বাংলাদেশের কোন সরকারই রাজধানীর যাত্রী পরিবহন ও যাতায়ার ব্যবস্থায় যে অরাজকতা বিরাজ করছে তার কোন প্রকার সুরাহা বা সমাধান খুঁজে বের করতে পারেননি। আমাদের এই ঢাকা একটি বনেদী শহর। মোগল আমলেই ঢাকা সুবেহ বাংলার রাজদানীর মর্যাদা পায়। লন্ডনের চেয়ে ও বহয় পুরাণো শহর। খুবই বেদনার বিষয় এই যে ৪০ বছরে কোন সরকারই সমস্যাটি সমাধানে তেমন কোন উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহন করেনি। কিন্তু ইতোমধ্যেই শহরটা বাস করার অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
এটা কয়েক বছর আগের লেখা। এখন মানে ২০১১ সালের শুরুতে আর আগের সেই দৃশ্য নেই। ১৬ ই জানুয়ারী থেকে সরকার সিএনজি চালিত থ্রি হুইলার বা অটো রিকসার মালিক আর চালকের আয় কি হারে হবে তা সরকার নির্ধারন করে দিয়েছেন। নতুন ব্যবস্থা অনুযায়ী মিটারও লাগানো হয়েছে।কিন্তু প্রথম দিনে বেশ কিছু চালক মিটারের ভাড়া মানতে চাইলনা। মিটারে যেখানে ৭০/৮০ ভাড়া উঠবে সেখানে চালক চাইছে ১৫০ টাকা।কেন ভাই? উত্তর এলো মালিক আগের জমা ৭/৮শ’ টাকা চাইছে। মালিক মানলে আমরাও মানবো। ট্রাফিক পুলিশও রাস্তায় ছিল খুব কড়াভাবে। অনেক চালককে জরিমানা করেছে। অনেকের গাড়ি তুলে নিয়ে গেছে।যাত্রিরাও খুশী। সিএনজি চালকদের নিয়ন্ত্রন করা দরকার। এটা সব যাত্রির দাবী। চার পাঁচ বছর পর আবার এ বিষয়ে লিখতে হবে ভাবিনি।
চার পাঁচ বছর আগে রাজধানীতে ৪০ হাজার পেট্রোল চালিত অটো ছিল। তখনকার সরকার বা যোগাযোগ মন্ত্রী ভাবলেন, তেলের দাম বেশী,তাই গ্যাস চালিত অটো চালু করার দরকার। কিন্তু অটোর লাইসেন্স ইস্যু করবেন মন্ত্রী মহোদয় স্বয়ং।। কিন্তু রাজধানীতে এখন ৪০ হাজার অটোর পরিবর্তে মাত্র ১৩ হাজার অটো আছে। বলা হয়েছিল যাত্রিদের সুবিধার্থে কয়েকশ’ আধুনিক বাস চালু করা হবে। কিন্তু তা চালু করা হয়নি। এদিকে রাজধানীতে এ কয়েক বছরে যাত্রি সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। বিএনপি সরকার পেরিয়ে সিভিল পোষাকে সামরিক সরকার এসেছিল। এখন চলছে আওয়ামী লীগের সরকার। কিন্তু রাজধানীর যাতায়াত ব্যবস্থার কোন উন্নতি হয়নি। যাত্রিদের দূর্ভোগ কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। চার পাঁচ বছর আগে ধানমন্ডি থেকে প্রেসক্লাবে যেতে মিটার ছাড়া ৪০/৫০ টাকা চাইতো। মিটারে ভাড়া হতো ৩৫/৪০ টাকা। তারপরে বাড়তেই শুরু করলো। ৫০টাকার পর ৬০/৭০ টাকা। গত কয়েক মাস ধরে চাইছে ১২০টাকা থেকে দেড়শ’ টাকা। নতুন ব্যবস্থা চালু হবার পর চালকরাও নতু কথা বলতে শুরু করেছেন। কি হলো ভাই, মিটারে যেতে চাইছেন না কেন? স্যার নতুন ভাড়া ও নতুন মিটার চালু হয়েছে। বাকি সবতো পুরাণো রয়ে গেছে। পুলিশ আর মাস্তানদের তোলাতো বন্ধ হয়নি। নতুন গাড়ি নামাতে গেলে সব ঘাটেই বখরা দিতে হবে। চালক লাইসেন্স চাইতে গেলে দুই নম্বরটা পাওয়া যায়। এক নম্বর পেতে বহুদিন লেগে যায়। সালামি কয়েক হাজার টাকা। তাই আমরা দুই নম্বরি দিয়ে চালাই।