হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবী ইতোমধ্যেই সরকারের মথা গরম করে দিয়েছে। তাই ১৩ দফায় বর্ণিত নারী বিষয়ক দফা নিয়ে সরকার, সরকারী দল, সরকারী জোট, এনজিও,প্রগতিশীল নারী সমাজ ও তথাকথিত সেক্যুলারিস্টরা(ধর্মহীনরা) ঘেউ ঘেউ করতে শুরু করে দিয়েছেন। নারীনীতি যেমন তাঁরা কেউ পরেননি তেমনি ১৩ দফাও কেউ পড়েননি। চিলে কান নেয়ার গল্পের মতোই। তথকথিত আধুনিক,প্রগতিশীল শিক্ষিত আরবী নামধারী নারীরাতো ইসলামের নিয়ম নীতি, আইন কানুনের ধার ধারেননা। হেফাজতের নেতারা তাঁদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে চলেছেন। কিন্তু কে শুনে কার কথা। হেফাজতের শক্তিশালী লংমার্চ ও মহা সমাবেশ দেখে সরকার সহ সেক্যুলারিস্টদের( ধর্মহীনদের মাথা একেবারেই খারাপ হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের ধর্মহীন সাধারন সম্পাদক আশরাফ সাহেব( সৈয়দ লিখলামনা, কারণ,সৈয়দ শব্দের সাথে আল্লাহর রাসুলের(সা)) ইতোমধ্যেই আবিষ্কার করেছেন লংমার্চের মাধ্যমে বিএনপি সরকার উত্খাতের চেস্টা করেছে। যাহোক, এখন আর রাজনীতির দিকে যেতে চাইনা। ১১ এপ্রিল সকালে দেশের একমাত্র সাহসী সম্পাদক আমার দেশের মাহমুদুর রহমান সাহেবকে গ্রেফতার করে ১৩ দিনের ধোলাইয়ের জন্যে নেয়া হয়েছে। এর আগেও তাঁকে এরকম ধোলাই দেয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত একজন সম্পাদকও এ ব্যাপারে মুখ খোলেননি। তিনি নাকি ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করেছেন। তিনি নাকি সাইবার ক্রাইম করেছেন। আসল ঘটনা হলো আমার দেশ গত কয়েক মাসে জনগণের পক্ষে খুবই শক্তিশালী অবস্থান নিয়ে বশংবদ কাগজ গুলোকে বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে। ইসলামের বিরুদ্ধের শক্তির ভিত নাড়িয়ে দিয়েছেন মাহমুদুর রহমান। মাহমুদুর রহমান এমনিতেই কয়েক মাস ধরে গৃহবন্দী ছিলেন। এখন তিনি সরকারী দমননীতির হেফাজতে গেলেন। আল্লাহপাক তাঁকে হেফাজত করবেন তাঁর ওয়াদা মোতাবেক। আল্লাহপাক সব সময়েই মজলুমের পক্ষে থাকেন।
নারীনীতি নিয়ে গত বছর অনেক কথা হয়েছে। এখন হেফাজতের আন্দোলনের মাধ্যমে বিষয়টি আবার সামনে এসে গেছে।খসড়া নীতিটি আমি কয়েকবার পড়েছি এবং এর সারমর্ম বুঝার চেস্টা করেছি। একথা সত্যি যে এই নীতির কোথাও ইসলাম নামক কোন শব্দ নেই। সেদিক থেকে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর মন্ত্রীরা সত্য বয়ান করছেন। বিশ্ব নারী সম্মেলনে এ যাবত যে সব সিদ্ধান্ত হয়েছে তারই একটি সারাংশ হচ্ছে এই নারীনীতি। আমি সবাইকে অনুরোধ করবো বিশ্ব নারী সম্মেলনে এ যাবত গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো সংগ্রহ করে পড়ার জন্যে। পশ্চিমা ধ্যান ধারনা ও দর্শনকে মাথায় রেখে এই নীতি তৈরী করা হয়েছে। বাংলাদেশের আমলারা তা হুবহু তরজমা/অনুবাদ করে সরকারের কাছে পেশ করেছেন। বিশ্ব নারী সম্মেলনে আমাদের সরকার বা রাস্ট্রকে যারা প্রতিনিধিত্ব করেন তাঁরা সম্মেলনের ড্রাফটগুলো ভাল করে কখনই পড়েন না। মালয়েশিয়া চীন সহ আরও বহুদেশ এই নারীনীতিকে হুবহু গ্রহন করেনি। কারণ প্রত্যেক দেশ ও জাতির নিজস্ব সমাজ সংস্কৃতি দর্শন ও ঐতিহ্য রয়েছে। পৃথিবীর সব নারীই মানুষ। কিন্তু সব নারীর জীবন দর্শন এক নয়। সব মানুষ এক পিতার সন্তান। কিন্তু দেশ কাল পাত্র ভেদে তাদের অবস্থানও এক নয়। তাই তারা বিভিন্ন জাতি গোত্র সংস্কৃতি ভাষা ও বর্ণে বিভক্ত। ভৌগলিক ভাবেও তারা আলাদা। আমাদের সন্তান বা রক্ত যারা নানা কারণে বিদেশে বড় হচ্ছে বা হয়েছে তাদের সাথেও ইতোমধ্যে আমাদের চিন্তা চেতনা ও ভাবনায় অনেক ফারাক তৈরী হয়েছে। এটাই স্বাভাবিক ও প্রকৃতির নিয়ম।
মানুষ নারী হোক বা নর হোক তার জন্যে শিক্ষা অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আমরা মানে বাংলাদেশের নরনারীরা এখনও ব্যাপক ভাবে অশিক্ষার অন্ধকারে ডুবে আছি। শিক্ষার আলো থাকলে নারীনীতিরও প্রয়োজন হতোনা। গরীব ও অশিক্ষিত নারীর কাছে নারীনীতির কোন গুরুত্ব নেই। তার উপরে রয়েছে অমানবিক দারিদ্র। অশিক্ষা এবং দারিদ্র একটি অভিশাপ এবং এই অবস্থা মানুষকে মানবেতর অবস্থায় নিপতিত করে। মানুষকে হীন অবস্থা থেকে উন্নত অবস্থায় পৌঁছে দেয়ার জন্যে স্বয়ং আল্লাহপাক যুগে যুগে বার বার নবী রাসুল জ্ঞাণী গুনী পাঠিয়েছেন। তাঁরা মানূসের মুক্তির কথা বলে গেছেন। ইসলাম শিক্ষাকে নরনারীর জন্যে অবশ্য কর্তব্য বা ফরজ করে দিয়েছে। বাংলাদেশে ৯০ ভাগ মানুষ ইসলামধর্মে বিশ্বাসী মুসলমান। তবুও এখানে সীমাহীন দারিদ্র ও অশিক্ষা। কারণ এ দেশের মানুষ সঠিক মুসলমান হিসাবে গড়ে উঠেনি। আমরা এখনও সামাজিক ভাবে শোষণে বিশ্বাস করি। দূর্বলের উপর সবলের অত্যাচার অব্যাহত আছে। আমাদের সমাজে সবল ক্ষমতাবান ও প্রভাবশালীরা দূর্বল নারী ও নরের উপর নির্যাতন করে। আবার কিছু পুরুষ শারীরিক দূর্বলতার কারণে নারীদের উপর অত্যাচার করে। তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে। ইসলামে মায়ের মর্যাদার কথা বার বার বলা হয়েছে। বলা হয়েছে মায়ের পায়ের তলায় সন্তানের বেহেশত। বলা হয়নি মায়ের পায়ের তলায় ছেলের বেহেশত। এর মানে সন্তান ছেলে হোক আর মেয়ে হোক, মায়ের খেদমত করলেই সে আল্লাহর কাছে থেকে পুরুস্কৃত হবে। আল্লাহর রাসুল(সা) বলেছেন, স্ত্রীর সাথে যিনি বিনয়ের সাথে ব্যবহার করেন তিনিই ভদ্রলোক। তিনি বলেছেন, যে পিতা তার কন্যার বিয়ের ব্যবস্থা করবে তার জন্যে এক হজ্বের সওয়াব বা পূণ্য বরাদ্দ করা হয়েছে। আল্লাহপাকের মর্যাদার পরেই জগতে মায়ের মর্যাদা নির্ধারিত করা হয়েছে।মা বাবার খেদমত করার জন্যে বার বার তাগিদ দেয়া হয়েছে। কোরান এবং ইসলাম সম্পর্কে আমাদের দেশের ইংরেজী শিক্ষিত সবজান্তা মানুষের তেমন কোন জ্ঞান নেই। এ জ্ঞান না থাকলেও এ দেশে রাস্ট্রের এবং সরকারের সর্বোচ্চ পদে আসীন হতে কোন অসুবিধা হয়না। ফলে আদালত বা সচিবালয়ে কোরাণিক আইনের বিরুদ্ধে মত বা সিদ্ধান্ত দিতে কোন বাধা নেই। ফতোয়া সম্পর্কে এখনও আদালত মন্তব্য করতে দ্বিধা করেনা। ফতোয়ার বিরুদ্ধে আদালতে দাঁড়াতে ড: কামালের মতো জ্ঞানী আইনজীবীদের কোন অসুবিধা হয়না। কারণ ,ড.কামালের কোরাণিক আইনের কোন জ্ঞান নাই।
বেশ কিছুদিন আগে সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি ছাপানো আহবান মসজিদে মসজিদে বিতরন করা হয়েছে। ওই আহবানের একটি কপি আমার হাতেও এসেছে। অবাক ও বিস্ময়ের বিষয় হচ্ছে ওই লিফলেট প্রয়োজনীয় কথাগুলো খোলাসা করে বলা হয়নি বা জনগণকে ধোকা দেয়ার জন্যে বলা হয়নি। নারীনীতির ২৩.৫ ও ২৫.২ ধারায় বর্ণিত বিষয়টি স্পস্ট নয়।যেহেতু জনমনে বা আলেম সমাজের মনে এ বিষয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে সেহেতু সরকারের উচিত ছিল আলেম সমাজের সাথে বসে আলোচনার মাধ্যমে সন্দেহ বা বিভ্রান্তি দূর করা। অবাক লাগছে যে,সরকার তা না করে সংঘর্ষের দিকে এগিয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, হরতালের দিন কোরাণের অবমাননা হলে আন্দোলনের নেতারা দায়ী থাকবেন। পুলিশ কমিশনার বলেছেন, জন জীবনের নিরাপত্তা রক্ষার জন্যে সবকিছু কঠের হস্তে দমন করা হবে। তিনি অবশ্য সব সময় এভাবে কথা বলেন। দমনের ভাষাই তাঁর ভাষা। নারীনীতির সহজ সরল ব্যাখ্যা না দিয়ে সরকার আন্দোলন দমনের পথ বেছে নিয়েছে। শুধু উপরে বর্ণিত ধারা নয়, নারীনীতিতে আরও বহু আবছা ও অস্পস্ট ধারা রয়েছে। বর্ণিত দুই ধারায় বলা হয়েছে; ‘‘সম্পদ, কর্ম সংস্থান, বাজার ও ব্যবসায় নারীকে সমান সুযোগ ও অংশীদারিত্ব দেয়া।’’ ‘‘উপার্জন, উত্তরাধিকার,ঋণ, ভুমি এবং বাজার ব্যাবস্থাপনার মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের ক্ষেত্রে নারীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের পূর্ণ অধিকার প্রদান করা।’’
এখন প্রশ্ন হলো, কোন সম্পদ বা কোন বাজার ও ব্যবসা? কার ব্যবসা? পিতার ব্যবসা না স্বামীর ব্যবসা? নারীর নিজের ব্যবসা বা সম্পদে ইসলাম একশ’ভাগ নিরংকুশ অধিকার দিয়েছে। সরকারের উচিত সে অধিকার বাস্তবায়নের জন্যে আইন করা। ইসলাম সম্পদের মালিকানা ও হিস্যা বন্টনের ব্যাপারে সুস্পস্ট ঘোষণা দিয়েছে। সেখানে কোন অস্পস্টতা নেই। একজন নারী জীবনের শুরুতেই নগদ মোহর পেয়ে থাকেন। স্বামীকে বিয়ের কাবিন নিবন্ধন করার আগেই মোহর শোধ করতে হবে। মিলিত হবার আগে মোহর পরিশোধ না করা আইনত বেআইনী। মোহর আদায়ের জন্যে আমাদের প্রগতিশীল আধুনিক শিক্ষিতা নারীরা কোন আন্দোলন করছেননা। প্রাপ্ত মোহর ব্যবস্থাপনার পূর্ণ অধিকার নারীর। পিতার কাছ থেকে পাওয়া নগদ স্থাবর অস্থাবর সম্পদের উপর নারীর অধিকার একশ’ ভাগ। এখানে স্বামী বা তার পরিবারের কারো হস্তক্ষেপ বেআইনী। নারী যদি কর্মজীবী হন তা্হলে তাঁর অর্জিত আয় বা মুনাফার উপর স্বামীর কোন অধিকার নেই। কিন্তু স্বামীর সকল সম্পদের উপর নারী বা স্ত্রীর অধিকার রয়েছে। নারী বা স্ত্রীকে সম্মানজনক ভরণ পোষন ও হাত খরচ দেওয়া স্বামীর আইনগত কর্তব্য। এই কর্তব্য অবহেলা করলে বা লংগন স্বামী আইনের চোখে অপরাধী হবেন। কন্যা বা কনেকে বিয়ে দেয়ার সময় যাবতীয় খরচ বা ব্যয় বহন করবেন পিতা বা পিতার অনুপস্থিতিতে মা অথবা ভাইয়েরা। কিন্তু ভাইয়ের বিয়েতে বিবাহিত বোনের কোন দায়িত্ব নেই। পিতার অনুপস্থিতিতে সংসারের যাবতীয় ব্যয় বহনের দায়িত্ব বড়ছেলে বা বড় ভাইয়ের। কোন বোনের নয়। এমন কি পিতার অমতে স্বেচ্ছায় যদি কোন ছেলে বা মেয়ে বিয়ে করে তাহলেও ইসলামী শরিয়ত বা ফারায়েজ অনুযায়ী ছেলে বা মেয়ে সম্পদের উত্তরাধিকার হারায়না বা বঞ্চিত হয়না।নারীনীতির ২৫.২ ধারায় যা বলা হয়েছে তাতে কারো আপত্তি থাকার কথা নয়। আগেই বলেছি বিবাহিত নারীর নিজের সকল প্রকার সম্পদের উপর পূর্ণ কর্তৃত্বের ইসলামী আইনগত অধিকার রয়েছে। এখানে স্বামী পিতা বা ভাইদের কোন ধরনের হস্তক্ষেপ করার অধিকার নেই। নারীনীতির অন্ধ সমর্থকরা এই নীতির গভীরে প্রবেশ করেননি। এই নীতির অস্পস্টতার কারণে কোরাণ ও হাদিসের সাথে সাংঘর্ষিক হয়ে উঠতে পারে। ওলামা মাশায়েকগণ যেখানে বা যে ধারায় সন্দেহ প্রকাশ করছেন তা পরিস্কার করে ব্যাখ্যা করলেই সমস্যার সমাধান হয়ে। কিন্তু তা করছেন না। প্রচারিত লিফলেটে সামান্য কিছু ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। লিফলেটের কথা গুলো নীতিতে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। লিফলেটে আরও বলা হয়েছে নারীনীতি কোন আইন নয়। দেশের সর্বোচ্চ আইন হচ্ছে সংবিধান। মুসলমানদের জীবনে কতগুলো আইন আছে যা কোরাণ ও হাদিসের আলেকে পরিচালিত। সংবিধান কোরাণিক আইন ও রাসুলের(সা) ব্যাখ্যার উর্ধে নয়। এমন কি বাংলাদেশের জাতীয় সংসদও কোরাণিক আইনের বিরুদ্ধে কোন আইন করতে পারেনা।
Convention on Elimination of All forms of Discrimination Against Women(CEDAW-সিডো ) হচ্ছে প্রস্তাবিত নারীনীতির আদর্শ ও উদ্দেশ্য। যা রচিত হয়েছে পশ্চিমী ভাবধারা থেকে। তাই ‘সিডো’র আদর্শ ও সূদুর প্রসারী লক্ষ্য হচ্ছে ইসলামের পারিবারিক আইনগুলোকে ভেংগে ফেলা। সেই চোরাবালিতে পা দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। নারীনীতির সর্বশেষ ৫২ ধারায় বিদেশী সাহায্য ও সহযোগিতা লাভের আকাংখাও রয়েছে। এতে অবশ্য আমলাদের উপকার হয়। বিদেশী টাকা খরচ করতে আরাম লাগে। নানা সেমিনার সিম্পোজিয়ামের কথা বলে বিদেশ ভ্রমন করে প্রাণভরে শপিং করা যায়। আমাদের মতো দেশগুলোকে সিডো বাস্বায়নের জন্যে ইতোমধ্যেই ‘জাতিসংঘ-নারী’ নামে একটি সংস্থা খোলা হয়েছে। সেখানে টাকা পয়সা রাখা হয়েছে। নারীনীতির ৫০.৬ ধারায় সুস্পস্ট করে বলা হয়েছে নারীনীতি বাস্তবায়নের জন্যে আন্তর্জাতিক উত্স থেকে নতুন ও অতিরিক্ত আর্থিক সহযোগিতা প্রাপ্তির উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সিডো বাস্তবায়ন না করলে বিদেশী অর্থ পাওয়া যাবেনা।
সিডো’তো যে সব বিষয় অন্তর্ভুক্ত তা যোলয়ানাই আমাদের দেশের ইতিহাস ঐতিহ্যের বিপরীতমুখী। আমাদের এই ঐতিহ্য হাজার বছরের। আমাদের রয়েছে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও একটা সংবেদনশীল মন। আমাদের পরিবার গুলো কখনই পশ্চিমী পারিবারিক ঐতিহ্যের মতো নয়। আমরা পরিবারকে সম্মান করি এবং সকল অবস্থায় পারিবারিক বন্ধনকে কঠোর ভাবে টিকিয়ে রাখতে চাই। পশ্চিমে সন্তানদের বয়স ১৮ পেরিয়ে গেলে তারা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বাবা মা আর দায়িত্ব গ্রহণ করেনা। সে সব দেশে পারিবারিক বন্ধন বহু আগেই ভেংগে গেছে। সেখানে পিতার পরিচয় নেই ৬০/৭০ ভাগ সন্তানের। সেদেশে স্কুল গুলোতে কুমারী মায়ের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। সেখানে পরিবার নামক প্রতিস্ঠানটি ধ্বংস হতে চলেছে। বিয়ে নামক বিষয়টি এখন ইতিহাসের পাতায় স্থান নিতে চলেছে। লিভ টুগেদার দিনদিন বেড়েই চলেছে। সমকামীতা বেড়ে চলেছে। সমকামীদের বিয়ের আইন পাশ হচ্ছে। এসব দেশের মানুষেরাই সিডো তৈরী করেছে। আমরা না বুঝেই ওসব কনভেনশনে দস্তখত করে এসেছি। প্রস্তাবিত নারীনীতিতে সরকার হয়ত বুঝে অথবা না বুঝে সিডো’র অনেক বিষয় অন্তর্ভুক্ত করেছে। সরকার দেশের আলেম সমাজকে অজ্ঞ ও অশিক্ষিত মনে করেই নারীনীতি পাশ করার চেস্টা করছে। আমি নিশ্চিত করেই বলতে পারি সরকার পশ্চিমা নীতি নৈতিকতাহীন প্রপাগান্ডার শিকারে পরিণত হয়েছে। সরকার যদি এ ব্যাপারে কুটিলতার আশ্রয় না নিয়ে সরলতার পরিচয় দিলে সমস্যার সমাধান করা যেতো। সরকার পাকিস্তান আমলের স্বেচ্ছাচারী শাসকদের মতোই ব্যবহার করছে আর আলেমদের গালাগালি করছে। কিছু তথাকথিত নারীনেত্রী ও মুসলমান নামধারী পুরুষ না বুঝে সরকারের গোঁড়ামীকে সমর্থন করে যাচ্ছে। হয়ত অনেকেই নারীনীতি ও সিডো কনভেনশনের লশ্য কি তা পড়েননি। নারী নীতির ৩৪.৯ ধারায় পরিবার পরিকল্পনার কথা বলতে গিয়ে বলা হয়েছে ‘ সন্তান গ্রহণের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে পুরুষ ও নারীর সমান অধিকার থাকবে’। এ বিষয়টা আমাদের দেশের ও সমাজের ঐতিহ্য সংস্কৃতি মূল্যবোধ পরিপন্থী। এ যাবত কোন নারী আদালতে গিয়ে বলেনি যে, আমার স্বামী আমাকে জোর করে সন্তান উত্পাদনে বাধ্য করেছে। তাহলে নীতিতে একথা অন্তর্ভুক্ত করার উদ্দেশ্য কি? সিডো থেকে বাক্যটি নারীনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পশ্চিমে এসব ঘটনা অহরহ হচ্ছে। যখন এই কলাম লিখছি তখনি দেখলাম নিউইয়র্কে ইকোয়াল ম্যারেজের দাবী জোরদার হচ্ছে। ইকোয়াল ম্যারেজ মানে সম বিবাহ। গে অথবা লেসবিয়ান ম্যারেজ। যারা এসবে বিশ্বাস করে তারাই সিডো তৈরী করেছে। আর আমরা না জেনে তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছি। দেশবাসীকে অশিক্ষিত অজ্ঞ মনে করে সরকার এবং তার দলীয় লোকেরা নারীনীতি নিয়ে মিথ্যা কথা বলে চলেছে।
বাংলাদেশে ৯০ ভাগ বিয়ে নিবন্ধিত হয় মুসলিম বিবাহ আইন মোতাবেক। গ্রামে বা গরীব মানুষের ভিতর এখনও বিয়ে নিবন্ধনের বীসয়টা ষোলয়ানা বাস্তবায়ন করা যায়নি। নারী পুরুষের বিয়েকে আইন সিদ্ধ করার জন্যে কাবিন নামা তৈরী হয়। সাধারনত কাবিন নামা সরকারী অনুমোদনক্রমে ছাপানো থাকে। ষিনি বিয়ে নিবন্ধন করেন তাঁকে ম্যারেজ রেজিস্ট্রার বা কাজী বলা হয়। সরকারের আইন মন্ত্রণালয় কাজী সাহেবদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন। কাজী সাহেবের যোগ্যতা মাদ্রাসার উচ্চ শিক্ষা। কাবিনের সকল শর্ত মেনে নিয়েই পুরুষকে কাবিনে স্বাক্ষর করতে হয়। কাবিনের শর্ত মোতাবেক নারীকে সংসার পরিচালনায় কোন দায়িত্ব নিতে হয়না। সংসারের সকল দায়িত্ব পুরুষের। বিয়ের কাবিনে মোহরের কথা উল্লেখ করতে হয়। এই মোহর নগদে নারীর তাত্ক্ষনিক পাওনা। পুরুষকে কাবিন নিবন্ধনের সাথে সাথেই এই মোহর শোধ করতে হয়। এরপর রয়েছে কন্যাকে যৌতুক বা উপহার দিয়ে সাজিয়ে দেয়া পুরুষের দায়িত্ব। বিবাহিত জীবনে নারীর খোরপোষের দায়িত্ব পুরুষের। সংসারের সকল আর্থিক দায়িত্ব এখনও পুরুষের। সার্বিকভাবে সংসার পরিচালনায় সম অধিকার নিয়ে নারীরা এখনও কোন বক্তব্য পেশ করেননি। উচ্চ শিক্ষিত নারীরাও ওই কাবিন মোতাবেক বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন।ইসলামী শরীয়া ও আইন মোতাবেক পুরষকেই সংসার পরিচালনা করতে হয়। নারী পুরুষ যারাই মনে করেন ইসলামের শরীয়া আইন বা সম্পদ বন্টনের আইন তাদের পছন্দ নয় তারাই সিডো ও নারীনীতি প্রণয়ন করেছেন। সত্যি কথা হলো সরকারী নীতি বাস্তবায়িত হলে আগামী ২০/২৫ বছরে বাংলাদেশের সংসার গুলো ভেংগে চুরমার হয়ে যাবে। পরিবার ব্যবস্থা আর থাকবেনা। অবাধ মেলামেশা মানে লিভিং টুগেদার বেড়ে যাবে।( নয়া দিগন্ত, ১৬ এপ্রিল,২০১১) বৈশাখ ৩, ১৪১৮ বাংলা
লেখক: কবি সাংবাদিক ও ঔপন্যাসিক
pleasse send me one copy or link for knowing the nariniti.
Thanks. Please visit http://www.unwomen.org and find out your questions.
sar apnar lekha pore valo laglo. sotto fotie tolon ekdin fol paben insha allah
thanks sir,i want to know more about the topics.can you give me a link where i find about it much more.
Would you kindly visit the website of UN Woman. I am sure you will get a lot of info on the issue. Please also read CEDAW Charter.