শহীদ জিয়ার ভাংগা সুটকেস ছেঁড়া গেঞ্জী ও অন্যান্য
‘তোমরা তাদের উপাস্যকে গালি দিওনা। ওরা রেগে গিয়ে তোমার আল্লাহকে গালি দিবে।’ এটা আমার মালিক আল্লাহপাকের কথা। আওয়ামী লীগকে কখনই গালি দিবেন না বা মন্দ বলবেন না। তাহলে ওরা যে ভাষায় কথা বলবে তার উত্তর দেয়ার জন্যে আপনার কাছে কোন শব্দ থাকবেনা। আমাদের ছাত্র জীবনে বহু ছাত্রলীগ নেতা আমার বন্ধু ছিল। এক সাথে আড্ডা দিয়েছি। নানা বিষয়ে মত বিনিময় করেছি।কখনও রাগারাগি বা হাতাহাতি হয়নি। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কিমিটির অনেকের সাথে আমার বন্ধুত্ব ছিল। তাঁরা সবাই ছিলেন পরশীলিত ও পরিমিতি বোধ সম্পন্ন। অনেকের প্রচুর লেখাপড়া ও জ্ঞান ছিল। এদের কেউই দলের প্রথম কাতারে আসতে পারেনি। শেষাবধি অনেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না।আমার শহর ফেণীতে সর্বজন শ্রদ্ধেয় নেতা ছিলেন খাজা সাহেব। আমি তাঁকে ফেণীর রাজা বলতাম। নোয়াখালী জেলার সব আওয়ামী লীগ নেতা তাঁকে সম্মান করতেন। বংগবন্ধুকেও দেখেছি তাঁকে সম্মান দিয়ে কথা বলতে। তালেব আলী সাহেবকে আমরাই রাজনীতিতে নিয়ে এসেছিলাম।কয়েকবার জাতীয় সংসদের সদস্য হয়েছেন। সময় ও মূল্যবোধের পরিবর্তনে তিনি নমিনেশন পান না। এখনও জীবিত আছেন, কিন্তু রাজনীতিতে নেই। এখন নাকি ও রকম সত্ মানুষের রাজনীতিতে প্রয়োজন নেই।
বাংলাদেশের নেতিবাচক রাজনীতির কথা বলে ও লিখে শেষ করা যাবেনা। সর্বত্রই চলছে বিরাট হতাশা। যাদের কাছে টাকা আছে শুধু তারাই রাজনীতি করবে।যাদের অস্ত্র আছে তারা রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করবে। ধনীরা টাকা দিয়ে তাদের বেতনভুক তাবেদারদের নির্বাচনে জয়ী করে সংসদে নিয়ে আসবে। দুয়েকজন ভাল মানুষ নির্বাচিত হলেও তাদের কোন পাত্তা নেই। বর্তমান কেবিনেটে সিনিয়র অভিজ্ঞ রাজনীতিকদের কোন স্থান হয়নি। হয়ত নির্বাচনের আগেই বিষয়টা নির্ধারিত হয়েছিল। তাই এখন অনেক নতুন মুখ এসে গেছে। প্রধানমন্ত্রী ভাল করেই জানেন ওই অজানা অচেনা মন্ত্রীদের কি দাম এবং তারা কোথা থেকে এসেছেন। কয়েকজন প্রতিমন্ত্রী আছেন যাদের প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেছেন বিরোধীদলের বিরুদ্ধে খেউর খিস্তি করার জন্যে। নিকট অতীতের মুখ খিস্তির করার কথা না হয় উল্লেখ করলামনা।
কিন্তু ক’দিন আগে খালেদা জিয়াকে তার ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে উচ্ছেদের ব্যাপারে দেশবাসী একটা মেগা সিরিয়ালের নাটক দেখেছেন। সবচে বেশী নাটকীয়তা করেছেন আইএসপিআর কর্তৃপক্ষ। বহুদিন পর আমরা আইএসপিআর এর কার্যকলাপ দেখতে পেলাম। একেবারেই রাজনৈতিক ভূমিকায়। জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতার বিরুদ্ধে। একদিনের ভিতরই পরিচালক সাহেবকে কয়েকবার দেখা গিয়েছে।এর আগে আইএসপিআরকে এ ধরনের ভুমিকায় দেখা যায়নি। তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তানকে আক্রমন করার পর ২৫শে মার্চ গভীর রাতে অবজারভার হাউজে আইএসপিআর এর দুই কর্তাকে দেখেছি মিথা্ নাটকে অভিনয় করতে। একজন ছিলেন ব্রিগেডিয়ার কাশেম ও অপরজন ছিলেন মেজর সালেক। আপনারা অনেকেই মেজর সালেককে চিনেন। ৭১ সালের পাকিস্তানী আক্রমন সম্পর্কে একটা বইও আছে। ১৬ ই ডিসেম্বরের পর ওই দুজন আইএসপিআর অফিসারকে আর দেখিনি। কিন্তু আমাদের এই দুই অফিসারের সাথে কখনও দেখা হলে হয়ত বলবেন, দেখুন কি করবো সরকারী চাকুরী করি। কর্তার ইচ্ছায় কীর্তন করতে হয়। দু:খের বিযয় হলো আইএসপিআর এর চলমান ভুমিকায় এর ইমেজ দারুনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিডিআর বিদ্রোহে ৫৪/৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা খুন হওয়ার পরও আইএসপিআর কোন কথাই বলেনি। কেন চুপ ছিল তার কোন ব্যাখ্যাও দেশবাসী পায়নি।
ক্যান্টনমেন্টের বাড়িটার বিষয়টা কি রাজনৈতিক, না প্রতিহিংসা না জমির মালিকানা বা টাইটেল সমস্যা ? এ বিষয়টা পরিস্কার হওয়া দরকার। হঠাত্ মন্ত্রী পরিষদ এই লীজ বাতিলের কাজে হাত দিলেন কেন? সরকারী জমি লীজ দেওয়ার পর বাতিলের নিয়ম কি? সেই নিয়ম কি সরকার অনুসরণ করেছে? এসব প্রশ্নের উত্তর কে দিবে? সরকার না আইএসপিআর? কোন অবস্থাতে খালেদা জিয়াকে এই বাড়িটা সেনা বাহিনী বা সরকার খালেদা জিয়াকে দিয়েছেন তা আমরা দেখেছি এবং ভুলে যাইনি। ১৯৮১ সালে প্রেসিডেন্ট জিয়া শহীদ হওয়ার পর দেশের সাধারন মানুষের ভিতর কি প্রতিক্রিয়া হয়েছিল যারা দেখেছেন তাদের সবার মনে ও চোখে সেই দৃশ্য এখনও জীবন্ত। আওয়ামী লীগের বন্ধুরা হয়ত সেই দৃশ্য ভুলে থাকতে চান। কারন একজন মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুতে তাঁর জানাজায় ২০ লাখ শরীক হবে কেউ তা কখনও ভাবেনি। না দেখলে বুঝা যেতনা এই মানুষটা এত জনপ্রিয় ছিল। ঠিক তেমনি একটি সময়ে জাতীয় সংসদ ও সরকার জিয়া পরিবারকে সাহায্য করার জন্যে ক্যান্টনমেন্টের বাড়িটা দান করেন। আওয়ামী লীগ সহ সংসদের সকল দলের সদস্যদের সমর্থন লাভ করে সরকার ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের ওই প্রস্তাব। ওই প্রস্তাব আসার কারণ ছিল তখন ঢাকায় শহীদ জিয়ার পরিবারের থাকার জন্যে কোন বাড়ি ছিলনা এবং ভরন পোষনের জন্যে কোন আয়ও ছিলনা। তাছাড়া ওই বাড়িটা বাংলাদেশের ন্যাশনাল হেরিটেজের একটা অংশ। শহীদ জিয়া ডেপুটি আর্মি চীফ হিসাবে ওই বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। আর্মি চীফ এবং প্রেসিডেন্ট হিসাবে পুরো সময়টা তিনি ওই বাড়িতেই ছিলেন। পরবর্তী পর্যায়ে বেগম জিয়া প্রধান মন্ত্রী ও বিরোধী দলের নেত্রী হিসাবে এই বাড়িতেই অবস্থান করেছেন। লীজ দলিলে কি ভুল ছিল আর কি ভুল ছিলনা তা বড় কথা নয়। বিষয়টা হলো কি উদ্দেশ্যে কেন ওই বাড়ি জিয়া পরিবারকে দেয়া হয়েছিল।
শহীদ জিয়ার ভাংগা স্যুটকেস আর ছেঁড়া গেঞ্জীর কথা জিয়া পরিবারের কেউ প্রচার করেনি। আওয়ামী লীগই এর প্রধান প্রচারক। জিয়া সাহেব শহীদ হওয়ার পর টিভিতে এক প্রোগ্রামে মরহুম ফজলে লোহানীই প্রথম বিষয়টি জন সাধারনের কাছে উথাপন করেছিলেন। সেই থেকে আওয়ামী লীগ এর প্রধান প্রচারক হিসাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। প্রায়ই সুযোগ পেলেই আওয়ামী লীগ ভাংগা স্যুটকেশ ও ছেঁড়া গেঞ্জীর কথা প্রচার করে। এখন জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে কেন আওয়ামী লীগ এ কাজটা করে। বিষয়টা হয়ত মনস্তাত্বিকও হতে পারে। আওয়ামী লীগ হয়ত মনে করে ভাংগা স্যুটকেশ আর ছেঁড়া গেঞ্জী তাদেরই হওয়া উচিত ছিল। কারন বংগবন্ধু ছিলেন গণমানুষের নেতা। তিনিই সাধারন মানুষের জন্যে রাজনীতি করতেন।তারঁ তেমন কোন অর্থ-বিত্ত ছিলনা। আমরা শুনেছি, বংগবন্ধুর ঘনিস্ঠ বন্ধু ছিলেন পাকিস্তানের হারুণ পরিবার ও বাংলাদেশের ইস্পাহানী পরিবার। তারাই তাঁর খোঁজ খবর রাখতেন। সুখ দু:খের ভাগীদার ও সমব্যাথী ছিলেন। তিনি এক সময় টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হয়েছিলেন ইস্পাহানীদের সুপারিশে। কিছুদিন আলফা ইন্স্যুরেন্সের উপদেস্টাও ছিলেন। তিনি যুক্তফ্রন্ট সরকারের দুর্ণীতি দমন মন্ত্রীও ছিলেন। সে সময়ে বংগবন্ধুর বিরুদ্ধে নানা রকম দুর্ণীতির অভিযোগ উঠেছিল। যা প্রমানিত হয়নি এবং জনসাধারনও তেমন বিশ্বাস করেনি। ওই সময়েই বংগবন্ধু তাঁর ধানমন্ডীর বাড়িটি তৈরী করেছিলেন। বংগবন্ধু যাঁর শিষ্য ছিলেন সেই মানুষটি ছিলেন নির্যাতিত গণমানুষের নেতা মাওলানা ভাসানী। তাঁর ঢাকায় কোন বাড়ি ছিলনা। তিনি থাকতেন সন্তোষে।চলতেন জন সাধারনের পয়সায়। তাই হয়ত আওয়ামী লীগের কল্পনায় ছিল বংগবন্ধু শহীদ হওয়ার পর তাঁর বাড়িতেই ভাংগা স্যুটকেস ও ছেঁড়া গেঞ্জী পাওয়া যাবে। কিন্তু তা হয়নি। কারণ আল্লাহপাকের ইচ্ছা ছিল অন্য রকম। কি কি জিনিষ পাওয়া গেছে তার তালিকা পাঠক সমাজের নিশ্চয়ই মনে আছে।এসব কথা আমি আমার স্মৃতি থেকে বলছি। স্মৃতি কোন লাইব্রেরী নয়।আমার ভুলও হতে পারে। এ জগত ছেড়ে চলে যাবার পর জিয়া সাহেবের বাড়িতে কি পাওয়া গেছে তাও দেশবাসী জানেন। সে সময়ে দেশবাসীর ইমোশন ও সেন্টিমেন্টের প্রতি সম্মান দেখিয়ে বিচারপতি সাত্তার সাহেবের সরকার জিয়া সাহেবের পরিবারকে ওই দুটি বাড়ি দান করেছিলেন। বড়ই পরিতাপের বিষয় আজ আওয়ামী সরকার সবকিছু ভুলে গিয়ে খালেদা জিয়াকে ঐতিহাসিক সেই বাড়ি উচ্ছেদ করেছে। এতে আওয়ামী লীগের হীনমন্যতারই প্রকাশ পেয়েছে।
আওয়ামী নেতা ও সরকারের মন্ত্রীরা খালেদা জিয়াকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদের পর যেসব কথা বলেছেন তাতে তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সুস্পস্ট হয়ে উঠেছে। তারা প্রায় সবাই বলেছেন খালেদাকে উচ্ছেদের মাধ্যমে তারা ক্যান্টনমেন্টকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র মুক্ত করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠতে পারে খালেদা জিয়া ওই বাড়িতে বসে কার সাথে যড়যন্ত্র করতেন এবং সেটা কি ধরনের যড়যন্ত্র। আওয়ামী লীগ কি মনে করে বা ইংগিত করছে সেনাবাহিনী যড়যন্ত্রের সাথে জড়িত? অথবা আওয়ামী লীগ গোয়েন্দা সূত্রে জানতে পেরেছে সেনাবাহিনীর সাথে খালেদা জিয়ার কোন ধরনের রাজনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে? বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সাথে আওয়ামী লীগের হৃদ্যতা কখনও ছিলনা। বংগবন্ধুর আমলেই সেনাবাহিনীর সাথে আওয়ামী লীগের সুসম্পর্ক ছিলনা রক্ষীবাহিনীর কারনে। জন সাধারনের ভিতর এ রকম একটা ধারনা রয়েছে। যেকোন কারনেই হোক বংগবন্ধুর কাছে রক্ষীবাহিনীর গুরুত্ব অনেক বেশী ছিল। চলমান আওয়ামী নেতৃত্ব মনে করে সেনা বাহিনী খালেদা জিয়াকে অধিক সম্মান করে। সেজন্যে তারা সব সময় বলে আসছেন বিএনপির জন্ম ক্যান্টনমেন্টে। এর সাথে জনগনের কোন সম্পর্ক নেই। আওয়ামী নেতারা ইতোমধ্যেই বলেছেন ভাংগা স্যুটকেসের গল্পের মতো আরেকটি গল্প তৈরী করেছেন। সেটা হলো তাঁকে জোর করে মইনুল হোসেন রোডের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এবং খালেদা জিয়ার কান্নাকাটিও ছিল এক ধরনের নাটক। কিন্তু যেদিন খালেদা জিয়াকে ওই বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে সেদিন আইনমন্ত্রী বলেছেন সরকার এ ব্যাপারে কিছুই জানেনা। বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার পর মন্ত্রীরা বলেছেন আদালত যদি তাঁর পক্ষে দেন তাহলে তিনি বাড়ি ফেরত পাবেন। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন আসে আদালতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা না করে তাড়াহুড়া করে কেন উচ্ছেদ করা হলো।
উচ্ছেদ নাটকে গত কয়েকদিনে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। প্রধান বিচারপতির সরকারী বাস ভবনের দেয়ালের ভিতরে নাকি দুটি ককটেল বা জর্দার কৌটো ফুটেছে। প্রধান বিচারপতির বাসভবন কোথায় তা নগরবাসী প্রায় সবাই জানেন। ওই বাড়ির চারিদিকেই সারাদিন জমজমাট পুলিশ পাহারা থাকে। চারিদিকেই ট্রাফিক পুলিশ থাকে। যারা কথিত ককটেল দেয়ালের ভিতর ফেলে তারা পালালো কি ভাবে? কর্তব্যরত পুলিশ ককটেল ফুটার আওয়াজ পাওয়ার সাথে কি করলেন? পুরো বিষয়টা নিয়ে প্রধান বিচারপতি এখনও কোন কথা বলেননি। তিনি কি তখন বাসায় ছিলেন? আওয়াজ পেয়ে তাঁর বাসার সদস্যরা কি করলেন? আওয়াজ পাওয়ার সাথে সাথে তাঁরা কি পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেছেন? অথচ সরকারী বক্তব্য অনুযায়ী পুরো বিষয়টাও ঘটেছে নাকি খালেদা জিয়াকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ আর ২৯ শে নবেম্বর বাড়ির বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের শুনানীকে কেন্দ্র করে। এখন ককটেল ফুটানো কেন্দ্র করে নানাকথার সৃস্টি হচ্ছে। বলা যায় ককটেল রাজনীতি। সরকার এবং আওয়ামী নেতাদের ধন্যবাদ দিতে হয় নতুন নতুন ইস্যু দিয়ে বিরোধী দলকে ব্যস্ত রাখার জন্যে।এখন চলছে বাড়ি নিয়ে রাজনীতি আর তার সাথে প্রধান বিচারপতির বাড়িতে ককটেল। বিএনপির মহাসচিব জানতে চেয়েছেন সুধা সদনে কি আছে তা জানার অধিকার জনগণের আছে। এমন কি সেই বাড়িটার মালিক কে এবং মালিক কি ভাবে ওই বাড়িটা পেয়েছেন এসব প্রশ্নও আসতে শুরু করেছে।(ershadmz40@yahoo.com) নয়া দিগন্ত , ডিসেম্বর ২, ২০১০