আমরা বড়ই হতভাগা বাংলাদেশের মুসলমানেরা। যে দেশের ৯০ ভাগ মুসলমান সে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে শুনানী চলছে ফতোয়া জারী থাকবে কি থাকবেনা। এর চেয়ে লজ্জার আর কি হতে পারে? এইতো ক’দিন আগেই ফতোয়া বিষয়ে একটি লেখা নয়া দিগন্তে প্রকাশিত হয়েছে। দেশ বিদেশের প্রচুর পাঠক ফোন আর মেইল করে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। পাঠকরা আরও বলেছেন,তাঁরা আমার জন্যে দোয়া করছেন আমি যেন সুস্থ শরীরে থেকে মুসলমানদের খেদমতের আঞ্জাম দিতে পারি। মাত্র ক’দিনের ব্যবধানে আবার একই বিষয়ে লেখার জন্যে কীবোর্ডে হাত রেখেছি।হাতের কম্পনের কারণে এখন কলম হাতে নিয়ে কাগজে লিখতে পারিনা। তবুও আল্লাহপাকের দরবারে কোটি কোটি শোকর যে তিনি আমার স্মৃতি ঠিক রেখেছেন এবং কম্পিউটার ব্যবহার করতে শিখিয়েছেন। তা না হলে কাউকে ডেকে ডিক্টেশন দিতে হতো। শুধু আবেগ আর মনের কস্টের কারণে আবার লিখতে বসেছি। আদালতে যুক্তি তর্ক চলছে ফতোয়া নিষিদ্ধকরণ নিয়ে। ক’বছর আগে এক বিচারপতি বা একটি বেঞ্চ উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে দেশে ফেতনা ফাসাদ সৃস্টির জন্যে শরীয়া আইনকে অস্বীকার বা অবজ্ঞা করে ফতোয়া নিষিদ্ধ করে একটি রায় দিয়েছিলেন। সে রায়ের বিরুদ্ধে তখন সারাদেশে আন্দোলন হয়। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়। সেই মামলার শুনানী চলছে এখন। অতীব দু:খের সাথে বলতে হচ্ছে যে আদালতে ফতোয়া নিয়ে বিচার চলছে সেই আদালত বৃটিশ রোমান ও লেটিন আইন দ্বারা পরিচালিত। সেখানে কোরাণ হাদিস বা শরীয়া আইনের আলেম বা পন্ডিতদের কোন স্থান নেই। সর্বজন শ্রদ্ধেয় আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকুল হক বলেছেন, ফতোয়ার কোন আইনগত ভিত্তি নেই। এটা ব্যক্তিগত মতামত। গ্রামের মানুষ অজ্ঞতার কারণে ফতোয়া মানে। ব্যারিস্টার রফিক চলমান আদালত ও বিচার ব্যবস্থার আলোকে এ কথা বলেছেন। শরীয়তের আইন বা কোরাণ হাদিসে দৃষ্টিতে তাঁর কথার কোন দাম নেই। কারণ তিনি শরিয়া আইনের পন্ডিত বা ফকীহ নন। ড: জহির আরেক জন বিদেশী আইন বিশেষজ্ঞ বা পন্ডিত। তিনি বলেছেন, ফতোয়া কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি বলেছেন, যে কেহ ফতোয়া দিতে পারে। কিন্তু কারো অধিকার হস্তক্ষেপ করে নয়। আমি বলবো ফতোয়া বিষয়ে কোন কথা বলার অধিকার ড: জহিরের নেই। কারণ তিনি এ ব্যাপারে গ্রামের সাধারন মানুষের মতোই অজ্ঞ। ফতোয়া নিয়ে কথা বলার কোন অধিকার আদালতেরও নেই। কারণ এ আদালত কোরাণ হাদিসের আদালত নয়। আমাদের বিচারক ও আইনজীবীরা কেউই ফকীহ নন। তাঁরা কেউই শরীয়া আইনের ব্যারিস্টার নন।
সম্মানিত অধ্যাপক অধ্যাপক এবনে গোলাম সামাদ হঠাত্ করে বলে বসলেন, পবিত্র কালামেপাকে আল্লাহতায়ালা নারী পুরুষকে সমতূল্য বলেছে। সে আলোকে নারীনীতি প্রণীত হলে যুগধর্ম পালিত হবে। যুগধর্ম বলতে সামাদ সাহেব কি বূঝাতে চেয়েছেন তা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়। যুগধর্ম সম্পর্কে আমাদের কোন ধারনা নেই। নারীরা মানে মা বোন স্ত্রী ফুফু পিতা ভাই বা দাদার সম্পত্তিতে কি হিস্যা পান তা দিনের আলেকের মতো সুস্পস্ট। যুগধর্মের সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই। আমি মনে করি যুগধর্ম মানে যখন যা তা মেনে চলা। যেমন পশ্চিমারা এখন সমকামীতার আইন পাশ করছে যুগধর্মের দাবীতে। তাঁরা নবী ইসা(আ) সম্পর্কে নানা কথা বলে। লাস্ট টেম্পটেশন ছবি বানায় । এসব হচ্ছে তাদের যুগধর্ম। এর সাথে আল্লাহর নবী ইসার (আ) কোন সম্পর্ক নেই।যুগধর্ম মানে হচ্ছে ভ্রান্তি। সুতরাং সামাদ সাহেবের প্রেসক্রিপশন আমরা গ্রহণ করতে পারছিনা। এবনে সামাদ সাহেব পশ্চিমের সাথে খালেদা জিয়ার সুসম্পর্ক প্রতিস্ঠার কথাও বলেছেন। পশ্চিমারা ইসলাম পছন্দ করেনা সেকথাও বলেছেন। রাজনীতিতে টিকে থাকার জন্যে বা আবার ক্ষমতায় যাওয়ার জন্যে পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে সু সম্পর্ক রাখার জন্যে খালেদা জিয়াকে পরামর্শ দিয়েছেন। সামাদ সাহেবের পরামর্শের সারকথা হলো ইসলামী দলগুলোর সাথে বেশী বেশী উঠা বসা করার প্রয়োজন নেই। দেশের ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান হওয়া সত্ত্বেও মুসলমান স্বার্থ বিরোধী দলগুলো এখনও ক্ষমতায় আসছে। তথাকথিত বাম ও সেকুলার দলগুলো ইসলামের বিরুদ্ধে লেগে পড়েছে। আওয়ামী লীগ হাতে গোণা ভোটার ও সমর্থন বিহীন ওই দলগুলোর পাল্লায় পড়েছে।
সরকারকে নিয়ে সত্যিই খুব চিন্তা হয়। চারিদিকে বিরুদ্ধবাদী বা বিরোধি শক্তি দেখছে। দেশের উন্নয়নের কথা ভুলে গিয়ে মামলা মোকদ্দমা নিয়ে শুরু থেকেই ব্যস্ত রয়েছে। বংগবন্ধুর অবস্থাও এ রকম হয়ে গিয়েছিল। তাই তিনি মনে করেছিলেন একদল করলে আর সব কাগজ বন্ধ করে দিলে তিনি শান্তিতে দেশ চালাতে পারবেন। সারা জীবন গনতন্ত্রের জন্যে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত তিনি একদলীয় শাসন কায়েম করে একনায়ক হয়ে পড়েছিলেন। একদলীয় শাসনের কু পরামর্শ দিয়েছিল তাঁকে সিবিপি ভারত ও রাশিয়া। বংগবন্ধু মারা যাওয়ার পর তারা সবাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। অশেষ বেদন ও দু:খের কথা হলো তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর লাখ লাখ ভক্ত সবাই পালিয়ে গিয়েছিল। দলের বড় বড় নেতারা প্রায় সবাই খোন্দকার মোশতাকের সাথে কোলাকুলি করেছে। মঈন উদ্দিন আর ফখরুদ্দিনের সরকারের নির্বাচনে ২৬৩ সিট পেয়ে প্রধানমন্ত্রী ভেবেছেন তিনিও একজন সিভিল ডিক্টেটর হয়ে উঠতে পারবেন। আদালতের রায় প্রধানমন্ত্রীকে প্রভাবান্বিত করছেন অথবা প্রধানমন্ত্রী আদালতকে প্রভাবান্বিত করছেন। আদালতও সে্বচ্ছায় বা ইচ্ছায় নানা ধরনের রায় দিয়ে চলেছেন। নিজেরা উজ্জীবীত হয়ে বা নিজেরা আগ বাড়িয়ে অনেক ধরনের মামলা তৈরী করে চলেছেন, যার কোন প্রয়োজনই ছিলনা। গনতান্ত্রিক সরকারকে সব সময় মধ্যপন্থা অবলম্বন করে চলতে হয়। যে কোন বড় ধরনের সংস্কার করতে হলে জাতীয় ঐক্যমতের প্রয়োজন ২৬৩ সিটের জোরে আওয়ামী লীগ সে কথা একেবারেই ভুলে গেছে। দীর্ঘ লড়াই করে বিদেশী শক্তি বৃটিশের কাছ থেকে স্বাধীনতা আদায় করেও মুসলীম লীগ পূর্ব পাকিস্তান থেকে বিদায় নিয়েছে ১৯৫৪ সালে। মুসলীম লীগ এখন ইতিহাসের পাতায়। এর কারণ মুসলীম লীগ নেতাদের সাথে পূর্ব বংগ বা পূর্ব পাকিস্তানের সাধারন মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। বংগবন্ধু জানতেন ৭১ সালে বাংলাদেশ প্রতিস্ঠিত হলেও, বুদ্ধিজীবীরা বুক চেতিয়ে নিজেদের ভারতীয় বাংগালীদের মতো ভাবলেও সাধারন মানূষ মুসলমানই রয়ে গেছে। এদেশের মানুষকে মুসলমানিত্ব ছেড়ে দিয়ে ভারতীয় পৌত্তলিক বাংগালী বানাবার জন্যে এক শ্রেণীর বুদ্ধিজীবীদের কিনে নিয়েছ। যদি তাই হতো তাহলে ৪৭ সালে দেশ ভাগের প্রয়োজন পড়তোনা। হিন্দু বুদ্ধিজীবীরা ১৯০৫ সালে যে বংগদেশকে মা ডাকাডাকি করে কান্নাকাটি করেছে সেই বুদ্ধিজীবীরাই ৪৭ সালে মাকে কেটে দুই ভাগ করেছে। এখন স্বাধীন বাংলাদেশকে নিজেদের তাবে রাখার জন্যে উঠে পড়ে লেগেছে। পশ্চিম বাংলাকে এখন সেখানকার মিডিয়া দিনরাত বাংলাদেশ বলে বলে মুখের ফেনা বের করে ফেলছে। দিল্লী বাংলাদেশকে তাবে রাখার জন্যে পশ্চিম বাংলার বুদ্ধিজীবী ও রাজনীতিকদের ব্যবহার করছে। প্রণব বাবু এলে আমাদের প্রধানমন্ত্রী তাঁকে কাকু কাকু বলতে বলতে একেবারে গলে যান। প্রণব বাবু এ পর্যন্ত যতগুলো ওয়াদা করেছেন তার একটিও রক্ষা করেননি। ভারত বাংলাদেশের ব্যাপারে কি ধরনের ব্যবহার করে বা করছে তা জানার জন্যে আমাদের ব্যবসায়ীদের আলাপ করলেই জানা যায়।
প্রসংগত এখানে অতি পুরাণো প্রাসংগিক বিষয় উল্লেখ করতে চাই। শুনেছি, ১৯৪৮ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহার লাল নেহেরু চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করার প্রস্তাব রেখেছিলেন পাকিস্তানের গভর্ণর জেনারেল জিন্নাহ সাহেবের কাছে। জিন্নাহ সাহেব সাথে সাথেই নেহেরুর প্রস্তাবে রাজী হয়ে গিয়েছিলেন। জিন্নাহ সাহেব নিজেও একটি ছোট্ট প্রস্তাব রেখেছিলেন। সে প্রস্তাব ছিল করাচী বন্দর থেকে চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত করিডোর ব্যবহার করতে দেয়া। জিন্নাহ সাহেবের প্রস্তাবের পর নেহেরুজী আর কখনও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার প্রস্তাব উত্থাপন করেন নি। কিন্তু ভারত কখনই নিজের আদর্শ উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুত হয়নি। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করে। ৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন দান করাও সেই কৌশলেরই একটা অংশ ছিল। ভারত দৃঢভাবে বিশ্বাস করে একদিন এই অঞ্চলে মহাভারত বা প্রাচীন ভারতবর্ষ প্রতিস্ঠিত হবে। বংগবন্ধুর লাহোরে অনুস্ঠিত ওআইসি যাওয়াটা ভারত ভাল চোখে দেখেনি। ইন্দিরা গান্ধী চেয়েছিলেন বাংলাদেশ সেকুলার দেশ হিসাবে ওআইসি সম্মেলনে অংশ গ্রহণ না করুক। ইন্দিরা গান্ধী বংগবন্ধুকে না যাওয়ার জন্যে সরাসরি অনুরোধ জানিয়েছিলেন বলে শুনেছি। ড: কামাল এ বিষয়ে ভাল জানেন। তিনি তখন বাংলাদেশের পররাস্ট্র মন্ত্রী ছিলেন। শুধু এ কারণেই নাকি ভারতের সাথে বংগবন্ধুর সম্পর্কের অবনিতি হয়েছিল। শহীদ জিয়ার সাথেও ভারতের সম্পর্ক ভাল ছিলনা। এ কারণেই শহীদ জিয়া আরব ও মুসলীম বিশ্বের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। শহীদ জিয়া চীনের সাথেও গভীর বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। জেনারেল এরশাদ ক্ষমতা দখল করে বলেছিলেন, তিনি দিল্লীর সাথে কথা বলেই দেশের দায়িত্ব নিয়েছিলে। আওয়ামী লীগের কাগজ বাংলার বাণী বলেছিল, বন্দুকের নলে প্রজাপতি। একটি গুলিও ফুটেনি। এ ফোটা রক্তও ঝরেনি। জেনারেল এরশাদের ক্ষমতা গ্রহণকে আওয়ামী লীগ অভিনন্দিত করেছিল।
আওয়ামী লীগ ও বর্তমান সরকার কেন ক্ষমতায় এসে হঠাত্ করে কোরাণ সুন্নাহর বিরুদ্ধে লেগেছে তার প্রেক্ষিত বলার জন্যেই পেছনের কিছু কথা ও ভারতের প্রভাবের কথা বলেছি। আওয়ামী লীগ এখন ভারতকে করিডোর ট্রানজিট বন্দর দেয়ার জন্যে উঠে পরে লেগেছে। হয়ত আওয়ামী লীগ মনে করে সুদীর্ঘ কাল ক্ষমতায় থাকতে গেলে ভারতকে তুষ্ট করতে হবে। ভারত বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে একটা তাবেদার সরকার চায়। শুধু বাংলাদেশ কেন, তারা শ্রীলংকা, নেপাল, মালদ্বীপ, ভুটান, মায়ানমার, আফগানিস্তানে তাবেদার সরকার দেখতে ও রাখতে চায়। ১/১১র মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিনের সরকার প্রতিস্ঠিত হয়েছিল আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনার জন্যে। ওই সময় ভারত মইনুদ্দিনকে লালগালিচা সম্বর্ধনা দিয়েছিল আর ছয়ট ঘোড়া দিয়েছিল। মইনুদ্দিনের সরকারই বাংলাদেশের ব্যবসা বাণিজ্য ও অর্থনীতিকে ভারত মুখী করে তুলেছি।
পাঠকদের সুবিধার্থে ভারতের শহরবানুর মামলার কথা উল্লেখ করতে চাই। শহরবানু ভারতের একজন বিখ্যাত আইনজীবীর স্ত্রী ছিলেন। তালাকের পর শহরবানু আদালতে খোরপোষের মামলা করেন। নিম্ন আদালত থেকে শুরু করে ভারতের উচ্চ আদালত আজীবন খোরপোষের রায় দিয়েছিলেন। ভারতের মুসলমানেরা এই রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করলে ভারতের পার্লামেন্ট ওই রায় স্থগিত করে দিয়েছিল। কিন্তু ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশ বাংলাদেশে কি ঘটছে? এখানে আদালত ফতোয়ার বিরুদ্ধে রায় দেয়। আজীবন খোরপোষের রায় দেয়। এনজিওরা আদালতের রায়কে সমর্থন করে। এমন কি ড: কামাল, ড: জহির, ব্যারিস্টার আমীরের মতো আইনজীবীরা আদালতকে ভুল পথে পরিচালিত করেন। অথবা আদালতের ভুল ব্যাখ্যা বা রায়কে সমর্থন করেন। নারীনীতির নাম করে সরকার কোরাণ সুন্নাহর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী প্রতিদিন নারীনীতির পক্ষ সাফাই গাইতে গিয়ে অসত্য বলে বেড়াচ্ছেন। তিনি এটাকে রাজনৈতিক ইস্যু বানিয়ে ওলামা মাশায়েকদের গালাগাল করছেন। বিদেশীদের তৈরি করা নারীনীতি বাংলায় অনুবাদ করে বাংলাদেশের মুসলমানদের উপর চাপিয়ে দেয়ার চেস্টা করছেন। ওলামা মাশায়েকদের গালাগাল করে প্রধানমন্ত্রীর কোন লাভে হবেনা। বরং আমি বলবো আওয়ামী নেতা এবং মন্ত্রীরা নারীনীতি নিয়েরাজনীতি করছেন এবং প্রতিদিন অসত্য ভাষণ দিচ্ছেন। আমি দায়িত্ব নিয়েই বলছি, নারীনীতি এ দেশের জনগণের মানে মুসলমানদের বিশ্বাস আকীদা ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে। এই নীতি জোর করে বাস্তবায়িত করে আওয়ামী লীগের কোন উপকার হবেনা। উপকার হবে গুটি কতক মুসলমান নামধারী মোনাফেকের। যারা মুসলমানের ভিতর থেকে কোরাণ ও সুন্নাহর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এরা সেকুলার ও উচ্চ শিক্ষিত। এদের সামাজিক অবস্থানও খুব ভাল। এদের সংখ্যা একেবারেই হাতে গোণা। এদের পিছনে রয়েছে পশ্চিমা কিছু শক্তি। এরাই বাংলাদেশে ধর্মহীন শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে চায়। এরা সংস্কারের নামে কোরাণ সুন্নাহর পরিবর্তন চায়। এরা কিন্তু প্রাচীন হিন্দু ধর্ম, জুডা ইজম, খৃস্টধর্মের সংসকার চায়না। এই এক্যবদ্ধ চক্রের প্রধান টার্গেট ইসলাম। আওয়ামী লীগ ও চলমান সরকার জেনে হোক আর না জেনে হোক ওই ইসলাম বিরোধী চক্রের খপ্পরে পড়েছে।সম্প্রতি উচ্চ আদালতে দেশের খ্যাতিমান পাঁচজন মুফতী ও আলেম বলেছেন, ফতোয়া নিষিদ্ধ হলে ইসলাম নিষিদ্ধ হয়ে যাবে। তাঁরা বলেছেন, মুসলমানদের অস্তিত্বের সাথে ফতোয়া জড়িত। ফতোয়া পবিত্র কোরাণের স্বীকৃত বিষয়। পবিত্র কোরাণকে জানার বুঝার জন্যে ফতোয়ার চর্চা অপরিহার্য। ইসলামের শুরু থেকেই ফতোয়ার চর্চা অব্যাহত আছে। আদালত রায় দিয়ে ফতোয়া বন্ধ করতে পারেনা।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন মনোনীত পাঁচজন মুফতী ছিলেন, মুফতী কেফায়েত উল্লাহ,মুফতী রুহুল আমিন,মুফতী মিজানুর রহমান, মুফতী কফিল উদ্দিন সরকার ও ড: আবদুল্লাহ। মুফতী রু্হুল আমিন বলেছেন, ইসলামকে মানতে হলে আগে জানতে হবে।ইসলাম সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করতে হবে মুফতী কেফায়েত উল্লাহ বলেছেন, ফতোয়া বন্ধ হলে ইসলাম নিষিদ্ধ হয়ে যাবে। ফতোয়া হলো ইসলামী বিধি বিধানের প্রকাশ মাত্র। আইনের সাথে ফতোয়া কখনই সাংঘর্ষিক নয়।যিনি মুফতী তিনি কখনই কাউকে কিছু মানতে বাধ্য করেন না।আিনের সীমাবদ্ধতা আছে, কিন্তু ফতোয়ার কোন সীমাবদ্ধতা নেই। ফতোয়া জীবনের সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য। একজন মুসলমানের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত ফতোয়া প্রযোজ্য। মুফতী কফিল উদ্দিন বলেছেন, ইসলামের শুরু থেকেই ফতোয়া জারী রয়েছে। আল্লাহর রাসুল(সা) নিজেই ফতোয়াকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। মুফতি মিজানুর রহমান বলেছে, কোরাণ সুন্নাহ ইজমা কিয়াস এই চারটি হলো ফতোয়ার ভিত্তি। প্রশ্ন হলো বাংলাদেশের মুসলমানেরা কার কথা মানবে? না ইসলামী আইনে অজ্ঞ বিদেশী আইনের আদালত ও আইনজীবীদের মানবে?( নয়া দিগন্ত, ২৯ এপ্রিল,২০১১)
লেখক: কবি সাংবাদিক ও ঔপন্যাসিক