বাংগালী বলি আর বাংলাদেশী বলি, আমাদের ভাগ্য তেমন ভাল নেই। পাকিস্তানের ২৩ বছর আমরা ভাষা অর্থনীতি ও অধিকার নিয়ে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে লড়াই করেছি। ৪৭ সাল থেকে ৫৮ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান সকল বাধা বিপত্তির মাঝেও রাজনীতিকরা দেশ পরিচলানা করেছেন। তবুও কেন্দ্রীয় আমলারা সব সময় রাজনীতিতে নাক গলিয়েছেন। ফলে পাকিস্তানের গণতন্ত্র শুরু থেকেই নিরাপদ ছিলোনা। শেষ পর্যন্ত ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারী হয় এবং সেনাপতি আইউব খান ক্ষমতা দখল করে নানা ধরনের তেলেসমাতি করেছেন।তিনি দশ বছর ক্ষমতা দখল করে রেখেছিলেন। রাজনীতিকদের নানা ভাবে হেনস্থা করেছেন। দীর্ঘ চার বছর রাজনীতি বন্ধ করে রেখে ৬২ সালে ঘরোয়া রাজনীতি চালু করেন। জেনারেল আইউবের আমলেই পূর্ব পাকিস্তান বা পূর্ব বাংলায় অর্থনৈতিক বৈষম্য বা শোষণের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশী আন্দোলন হয়। পূর্ব পশ্চিম উভয় অঞ্চলে আইউব বিরোধী আন্দোলন শুরু হলে জেনারেল আইউব ৬৯ সালে ক্ষমতা ছেড়ে দিলে জেনারেল ইয়াহিয়া সামরিক শাসন জারী করে ক্ষমতা দখল করেন। জেনারেল ইয়াহিয়া ছিলেন একজন চরিত্রহীন মদ্যপ ব্যক্তি। তাঁর কারণেই ৭১ সালের মর্মান্তিক ও বেদনাদায়ক ঘটনা ঘটে। ৭০ এর নির্বাচনে বাংগালীরা একাট্টা বা একজোট হয়ে আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়। ফলে আওয়ামী লীগ সারা পাকিস্তানের মেজরিটি পার্টি হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। জেনারেল ইয়াহিয়া ঘোষণা করেছিলেন বংগবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হবেন। পশ্চিম পাকিস্তানের মেজরিটি পার্টি লীডার জুলফিকার আলী ভুট্টো এতে বাধ সাধেন। ফলে জটিলতা সৃস্টি হয়। ভূট্টো বলেই বসলেন, পাকিস্তানে দুই প্রধানমন্ত্রী পদ্ধতি চালু করতে হবে। তিনি পরোক্ষ ভাবে জানালেন যে, পাকিস্তান একটি কনফেডারেশন হবে। সমস্যার সমাধানের জন্যে জেনারেল ইয়াহিয়া ঢাকায় আসলেন এবং বংবন্ধুর সাথে আলোচনায় বসলেন। কিন্তু সেই আলোচনার ফলাফল দীর্ঘ ৪০ বছর পরেও দেশবাসী জানতে পারেনি। বংগবন্ধু নিজেও জাতির কাছে বিষয়টা পরিস্কার করেননি। পাকিস্তানের ভাবী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তিনি কি কি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। ভূট্টো ও পাকিস্তানের সেনা বাহিনী কি ষড়যন্ত্র করেছিল? শেখ সাহেব কেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কাছে ধরা দিলেন? পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী থাকার সময় বংবন্ধুর বিরুদ্ধে রাস্ট্রদ্রোহীতার যে মামলা হয়েছিল সেই মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন করে তিনি কি জবাব দিয়েছিলেন সে বিষয়ে বাংলাদেশের মানুষ কিছুই জানেনা।
২৫শে মার্চ রাতে জেনারেল ইয়াহিয়া কেনইবা পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালালো? কোন বিষয় নিয়ে শেষ পর্যন্ত আলোচনা ভেংগে গেল? এ ব্যাপারে প্রখ্যাত আইনজীবী ও স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পররাস্ট্র মন্ত্রী ড. কামাল সকল কিছু জানলেও আজ পর্যন্ত মুখ খোলেননি। কেনইবা তিনি ইতিহাসের এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি জাতির কাছে গোপন রাখলেন? আরেকটি বিষয় আজও পরিস্কার হয়নি। তা হলো , ৭১ সালের ৩রা ডিসেম্বর পাকিস্তান কি সত্যিই ভারত আক্রমন করেছিল? ভারততো বিশ্ববাসীকে জানিয়েছে, সে পাকিস্তানের আগ্রাসনের জবাব দিয়েছে। ফলে দুই দেশের মধ্যে তৃতীয় বারের মতো যুদ্ধ বেধে যায়। যখন রাশিয়া ভারতকে সমর্থন করলো তখন আমেরিকা চুপ থাকলো কেন? পূর্ব পাকিস্তানের সাধারন নিরীহ নিরস্ত্র মানুষের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করলে ভারত কি পদক্ষেপ নিতে পারে পাকিস্তানের শাসক গোস্ঠী কি জানতোনা? ইতিহাসের অজানা এ কথাগুলো ইতিহাসের প্রয়োজনেই আমাদের জানা দরকার। বাংলাদেশের চলমান রাজনীতির প্রেক্ষিত বর্ণনা করার জন্যেই আমি পেছনের কথা দিয়েই লেখাটি শুরু করেছি। শুরুতেই বলেছি, পূর্ব পাকিস্তানের অধিবাসীরা ৪৭ সাল থেকেই শোষিত হয়েছে পাকিস্তানের শাসক গোস্ঠী দ্বারা। ফলে শুরু থেকেই পাকিস্তান প্রতিস্ঠার ভিত্তিমূল দূর্বল হয়ে পড়ে। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বুঝতে শুরু করে এক সাথে থেকে সমস্যার সমাধান করা যাবেনা। ৭০ এর নির্বাচনের ফলাফল ছিল তারই বহি:প্রকাশ। ভারত ৪৭ সাল থেকেই পাকিস্তান ভাংগার গোপন অভিযান চালিয়ে আসছিলো। ভূট্টো ও পাকিস্তানের সেনা বাহিনী ভারতকে তার খায়েশ পূরণের সুযোগ করে দেয়। ৭০ এর নির্বাচনের ফলাফল না মেনে এবং ২৫শে রাতে সামরিক অভিযান চালিয়ে পাকিস্তানের শাসক গোস্ঠী নিজেরাই পূর্ব পাকিস্তানের অধিবাসীদের ভাগ্য ভারতের হাতে তুলে দেয়। সাথে সাথে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বাধ্য হয়েই অস্ত্র হাতে তুলে নেয়। দীর্ঘ নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে ভারত বাংলাদেশের জনগণকে সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদান করে। নির্বাচিত রাজনৈতিক দল হিসাবে আওয়ামী লীগকে ভারত সরকার আওয়ামী লীগকেই মুজিব নগর সরকার গঠণে সহযোগিতা দিয়েছে যদিও প্রায় সকল রাজনৈতিক দলই মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছে। জাতীয় সরকার গঠণে মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানীর দাবীকে ভারত সরকার অগ্রাহ্য করে। এমন কি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মাওলানা সাহেবকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। ভারত সরকার জানতো মাওলানা সাহেবকে আটক না রাখলে ভারতের রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জিত হবেনা। ভারত বাংলাদেশের জনগণের সাথে কখনই সু সম্পর্ক বা বন্ধুত্ব চায়নি। বরং শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী বলেছিলেন তিনি বাংলাদেশে একটি বন্ধু সরকার চান। বিগত ৪০ বছর ধরে ভারত চোখ বন্ধ করে আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়ে আসছে। তবে ৭২-৭৫ সময়ে বংগবন্ধুর সরকারের আমলে দিল্লী সরকার তেমন সুবিধা করতে পারেনি। আমরা যারা সে সময়ে সাংবাদিকতার পেশায় ছিলাম দেখেছি, মাওলানা ভাসানী দিল্লীর বিরুদ্ধে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। অনেকেই বলেন, এ ব্যাপারে মাওলানা সাহেবের সাথে বংবন্ধুর একটা সমঝোতা ছিল। সেই সময়ে মাওলানা সাহেবের ‘হককথা’ পত্রিকা ভারতের ভূমিকা সম্পর্কে জনগণকে সচেতন রাখার ব্যাপারে বিরাট ভুমিকা পালন করে। ভারত সব সময়ই আওয়ামী লীগকে ভারতের স্বার্থের পক্ষের শক্তি মনে করে এসেছে। আওয়ামী লীগকে সব সময় ক্ষমতায় রাখার চেস্টা করেছে। আওয়ামী লীগ একটি ভারতপন্থী রাজনৈতিক দল হিসাবে বহুল প্রচারিত। এবার আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনার জন্যে ভারত ও তার সহযোগী শক্তি ১/১১র ঘটনা ঘটিয়েছে। ভারতই জেনারেল মইন ইউ আহমদের আধা সমরিক সরকার প্রতিস্ঠা করে। জেনারেল মইনের সরকার বিএনপি এবং শহীদ জিয়ার পরিবারকে ধ্বংস করার প্রক্রিয়া শুরু করে।সেই সরকারের অধীনেই এক বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনা হয়। জেনারেল মইনের সরকার বিএনপি ও জাতীয়তাবাদী ইসলামিক শক্তিকে চিরতরে ধ্বংস করার যে প্রক্রিয়া শুরু করেছিল আওয়ামী লীগ তা অব্যাহত রেখেছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনেও দেখা গেছে দেশের ৬০ ভাগ ভোটার জাতীয়তাবাদী ইসলামী চেতনার পক্ষে। আওয়ামী লীগ মোট ভোটের ৪০ ভাগ পেয়েছে, যদিও জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের ২৬৩ সিট রয়েছে। আওয়ামী লীগের ভারতপন্থী চেহারা এখন একেবারেই স্পস্ট। এবার ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ ৪০ বছরের দেনা শোধ করার উদ্যোগ নিয়েছে। এখন বাংলাদেশ ভারতের চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। দেশের মানুষ মানসিক ভাবে কস্টে আছে। কারণ দেশবাসী কখনই দেশের এমন অবস্থা দেখতে চায়নি।
পাকিস্তান ২৩ বছরে পূর্ব পাকিস্তানকে যে শোষণ করেছে তার চেয়ে অনেক বেশী শোষণ করছে এখন ভারত। পাকিস্তানকে আমরা বৈরী শক্তি হিসাবে চিহ্নিত করেছিলাম। কিন্তু ভারতকে তাও করতে পারছিনা। আমরা স্বাধীন দেশ হিসাবে পরিচিত। আমাদের জাতীয় পতাকা আছে, জাতীয় সংগীত আছে, জাতিসংঘের সদস্যপদ আছে, কিন্তু সার্বভৌমত্ব আছে কিনা এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে একটি তাবেদার রাস্ট্রে পরিণত করেছে। ভারতের পক্ষে প্রকাশ্যে দালালী করার জন্যে লোকের অভাব হয়না। জাতি হিসাবে আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য এখন হুমকির মুখে। ভারত যেভাবে চাইছে সেভাবেই ইতিহাস রচিত হচ্ছে। ১৭৫৭ সালে ইংরেজরা প্রথমে দেশের ভিতরে দালাল তৈরী করেছে, নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে, তারপরে নবাবকে পরাজিত করে অখন্ড বংগদেশ দখল করে নেয়। সেই ইংরেজ দখলদারিত্ব থেকে ভারতকে মুক্ত করতে ১৯০ বছর লেগেছে। দেশের স্বাধীনতার জন্যে এই ১৯০ বছরে কোটি কোটি মানুষ প্রাণ দিয়েছে। ওই সময়ে পূর্ববাংলার মানুষ সবচেয়ে বেশী শোষিত হয়েছে। পূর্ববাংলার সম্পদ লুণ্ঠন করে কোলকাতা তৈরী করা হয়েছে। ১৬০৮ সালে কোলকাতা ছিল একটি গ্রাম, আর ঢাকা ছিল অখন্ড বংগদেশের রাজধানী। পূর্ববাংলাকে ইংরেজরা যেমন শোষণ করেছে তেমনি শোষন করেছে হিন্দু জমিদাররা। ফলে পূর্ববাংলা একটি দরিদ্র অঞ্চলে পরিণত হয়। দরিদ্র মুসলমান কৃষকদের মুক্তির জন্যেই শেরে বাংলা ঋণ সালিশী বোর্ড গঠণ করেছিলেন।১৯০৫ সালে পূর্ববাংলার আলাদা প্রদেশ হওয়া হিন্দুরা মেনে নেয়নি, শুধুমাত্র তাদের শোষণ অব্যাহত রাখার জন্যে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিস্ঠারও বিরোধিতা করেছে কোলকাতার হিন্দুরা। ৪৭ সালে অখন্ড বংগদেশের স্বাধীনতা চেয়েছিল মুসলমানরা। কিন্তু হিন্দুরা তা চায়নি। কারণ বংগদেশ ছিল মুসলিম মেজরিটি এলাকা। ইংরেজ ও হিন্দুদের তৈরী কোলকাতাকে তাই তারা আলাদা করে ভারতের সাথে যুক্ত করেছে। কোলকাতার হিন্দুরা নিজেদের বাংগালী দাবী করলেও অবাংগালী শাসিত দিল্লীর অধীনতা মেনে নিয়েছে।
পূর্ববাংলার মানুষ চিরদিন শোষণের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পেছনে রয়েছে সুদীর্ঘ সংগ্রাম ও লড়াইয়ের ইতিহাস। ৪৭ সালে অবাংগালী মুসলমানদের সাথে এক হয়ে পাকিস্তান প্রতিস্ঠা করলেও শেষ পর্যন্ত এক থাকতে পারেনি শোষণ ও বৈষম্যের কারণে। এখানে মূল বিষয়টা বাংগালী বা মুসলমান নয়। বিষয়টা হচ্ছে শোষণ ও বৈষম্য। সেই শোষক যেই হোকনা কেন। আওয়ামী লীগ নিজেদের বাংগালী মনে করে । তারা মনে করে জগতের সব বাংগালী এক। পশ্চিম বাংলার হিন্দু বাংগালী আর স্বাধীন বাংলাদেশের মুসলমান বাংগালীর মধ্যে কোন ফারাক আছে বলে আওয়ামী লীগ মনে করেনা। আওয়ামী লীগ ৪৭ সালের স্বাধীনতাকে মানেনা। আমাদের জাতিসত্তার উপাদান নিয়েই আওয়ামী লীগ বিভ্রান্তিতে রয়েছে। আওয়ামী লীগ নিজেদের ভাষা ভিত্তিক সাংস্কৃতিক জাতি মনে করে। যা ভারত চায়। আওয়ামী লীগ মানতে চায়না বাংলাদেশের মানুষের আলাদা জাতিসত্তার আকাংখা বহু শতাব্দীর ঐতিহ্যে লালিত। এই ঐতিহ্য ও জাতিসত্তার প্রধান উপাদান তার ধর্ম ও সংস্কৃতি যা হিন্দু বাংগালী বা হিন্দু অবাংগালীদের চেয়ে আলাদা। এমন কি বাংলাদেশের বাংগালী মুসলমানরা অবাংগালী মুসলমানদের চেয়েও আলাদা। এই আলাদা অস্তিত্বই এদেশের মানুষকে একটি আলাদা জাতিতে পরিণত করেছে। জেনে হোক বা না জেনে হোক আওয়ামী লীগ এই আলাদা জাতিসত্তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। আর আওয়ামী লীগের এই অবস্থানকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে ভারত।
বাংলাদেশের রাজনীতি এখন সুস্পস্ট ভাবে দুই ধারায় বিভক্ত। একটি ধারা দেশের পক্ষে, আরেকটি ধারা ভারতের পক্ষে। আওয়ামী লীগ ভারতের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। দেশবাসীকে বুঝতে হবে, জানতে হবে আমরা কেন পাকিস্তান থেকে মুক্তিলাভ করেছি। কেন আমরা আমাদের স্বাধীন সার্বভৌম আলাদা সত্তাকে সুউচ্চ কণ্ঠে ঘোষণা করতে চাই। কেন আমরা আমাদের অস্তিত্বকে ভারত এবং পাকিস্তানের প্রভাব থেকে মুক্ত রাখতে চাই। আমাদের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে গভীর যড়যন্ত্র চলছে। সাংস্কৃতিক ভাবে আমরা ইতোমধ্যেই বিকলাংগ হয়ে পড়েছি। আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্যকে মুছে ফেলার কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে আমরা একটা পংগু জাতিতে পরিণত হবো।আমি মৌলিক বিষয় নিয়ে একটা আলোচনা উত্থাপন করেছি। আওয়ামী লীগের রাজনীতিকে বিশ্লেষণ করার চেস্টা করেছি। বাংলাদেশের প্রশ্নে ভারতের অবস্থান ব্যাখ্যা করার চেস্টা করেছি। আমি এর আগেও বলেছি ভারতের রাজনীতি ও দর্শন সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকলে বাংলাদেশের রাজনীতির( কোন দলের নয় ) অবস্থান নির্ণয় করা যাবেনা। ভারতের দর্শণ হচ্ছে এই অঞ্চলের দেশগুলোকে নিজের প্রভাব ও নিয়ন্ত্রনে রাখা। বাংলাদেশের দায়িত্ব হচ্ছে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসাবে নিজের ভূমিকা পালন করা। আর এজন্যেই বাংলাদেশের আভ্যন্তরীন রাজনীতি কিভাবে কোন পথে পরিচালিত হবে তা নির্ধারন করা। ভৌগলিক ভাবে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। এই অবস্থানকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করার জন্যে সঠিক রাজনীতির প্রয়োজন । এখানে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামাত কোন প্রশ্ন নয়। প্রশ্ন কোন দল বা কোন রাজনীতি বাংলাদেশকে রক্ষা করতে পারবে।