর চেতনা নিয়ে ভারত এখনও ঝাপিয়ে পড়েনি। এই সেতুতো ভারত-বাংলাদেশ প্রেমের সেতু হিসাবেও ইতিহাসে নাম রাখতে পারে। ৭১এ গণচীন আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে নাকি সমর্থন করেনি। সেই চীন বন্ধুত্বের চেতনায় ইতোমধ্যে অনেক সেতু বানিয়ে দিয়েছে। দ্বিতীয় পদ্মাসেতু বানিয়ে দেয়ার ওয়াদা করেছে। চীনের এসব কান্ড কারখানা দেখে মনে পড়েছে, আমারই বঁধুয়া আন বাড়ি যায় আমারই আঙিনা দিয়া। ভারত প্রমেকের সামনে দিয়া চীনের এমন আনাগোনা কার সহ্য হয় বলুন। ভারত কেমন করে  এসব সহ্য করছে বুঝতে পারছিনা। ভারত বাংলাদেশের আশেকী মাশুকীর কথা ভেবে ভারতের উচিত হবে এখনি ঘোষণা করা আমরা পদ্মাসেতুর মহাকাব্য আমরাই রচনা করবো। পদ্মাবতীর কাহিনীও রচনা করেছেন ভারতের মালিক মোহাম্মদ জয়সী আর বাংলাদেশের আলাওল।কবি আলাওলের বাড়ি ছিল ফরিদপুরে। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি ও ফরিদপুরে। আলাওলের বাবাকে হত্যা করেছে একদল হার্মাদ। প্রধানমন্ত্রীর বাবাকেও হত্যা করেছে একদল সৈনিক। পদ্মাসেতু নাটকটি ভারত বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে অবশই মঞ্চস্থ হতে পারে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এগিয়ে গেলে ভারত নিশ্চয়ই মুখ ফিরিয়ে নিবেনা। তাহলেতো বিশ্বব্যান্কের ঘ্যানর ঘ্যানর শুনতে হয়না। খুব সহজেই সমস্যার সমাধান হয়ে যেতে পারে। প্রধানমন্ত্রীতো বহু বছর দিল্লতে ছিলেন। দিল্লীর হৃদয় কেমন তাঁর চেয়ে ভাল আর কে জানবে। তিনি বরং দেশবাসীকে আহবান করতে পারেন, হে দেশবাসী আপনারা প্রেমিক ভারতকে পদ্মাসেতুর স্বার্থে প্রেম নিবেদন করুন। ভারত নিশ্চয়ই তা প্রত্যাখ্যান করতে পারবেনা। ৭১ সালে শুধুমাত্র প্রেমের কারণেই জানমাল সবই ত্যাগ করেছে। আমরাও শুধুমাত্র প্রেমের কারণেই ভারতকে রাস্তাঘাট, বন্দর, আবাসন সবই দিচ্ছি।

এই নাটকের খলনায়কে পরিণত হয়েছেন দেশের অর্থনীতিবিদগণ। তাঁরা বলছেন, চাঁদা তুলে এই ব্রিজ করা যাবেনা। তাঁরা শুধু দেশী আর বিদেশী টাকার দিকটাই দেখেছেন। দেশবাসীর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা দেখেননি। তবে একথা সত্যি যে বেশী শিক্ষিত মানুষের প্রেমের আবেগ কম থাকেনা। তাই মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁরা অনেকেই কোলকাতা দিল্লী যাননি। মুক্তি যুদ্ধের মতো বড় বড় কাজ করতে হলে প্রেম ভালবাসা থাকতে হবে। এই সব বেশী শিক্ষিত লোকেরা হয়ত প্রধানমন্ত্রীর হৃদয়ের কথা এবারও ভাবেননি। ৭১ সালে বা ৭০ সালে এ দেশে বহু উচ্চ শিক্ষিত লোক ছিলেন। শুধুমাত্র প্রেম ভালবাসার কারণেই বংগবন্ধু সবার আগে সামনে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি যার যা আছে তা নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ার কথা বলে পাকিস্তানী কারাগারে চলে গিয়েছিলেন। নিজের স্মৃতিকথায় বংগবন্ধু বলেছেননি আন্ডারগ্রাউন্ডে বা পালিয়ে থাকতে পারেন না। তাই গ্রেফতারি পরোয়ানা এলেই সারেন্ডার করতেন। তিনি জানতেন বাংলাদেশের মানুষ প্রেমের ব্যাপারে অত অংক কষে চলেনা। বংগবন্ধু জেলে গেলেও ভারত বাংলাদেশ প্রেমের কারণে আমরা স্বাধীনতার সূর্যকে ছিনিয়ে এনেছি। প্রধানমন্ত্রীকে শুধু বুঝতে হবে ৭১ সালে দেশের মানুষ একাট্টা ছিল। কঠোর মনোবল ছিল স্বাধীনতার জন্যে। এখন সে অবস্থা আছে কিনা? তিনি ডাক দিলে সব মানুষ ঝাপিয়ে পড়বে কিনা? সে সময় কোন দূর্ণীতির কথা উঠেনি। এখনতো চারিদিকে দূর্ণীতির গর্কি শুরু হয়ে গেছে। এক আবুলের দূর্ণীতির সামালও তিনি দিতে পারেননি। তিনি বহু ফ্রন্টে যুদ্ধ শুরু করেছেন। একমাত্র ভারত ছাড়া বাংলাদেশের আর কোন প্রেমিক দৃশ্যমান নয়। গত নির্বাচনে ভারত, বৃটেন, আমেরিকা, ফ্রান্স আর ইইউ দলবেঁধে তাঁকে সমর্থন দিয়েছে। সবার লক্ষ্য ছিল তাঁকে ২৫০ সিট দিয়ে জিতানো। তাহলে সবার স্বার্থ ও লক্ষ্য আদায় হবে।কিন্তু না, তাদের স্বার্থ আদায় হচ্ছেনা। তারাতো চায় চীনের বিরুদ্ধে আমরা কাছা খুলে ভারতকে সমর্থন করি। বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু তা চায়না। প্রধানমন্ত্রীর মনে নিশ্চয়ই আছে যে, চীন ও সউদী আরব ৭৫ সালের আগস্টের পর বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছে। কোন মুসলমান দেশ এখন আর প্রধানমন্ত্রী সরকারকে অন্তরে সমর্থন করেনা। তার নানা ইংগিত আমরা দেখতে পাচ্ছি।

লেখক: কবি ও সাংবাদিক

ershadmz40@yahoo.com

Share this:

  • Twitter
  • Facebook

Like this:

Like Loading...

Related

Posted in Uncategorized |

  • Archives

    • May 2018 (1)
    • February 2016 (1)
    • January 2016 (2)
    • December 2015 (2)
    • November 2015 (1)
    • October 2015 (1)
    • September 2015 (1)
    • August 2015 (4)
    • July 2015 (1)
    • June 2015 (4)
    • May 2015 (3)
    • April 2015 (4)
    • March 2015 (5)
    • February 2015 (2)
    • January 2015 (1)
    • December 2014 (10)
    • November 2014 (4)
    • October 2014 (6)
    • September 2014 (6)
    • August 2014 (4)
    • July 2014 (3)
    • June 2014 (5)
    • May 2014 (5)
    • April 2014 (11)
    • March 2014 (21)
    • February 2014 (27)
    • January 2014 (11)
    • December 2013 (1)
    • November 2013 (5)
    • October 2013 (12)
    • September 2013 (10)
    • August 2013 (3)
    • July 2013 (8)
    • June 2013 (5)
    • May 2013 (4)
    • April 2013 (6)
    • March 2013 (7)
    • February 2013 (5)
    • January 2013 (5)
    • December 2012 (4)
    • November 2012 (3)
    • October 2012 (2)
    • September 2012 (4)
    • August 2012 (3)
    • July 2012 (4)
    • June 2012 (5)
    • May 2012 (7)
    • April 2012 (5)
    • March 2012 (5)
    • February 2012 (4)
    • January 2012 (7)
    • December 2011 (8)
    • November 2011 (1)
    • October 2011 (7)
    • September 2011 (4)
    • August 2011 (2)
    • July 2011 (4)
    • June 2011 (8)
    • May 2011 (9)
    • April 2011 (8)
    • March 2011 (5)
    • February 2011 (4)
    • January 2011 (4)
    • December 2010 (7)
    • November 2010 (2)
    • October 2010 (8)
    • September 2010 (5)
    • June 2010 (1)
    • May 2010 (1)
    • February 2010 (2)
    • June 2009 (5)
    • May 2009 (32)
  • Categories

    • Articles (119)
    • উপন্যাস (1)
    • English Articles (1)
    • Political Column (45)
      • Free Thoughts (19)
    • Uncategorized (232)
  • Pages

    • Who Am I ?

Create a free website or blog at WordPress.com.

WPThemes.


Privacy & Cookies: This site uses cookies. By continuing to use this website, you agree to their use.
To find out more, including how to control cookies, see here: Cookie Policy
  • Follow Following
    • Writing From The Street ( রাস্তা থেকে বলছি )
    • Join 30 other followers
    • Already have a WordPress.com account? Log in now.
    • Writing From The Street ( রাস্তা থেকে বলছি )
    • Customize
    • Follow Following
    • Sign up
    • Log in
    • Copy shortlink
    • Report this content
    • View post in Reader
    • Manage subscriptions
    • Collapse this bar
%d bloggers like this: